বাড়ি ব্লগ

সহজ ভাষায় জেনারেটরের বিস্তারিত

0
সহজ ভাষায় জেনারেটরের বিস্তারিত
সহজ ভাষায় জেনারেটরের বিস্তারিত

সহজ ভাষায় জেনারেটরের বিস্তারিত

পরিচিতি

লোডশেডিং বা বিদ্যুৎ বিভ্রাট আমাদের দেশে একটি পরিচিত সমস্যা। এ অবস্থায় জরুরি সময়ে আলো, ফ্যান বা ইলেকট্রনিক যন্ত্র চালাতে আমরা নির্ভর করি জেনারেটরের ওপর। তবে, আমরা অনেকেই জানি না, এই যন্ত্রটি আসলে কীভাবে কাজ করে। আজ আমরা সহজ ভাষায় জানবো জেনারেটর কী, এটি কীভাবে কাজ করে, এবং এটি ব্যবহার করলে কী কী উপকার পাওয়া যায়।

জেনারেটর কী?

জেনারেটর হলো এমন একটি যন্ত্র যা যান্ত্রিক শক্তিকে বৈদ্যুতিক শক্তিতে রূপান্তর করে। সাধারণত ডিজেল, পেট্রোল বা গ্যাস ব্যবহার করে একটি ইঞ্জিন চালানো হয়, যার মাধ্যমে একটি কপার-তারে মোড়ানো কয়েল ঘোরে। এই ঘূর্ণনের ফলে চৌম্বকীয় ক্ষেত্র তৈরি হয় এবং সেই ক্ষেত্র থেকেই তৈরি হয় বিদ্যুৎ।

কীভাবে জেনারেটর কাজ করে?

১. ইঞ্জিন: জ্বালানি পোড়ানো হয় যাতে ইঞ্জিন ঘুরতে পারে।
২. আল্টারনেটর: ইঞ্জিনের সঙ্গে যুক্ত থাকে এই অংশটি, যেখানে ঘূর্ণন শক্তি থেকে বৈদ্যুতিক শক্তি উৎপন্ন হয়।
৩. ফুয়েল সিস্টেম: ডিজেল বা গ্যাস সংগ্রহ ও সরবরাহের ব্যবস্থা।
৪. ভোল্টেজ রেগুলেটর: বিদ্যুতের চাপ (ভোল্টেজ) নিয়ন্ত্রণ করে যেন তা নিরাপদ থাকে।
৫. কুলিং ও এক্সস্ট সিস্টেম: অতিরিক্ত গরম হওয়া রোধ ও ধোঁয়া নির্গমনের ব্যবস্থা।
৬. ব্যাটারি: প্রাথমিকভাবে জেনারেটর স্টার্ট দেওয়ার জন্য।
৭. কন্ট্রোল প্যানেল: পুরো সিস্টেম পরিচালনার কেন্দ্র।

একটি আধুনিক জেনারেটর নিজে থেকেই অন-অফ হতে পারে যখন বিদ্যুৎ আসে বা যায় — একে বলে অটোমেটিক ট্রান্সফার সুইচ (ATS)

কেন জেনারেটর ব্যবহার করবেন?

বিদ্যুৎ না থাকলেও চালু থাকবে জরুরি যন্ত্রপাতি
ব্যবসা বা কারখানার কাজ থেমে যাবে না
ডিজিটাল ডিভাইস, সিসিটিভি বা সার্ভার চালু রাখা যাবে
জরুরি চিকিৎসা সরঞ্জাম সচল রাখা সম্ভব (যেমন: অক্সিজেন মেশিন)

কোথায় কোথায় বেশি ব্যবহৃত হয়?

  • বাড়ি ও অ্যাপার্টমেন্ট
  • হাসপাতাল ও ক্লিনিক
  • ব্যাংক ও অফিস
  • শিল্প কারখানা ও দোকানপাট
  • ইভেন্ট বা অনুষ্ঠান ব্যবস্থাপনায়

জেনারেটর ব্যবহারের সময় যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখবেন

???? নিয়মিত সার্ভিসিং করুন
⛽ নির্দিষ্ট ফুয়েল ব্যবহার করুন
???? কুলিং সিস্টেম সচল আছে কিনা দেখুন
⚡ অতিরিক্ত লোড দেওয়া যাবে না
???? অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা রাখুন

শেষ কথা

জেনারেটর কেবল একটি যন্ত্র নয়, এটি বিদ্যুৎ বিভ্রাটে আমাদের ভরসা। এর কাজের প্রক্রিয়া বুঝতে পারলে ব্যবহার আরও সচেতন ও নিরাপদ হবে। নিজের বাসা, ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠানের জন্য সঠিক ক্ষমতার একটি জেনারেটর বেছে নিয়ে আপনি নিশ্চিত করতে পারেন নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ। জেনারেটর সম্পর্কে আরো জানতে ভিজিট করুন

 

Electrodoc অ্যাপ: ইলেকট্রনিকসের সহজ ক্যালকুলেশন টুল

0
ElectroDoc - ইলেকট্রনিক্স ক্যালকুলেশন করুন সহজেই
ElectroDoc - ইলেকট্রনিক্স ক্যালকুলেশন করুন সহজেই

ইলেকট্রনিক্সের শিক্ষার্থী ও পেশাদারদের জন্য Electrodoc অ্যাপ: এক নজরে

আজ আমরা পরিচিত হবো এমন একটি অ্যাপের সঙ্গে, যা ইলেকট্রনিকস নিয়ে কাজ করা সকলের জন্য অপরিহার্য। শিক্ষার্থী থেকে পেশাদার, সবাই এই টুলটি ব্যবহার করে জটিল ক্যালকুলেশন মুহূর্তেই সহজে করতে পারবেন। অ্যাপটির নাম Electrodoc, যা আপনি গুগল প্লে স্টোরে সহজেই খুঁজে পাবেন। চলুন, এর অসাধারণ ফিচার এবং ব্যবহারিক দিকগুলো নিয়ে বিশ্লেষণ করি।


Electrodoc: সহজ ইলেকট্রনিক ক্যালকুলেশন হাতের মুঠোয়

Electrodoc একটি অত্যন্ত কার্যকর অ্যাপ, যা বিভিন্ন ইলেকট্রনিক উপাদানের ক্যালকুলেশন থেকে শুরু করে ডায়াগ্রাম ও রেফারেন্স তথ্য সহজেই সরবরাহ করে। এই অ্যাপটি মূলত চারটি প্রধান ট্যাব নিয়ে সাজানো:

  1. Calculation (গণনা)
  2. Pin-Outs (পিন আউট ডায়াগ্রাম)
  3. Resources (উপকরণ)
  4. Plugins

এখানে আমরা অ্যাপটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ Calculation ট্যাবটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।

সহজ ইলেকট্রনিক ক্যালকুলেশন হাতের মুঠোয় - ElectroDoc
সহজ ইলেকট্রনিক ক্যালকুলেশন হাতের মুঠোয় – ElectroDoc

Calculation ট্যাবের ফিচারসমূহ

রেজিস্টর কালার কোড 

আপনার হাতে থাকা রেজিস্টরের কালার কোডের সাহায্যে এর মান নির্ণয় করুন।

  • উদাহরণ: একটি 1k ওহম রেজিস্টরের কালার কোড হবে বাদামী → কালো → লাল → সোনালী
    এটি ইনপুট দিলে অ্যাপটি সাথে সাথেই রেজিস্টরের মান দেখাবে।

যেমন, আপনার কাছে থাকা রেজিস্টর যত ব্যান্ডের, তত ব্যান্ড সিলেক্ট করার অপশন পাবেন। তীর চিহ্ন দেয়া থ্রি ডট আইকনে ট্যাপ করলে এখানে বিভিন্ন ব্যান্ড সিলেক্ট করতে পারবেন।

রেজিস্টরের কালার কোডের সাহায্যে এর মান নির্ণয়
রেজিস্টরের কালার কোডের সাহায্যে এর মান নির্ণয়

এখানে বর্তমানে 4 Bands সিলেক্ট করা আছে। আপনি চাইলে 3, 5, 6 Bands ও সিলেক্ট করতে পারবেন।

রেজিস্টরের কালার কোডের সাহায্যে এর মান নির্ণয়
রেজিস্টরের কালার কোডের সাহায্যে এর মান নির্ণয়

রেজিস্টর এর ভ্যালু বসানোর জন্য প্রথমে রেজিস্টর এর সোনালী কালার যে ব্যান্ড টা আছে, সেটা হাতের ডান দিকে রেখে, এরপর যথাক্রমে কালার কোড বসাতে হবে।

রেজিস্টরের সোনালী ব্যান্ড টিকে হাতের ডান দিকে রাখতে হবে
রেজিস্টরের সোনালী ব্যান্ড টিকে হাতের ডান দিকে রাখতে হবে

উদাহরণস্বরূপ: যদি আমার কাছে একটা 1K ওহমের রেজিস্টর থাকে, তাহলে এটার সোনালী ব্যান্ডটা ডান দিকে রেখে যথাক্রমে (বাদামী> কালো> লাল> সোনালী) কালার কোড বসালে রেজিস্টরের ভ্যালু জানতে পারলাম 1K এবং এর টলারেন্স ±৫ পারসেন্ট।

SMD রেজিস্টর কোড ক্যালকুলেটর

সার্কিট বোর্ডে থাকা SMD রেজিস্টরের কোড থেকে এর মান বের করতে পারবেন।

SMD রেজিস্টরের ভ্যালু নির্ণয়
SMD রেজিস্টরের ভ্যালু নির্ণয়

এখানে আমরা পিসিবিতে থাকা বিভিন্ন SMD রেজিস্টর এর উপর লিখা কোডটা বসিয়ে দিলেই এই রেজিস্টর এর মান কত জানতে পারব।

  • উদাহরণ: 103 কোডের একটি SMD রেজিস্টরের মান হবে 10k ওহম

ওহমস ল ক্যালকুলেটর

ওহম’স ল ব্যবহার করে যেকোনো দুটি প্যারামিটার (কারেন্ট, ভোল্টেজ, রেজিস্ট্যান্স) ইনপুট দিলে তৃতীয়টি নির্ণয় করা যাবে।

ওহমস ল ক্যালকুলেটর
ওহমস ল ক্যালকুলেটর

উদাহরণ: আমি একটা ১২ ভোল্টের ডিসি পাওয়ার সোর্স থেকে ১০ ওহম রেজিস্ট্যান্স বিশিষ্ট একটা লোড ব্যবহার করলে, এই মান গুলো এখানে ইনপুট দিলে দেখতে পাচ্ছি আমার সার্কিটে 1.2 A এর কারেন্ট প্রবাহিত হচ্ছে। এবং সেই সাথে কতটা পাওয়ার খরচ হচ্ছে সেটাও এতে দেখা যায়।

