প্রসেসিং এর খুঁটিনাটিঃ কন্ডিশন (পর্ব-৪)

2
890
প্রসেসিং এর খুঁটিনাটিঃ কন্ডিশন
প্রসেসিং এর খুঁটিনাটিঃ কন্ডিশন

আজকে আমরা শিখবো কি করে প্রসেসিং এ বিভিন্ন কন্ডিশন ব্যবহার করতে হয়। আমরা বাস্তব জীবনেই প্রত্যেকদিন বিভিন্ন শর্ত বা কন্ডিশন মেনে চলি। যেমন, চা বানাতে গিয়ে যদি দেখি চিনি শেষ হয়ে গিয়েছে, তখন বাজারে গিয়ে চিনি কিনে আনি। এখানে শর্তটা হচ্ছে, চা বানানোর প্রয়োজনীয় উপকরণ আছে কিনা সেটা চেক করা। যদি থাকে তাহলে চা বানাই, না থাকলে উপকরণটা কিনে আনি। প্রসেসিং এর কন্ডিশন ব্যাপারটাও এরকম। কোডে লেখা থাকে কি চেক করতে হবে। কম্পিউটার সেটি চেক করে যদি পজিটিভ রেজাল্ট পায়, তাহলে একটি সিদ্ধান্ত নেয়। নেগেটিভ রেজাল্ট পেলে আরেকটি সিদ্ধান্ত নেয়। কি সিদ্ধান্ত নিবে সেটাও কোডে লিখে দিতে হবে।

কন্ডিশনাল স্টেটমেন্ট ও এর উদাহরনঃ

কন্ডিশনাল স্টেটমেন্ট অনেক ধরণের আছে, আমরা আজকে খুব বেসিক ২টি স্টেটমেন্ট শিখবো, if-else স্টেটমেন্ট আর for স্টেটমেন্ট। সাথে কিছু অপারেটরের বিষয়েও জানবো।

নিচের কোডটি দেখি –

int variable = 50;
if (variable < 50){
println (“variable is smaller than 50”);
}
else {
println (“variable is greater than 50”);}

এখানে, প্রথমে variable নামে একটি ভ্যারিয়েবল ডিক্লেয়ার করেছি যার মান হচ্ছে ৫০। এরপর if লিখে () ব্র্যাকেটের মধ্যে কন্ডিশনটি লিখেছি, যা হচ্ছে variable এর মান ৫০ অপেক্ষা ছোট কিনা। যদি ছোট হয়, তাহলে {} ব্র্যাকেটের মধ্যে লেখা কোড রান করবে। আর যদি ৫০ অপেক্ষা ছোট না হয়, তাহলে else এর পরে {} এর ভিতর যে কোড লেখা আছে, সেটি রান করবে।
আপনি ইচ্ছা করলে একাধিক if ও ব্যবহার করতে পারেন, উদাহরন-

if (a<123){println (“something”);}
if (a>123){println (“something something”);}

উপরের কোডে নতুন একটি ফাংশন ব্যবহার করা হয়েছে, println নামে। println();  লাইনটি লিখে আপনি ব্র্যাকেটের ভেতর ডাবল ইনভারটেড কমার ভিতরে যা লিখবেন, সেটি Console এ দেখা যাবে। আপনি যদি নিচের কোডটি রান করেন –

void setup(){
size (10,10);
}
void draw(){
println (“Bangladesh”);
}

তাহলে Console এ বারবার Bangladesh লেখাটি প্রিন্ট হতে থাকবে। তবে প্রত্যেকবার লেখাটা নতুন একটি লাইনে প্রিন্ট হবে। কিন্তু আপনি যদি শুধু print() ফাংশন ব্যবহার করেন, তাহলে লেখা বারবার পাশাপাশি প্রিন্ট হতে থাকবে, অর্থাৎ BangladeshBangladeshBangladesh। আশা করি পার্থক্যটি বুঝতে পেরেছেন।

println() ফাংশন বিভিন্ন কাজে ব্যাবহার করা যায়। যেমন, আপনার একটি ভ্যারিয়েবল এর মান কোড চলাকালে কত বাড়ছে বা কমছে সেটি জানা দরকার, আপনি তখন খালি কোডে একটি লাইন লিখে দিবেন,

println(myvariable);

এখানে myvariable এর জায়গায় আপনার ভ্যারিয়েবল এর নাম বসবে।

ফর স্টেটমেন্ট (For Statement):

এবার ফর স্টেটমেন্ট এর সিনট্যাক্স দেখি-

for (int variable= 0; variable >100; variable++ ){
println (“Bangladesh”);
}

এখানে, প্রথমে for লিখে তারপর () এর ভিতর কন্ডিশন লিখবেন। তবে এখানে কন্ডিশনটি একটু অন্যরকম হবে।

