রেডিও ওয়েভ কি?

4
1835
রেডিও ওয়েভ - বেতার তরঙ্গ
রেডিও ওয়েভ - বেতার তরঙ্গ

বেতার তরঙ্গ ছাড়া যে আধুনিক বিশ্বের অস্তিত্ব কল্পনা করাই দায় তা আমরা কম বেশি সবাই জানি৷ রেডিও টেলিভিশনে বিনোদন নেওয়া থেকে শুরু করে দূর মহাকাশ গবেষণায় কোথায় নেই এই বেতার তরঙ্গের ব্যবহার! মার্কনি না জগদিশ কে আগে বেতার যন্ত্র তৈরী করেছিলো তা নিয়ে তর্ক বহুদিনের। আর এই তর্কের কারনে আমরা বেমালুম ভুলে যাই হার্জের নাম৷ আমাদের আলোচনার বিষয় এনাদের নিয়ে নয়। এনাদের আবিষ্কার করা যে রেডিও ওয়েভ,  আমরা তাই নিয়ে আরেকটু গভীরে আলোচনা করবো।

তরিৎ চৌম্বক তরঙ্গঃ

রেডিও ওয়েভ বা বেতার তরঙ্গ হলো এক প্রকার তরিৎ চৌম্বক তরঙ্গ যার কম্পাঙ্ক অন্যান্য তরিৎচৌম্বক তরঙ্গ থেকে কম কিন্তু তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বড়৷ কারন সকল তরিৎ চৌম্বিকও বিকিরনের নির্দিষ্ট মাধ্যমে গতি সমান (শুন্য মাধ্যমে এর মান ৩ লক্ষ কি,মি এর মত)৷ আবার, তরঙ্গ গতি = কম্পাঙ্ক x তরঙ্গ দৈর্ঘ্য৷

তাহলে দেখা যাচ্ছে গতি যদি সমান থাকে তাহলে, কম্পাঙ্ক কমার সাথে সাথে তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বাড়বে। এবং রেডিও তরঙ্গ অন্যরকম আরেকটি তরিৎচৌম্বিক তরঙ্গ, দৃশ্যমান আলোর মতই শুধুমাত্র এর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য আমাদের দৃষ্টি সীমার বাইরে হওয়ায় রেডিও তরঙ্গকে দেখতে পাইনা৷ আবার, এক্স রশ্মির (X-Ray) এবং গামা রশ্মিও (Gamma Ray) তরিৎ চৌম্বকিয় তরঙ্গ কিন্তু এদের তরঙ্গ দৈর্ঘ্য এত ক্ষুদ্র যে আমরা দেখতে পাইনা। কিন্তু এই ক্ষুদ্র তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের রশ্মি গুলো আমাদের কে কিংবা কোন অধাতব ও ক্রিস্টাল বস্তুকে সহজেই ভেদ করে যেতে পারে এদের বৈশিষ্ঠের কারণে৷ এই তরিৎ-চৌম্বকিয় তরঙ্গের নাম থেকেই আমরা বুঝতে পারছি- এই তরঙ্গের সাথে কোন না কোন ভাবে তরিৎ ও চুম্বক জড়িত৷ হ্যা, আসলেই তরিৎ চৌম্বকিয় তরঙ্গ সেটা আমাদের রেডিও তরঙ্গই হোক আর দৃশ্য মান আলো হোক কিংবা এক্স বা গামা রশ্মিই হোক সবই তৈরী হয়, এই তরিৎ ও চৌম্বক ক্ষেত্রের মাঝে আপোক্ষিক গতি সৃষ্টি হলে৷ আসুন আগে জেনে নেই, তরিৎ এবং চৌম্বক ক্ষেত্র কি৷

তরিৎ ক্ষেত্রঃ

কোন স্থানে, একটি আধান স্থাপন করলে যে অঞ্চল ব্যাপী ঐ আধানটির প্রভাব বজায় থাকে তাকে ঐ আধানের তরিৎ ক্ষেত্র বলে৷ কোন স্থানে বা বস্তুতে ইলেকট্রন থেকে প্রোটনের সংখ্যা বেশি হলে সেটা পজিটিভ আধান হিসাবে ক্রিয়া করে আবার যদি কোন স্থানে বা বস্তুতে প্রোট্রন থেকে ইলেকট্রনের সংখ্যা বেশি হলে সেটা নেগিটিভ আধান হিসাবে ক্রিয়া করে৷ আবার একটি গতিশীল চৌম্বক পদার্থ তরিৎ ক্ষেত্র সৃষ্টি করে৷ আবার একটি, চার্জিত ক্যাপাসিটর ও তরিৎ ক্ষেত্র সৃষ্টি করেতে পারে।