আবার ধরা যাক আমি ১২ ভোল্ট ৫ এম্পিয়ার এর একটা পাওয়ার সোর্স থেকে এমন একটা লোড চালাতে চাচ্ছি, যেই লোডে আমি যত এম্পিয়ার দিব সে তত এম্পিয়ার নিতে থাকবে। কিন্তু আমি চাচ্ছি আমার লোডটা যেন 1.2A এর বেশি কারেন্ট নিতে না পারে। মানে কারেন্ট লিমিট করতে চাচ্ছি।

সেক্ষেত্রে আমি ১০ ওহমের একটা রেজিস্টর ব্যবহার করলে আমি সার্কিটে 1.2 A কারেন্ট লিমিট করতে পারব। আমার লোড 1.2 এম্পিয়ার এর বেশি কারেন্ট নিতে পারবে না। এক্ষেত্রে ১০ ওহমের যেই রেজিস্টরটা আছে, সেটা 14.4 ওয়াট বিদ্যুৎ খরচ করবে।

ভোল্টেজ ডিভাইডার ক্যালকুলেটর

দুটি রেজিস্টর ব্যবহার করে ভোল্টেজ ডিভাইড করার ক্যালকুলেশন করা যাবে এই ইলেকট্রডক ক্যালকুলেটরের সাহায্যে।

ভোল্টেজ ডিভাইডার ক্যালকুলেটর
ভোল্টেজ ডিভাইডার ক্যালকুলেটর

ভোল্টেজ ডিভাইডার একটি মৌলিক ইলেকট্রনিক সার্কিট যা দুটি রেজিস্টরের মাধ্যমে একটি আউটপুট ভোল্টেজ উৎপন্ন করে। এটি সাধারণত উচ্চ ভোল্টেজের সোর্স থেকে একটি নির্দিষ্ট কম ভোল্টেজ তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়।

  • উদাহরণ: আমি ৫ ভোল্টের একটা পাওয়ার সোর্স থেকে 2.20 ভোল্টের একটা আউটপুট নিতে চাচ্ছি, যেটা থেকে আমি 100k ওহমের একটা লোড চালাবো। সেক্ষেত্রে আমার 6k ওহম এবং 5k ওহমের দুটি রেজিস্টর সোর্সের সাথে সিরিজে সংযোগ করতে হবে। তাহলে দুটি রেজিস্টর এর সংযোগ পয়েন্টে আমি 2.212 ভোল্ট অর্থাৎ প্রায় 2.20 ভোল্ট পাব।

রেজিস্টর সিরিজ প্যারালাল

বাজারে না পাওয়া কোনো রেজিস্টরের মান কিভাবে সিরিজ বা প্যারালাল সংযোগে তৈরি করা যায় তা নির্ণয় করা যায় সহজেই এই এপ দিয়ে।

রেজিস্টর সিরিজ প্যারালাল
রেজিস্টর সিরিজ প্যারালাল
  • উদাহরণ: ধরা যাক আমার 7.5 ওহম বা তার আসেপাশের একটা রেজিস্টর দরকার। কিন্তু এটি এই মুহূর্তে আমার কাছে নেই। কিন্তু আমার কাছে 33k এবং 10k এর দুটি রেজিস্টর আছে। তাহলে আমি যদি এই দুটো রেজিস্টর প্যারালাল করে দেই, তাহলে আমি 7.674 ওহমের একটা রেজিস্টর পেয়ে যাবো। অথবা যদি এই মানের রেজিস্টর না থাকে, তাহলে অন্যান্য যেসব মানের রেজিস্টর আমার কাছে আছে, সেসব মান এখানে সিরিজ বা প্যারালালে ইনপুট দিয়ে আমার কাঙ্ক্ষিত রেজিস্ট্যান্স পাবার জন্য কোন রেজিস্টর কিভাবে ব্যবহার করলে সেই মান পেতে পারি, এর ক্যালকুলেশন করে নিতে পারি।

এলইডি রেজিস্টর ক্যালকুলেটর

বিভিন্ন ভোল্টেজের সোর্স থেকে এলইডি চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় রেজিস্টরের মান নির্ধারণ করুন সহজেই।

এলইডি রেজিস্টর ক্যালকুলেটর
এলইডি রেজিস্টর ক্যালকুলেটর
  • উদাহরণ: একটা ৫ ভোল্টের পাওয়ার সোর্স থেকে যদি আমি একটি 4V, 500mA এর একটা লাইট জ্বালাতে চাই সেক্ষেত্রে এই মান গুলো এখানে ইনপুট দিলেই দেখতে পাচ্ছি ২ ওহম এর একটি রেজিস্টর ব্যবহার করতে হবে।

আবার এতে আরও একটা ফিচার আছে। যেমন: আমি ১২ ভোল্টের একটা পাওয়ার সোর্স থেকে ৫ টা 2V, 20 mA এর ছোট লাইটগুলো একসাথে জ্বালাতে চাচ্ছি।

সেক্ষেত্রে এই প্যারামিটার গুলো ইনপুট দিয়ে। তীর চিহ্ন দেয়া জায়গায় ৫ সিলেক্ট করে দিলেই এপ্লিকেশনটি ক্যালকুলেট করে দিয়েছে যে আমার ১০০ ওহম এর রেজিস্টর ব্যবহার করতে হবে। নিচের ছবিতেই তা দেখতে পাচ্ছেন-

এক সাথে ৫টি এলইডি জ্বালানোর জন্য ক্যালকুলেশন
এক সাথে ৫টি এলইডি জ্বালানোর জন্য ক্যালকুলেশন

ভোল্টেজ ড্রপ ক্যালকুলেটর

খুব সহজেই এই ইলেকট্রডক এপ দিয়ে তারের ভোল্টেজ ড্রপ ও পাওয়ার লস নির্ণয় করতে পারবেন।

একটা তারের ভোল্টেজ ড্রপ কত হতে পারে?
একটা তারের ভোল্টেজ ড্রপ কত হতে পারে?
  • উদাহরণ: আমি ১২ ভোল্টের একটা সোর্স থেকে ১০ মিটার দূরে একটি ২ এম্পিয়ার এর লোড চালাতে চাচ্ছি। এক্ষেত্রে আমি যদি ১.৫mm² এর কপারের তার ব্যবহার করি, তাহলে এর ফলে আমার 472.572mV (মিলি ভোল্ট) ভোল্টেজ ড্রপ হবে, লোডের প্রান্তে ভোল্টেজ পাব 11.527 V , পাওয়ার লস হবে 945.145 mW. যা আমরা এই এপ্লিকেশনটার মাধ্যমে মুহূর্তের মধ্যেই জেনে নিতে পারলাম।  কপারের তার ব্যবহার করলে ১০ মিটার দূরে 472.572mV ভোল্টেজ ড্রপ হবে।

এডজাস্টেবল ভোল্টেজ রেগুলেটর ক্যালকুলেটর

“Adjustable voltage regulator” এই অপশন দিয়ে LM317 এডজাস্ট্যাবল ভোল্টেজ রেগুলেটর ব্যবহার করে ভোল্টেজ কমানোর জন্য প্রয়োজনীয় মানের রেজিস্টর নির্ণয় করা যায়।

এডজাস্টবল ভোল্টেজ রেগুলেটর ক্যালকুলেটর
এডজাস্টবল ভোল্টেজ রেগুলেটর ক্যালকুলেটর

যেমন: ধরা যাক আমি ১২ ভোল্টের একটা পাওয়ার সোর্স থেকে লিনিয়ার 8V আউটপুট নিতে চাচ্ছি। সেক্ষেত্রে আমার R1 এ 2k ওহম এর রেজিস্টর এবং R2 তে 10k ওহম রেজিস্টর ব্যবহার করলেই আমি রেগুলেটর থেকে লিনিয়ার ৮ ভোল্ট আউটপুট পাব।

এর সাথে এতে আরও একটা ফিচার আছে। আমি যদি আমার ব্যবহার করা লোডের কারেন্ট রেটিং এতে ইনপুট করি, তাহলে নিচে দেখতে পাব এই রেগুলেটরটা কত ওয়াট পাওয়ার লস করবে।

এডজাস্টেবল ভোল্টেজ রেগুলেটর কত ওয়াট খরচ করছে তা নির্ণয়
এডজাস্টেবল ভোল্টেজ রেগুলেটর কত ওয়াট খরচ করছে তা নির্ণয়

যেমন:- আমি যদি 300mA এর একটা লোড ব্যবহার করি। তাহলে নিচে দেখা যাচ্ছে P (IC) = 1.2W. অর্থাৎ 300 mA কারেন্ট ব্যবহার করলে আইসিটা ১.২ ওয়াট পাওয়ার লস করবে।

পাওয়ার ক্যালকুলেটর

“Power Calculator” এর মাধ্যমে এসি এবং ডিসি লোডের পাওয়ার ক্যালকুলেট করা যায়।

পাওয়ার ক্যালকুলেটর
পাওয়ার ক্যালকুলেটর

আমরা যদি এসি সিঙ্গেল ফেজ এর একটি লোডের ওয়াট ক্যালকুলেট করতে যাই। তাহলে লোডের কারেন্ট, সাপ্লাই ভোল্টেজ এবং পাওয়ার ফ্যাক্টর এর মান ইনপুট করলেই কত ওয়াটের লোড সেটা ক্যালকুলেট করা যাবে।

আমরা যদি ডিসি কারেন্টের একটি লোডের ওয়াট ক্যালকুলেট করতে চাই। তাহলে লোডের কারেন্ট এবং সাপ্লাই ভোল্টেজ এর মান ইনপুট করলেই কত ওয়াটের লোড সেটা ক্যালকুলেট করা যাবে।

আবার অন্যভাবে যদি আমাদের ভোল্টেজ এবং ওয়াট জানা থাকে, তাহলে এগুলো ইনপুট দিলে এর মাধ্যমে সহজেই লোডের কারেন্ট জানা যাবে।

ডিসি কারেন্টের একটি লোডের ওয়াট ক্যালকুলেট
ডিসি কারেন্টের একটি লোডের ওয়াট ক্যালকুলেট

যেমন:- আমার কাছে একটা ৪ ভোল্ট ৫ ওয়াটের একটা এলিডি লাইট রয়েছে, যার কারেন্ট রেটিং আমি জানতে চাই। সেক্ষেত্রে আমি ভোল্টেজ এবং এক্টিভ পাওয়ার অর্থাৎ লাইটের ওয়াট ইনপুট দিলেই কারেন্ট রেটিং জানতে পারব। অর্থাৎ এই তিনটা প্যারামিটার এর যেকোনো দুটি প্যারামিটার জানা থাকলে অন্য প্যারামিটার জানা যাবে।

এছাড়াও এটি দিয়ে এসি সিঙ্গেল ফেজ এবং থ্রি ফেজ এর পাওয়ার বা কারেন্ট অথবা ভোল্টেজ ক্যালকুলেট করা যাবে।

এসি থ্রি ফেজ বা সিঙ্গেল ফেজ পাওয়ার ক্যালকুলেটর
এসি থ্রি ফেজ বা সিঙ্গেল ফেজ পাওয়ার ক্যালকুলেটর