ফর স্টেটমেন্ট (For Statement) এর কন্ডিশনে ৩টি পার্ট থাকে। প্রথমেই, int variable= 0;  লিখে variable নামে একটি ভ্যারিয়েবল ডিক্লেয়ার করা হল। এরপর variable>100  কন্ডিশনটি লেখা হল। তারপর variable++  লেখা হল। ++  হচ্ছে জাভা ল্যাঙ্গুয়েজের একটি গাণিতিক অপারেটর। যার অর্থ হচ্ছে যেই ভ্যারিয়েবল এর পরে ++ লেখা হবে সেই ভ্যারিয়েবলটির মানের সাথে ১ যোগ হবে।  অপারেটর দিয়ে আবার ভ্যারিয়েবল থেকে ১ বিয়োগ করা যায়। আরও বিভিন্ন অপারেটর সম্পর্কে ভবিষ্যতে আলোচনা করা হবে।

ফর স্টেটমেন্ট হচ্ছে আসলে একটি লুপ। অর্থাৎ ফর লুপের {} ভিতরে যেই কোডটি থাকবে সেই কোডটি বারবার রান করানো হবে। কতবার রান করানো হবে তা নির্ভর করে ফর লুপের কন্ডিশনের উপর। উপরে যেই কন্ডিশন দেয়া হয়েছে, সেই কন্ডিশন অনুযায়ী কম্পিউটার প্রথমে variable নামে একটি ভ্যারিয়েবল এর ইনিশিয়াল ভ্যালু ০ ধরে যতক্ষণ variable এর মান ১০০ অপেক্ষা ছোট থাকে ততক্ষন variable এর মান ১ করে বাড়াতে থাকবে। এবং Bangladesh কথাটি প্রিন্ট করতে থাকবে।

কোড দেখে মনে হতে পারে, Bangladesh কথাটি ১০০ বার প্রিন্ট হবে, তবে গুনে দেখলে আসলে দেখা যাবে, ৯৯ বার Bangladesh কথাটি প্রিন্ট হয়েছে। কারণ, < অথবা > অপারেটর দিয়ে আসলে বোঝানো হয় চিহ্নের ডানদিকের সংখ্যা থেকে ছোট, কিন্তু সমান নয়। তাই আপনি যদি ১০০বার লেখাটি প্রিন্ট করাতে চান, তাহলে আপনাকে লিখতে হবে <=, যেই অপারেটরটির মানে হচ্ছে ১০০ থেকে ছোট অথবা সমান। >= অপারেটরও একই ভাবে কাজ করে।

বিভিন্ন অপারেটরঃ

প্রোসেসিং এ বিভিন্ন ধরণের অপারেটর রয়েছে, আপাতত কাজ করার জন্য বেসিক কয়টি অপারেটর দেখি-

“&&” অপারেটরঃ

এই অপারেটর মাঝখানে দিয়ে বোঝানো হয় যদি এটা হয় “এবং” যদি ওটা হয়। উদাহরন – if (a>34 && b <34){}  । ইফ স্টেটমেন্ট এ একাধিক কন্ডিশন দিতে পারেন এই অপারেটরের সাহায্যে।

“||” অপারেটরঃ

কিবোর্ডের এন্টার কি এর পাশে এই কি’টি থাকে।এটা দিয়ে বোঝানো হয় যদি এটা হয় অথবা ওটা হয়। উদাহরন – if (a <24 || b<24){println(“do something”);}

“+=” অপারেটরঃ

এই অপারেটর আপনি কোনও ভ্যারিয়েবল এর পাশে বসিয়ে যে সংখ্যাটি লিখবেন, সেটি ভ্যারিয়েবলটির সাথে যোগ হবে। উদাহরন, –

int myvariable = 50;
myvariable += 50;

এখন ৫০ যোগ করার ফলে ভ্যারিয়েবলটির মান হবে ১০০।

“-=” অপারেটরঃ

এই অপারেটর আপনি কোনও ভ্যারিয়েবল এর পাশে বসিয়ে যে সংখ্যাটি লিখবেন, সেটি ভ্যারিয়েবলটি থেকে বিয়োগ হবে। উদাহরন, –

int myvariable = 50;
myvariable -= 50;

এখন ৫০ বিয়োগ করার ফলে ভ্যারিয়েবলটির মান হবে ০।

“*” অপারেটরঃ

এই অপারেটরের সাহায্যে একটি ভ্যারিয়েবলকে আরেকটি ভ্যারিয়েবল এর সাথে গুন করতে পারবেন। উদাহরন –

int a = 50;
int b= 60;
println (a*b);

কনসোলে a ও b এর গুণফল ৬০০০ প্রিন্ট হবে।

“/” অপারেটরঃ

এই অপারেটরের সাহায্যে একটি ভ্যারিয়েবলকে আরেকটি ভ্যারিয়েবল দ্বারা ভাগ করতে পারবেন। যেমন –

int a = 50;
int b= 10;
println (a/b);

কনসোলে 5 প্রিন্ট হবে, যেহেতু a এর মান b এর মান দ্বারা ভাগ করলে হয় 5।

আজকের মত এটুকুই। এর পরের পর্বে আশাকরি অ্যানিমেশন নিয়ে লিখবো।

2 মন্তব্য

উত্তর প্রদান

আপনার মন্তব্য লিখুন
আপনার নাম লিখুন