পরিচ্ছেদসমূহ
রীলে সম্পর্কিত আমার প্রথম পোস্টে অনেক সাড়া পেয়েছি। অনেকেই ইমেইল ও মেসেজের মাধ্যমে জানিয়েছেন তাদের ভালোলাগা আর চাও্য়ার কথা। চেষ্টা করবো তাদের ইচ্ছে পূরনের। আজকে রীলে সম্পর্কিত ২য় পোস্ট। প্রথম পার্ট টি পড়তে চাইলে এই লিংক থেকে ঘুরে আসুনঃ Relay Part-1
আজকে যেসব নিয়ে আলোচনা করবো তা হলঃ
রীলে তে ব্যবহৃত পিন সমূহঃ
প্রচলিত দিক থেকে চিন্তা করলে অন্যান্য ইলেকট্রনিক পার্টসের মতো রীলের পা গুলোকে লেগ বলাই সমীচিন ছিলো কিন্তু কোনো কারণে তা না হয়ে পিন নামেই বেশি সুপরিচিত তাই আমরা পরবর্তীতে একে পিন নামেই অভিহিত করছি।
আমরা যদি একটি SPDT রীলের পিন আউট/পিন কনফিগারেশন দেখি তাহলে তা দেখতে বাহ্যিক দিক থেকে এমন-
এর একদিক থেকে ৩টি ও অপর দিক থেকে ২টি পিন আছে। এর মধ্যে ২টি প্রান্ত আভ্যন্তরীণ কয়েলের জন্য ও অপর ৩টি প্রান্ত সুইচিং এর জন্য ব্যবহৃত হয়। পিন বা প্রান্ত গুলোর নাম যথাক্রমেঃ
- NC (Normally Close)
- NO (Normally Open)
- CO (Common) / Pole
- Coil + / –
- Coil – / +
NC (Normally Close)
এই পিনটি সাধারণ ভাবে অন অবস্থায় থাকে। অর্থাৎ, রীলের কয়েলে উপযুক্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকলে এটি কমোন পিনের সাথে সংযুক্ত (শর্ট) অবস্থায় থাকে।
NO (Normally Open):
এই পিনটি সাধারণ অবস্থায় অফ থাকে। অর্থাৎ, রীলের কয়েলে উপযুক্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকলে এটি কমোন পিন থেকে বিচ্যুত থাকে। কোনো ডিভাইস/বাতি কে সাধারণত এই পিন (NO) ও (কমোন – CO) পিনের সাথে সংযুক্ত করে সার্কিটে সুইচিং করা হয়।
[টিপসঃ কোনো ডিভাইস/বাতি কে সাধারণত ঘঙ NO (Normally Open / NO) পিন ও (কমোন – CO) পিনের সাথে সংযুক্ত করে সার্কিটে সুইচিং করা হয়।]
CO (Common) / Pole:
এটি হচ্ছে উপরোক্ত ২টি পিনের জন্যই কমোন (CO) বা অন্য নামে পোল (Pole) হিসেবেও অভিহিত করা হয়।
Coil:
সুইচিং করার সময় এই পিন দ্বয়ে রীলে কয়েলের মাণ মতো ভোল্টেজ প্রবাহিত করা হয়। সাধারণত কোনো সার্কিটের এলইডি লাগাবার স্থানে কিংবা ¯িপকার লাগাবার স্থানে লাগানো যায় (উপযুক্ত ক্যাপাসিটর ও রেজিস্টার সহযোগে)। এই রীলে কয়েলের সাধারণত কোনো পজেটিভ/নেগেটিভ প্রান্ত থাকে না। অর্থাৎ কয়েলটি যেকোনো ভাবেই ব্যাটারির ২ প্রান্তের সাথে লাগানো যেতে পারে।
বুঝবো কীভাবে আমার রীলে কী ধরণেরঃ
সর্বোমোট পা/পিন সংখ্যা গণনা করে বোঝাটাই বেশি সহজ যে আমার রীলে টি কোন ধরণের। সুবিধের জন্য এই চার্টটি মনে রাখা যেতে পারে-
- SPST – 4 পিন
- SPDT – 5 পিন
- DPST – 6 পিন
- DPDT – 8 পিন