Pin-Outs ট্যাব

এই ট্যাবে বিভিন্ন পোর্ট, কানেক্টর এবং আইসির পিন আউট ডায়াগ্রাম সহজেই দেখতে পাবেন। যেখান থেকে সহজে বিভিন্ন পোর্ট এবং কানেক্টর এর পিন আউট ডায়াগ্রাম দেখা যায়।

বিভিন্ন পোর্ট এবং কানেক্টর এর পিন আউট
বিভিন্ন পোর্ট এবং কানেক্টর এর পিন আউট
  • উদাহরণ: USB, HDMI, RJ45 ইত্যাদি পোর্টের সংযোগ ডায়াগ্রাম। উপরের চিত্রে বিস্তারিত দেয়া আছে আর মূল ইলেকট্রডক এপ টিতে পিন আউট ভালো ভাবে দেখতে পাবেন।

Resources ট্যাব

এই ট্যাবে বিভিন্ন আইসির পিন আউট, ওয়্যার সাইজ, স্ট্যান্ডার্ড ক্যাপাসিটরস লিস্ট, সিম্বল এবং এর নাম ইত্যাদি ইত্যাদি অনেক বিষয় আছে। যা ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন। যেগুলো কাজ করার সময় অনেক কাজে দিবে।

Resources ট্যাবে বিভিন্ন আইসির পিন আউট, ওয়্যার সাইজ, স্ট্যান্ডার্ড ক্যাপাসিটরস লিস্ট, সিম্বল এবং এর নাম ইত্যাদি ইত্যাদি অনেক বিষয় আছে
Resources ট্যাবে বিভিন্ন আইসির পিন আউট, ওয়্যার সাইজ, স্ট্যান্ডার্ড ক্যাপাসিটরস লিস্ট, সিম্বল এবং এর নাম ইত্যাদি ইত্যাদি অনেক বিষয় আছে

Electrodoc ব্যবহারের কিছু টিপস:

এখন এপ্লিকেশনটির বেসিক ইউজ সম্পর্কে কিছু টিপস দেয়া যাক। এরকম সবুজ বক্সের উপর ট্যাপ করলে এর ভেলু চেঞ্জ করা যাবে। ভ্যালু চেঞ্জ করার সময় এর পাশেই এর একক সিলেক্ট করার অপশন থাকবে। যেখানে প্রয়োজনীয় একক সিলেক্ট করা যাবে।

এরকম সবুজ বক্সের উপর ট্যাপ করলে এর ভেলু চেঞ্জ করা যাবে
এরকম সবুজ বক্সের উপর ট্যাপ করলে এর ভেলু চেঞ্জ করা যাবে
যেখানে প্রয়োজনীয় একক সিলেক্ট করা যাবে
যেখানে প্রয়োজনীয় একক সিলেক্ট করা যাবে

অনেক সময় কোনো ভ্যালুকে ফিক্সড রাখার প্রয়োজন হলে নিচে থাকা Block a value অপশনে ক্লিক করে সেই ভ্যালুকে ফিক্সড করে রাখা যাবে।

কোনো ভ্যালুকে ফিক্সড রাখার প্রয়োজন হলে
কোনো ভ্যালুকে ফিক্সড রাখার প্রয়োজন হলে

ক্যালকুলেশনে রেজিস্টর রিলেটেড কিছু থাকলে রেজিস্টর এর টলারেন্স সিলেক্ট করার অপশন থাকে। যেখান থেকে প্রকৃত টলারেন্স সিলেক্ট করার মাধ্যমে একুরেট ক্যালকুলেশন করা যায়। নিচের ছবি দেখুন-

রেজিস্টরের প্রকৃত টলারেন্স সিলেক্ট করার মাধ্যমে একুরেট ক্যালকুলেশন করা যায়।
রেজিস্টরের প্রকৃত টলারেন্স সিলেক্ট করার মাধ্যমে একুরেট ক্যালকুলেশন করা যায়।

সংক্ষেপে বলা যায় যেঃ

  1. সবুজ বক্সের উপর ট্যাপ করে ইনপুট ভ্যালু পরিবর্তন করতে পারবেন।
  2. কোনো ভ্যালুকে স্থির রাখতে চাইলে Block a Value অপশন ব্যবহার করুন।
  3. রেজিস্টর ক্যালকুলেশনে টলারেন্স সিলেক্ট করে আরও নির্ভুল ফলাফল পেতে পারেন।

ElectroDoc নিয়ে বিস্তারিত ভিডিও

আমাদের ইলেকট্রনিক্সের ইউটিউব চ্যানেলে ইলেকট্রডক – ElectroDoc নিয়ে বিস্তারিত ব্যবহারিক টিউটোরিয়াল ভিডিও বের হয়েছে। দেখুন এখনি –


উপসংহার

Electrodoc অ্যাপটি ইলেকট্রনিকস শিক্ষার্থী এবং পেশাদারদের জন্য একটি অত্যন্ত সহায়ক হাতিয়ার। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং কাজকে নির্ভুল ও সহজ করে তোলে। আপনারা যদি এই অ্যাপের অন্যান্য ফিচার নিয়ে জানতে চান, তাহলে আমাদের কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। আপনার মতামতই আমাদের নতুন আর্টিকেল লেখার প্রেরণা।

Electrodoc দিয়ে আপনার কাজ সহজ করুন—আজই ব্যবহার শুরু করুন!

সহজ কলিংবেল তৈরি

0
ফেলে দেয়া জিনিস দিয়ে সহজ কলিং বেল তৈরি করুন নিজেই
ফেলে দেয়া জিনিস দিয়ে সহজ কলিং বেল তৈরি করুন নিজেই

আজকে আমরা কিভাবে খুব সহজেই একটা কলিং বেল তৈরি করা যায় সেটা শিখবো।

এর জন্য আমাদের প্রয়োজন হবে:-
১: একটা মোবাইলের পুরাতন বা নষ্ট চার্জার।
২: একটা বার্জার (Buzzer)
৩: একটা বেল পুশ সুইচ
৪: প্রয়োজনীয় তার

মোবাইলের পুরাতন চার্জার
মোবাইলের পুরাতন চার্জার

প্রথমে এরকম একটা পুরাতন বা নষ্ট মোবাইলের চার্জার নিতে হবে।

চার্জার খুলে মডিফাই করা হচ্ছে
চার্জার খুলে মডিফাই করা হচ্ছে

এবার চার্জারটা খুলে সেখানে ২২০ ভোল্টের সিরিজ লাইন কানেকশন করতে হবে। (এসময় অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। এসব কাজে পারদর্শী না হলে বাসায় চেষ্টা না করাই উত্তম)

ভোল্টেজ চেক করা হচ্ছে
ভোল্টেজ চেক করা হচ্ছে

এবার 220v এসি সিরিজ লাইন থেকে সার্কিটে পাওয়ার দিতে হবে। পাওয়ার দিয়ে মাল্টিমিটার দিয়ে চার্জারের সার্কিটের আউটপুট পরীক্ষা করে দেখতে হবে যে সার্কিট থেকে আউটপুট পাওয়া যাচ্ছে কি-না। যদি আউটপুট ৫ ভোল্ট পাওয়া যায়, তাহলে সার্কিট ভালো আছে। এই সার্কিট দিয়ে কাজ করা যাবে।

আমাদের প্রয়োজন হবে এরকম একটি বাজার (Buzzer
আমাদের প্রয়োজন হবে এরকম একটি বাজার (Buzzer

এবার আমাদের প্রয়োজন হবে এরকম একটি বার্জার (Buzzer)। এটা যেকোনো ইলেকট্রনিকস এর দোকানে খোঁজ করলেই পাওয়া যাবে। দাম ২০ থেকে ৩০ টাকা হতে পারে।

বাজার এর সাথে চার্জারের সংযোগ স্থাপন
বাজার এর সাথে চার্জারের সংযোগ স্থাপন

যদি চার্জারের সার্কিট ঠিক থাকে তাহলে এর আউটপুটে বাজার (Buzzer)-টি এর পোলারিটি মেইনটেইন করে চার্জারের সাথে সংযোগ করতে হবে। পোলারিটি অর্থাৎ + ও – অবশ্যই ভালভাবে দেখে লাগাতে হবে।

এরপর বাজার সহ সার্কিটি কোন বক্সের ভেতর অথবা চার্জারে কেসিং এর ভেতর সেট করতে হবে। অবশ্যই বার্জারে ছিদ্র যুক্ত মুখটা খোলা রাখতে হবে। কোনোকিছু দিয়ে আবদ্ধ করা যাবে না। (আমি পরীক্ষামূলক প্রটোটাইপ তৈরি করেছি দেখে এভাবে কানেক্টর দিয়ে সংযোগ করেছি)।

চার্জারে এসি লাইন সংযোগের ব্যবস্থা করা হচ্ছে
চার্জারে এসি লাইন সংযোগের ব্যবস্থা করা হচ্ছে

এবার চার্জারের এসি ইনপুট লাইনে দুটি তার সংযোগ করতে হবে। যেটা দিয়ে আমরা বিদ্যুৎ সাপ্লাই দিব।

সহজ কলিংবেল এর সার্কিট ডায়াগ্রাম
সহজ কলিংবেল এর সার্কিট ডায়াগ্রাম

এবার বেল পুশ সুইচ ও আমাদের তৈরি করা কলিং বেল ২২০ ভোল্টের লাইনের সাথে উপরের ডায়াগ্রামের মতো কানেকশন করতে হবে।

সব সংযোগ দেবার পরে দেখতে যেমন হবে
সব সংযোগ দেবার পরে দেখতে যেমন হবে

আপনাদের দেখানো জন্য আমি এভাবে প্রোটটাইপ কানেকশন করেছি। প্রথমে টেস্ট করার জন্য অবশ্যই ২২০ ভোল্টের সিরিজ লাইন ব্যবহার করতে হবে। অন্যথায় ভুলে শর্ট সার্কিট হয়ে গেলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এবার টেস্ট করার পালা… নিচের ভিডিওটি দেখুন

আশা করি ভিডিওতে দেখতে পারছেন কলিং বেল টা কিভাবে কাজ করছে। এখানে আমি এই মাল্টিপ্লাগটা একটা সিরিজ লাইনে সংযোগ করেছি। যাতে কানেকশনে কোনো ভুল থাকলে কোনো রকমের দুর্ঘটনা না ঘটে।

যদিও এর সাউন্ডটা বেশ হাস্যকর। তবে আমি প্রায় ৫ বছর ধরে এভাবে ব্যবহার করছি। এখন পর্যন্ত নষ্ট হয়নি। আর বাজারের সাইজ দেখে হয়তো মনে করতে পারেন এটা আর কেমন সাউণ্ড করবে! সেক্ষেত্রে বলতে হয় এর সাউন্ড ভালোই। যেটা কলিং বেল হিসেবে যথেষ্ট।

আরও বিস্তারিত জানতে চাইলে আমাদের ইলেকট্রনিক্স চ্যানেলে এটা নিয়ে ভিডিও দেওয়া আছে। সেটা দেখতে পারেন।

আর আজকের এই ইলেকট্রনিক্স প্রজেক্ট কেমন লাগলো সেটা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না কিন্তু।

সার্কিটে ভিসিসি, ভিইই, ভিএসএস (Vcc, Vdd, Vee, Vss) দেখি, এগুলোর অর্থ কী?