চৌম্বক ক্ষেত্রঃ

একটি চুম্বক তার চারি পাশে যে অঞ্চল ব্যাপী এর প্রভাব বিস্তার করতে পারে তাকে চৌম্বক ক্ষেত্র বলে ৷ একটি গতিশীল ইলেকট্রন চৌন্বক ক্ষেত্র তৈরী করে ৷ এবং ইলেকট্রনের এই ধর্মের কারনে একটা ইনডাকশান কয়েলও চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরী করে ৷

তরিৎ চৌম্বকিয় তরঙ্গ তৈরীর প্রক্রিয়াঃ

আমি আগেই বলেছিলাম, তরিৎ এবং চৌম্বক ক্ষেত্রের আলোরোনের ফলে বা এদের ভিতর আপেক্ষিক গতির সৃষ্টি হলে তরিৎ চৌম্বকিও তরঙ্গ তৈরী হয়৷ এই দুইটা ক্ষেত্রের আলোরন বা মধ্যবর্তি আপেক্ষিক গতি অনেক প্রক্রিয়ায় তৈরী করা যায়৷ কিন্তু সাধারনত একটা ক্যাপাসিটর এবং একটা ইনডাকশান কয়েলের দুইটা ক্ষেত্র কে ইলেকট্রিক্যাল পদ্ধতিতে কম্পিত করে। এদের মধ্যবর্তি এই আলোরন সৃষ্টি করা হয়৷ এই দুইটা জিনিসের সমন্বয়ে যে সার্কিট তৈরী হয় তাকে ট্যাঙ্ক সার্কিট বলে৷ একটা ট্যাঙ্ক সার্কিটের ব্যান্ড পাস ফ্রিকোয়েন্সি বা যে ফ্রিকোয়েন্সিতে এদের ভিতর দিয়ে 70% এর বেশি বিদ্যুত প্রবাহিত হয়ে একটি শক্তিশালি তরিৎচৌম্বক সৃষ্টি করবে সেই ফ্রিকোয়েন্সির মান কত হবে, তা ঐ ট্যাঙ্ক সার্কিট এ ব্যবহৃত ক্যাপাসিটর ও ইনডাক্টরের মানের উপর নির্ভর করে৷

ট্যাংক সার্কিট
ট্যাংক সার্কিট

যেখানে,

f = 1/2π√(LC)

এখান,

f = কাটঅফ ফ্রিকোয়েন্সি (Hz)
L = ইনডাক্টর এর ইনডাকটেন্স (Henry)
C = ক্যাপাসিটর এর ক্যাপাসিটেন্স (Farad)

এই ট্যাঙ্ক সার্কিট এ ইলেকট্রিক্যাল কম্পাঙ্ক পাঠিয়ে এদের ক্ষেত্র দ্বয়ের ভিতর ইলেকট্রিক্যাল পদ্ধতিতে কোন সৃষ্টি করে কঁপানো হয় যার ফলে সৃষ্ট হয় পারস্পারিক আপেক্ষিক গতির এবং ফলে তৈরী হয় রেডিও তরঙ্গের৷ এই ট্যাঙ্ক সার্কিটের প্রভাব বিস্তার কারি ক্ষেত্রের ভিতর ভিন্ন কোন ট্যাঙ্ক সার্কিট আনলে সেটিও এটির দ্বারা প্রভাবিত হয়। আর ট্যাঙ্ক সার্কিটের এই ধর্ম ব্যবহার করে তৈরী করা হয় রেডিও তরঙ্গ রিসিভার ও ট্রান্সমিটার সার্কিট

4 মন্তব্য

  1. লেখার মান একদম বাজে! ডজন খানি বানান ভুল! আমি দুঃখিত যে এতো সুন্দর একটা টপিকের উপর লেখাটিকে খারাপ বলতে হচ্ছে।

উত্তর প্রদান

আপনার মন্তব্য লিখুন
আপনার নাম লিখুন