প্রসঙ্গত, SPST এবং DPST তেমন পাওয়া যায় না কারণ ডাবল থ্রো যেকোনো রীলে’র যে কোনো এক পাশকে একটু কৌশলে লাগালেই এই কার্যোদ্ধার সম্ভব।
আমার রীলে’টি কতো ভোল্টেরঃ
রীলে পরিচিত হয় এর কয়েলের ভোল্টেজ দ্বারা, অর্থাৎ যে ভোল্টে একটি রীলের কয়েল সম্পূর্ণ চালু হয় সেটিই উক্ত রীলের ভোল্ট হিসেবে গণ্য হয়। এর প্রধান কারণ, রীলের সুইচিং প্রান্তে যেকোনো ভোল্টেই কার্যক্ষম থাকে তাই সে প্রান্তে’র শুধুমাত্র সর্বোচ্চ ভোল্ট আর কারেন্ট পরিবহনের মাত্রাই শুধু নির্দেশিত থাকে। আদতে একটি রীলে বিশেষ সুইচ ব্যতিত কিছুই নয়, এর জন্য আমরা একটি রীলে কে সম্পূর্ণ রূপে খুলে এর ভেতরের অংশ পর্যবেক্ষণ করব এবং তাকে আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নেবো।
!!! সতর্কতাঃ এই পাঠের পরবর্তী অংশটুকু শুধুমাত্রই শিক্ষামূলক হিসেবে প্রস্তুতকৃত এবং এই প্রকৃয়ায় কোনো যন্ত্রাংশেরই ক্ষতি সাধিত হয়নি। সকল শিক্ষার্থীকে এই ধরণের কাজ পরিহারের উপদেশ দেয়া যাচ্ছে। বিশেষ ক্ষেত্রে, উপযুক্ত ও দক্ষ শিক্ষকের উপস্থিতিতে এটি করা যেতে পারে !!!
একটি রীলে’কে খুললে কেমন দেখায়ঃ
আমরা এখন একটি রীলের অভ্যন্তরে দেখবো এবং তা থেকে বোঝার চেষ্টা করবো এটি কিভাবে কাজ করে। চলুন তাহলে দেখি একটি রীলে কে খুললে কেমন দেখায় তা দেখি-
এই কাজের জন্য আমরা এন.সি. কাটার (NC Cutter) এবং মিনি স্ক্রু-ড্রাইভার (Mini Precision Screwdriver) ব্যবহার করেছি। উপযুক্ত সতর্কতা না নিলে এগুলো দ্বারা মারাত্মক ক্ষতি হবার সম্ভবনা আছে। সুতরাং, নতুন শিক্ষার্থি সকলকে অনুরোধ থাকবে তারা যেন এটি একা একা (বড়দের ছাড়া) কখনোই করতে সচেষ্ট না হয়।
উপরোক্ত চিত্রে আমরা একটি SPDT রীলের আভ্যন্তরীন চিত্র দেখতে পাচ্ছি। আরো ভালোভাবে বুঝতে চাইলে নিচের চিত্রটি দেখতে পারি।
এই চিত্রে একই রীলে’র খুব কাছ থেকে তোলা ছবি দেখছি। এর বিভিন্ন পিন এর অগ্রভাগ (কন্টাক্ট পয়েন্ট -Contact Point) অভ্যন্তরে কোথায় কিভাবে থাকে তা আমরা নিচের ছবিতে দেখতে পাবো।
চিত্রে প্রদর্শিত পোল/কমোন প্রান্তটি নড়তে সক্ষম এবং তার নিচেই উজ্বল চিকন অন্তরিত তারে প্যাঁচানো ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক কয়েলকে দেখতে পাচ্ছি। মূলতঃ কমোন প্রান্তটি, ইলেকট্রো ম্যাগনেট বা তড়িৎ চুম্বক দ্বারা আকর্ষিত হয়ে একবার NO প্রান্তে এবং NC প্রান্তে সংযুক্ত হয়ে রীলে’র কাজ স¤পন্ন করে।
আমাদের পর্যবেক্ষণ শেষ হলে রীলে টিকে আমরা খোলের মধ্যে সাবধানে প্রবেশ করিয়ে ও সুপার গ্ল জাতীয় আঠাদিয়ে একে জোড়া দিয়ে দেই।
উল্লেখ্য যে, বিভিন্ন কম্পানি ও ধরণ অনুসারে এই আভ্যন্তরীণ চিত্র ভিন্ন হতে পারে।
(চলবে…)
খুবি ইন্টারেষ্টিং!!