1
what is the meaning of VCC VSS VDD VEE VBE

উপরের সার্কিট ডায়াগ্রামে ভিসিসি, ভিডিডি, ভিইই, ভিএসএস (Vcc, Vdd, Vee, Vss) দেখতে পাচ্ছি যার অর্থ হয়ত আমাদের অনেকেরই অজানা। এগুলোর পরিপূর্ণ রূপ হচ্ছে-

  • Vcc = Collector supply voltage
  • Vee = Emitter supply voltage
  • Vbb = Base supply voltage
  • Vdd = Drain supply voltage
  • Vss = source supply voltage

পাওয়ার সাপ্লাই পিনের এত নাম কেন?

যখন ট্রানজিস্টর সার্কিট (বা TTL/টিটিএল আইসি সার্কিট) – এর পাওয়ার সাপ্লাই কে কালেক্টর এবং গ্রাউন্ডের মধ্যে সংযুক্ত অবস্থায় থাকে তখন এটি Vcc হিসাবে পরিগণিত হয়। সে কারণেই একে কালেক্টর সাপ্লাই ভোল্টেজ বলা হচ্ছে।

একই ভাবে এটি যদি বেস এবং গ্রাউন্ডের মধ্যে সাপ্লাই সংযুক্ত থাকে তবে আমরা এটিকে Vbb বলবো এবং এমিটার ও গ্রাউন্ডের মধ্যস্থিত হলে তাকে Vee বলে।

ট্রানজিস্টর বলতে এখানে সাধারন বাইপোলার ট্রানজিস্টর থেকে শুরু করে মসফেট/ফেট ও বোঝানো হয়েছে। (কারণ মসফেট ও একপ্রকার ট্রানজিস্টর)

নীচের চিত্রগুলো লক্ষ্য করলে বুঝতে সুবিধে হবে আশাকরি।

ট্রানজিস্টর সার্কিটে এই সাপ্লাই কে কী বলে?

ট্রানজিস্টর সার্কিটে সাপ্লাই ভোল্টেজ কে Vcc, Vbe, Vee বলে।ট্রানজিস্টরে এই সাপ্লাই ভোল্টেজ কে Vcc, Vbe, Vee বলে

ট্রানজিস্টরে এই সাপ্লাই ভোল্টেজ কে Vcc, Vbe, Vee বলে

মসফেট ও ট্রানজিস্টরের ক্ষেত্রে এই সাপ্লাই ভোল্টেজ কে কী বলবো?

যদিও মসফেট/ফেট (Mosfet/Fet) মূলত ট্রানজিস্টরেরই আরেক রূপ। কিন্তু সাপ্লাই ভোল্টেজের ক্ষেত্রে একে ভিন্ন নামে ডাকা হয়। যেমন মসফেট ও ফেট এর ক্ষেত্রে Vdd, Vss বলা হবে। যেটা কমন বাইপোলার ট্রানজিস্টরের ক্ষেত্রে VccVee বলা হতো। নিচের চিত্র দ্রষ্টব্য-

ট্রানজিস্টরের ক্ষেত্রে Vdd, Vss বলা হবে যেটা কমন বাইপোলার ট্রানজিস্টরের ক্ষেত্রে Vcc ও Vee ছিল
ট্রানজিস্টরের ক্ষেত্রে Vdd, Vss বলা হবে যেটা কমন বাইপোলার ট্রানজিস্টরের ক্ষেত্রে Vcc ও Vee ছিল

কোনটি (+) পজেটিভ আর কোনটি (-) নেগেটিভ সাপ্লাই?

FET ও BJT (সাধারন ট্রানজিস্টর) এর ক্ষেত্রে Vcc/Vdd কে (+) পজেটিভ সাপ্লাই আর Vee/Vss কে (-) নেগেটিভ ভোল্টেজ সাপ্লাই বলা হয়।

কারা এই পদ্ধতি নির্ধারন করেছে?

এই পদ্ধতিটি ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট (IEEE) দ্বারা নির্ধারিত।

আশাকরি আজকের এই লেখা থেকে ভিসিসি, ভিডিডি, ভিইই, ভিএসএস (Vcc, Vdd, Vee, Vss) সম্পর্কে সহজ ভাবে কিছু ধারণা পেলাম।

১ মিটার লম্বা একটি কন্ডাক্টর যার রোধ ২ ওহম তাকে যদি টেনে দ্বিগুণ লম্বা করি তাহলে ঐ কন্ডাক্টরটির রোধ কত হবে? কীভাবে হবে?

0
একটি তারকে টেনে লম্বা করলে রোধ কত হবে?
একটি তারকে টেনে লম্বা করলে রোধ কত হবে?

একটি তারকে টেনে লম্বা করলে কী হবে?

একটি পরিবাহী বা কন্ডাক্টরের রোধ ঐ কন্ডাক্টর তৈরির উপাদানের ওপর নির্ভর করে। এর বৈশিষ্ট্যগুলিকে Ro (ρ) হিসাবে প্রকাশ করা হয়। একই সাথে, কন্ডাকটরের রোধ নির্ভর করে তার দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফলের উপর। সুতরাং, কোন তারকে টেনে লম্বা করলে সেটির রোধ বা রেজিস্ট্যান্স বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু কতটুকু বৃদ্ধি পাবে?

একটু সহজ ভাবে বললেঃ

তারের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধির কারণে, এটি পাতলা এবং দীর্ঘ হবে।
1. যদি এটি পাতলা হয় তাহলে বৈদ্যুতিক চার্জ এটির মাধ্যমে চলাচল করা কঠিন হবে, তাই রোধ বৃদ্ধি পাবে।
2. আবার এর সাথে এই তারটি যদি দীর্ঘ হয়, চার্জ টিকে আরও বেশি পথ অতিক্রম করতে হবে, তাই এর রোধের পরিমান ও বৃদ্ধি পাবে।

এবার আসি একটু গাণিতিক ব্যাখ্যায়

এ বিষয়ে একটু বীজগণিত ও পদার্থ-বিজ্ঞানের সাহায্য নেওয়া যাক-
আমরা জানি যে,

Resistance = (rho ρ) x (length ÷ Cross-Sectional Area)

এখানে,

(rho ρ) = ঘনত্ব

length = তারের দৈর্ঘ্য

Cross-Sectional Area = তারের প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল

যেহেতু, তারের দৈর্ঘ্য দ্বিগুণ হয়েছে, তাই অবশ্যই ক্রস-সেকশনাল এরিয়া বা তারের প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফলে কিছু পরিবর্তন হবে।
আবার আমরা এও জানি যে,

আয়তন = ভর/ঘনত্ব (volume = Mass/Density)

এবং যেহেতু দৈর্ঘ্যের পরিবর্তনের কারণে ভর বা ঘনত্ব কোনোটাই পরিবর্তিত হয়নি,
তাই আয়তনকে অবশ্যই স্থির থাকতে হবে।
আমরা আরও জানি যে,

আয়তন = দৈর্ঘ্য x ক্রস সেকশনাল এরিয়া
(Volume = Length x Cross Sectional Area)

আমাদের ক্ষেত্রে, তারের দৈর্ঘ্য দ্বিগুণ হয়েছে।
আবার তারের ভেতরে থাকা উপাদান কিন্তু বাড়ে নি। একই আছে।
তাই ক্রস-সেকশনাল এরিয়া অর্ধেক হয়ে যাবে৷
এভাবে আমরা পাই,
নতুন ক্রস-সেকশনাল এরিয়া = (1/2) x পুরানো ক্রস-সেকশনাল এরিয়া
অর্থাৎ,
নতুন দৈর্ঘ্য = 2 x পুরানো তারের দৈর্ঘ্য।
নতুন প্রাপ্তমাণ টি আগের সূত্রে দিলেই পেয়ে যাবো রোধ কত –
R = (rho ρ) x (length ÷ Cross-Sectional area)
= (rho ρ) x 2 x length ÷ (S/2)
= (rho ρ) x 4 x length / S
= 4 x R
আবার, প্রশ্ন অনুযায়ী R এর মান ২ ওহম,
সুতরাং উত্তর হচ্ছেঃ
= 4 x 2
= 8 Ohms বা ওহম
এই গাণিতিক প্রমাণ দ্বারা আমরা সহজেই উপসংহারে পৌঁছাতে পারি যে তারের দৈর্ঘ্য দ্বিগুণ হওয়ার কারণে রেজিস্ট্যান্স বা রোধ চারগুণ বৃদ্ধি পাবে।

পরিবাহীর দৈর্ঘ্য অর্ধেক করা হলে রোধের কী পরিবর্তন হবে?

এই ক্ষেত্রে, তারের দৈর্ঘ্য অর্ধেক হয়েছে।
আবার তারের ভেতরে থাকা উপাদান কিন্তু বাড়ে নি। একই আছে।
তাই ক্রস-সেকশনাল এরিয়া দ্বিগুণ হয়ে যাবে৷
এক্ষেত্রে উপরের সূত্রসমূহ প্রয়োগ করে আমরা সহজেই বুঝতে পারি যে পরিবাহীর দৈর্ঘ্য অর্ধেক করা হলে রোধ চারগুণ কমে যাবে।

Practical Electronics for Inventors, 4th Edition PDF free download

4
Practical Electronics for Inventors, 4th Edition PDF free download

Practical Electronics for Inventors, 4th Edition – প্র্যাক্টিকাল ইলেকট্রনিক্স ফর ইনভেন্টরস (৪র্থ প্রকাশ)

Practical Electronics for Inventors PDF বইটিতে ইলেকট্রিকাল ও ইলেকট্রনিক্সের অসংখ্য সূত্র, গণিত, চিত্র সহ, সহজ ভাষায় সবিস্তারে লেখা আছে। প্রচুর অংক কষে সার্কিট ডায়াগ্রামের উপস্থাপনায় লেখকদ্বয় প্রমান দিয়েছেন সব কিছুর বিস্তারিত।
কেউ যদি আসলেই ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্সের খুটিনাটি বিষয় বিস্তারিত ভাবে জানতে চান তাহলে তার জন্য এই বইটি অবশ্যই পাঠ্য। দূর্ভাগ্য যে এটি ইংরেজিতে। কিন্তু একটি জিনিস মানতেই হবে যে ইঞ্জিনিয়ারিং বেশিরভাগ বই ইংরেজিতেই হয়। এমনকি আপনার হাতের ঐ মাল্টিমিটার টিও কিন্তু ইংরেজিতেই ভ্যালু দেখায়।
মাল্টিমিটারের কথা যখন এসেই গেল, এই PDF বইয়ের একাংশের লেখা কমেন্টে তুলে ধরছি। সাধারন মাল্টিমিটার ও ট্রু- আর.এম.এস মাল্টিমিটারের (True RMS Multimeter) মধ্যেকার পার্থক্য। আর তা কেন প্রয়োজন। এমনকি বর্তমানে বাজারে প্রাপ্ত সস্তা True RMS মাল্টিমিটার গুলো আসলে কীভাবে কাজ করে তার ও কিঞ্চিত আভাস দেয়া হয়েছে।
এই টাইপ মিটার দিয়ে ট্রায়াংগাল বা স্কয়ার ওয়েভের True RMS value পাওয়া সম্ভব নয়।
এই টাইপ মিটার দিয়ে ট্রায়াংগাল বা স্কয়ার ওয়েভের True RMS value পাওয়া সম্ভব নয়।

সস্তা True RMS multimeter গুলো ধরেই নেয় যে আপনার লাইন ওয়েভ সাধারন সাইনুসাইডাল ওয়েভের মত। আর সে ভাবেই ক্যালকুলেশন করে আউটপুটে রেজাল্ট দেখায়। কিন্তু এই টাইপ মিটার দিয়ে ট্রায়াংগাল বা স্কয়ার ওয়েভের True RMS value পাওয়া সম্ভব নয়। তাই লেখা আছে বই থেকে নেয়া উপরের ছবিতে

আবার কোন ইলেকট্রিক্যাল বা ইলেকট্রনিক্স সার্কিটে পাওয়ার লস বিরাট একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু –
কীভাবে হিসাব করবো এই পাওয়ার লস?
কোথায় কোথায় এই পাওয়ার লস ঘটছে?
জানেন কি যে ব্যাটারির ও নিজস্ব পাওয়ার লস আছে?
সব কিছুরই সুন্দর গাণিতিক ব্যখ্যা বইয়ে দেয়া আছে।
PWER LOSS Practical Electronics for Inventors
এমন কি জেনারেটর থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ কিভাবে সাইন ওয়েভে রূপান্তরিত হয় তার ও চিত্র সহ সুন্দর ব্যখ্যা বইয়ে দেয়া হয়েছে।
এছাড়াও, ব্যাটারি থেকে ০ ভোল্ট আর রেফারেন্স গ্রাউন্ড পয়েন্ট বের করার পদ্ধতিও সচিত্র বর্ননা আছে
ব্যাটারি থেকে ০ ভোল্ট আর রেফারেন্স গ্রাউন্ড পয়েন্ট বের করার পদ্ধতি
ব্যাটারি থেকে ০ ভোল্ট আর রেফারেন্স গ্রাউন্ড পয়েন্ট বের করার পদ্ধতি
সব মিলিয়ে বইটি মাস্ট রিড, যদি আপনি একজন-
#ইনভেন্টর
#ইঞ্জিনিয়ার
#প্রফেশনাল কিংবা এই লাইনে #দক্ষ #হবিস্ট হতে চান।
 এই দারুন PDF বইটি ডাউনলোড করুন এখান থেকে – Practical Electronics for Inventors PDF
সবাই সুস্থ থাকবেন, ভালো থাকবেন। আর অবশ্যই আমাদের ইলেকট্রনিক্সের সাথেই থাকবেন। ধন্যবাদ।

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে হ্যান্ড ওয়াশ চ্যালেঞ্জ – হ্যান্ড ওয়াশ টাইমার তৈরি করুন সহজেই

2

করোনা ভাইরাসের ভয়াবহতা নিয়ে আপনাদের বলার মত কিছু নেই। এটি যেকোনো জায়গায় থাকতে পারে এবং খুব সহজেই স্পর্শের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে পারে। কিন্তু, আমরা যদি সহজ কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করি করোনাভাইরাস থেকে সাবধান থাকার জন্য, তাহলেই আক্রান্ত হবার সমস্যা অনেকাংশেই কমে যায়। এক্ষেত্রে ইলেকট্রনিক সার্কিট ও ব্যবহার করা যায়। বিজ্ঞান মেলার জন্যও এটি দারুন একটি প্রজেক্ট হতে পারে বটে।

করোনা ভাইরাস স্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায়, তাই আমাদের সবচেয়ে জোর দিতে হবে হাত জীবাণুমুক্ত রাখার জন্য। বিজ্ঞানীদের মতে, সাবান দিয়ে ২০ সেকেন্ডের কম সময় ধরে হাত ধোয়া হলে হাতে জীবাণু থেকে যায়।  তাই আমাদের অবশ্যই ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধুতে হবে।

আপনার মনে হতে পারে, এ আর কঠিন কী। মনে মনে ১ থেকে ২০ পর্যন্ত গুনেই তো হিসাব রাখা যায়। কিন্তু অবাক হলেও সত্যি, মনে মনে এভাবে সময়ের হিসাব রাখলে তাতে প্রায়সময়ই ভুল হয়ে যায়। আপনি কতটুকু তাড়ায় আছেন সেটার ওপর নির্ভর করবে আপনি ভুলভাবে দ্রুত গুনবেন না সঠিকভাবে ধীরে ধীরে গুনবেন। কিন্তু আমরা, দ্য টেক ল্যাবে, চেয়েছিলাম প্রযুক্তি ব্যবহার করে সহজ কোন ডিভাইস বানাতে, যা আমাদের বলে দেবে ঠিক কতক্ষণ পরে হাত ধোয়া শেষ করতে হবে। এভাবেই শুরু হলো প্রজেক্টটি।

কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা

টিউটোরিয়ালে যাওয়ার আগে কিছু কথা বলি।  এখন করোনা ভাইরাসের জন্য ইলেকট্রনিক্স ও থ্রিডি প্রিন্টিং হবিস্টরা অনেকেই বিভিন্ন ডিভাইস ডেভেলপ করছেন, যেটি খুবই ভাল একটি বিষয়। অনেকেরই ধারণা, আরডুইনো দিয়ে অবস্টাকল এভয়েডিং রোবট, লাইন ফলোয়ার রোবট ও এরকম টুকটাক কিছু বিজ্ঞান প্রজেক্ট যেগুলো দেখতে চমকপ্রদ কিন্তু বাস্তব জীবনে তেমন কাজে আসে না; এরকম প্রজেক্ট ছাড়া আর কিছু বানানো সম্ভব না। কিন্তু তাদের এ ভুল ধারণা ভেঙে দিচ্ছে এই হবিস্টরা, যারা সাধারণ কিছু কম্পনেন্টস দিয়েই করোনা ভাইরাস -সম্পর্কিত বড় বড় সমস্যা সমাধান করছে।
আমরা, দ্য টেক ল্যাব, চাচ্ছিলাম বাংলাদেশের হবিস্টদের নিয়েও এরকম কিছু করতে। শুধুমাত্র হ্যান্ডওয়াশ টাইমারের একটি টিউটোরিয়াল দিলে হয়তো খুব বেশি মানুষ বানাতো না। তাই, আমরা আপনাদের একটি চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি।

#handwashtimerchallenge

 

এই চ্যালেঞ্জে অংশগ্রহণ করার জন্য আপনাকে হ্যান্ডওয়াশ টাইমারটি বানিয়ে আপনার নাম, ডিভাইসের একটি ছবি এবং আপনার বানানোর অভিজ্ঞতা/আপনার পরিবারের ফিডব্যাক ২০০ শব্দে লিখে আমাদের দ্যা টেকল্যাব ওয়েবসাইটে (লিঙ্ক) সাবমিট করতেহবে। কৃতজ্ঞতাস্বরুপ, আমরা ই-মেইলে আপনাকে একটি ডিজিটাল সার্টিফিকেট পাঠাবো এবং ক্যাম্পেইন শেষে আমাদের ফেইসবুক পেইজে আপনার ছবি এবং আপনার অভিজ্ঞতা পোস্ট করবো।

আপনাদের মধ্যে থেকে মাত্র যদি ৫০০ জনও একটি করে হ্যান্ড ওয়াশ টাইমার (বানাতে এক ঘন্টা লাগতে পারে) বানিয়ে নিজের ঘরে ব্যবহার করেন, তাহলেই আমরা অন্তত ২০০০ মানুষকে করোনা ভাইরাস এর সংক্রমণ ঠেকাতে সাহায্য করতে পারি। অসাধারণ না আইডিয়াটা?

দরকার শুধু আপনাদের একটু সহযোগীতা। চলুন, সবাইকে দেখিয়ে দেই, ইলেকট্রনিক্স শুধুমাত্র একটি শখ নয়, বরং এটি দিয়ে বৈশ্বিক একটি সমস্যার সমাধান করাও সম্ভব!

এখানে জ্ঞাতব্য যে-

*প্রতি পরিবারে গড়ে ৪ জন থাকে  এমন ধরে হিসাব করা হয়েছে

*এই ক্যাম্পেইন পুরোপুরি একটি দাতব্য কাজ হিসাবে পরিচালিত হচ্ছে। দ্য টেক ল্যাব বা আমাদের ইলেকট্রনিক্স কেউই এ থেকে কোনো আর্থিক সুবিধা পাচ্ছে না। আমাদের ইলেকট্রনিক্স দ্য টেক ল্যাবের এই ক্যাম্পেইনটিকে মানবতার স্বার্থে সমর্থন করছে, কিন্তু আমাদের ইলেকট্রনিক্স কোনোভাবেই দ্য টেক ল্যাবের সাথে যুক্ত নয়। 

*এটি একটি ওপেন সোর্স প্রজেক্ট এবং GNU General Public License Version 3 এর আওতায় প্রকাশ করা হলো।

 

ভাইরাস প্রতিরোধে হ্যান্ড ওয়াশ টাইমার ডিভাইস

মূল আইডিয়া

হ্যান্ডওয়াশ টাইমার আপনার সোপ ডিসপেন্সারের পাশে থাকবে। টাইমারটির উপরে একটি আল্ট্রাসনিক/সোনার সেন্সর আছে। আপনি সাবান নিতে গেলেই আপনার হাতের মুভমেন্ট ডিটেক্ট করবে। এরপর টাইমারটি ২০ সেকেন্ডের জন্য চালু হয়ে যাবে। ইন্ডিকেটর এলইডি সময় নির্দেশ করবে। সবুজ এলইডিটি জ্বলে উঠলে এবং লাল এলইডিটি নিভে গেলে বুঝতে পারবেন আপনার হাত মোটামুটি জীবাণুমুক্ত হয়েছে, এখন হাত থেকে সাবান ধুয়ে ফেলা যায়। 

টাইমারটি বানাতে যা যা লাগবে

  • ১। একটি আরডুইনো ন্যানো/উনো
  • ২। একটি HC-SR04 আল্ট্রাসনিক সেন্সর
  • ৩। একটি লাল এলইডি
  • ৪। একটি সবুজ এলইডি
  • ৫। চারটি নীল এলইডি
  • ৬। একটি এনক্লোজার/বক্স 
  • ৭। ব্রেডবোর্ড ও জাম্পার ক্যাবল- ব্রেডবোর্ড ভার্সনের জন্য, অথবা ভেরোবোর্ড যদি আপনি সোল্ডার করতে চান