🙂
আমি ইলেকট্রনিক্সের ছাত্র। তাই মজা টা একট বেশি পেলাম
।ধন্যবাদ ভাই
অনেক ভাল লাগলো
ধন্যবাদ আপনাকে কমেন্ট করে অনুপ্রেরণা দেবার জন্য 🙂
দারুন ভাই…..উপকারি
অনেক কিছুই জানা গেল। অগ্রিম ধন্যবাদ পরবর্তি টিউনের জন্য।
আমার খুব মজার একটি কম্পোনেন্ট
আসলেও রিলে বেশ মজার একটি ইলেকট্রোম্যাকানিকাল ডিভাইস 🙂
অনেক উপকৃত হইলাম
ধন্যবাদ এরকম একটা লেখার জন্য।
বাকি অংশ …?
মুল বিষয় গুলো এই ২টি পার্টের মধ্যেই দিয়ে দেয়া হয়েছে। বাকি অংশে শুধু কিছু কমন সার্কিট আর টুকটাক বিষয় থাকবে। বিভিন্ন ব্যস্ততার কারণে লেখা হয়ে উঠেনি। আপনার যদি Specific কোন কিছু জানার থাকে রিলে সম্পর্কে তাহলে জানিয়ে রাখতে পারেন। পরবর্তী লেখায় তা যুক্ত করবার চেষ্টা করবো…
ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিক্স এদুটো বিভাগ ই আমার প্রিয় । আমি অনেক কিছু তৈরি করতে চাই কিন্তু হঠাৎ আটকে যাই । প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র পাওয়া যায় না আবার অনেক সময় অনেক কিছু জিনিষের সঠিক ব্যবহার না জানাতে বিরম্বনার মধ্যে পরে যাই , তবে আপনার পোষ্ট পড়ার পর থেকে আমি আরো বেশি আগ্রহি হয়ে উঠেছি ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিক্স এর প্রতি । আর আমার সব থেকে দুর্ভল যায়গা টা হল ইলেকট্রনিক্সের জিনিষ গুলোর পরিমাপ করা । যেমন – রেজিস্টেন্ট , ডায়োড , ট্রানজিস্টার ইত্যাদির ওহম , অ্যাম্পিয়ার পরিমাপ করতে জানি না । আমি আসলে পড়ালেখা করি , কিন্তু আমি ছোটবেলা থেকেই ইলেকট্রিক নিয়ে ভাবতাম । পরবর্তি কোন পোষ্টে আবার কথা হবে , জিজ্ঞাসা থাকবে এই কামনায় বিদায় নিলাম । আসসালামো আলাইকোম
সুন্দর একটা পোষ্ট আশা রাখা যায় এখান থেকে আমরা অনেক কিছুই শিখতে পারবো
আন্তরিক ধন্যবাদ আপনাকে। কিছু কিছু শিখতে পারলেই আমার এই পরিশ্রম স্বার্থক হবে 🙂
শ্রদ্দেয় গুরু,শুভেচ্ছা নিবেন,আমাকে একটা ac,dc,ডায়াগ্রাম দিবেন, কারেন্ট চলে গেলে ১২ ভোল্ট ডিসি অন হবে,রিলে আছে আমার কাছে ১২ ভোল্ট