হ্যান্ড ওয়াশ টাইমারটির কার্যপ্রণালি

আমরা হ্যান্ড ওয়াশ টাইমারটি এমনভাবে ডিজাইন করেছি যেন যে কেউ এক-দুই ঘন্টার মধ্যেই বানিয়ে ফেলতে পারে। এটা শুধুমাত্র শিক্ষামূলক একটি ডিভাইসই নয়, বরং বর্তমান পরিস্থিতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম। হ্যান্ড ওয়াশ টাইমারে মূল কাজটি করে একটি আরডুইনো, যেটি সম্পর্কে আরো জানতে চাইলে এই লেখাটি দেখতে পারেন।সোনার সেন্সর হ্যান্ড ওয়াশ টাইমারের জন্য - করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে হাত ধুতে সহায়ক

এখানে, আরডুইনোটি একটি আলট্রাসনিক সেন্সর ও ৬টি এলইডির সাথে কানেক্টেড আছে। আরডুইনো সবসময়ই সেন্সরটির রিডিং নিচ্ছে এবং আপনার হাত ডিটেক্ট করার জন্য অপেক্ষা করছে। যখনই আপনি সাবান নেয়ার জন্য সোপ ডিসপেন্সারের সামনে হাত আনবেন, আরডুইনো আল্ট্রাসনিক সেন্সরের সাহায্যে সেটা ডিটেক্ট করে ২০ সেকেন্ডের কাউন্টডাউন শুরু করবে এবং লাল এলইডিটি জ্বালিয়ে দিবে। প্রতি ৪ সেকেন্ড পর পর একটি করে নীল এলইডি জ্বলবে যেটি দেখে আপনি বুঝতে পারবেন কতক্ষন ধরে হাত ধুচ্ছেন। সবার শেষে সবুজ এলইডি জ্বলে ওঠা ও লাল এলইডি নিভে গেলে আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনি ২০ সেকেন্ডের জন্য হাত ধুয়েছেন।

ব্রেডবোর্ড ভার্সনটি বানানো

এই প্রজেক্টটির দুটো ভার্সন আছে, ব্রেডবোর্ড ভার্সন ও ভেরোবোর্ড ভার্সন। আপনি যদি সোল্ডারিংএ অভিজ্ঞ না হন, তাহলে আমরা রিকমেন্ড করবো ব্রেডবোর্ডে সার্কিটটি বানাতে। চলুন দেখে নেয়া যাক সেজন্য কী কী করতে হবে।

হ্যান্ড ওয়াশ টাইমার সার্কিট ব্রেড বোর্ডে তৈরি - করোনা প্রতিরোধে হাত ধুতে সহায়ক

হ্যান্ড ওয়াশ টাইমার সার্কিট ব্রেড বোর্ডে তৈরী - করোনা প্রতিরোধে হাত ধুতে সহায়ক

এই সার্কিটে অল্প কয়েকটি কম্পোনেন্টস আছে, তাই ব্রেডবোর্ডে বানানো খুবই সোজা। শুধুমাত্র একটি আরডুইনো, একটি আলট্রাসনিক সেন্সর ও ছয়টি এলইডির কানেকশন দিলেই কাজ শেষ। উপরে আরডুইনো উনো এবং ন্যানো, দুটির জন্যই ব্রেডবোর্ড সার্কিট ডায়াগ্রাম দেয়া আছে। দেখে দেখে কানেকশন দিতে পারবেন। যদিও ব্রেডবোর্ডের জন্য আমরা উনো ব্যবহার করাই সাজেস্ট করবো, সেক্ষেত্রে আরডুইনোটি ব্রেডবোর্ড থেকে একটু দুরেও বসানো যাবে। এলইডি গুলোর পোলারিটি লাগানোর আগে চেক করে নিতে ভুলবেন না। সাধারণত লম্বা পিনগুলো পজিটিভ এবং খাটো পিনগুলো নেগেটিভ হয়ে থাকে। তাই, লম্বা পিনগুলো আরডুইনোর ডিজিটাল পিনে কানেক্টেড থাকবে এবং খাটো পিনগুলো আরডুইনোর গ্রাউন্ডে কানেক্টেড থাকবে। 

হ্যান্ড ওয়াশ টাইমার সার্কিট ডায়াগ্রাম - করোনা প্রতিরোধে হাত ধুতে সহায়ক

ভেরোবোর্ড ভার্সনটি বানানো

আপনার যদি সোল্ডারিং নিয়ে অভিজ্ঞতা থাকে, তাহলে পুরো সার্কিটটি ভেরোবোর্ডেও বানিয়ে ফেলতে পারেন। উপরে সার্কিট ডায়াগ্রাম দেয়া আছে, সেটি অনুসরণ করলেই চলবে। এমনকী, আপনি যদি পিসিবি বানাতে চান, তাহলে এই ইজিইডিএ (EasyEDA) ডিজাইন ফাইলটি  থেকে পিসিবিও এক্সপোর্ট করে নিতে পারেন।

সোল্ডারিং এর সময়ও খেয়াল রেখেন এলইডিগুলোর পোলারিটি ঠিক আছে কিনা। আপনি চাইলে প্রত্যেকটা এলইডির সাথে একটি করে ১৫০ ওমের রেজিস্টরও দিতে পারেন যাতে সেগুলো বেশিদিন টেকে। আমরা এই প্রজেক্টটি খুবই বিগিনার-ফ্রেন্ডলি রাখতে চেয়েছি তাই রেজিস্টর ব্যবহার করিনি। ল্যাবে ডিভাইসটি পরীক্ষা করার সময় এজন্য কোনো সমস্যাও হয়নি, যেহেতু একেকবারে মাত্র ৪ সেকেন্ডের জন্য জ্বলে থাকছে। 

কোড আপলোড করা

সার্কিটের কাজ শেষ হওয়ার পর এখন কোড আপলোড করতে হবে। কোড আপলোড করার জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন – 

  • ১। আরডুইনো আইডিই (সফটওয়ার) এ কোডটি ওপেন করে আরডুইনো বোর্ডটি কেবল দিয়ে কানেক্ট করুন। 
  • ২। উপরের টুলস মেনু থেকে বোর্ড সাবমেনুতে গিয়ে আপনার আরডুইনো বোর্ডের মডেলটি সিলেক্ট করুন। 
  • ৩। টুলস মেনু থেকে পোর্টে গিয়ে আরডুইনো যে পোর্টে কানেক্টেড সেটি সিলেক্ট করুন। 
  • ৪। উপরে বামদিকে আপলোড বাটনে ক্লিক করে কোডটি আপনার বোর্ডে আপলোড করুন। শেষ হলে “ডান আপলোডিং” লেখা একটি মেসেজ আসবে। 

সকলের সুবিধার্থে আমাদের কোডটি গুগোল ড্রাইভে শেয়ার করে দিয়েছি

আপনি যদি আপলোডের সময় কোনো এরর পান, তাহলে চেক করে দেখুন বোর্ডে বা পোর্টে সমস্যা আছে কিনা। পোর্টে একটি একটি করে সবগুলোই চেষ্টা করে দেখুন। এবং আপনি যদি আরডুইনো ন্যানো ব্যবহার করে থাকেন, তাহলে টুলস থেকে প্রসেসর মেনুতে গিয়ে অন্য একটি প্রসেসর সিলেক্ট করে দেখুন।

কাজ করছে কিনা পরীক্ষা করা

কোড আপলোড করা হয়ে গেলে এবার হ্যান্ড ওয়াশ টাইমারটি পরীক্ষা করে দেখার পালা। কেবল দিয়ে ডিভাইসটি পাওয়ার করুন, এমনিতে সবগুলো এলইডি অফ থাকার কথা। আলট্রাসনিক সেন্সরের সামনে হাতটি নিলে লাল এলইডি জ্বলে উঠবে। ৪ সেকেন্ড বিরতি দিয়ে বাকি সবগুলোও একে একে জ্বলে উঠবে। 

যদি এ পর্যন্ত সবকিছু ঠিকমত হয়ে থাকে, তবে অভিনন্দন, আপনার সার্কিটটি কাজ করছে!

যদি না হয়ে থাকে, চিন্তার কিছু নেই। প্রথমে সোনার সেন্সরের কানেকশনগুলো চেক করুন, মাঝে মাঝে মাঝে লাগাতে গিয়ে উলটোপাল্টা হয়ে যায়। যদি কোনো এলইডি কাজ না করে, তাহলে পোলারিটি চেক করুন। তারপরো কাজ না হলে নতুন আরেকটি এলইডি লাগিয়ে দেখুন।

এনক্লোজার বা হ্যান্ড ওয়াশ টাইমারের বক্স বানানো

হ্যান্ড ওয়াশ টাইমার বেসিনের ওপর থাকবে, তাই একটি এনক্লোজার বানানো খুব জরুরী। তাহলে পানির ছিটা লেগে সার্কিটের ক্ষতি হবার সম্ভাবনা থাকবে না। 

এনক্লোজারটি বানানোর জন্য আপনি যেকোনো ধরণের বক্স ব্যবহার করতে পারেন, যেমন প্লাস্টিকের টিফিন বক্স। এটার আসলে বাঁধাধরা কোনো নিয়ম নেই। তারপরো, আমাদের এনক্লোজার থেকে অনুপ্রেরণা নিতে পারেন। 

আমাদের তৈরি হ্যান্ড ওয়াশ ডিভাইসের এনক্লোজার বক্স
আমাদের তৈরি হ্যান্ড ওয়াশ ডিভাইসের এনক্লোজার বক্স

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের জন্য তৈরি ডিভাইসটির বক্স

 

আমরা এনক্লোজারটি নিজেরা বানাতে চেয়েছিলাম, এজন্য একটি পুরানো ইলেকট্রিক্যাল আউটলেট বক্স ব্যবহার করেছি । আউটলেট বক্সের উপরে ব্ল্যাঙ্ক সুইচবোর্ডের কাভার স্ক্রু দিয়ে লাগিয়েছি, এবং কাভারে সোল্ডারিং আয়রন দিয়ে ছিদ্র করে এলইডি ঢুকিয়েছি। এরপর এলইডিগুলোতে তার সোল্ডার করে তা একটি আরডুইনোর পিনে সরাসরি সোল্ডার করে কানেকশন দিয়েছি। সবার শেষে উপরে কার্বন ফাইবার স্টিকার লাগিয়েছি যেন দেখতে সুন্দর লাগে। 

ইলেকট্রিক্যাল আউটলেট বক্সের ছবি নিচে দেয়া হলো।

ইলেকট্রিক্যাল আউটলেটের ছবি

ডিজাইনে আরো একটি ইউজফুল ফিচার আছে। এখানে সোনার সেন্সরটি এমনভাবে লাগানো যেন লম্বালম্বিভাবে ডিভাইসটি রাখলে ঠিক সোপ ডিসপেন্সারের নজলের উচ্চতাতেই সোনারটি থাকে। ইউজার যখনই সাবান নেয়ার জন্য নজলে চাপ দিবে, সোনার সেন্সর সেটা ডিটেক্ট করবে। এজন্য টাইমার চালু করার জন্য আলাদা করে সোনার সেন্সরের সামনে হাত নাড়া লাগছে না। শুধু তাই নয়, আমরা হ্যান্ড ওয়াশ টাইমারটির সামনে এটির কাজ লিখেও রেখেছি, যেন নতুন কারো বুঝতে সমস্যা না হয়। 🙂 

আমাদের বানানো এনক্লোজারটির ডিজাইনও নিচে দেয়া হলো। চাইলে এভাবেও বানাতে পারেন।

আপনি যদি হ্যান্ডওয়াশ টাইমারটি বানিয়ে থাকেন, তাহলে অভিনন্দন! এই আপাতদৃষ্টিতে ছেলেমানুষি ডিভাইসটিই আপনার হাতকে আরো জীবাণুমুক্ত রাখতে সাহায্য করবে। আমরা যখন ল্যাবে পরীক্ষা করছিলাম, তখনই আবিষ্কার করেছি এই টাইমার ব্যবহার করার আগে আমরা মনের অজান্তেই আরো অনেক কম সময় ধরে হাত ধুতাম। কিন্তু এখন এই টাইমার ব্যবহার করার পর ভুল করার কোনো সুযোগ থাকছে না। আপনার পরিবারের বাচ্চাদেরও ডিভাইসটি হাত ঘন ঘন এবং ধরে ধুতে উৎসাহিত করবে, কারণ হাত ধোয়ার সময় এলইডিগুলোর জ্বলানেভা দেখতে ভালই লাগে। চাইলে আরো কয়েকটা বানিয়ে নিজের মত ডেকোরেট করে বিভিন্ন ওয়াশরুমে রেখে দিতে পারেন। আর করোনাভাইরাস কিংবা অন্যসকল জীবাণু থেকেও নিজেকে রাখতে পারেন পরিষ্কার 🙂

নীচে এই টাইমার প্রজেক্টের ভিডিও দেখুন –

আরডুইনো দিয়ে স্ক্রলিং এলইডি মেসেজ ডিসপ্লে (ভিডিও সহ)

1
আরডুইনো দিয়ে স্ক্রলিং এলইডি মেসেজ ডিসপ্লে (ভিডিও সহ)
আরডুইনো দিয়ে স্ক্রলিং এলইডি মেসেজ ডিসপ্লে (ভিডিও সহ)

সকল বন্ধুদের স্বাগতম আমার আরডুইনো দিয়ে স্ক্রলিং এলইডি মেসেজ ডিসপ্লে প্রজেক্টে। এটা খুবই মজার একটি প্রজেক্ট। এই প্রজেক্টে একটি ৮x৮ মেট্রিক্স ডিসপ্লেতে লেখা স্ক্রল হবে। প্রথমেই বলে নিই এই প্রজেক্ট করতে হলে অবশ্যই আগে মাইক্রোকন্ট্রোলার ও তার প্রোগ্রামিং সম্পর্কে ধারনা থাকতে হবে বিশেষ করে অরডুইনো। তাহলে শুরু করা যাক।

তৈরি করতে যা লাগবে

প্রথমে দেখে নিই এটি তৈরিতে কি কি লাগবে-

  • 8*8 Matrix display -1pc
  • Arduino Board – 1 pc
  • 1k resistor – 8 pcs
  • Some Jumper wire – (According to need)

উপকরণ গুলো দেখতে কেমন?

আসুন সুপ্রিয় পাঠক উপরে বর্ণিত উপকরণ গুলোর ছবি দেখে নিই।

৮x৮ ম্যাট্রিক্স ডিসপ্লে (8*8 Matrix display)

৮x৮ এলইডি ম্যাট্রিক্স ডিসপ্লে
৮x৮ এলইডি ম্যাট্রিক্স ডিসপ্লে

 

আরডুইনো উনো (Arduino Uno)

আরডুইনো উনো ডেভেলপমেন্ট বোর্ড
আরডুইনো উনো ডেভেলপমেন্ট বোর্ড

 

১ কিলো ওহম মানের রেজিস্টর

১ কিলো ওহম মানের রেজিস্টর ও তার কালার কোড
১ কিলো ওহম মানের রেজিস্টর ও তার কালার কোড

জাম্পার ওয়্যার

জাম্পার ওয়্যার
জাম্পার ওয়্যার

সার্কিট ডায়াগ্রাম

এবার আমরা স্ক্রলিং এলইডি মেসেজ ডিসপ্লের সার্কিট ডায়াগ্রাম দেখে নেই।

আরডুইনো দিয়ে স্ক্রলিং এলইডি মেসেজ ডিসপ্লের সার্কিট ডায়াগ্রাম
আরডুইনো দিয়ে স্ক্রলিং এলইডি মেসেজ ডিসপ্লের সার্কিট ডায়াগ্রাম

উপরের চিত্রের মত কানেকশন করতে হবে। কানেকশন করার পর যে কাজটি করতে হবে তা হল প্রোগ্রামিংআরডুইনো তে কোড আপলোডিং।

নিচে সম্পূর্ণ কোড দেওয়া হল। এটি আরডুইনো তে আপলোড করে দিতে হবে। আসুন এখন কোড টি দেখি।

ম্যাট্রিক্স স্ক্রলিং ডিসপ্লের জন্য আরডুইনো কোড

char ground[8] = {8,9,10,11,12,13,A0,A1};

char ALPHA[] = {0,0,0,0,0,0,0,0,0,0,0,

60,102,96,96,96,102,60,0,0,0,

60,24,24,24,24,24,60,0,0,0,

124,102,102,124,120,108,102,0,0,0,

60,102,96,96,96,102,60,0,0,0,

102,102,102,102,102,102,60,0,0,0,

60,24,24,24,24,24,60,0,0,0,

126,24,24,24,24,24,24,0,0,0,

120,108,102,102,102,108,120,0,0,0,

60,24,24,24,24,24,60,0,0,0,

60,102,96,110,102,102,60,0,0,0,

126,96,96,120,96,96,126,0,0,0,

60,102,96,60,6,102,60,0,0,0,

126,24,24,24,24,24,24,0,0,0,

0,0,0,0,0,0,0,0,0,0,0

};

void setup()
{
for (int x=8;x<14;x++)
{

pinMode(x, OUTPUT);

}
pinMode(A0, OUTPUT);
pinMode(A1, OUTPUT);

for (int i=0;i<8;i++)
{

digitalWrite(ground[i],HIGH);
}
DDRD = 0xFF;
PORTD =0;
}

void loop()
{
for(int x=0;x<142;x++) //এই লাইনটি গুরুত্বপূর্ণ
{

for(int a=0;a<20;a++)
{
for (int i=0;i<8;i++)
{

digitalWrite(ground[i],LOW);
PORTD = ALPHA[i+x];
delay(1);
digitalWrite(ground[i],HIGH);

}
}
}

delay(1000);
}

কোডের বিশ্লেষণ

উপরের কোডে লক্ষ্য করি char ALPHA[] = এর পর কিছু সংখ্যা দেখা যাচ্ছে । এখানে সবার উপরে ১০ টি শূন্য ও শেষে ১০ টি শূন্য এগুলা হল স্পেস । আর এর মাঝের প্রত্যেক ১০ টি সংখ্যা হল এক একটি অক্ষর । যেমন উপরের কোডে CIRCUITDIGEST লেখা। এখানে CIRCUITDIGEST মোট ১৩ টি অক্ষর, উপরের কোডে খেয়াল করলে দেখবেন প্রথমে ১০টি ও শেষে ১০টি শূন্য এর মাঝে ১৩ টি ১০ সংখ্যা বিশিষ্ট্য লাইন আছে।

নিজের নাম লিখতে চাইলে

এখন প্রশ্ন হল আপনি যদি নিজের নাম লিখতে চান তখন। এর জন্য আপনাকে A-Z পর্যন্ত সবগুলো অক্ষরের ডিসপ্লে কোড জানতে হবে। নিচে কোড দেওয়া হল ।

24,60,102,126,102,102,102,0,0,0,             // A

124,102,102,124,102,102,124,0,0,0,           // B

60,102,96,96,96,102,60,0, 0,0,               // C

120,108,102,102,102,108,120,0, 0,0,          // D

 

126,96,96,120,96,96,126,0, 0,0,              // E

126,96,96,120,96,96,96,0, 0,0,               // F

60,102,96,110,102,102,60,0, 0,0,             // G

102,102,102,126,102,102,102,0, 0,0,          // H

 

60,24,24,24,24,24,60,0, 0,0,                 // I

30,12,12,12,12,108,56,0, 0,0,                // J

102,108,120,112,120,108,102,0, 0,0,          // K

96,96,96,96,96,96,126,0, 0,0,                // L

99,119,127,107,99,99,99,0, 0,0,              // M

 

102,118,126,126,110,102,102,0, 0,0,          // N

60,102,102,102,102,102,60,0, 0,0,            // O

124,102,102,124,96,96,96,0, 0,0,             // P

60,102,102,102,102,60,14,0, 0,0,             // Q

124,102,102,124,120,108,102,0, 0,0,          // R

 

60,102,96,60,6,102,60,0, 0,0,                // S

126,24,24,24,24,24,24,0, 0,0,                // T

102,102,102,102,102,102,60,0, 0,0,           // U

102,102,102,102,102,60,24,0, 0,0,            // V

99,99,99,107,127,119,99,0, 0,0,              // W

 

102,102,60,24,60,102,102,0, 0,0,             // X

102,102,102,60,24,24,24,0, 0,0,              // Y

126,6,12,24,48,96,126,0, 0,0,                // Z

উদাহরণ

এখন মনে করি আমি DAD লিখব। এর জন্য char ALPHA[] = এরপর ১০টি শূন্য, এর পর

120,108,102,102,102,108,120,0, 0,0,          // D,

24,60,102,126,102,102,102,0,0,0,             // A

120,108,102,102,102,108,120,0, 0,0,          // D

এই কোড টুকু পেস্ট করতে হবে এবং শেষে ১০টি শূন্য দিতে হবে। অর্থাৎDAD  লিখার জন্য সম্পুর্ন কোডটি হবে এরকম-

char ALPHA[] = {0,0,0,0,0,0,0,0,0,0,0,

120,108,102,102,102,108,120,0,0,0,

24,60,102,126,102,102,102,0,0,0,

120,108,102,102,102,108,120,0,0,0,

0,0,0,0,0,0,0,0,0,0,0};

একই ভাবে আপনি চাইলে এই পদ্ধতি অনুসরণ করে অন্যান্য নাম ও লিখতে পারবেন।

বিশেষ জ্ঞাতব্য

এখানে একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে, মনে করি DAD লিখব। অর্থাৎ DAD লেখার জন্য উপরের কোডটি খেয়াল করলে দেখবো যে ৫ টি লাইনে ১০টি করে সংখ্যা আছে। এই লাইন আর লাইনে অবস্থিত অক্ষরের সংখ্যা গুণ হবে।

DAD লিখার ক্ষেত্রে ৫টা লাইন আর প্রতি লাইনে ১০টা সংখ্যা অর্থাৎ ৫ গুন ১০ সমান ৫০। এই ৫০ থেকে ৮ বিয়োগ করতে হবে। বিয়োগ করে যে সংখ্যা পাব সেটা মূল কোডের একটি নির্দিষ্ঠ স্থানে বসাতে হবে। নিচে দেওয়া হল।

(মূলকোডের নিম্নোক্ত লাইন টি পরিবর্তিত হবে),

for(int x=0;x<142;x++) //150-8 (to stop overflow)

{……..

(পরিবর্তিত কোড)

for(int x=0;x<42;x++) //50-8 (to stop overflow)

{……..

উপরের কোডের আন্ডারলাইন করা 142 এর স্থানে ঐ যে উপরে আমরা ৫*১০=৫০ আর ৫০-৮= ৪২ পেলাম সেই ৪২ বসাতে হবে। প্রতিবার নাম চেঞ্জ করার সময় এই নিয়মে হিসাব করে সংখ্যা বসাতে হবে। এটি করা হয়েছে মূলত অক্ষর গুলো যাতে ডিসপ্লেতে ওভারফ্লো না হয় তার জন্য।

আশাকরি এত খুলে বলার পর আর কারও কোন সমস্যা হওয়ার কথা না। তারপরও কোন সমস্যা হলে কমেন্টে জানাবেন। আর নিচে আমার তৈরি এই প্রজেক্টের ভিডিও দেখতে পাচ্ছেন-

তৈরি প্রজেক্টের ভিডিও

নীচে দেখতে পাচ্ছেন আমার তৈরি করা ৮x৮ এলইডি ম্যাট্রিক্স স্ক্রলিং এলইডি মেসেজ ডিসপ্লে প্রজেক্ট এর একটি সংক্ষিপ্ত ভিডিও।

সমাপ্তি

আজকের মতো আপাতত এখানেই ইতি টানছি। সামনে এমনি কোন মজার প্রজেক্ট নিয়ে হাজির হবো। ততোক্ষণে এই স্ক্রলিং এলইডি মেসেজ ডিসপ্লে সার্কিট সম্পর্কে আপনার কোন অভিজ্ঞতা জানানোর থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।

ভোঁতা ড্রিল বিট ধারালো করে নিন সহজেই (ভিডিও টিউটোরিয়াল)

1
ভোঁতা ড্রিল বিট ধারালো করে নিন সহজেই (ভিডিও টিউটোরিয়াল)
ভোঁতা ড্রিল বিট ধারালো করে নিন সহজেই (ভিডিও টিউটোরিয়াল)

ড্রিল বিট এর ধার দ্রুত ক্ষয়ে যায়। পিসিবি ড্রিল মেশিন গুলোতে ব্যবহৃত বিট গুলোকে চাইলে খুব সহজেই ধারালো করে নেয়া যায়। আজকের এই ভিডিও টিউটোরিয়ালে ড্রিল বিট ধার করানোর সহজ উপায় নিয়েই বলছি। সে সাথে এই লেখাই কিছু প্রয়োজনীয় বিষয় তুলে ধরছি যা জানা থাকলে অনেক ক্ষেত্রেই কাজের জন্য সুবিধা হয়।

পিসিবি ড্রিল বিট

পিসিবি তে সাধারণত নিম্নোক্ত মানের ড্রিলবিট গুলো বেশি ব্যবহার হয়-

এছাড়াও প্রয়োজন অনুযায়ী ইলেকট্রনিক পার্টসের লেগের পুরুত্বের ওপর নির্ভর করে আরো মোটা ড্রিল বিট ও ব্যবহার করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে স্বাভাবিক ভাবেই পিসিবি কেউ উপযুক্ত পরিমান পুরু ও মোটা হতে হবে।

ড্রিল মেশিন কোথায় পাওয়া যায়

ইলেকট্রনিক পার্টস বিক্রি করে এমন দোকানে হর-হামেশাই এ ধরনের হ্যান্ড ড্রিল পাওয়া যায়। অনেক অনলাইন শপেও ইদানীং এর বিক্রি বেড়েছে। এগুলোর মধ্যে কিছু আছে অটোমেটিক আর কিছু আছে ম্যানুয়েল। নিচে দুই ধরনের ড্রিল মেশিনের ছবি দেখানো হলো-

ম্যানুয়াল পিসিবি হ্যান্ড ড্রিল মেশিল ও বিভিন্ন আকৃতির ড্রিল বিট
ম্যানুয়াল পিসিবি হ্যান্ড ড্রিল মেশিল ও বিভিন্ন আকৃতির ড্রিল বিট

নিচে দেখতে পাচ্ছেন কল-কারখানায় বহুল ভাবে ব্যবহৃত আধুনিক পিসিবি ড্রিল মেশিন। এর আরেক নাম ড্রিল প্রেস (Drill Press)।

ফ্যাক্টরিতে বহুল ব্যবহৃত ড্রিল প্রেস মেশিন
ফ্যাক্টরিতে বহুল ব্যবহৃত ড্রিল প্রেস মেশিন

এছাড়াও অনেক হবিস্ট নিজ উদ্যোগে আলাদা ভাবে ড্রিল চক ও বিট কিনে নিয়ে নিজেই বানিয়ে নেন তাদের কাঙ্ক্ষিত পিসিবি ড্রিল মেশিন। নিচের ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন মোটরের সাথে ড্রিল চক লাগিয়ে নিজে বানিয়ে নেবার মত সকল সরঞ্জাম।

পিসিবি ছিদ্র করবার জন্য ড্রিল চক সরঞ্জাম সমূহ
পিসিবি ছিদ্র করবার জন্য ড্রিল চক সরঞ্জাম সমূহ

উপরের এই ড্রিল চক কে কোন একটি হাইস্পিড মোটরের সাথে লাগিয়ে নেয়া হয়। তারপর এর অগ্রভাগে প্রয়োজন অনুযায়ী উপযুক্ত আকৃতির ড্রিল বিট লাগিয়ে নিয়ে পিসিবি ছিদ্র করা যায়।

দাম কেমন

আকার ও আকৃতি অনুযায়ী ড্রিল মেশিনের দাম নির্ভর করে। তাই নির্দিষ্ট করে বলাটা কষ্টকর। তবে ছোট ম্যানুয়েল হ্যান্ড ড্রিল গুলো ২৫০ – ৩৫০ টাকার মধ্যে হয় যা দিয়ে অধিকাংশ হবিস্ট ও তরুণ শিক্ষার্থিদের কাজ চলে। স্বাভাবিক ভাবেই বড় আকৃতির গুলোর দাম বেশি।

ড্রিল চক ও আকৃতি ও আনুষাঙ্গিক জিনিসের উপরে দাম নির্ভর করে। এগুলোও ২৫০ – ৪০০ টাকার মধ্যেই বিভিন্ন অনলাইন শপে পাওয়া যায়। নবাবপুর ইলেকট্রিক মারকেট গুলো ঘুরলে সহজেই বিভিন্ন আকৃতির ড্রিল চক পাওয়া যাবে। তবে ড্রিল চক কেনার সময় অবশ্যই মোটর এক সাথে কেনা উচিৎ। নয়ত ক্ষেত্রবিশেষে চক ও মোটরের শ্যাফটের আকার মিলবার না কারনে ভালমত চক টি শ্যাফটের সাথে লাগে না। সেক্ষেত্রে ছিদ্র করবার সময় প্রচুর ঝাঁকুনির সৃষ্টি করে ড্রিলিং এর কাজে ব্যাঘাত ঘটায়।

কিভাবে ধার দেয়া যায় ড্রিল বিট

স্বাভাবিক ভাবেই মনে হতে পারে যে ছিদ্র করতে করতে করতে বিটের ধার কমে গেলে নতুন বিট কিনে নিতে হবে। কিন্তু আসলে তা নয়। একটু বুদ্ধি খরচ করে এই ভোঁতা ড্রিল বিটকে ধার দিয়ে নতুনের মত কাজ চালানো যায়। এখন সে পদ্ধতি সম্পর্কেই বলছি।

প্রয়োজনীয় উপকরণ

এ কাজের জন্য আমাদের দরকার এরকম একটি কাটিং ডিস্ক। খুব বড় আকারের দরকার নেই। ছোট আকৃতির কাটিং ডিস্ক যা কিনা নিচের ছবির মত করে মোটরে  লাগানো যাবে এমন ব্যবস্থা করলেই হবে –

কাটিং ডিস্ক দিয়ে ড্রিল বিট ধার দেবার মূল ব্যবস্থা
কাটিং ডিস্ক দিয়ে ড্রিল বিট ধার দেবার মূল ব্যবস্থা

বুঝবার সুবিধার জন্য আমাদের ইলেকট্রনিক্স টিম একটি টিউটোরিয়াল ভিডিও প্রস্তুত করেছেন। এই টিউটোরিয়াল ভিডিওতে বিস্তারিত দেখানো হয়েছে কিভাবে একটি ভোঁতা বিট কে ধার দেয়া যায়। ভাডিও টি ভালো করে দেখলে বুঝতে পারবেন বিশেষ একটি এঙ্গেলে এই বিট কে ধার দিতে হবে।

ড্রিল বিট ধারালো করবার ভিডিও টিউটোরিয়াল

আশাকরি এই ভিডিওর মাধ্যমে নতুন অনেকের উপকার হবে। নতুন বিট কেনার পরিবর্তে একই বিট কে বারবার ব্যবহার করে পকেটের টাকা বাঁচবে।

পাওয়ার ট্রান্সফরমার তৈরী করবার হিসাব নিকাশ (ক্যালকুলেটর সহ)

10
পাওয়ার ট্রান্সফরমার তৈরী করবার হিসাব নিকাশ (ক্যালকুলেটর সহ)
পাওয়ার ট্রান্সফরমার তৈরী করবার হিসাব নিকাশ (ক্যালকুলেটর সহ)

ভূমিকা

পাওয়ার ট্রান্সফরমার তৈরী করতে চান অনেকেই। এই লেখার মাধ্যমে ট্রান্সফরমার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা এবং এটি তৈরী করবার প্রয়োজনীয় ক্যালকুলেশন দেখাবো। এই ক্যালকুলেশন প্রকৃয়াটি সহজ করবার জন্য একটি ক্যালকুলেটর ও দেবো। এবং এই ট্রান্সফরমার ক্যালকুলেটর টির ব্যবহার উদাহরণ সহ দেখাবো। তার আগে ট্রান্সফরমার এর বিভিন্ন অংশ, প্রকারভেদ, গঠন ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো চলুন জেনে নেই।

ট্রান্সফরমার কাকে বলে

আমরা জানি, পাওয়ার ট্রান্সফরমার স্টেপ আপ অথবা স্টেপ ডাউন করতে ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ, ট্রান্সফরমার এর ধরন অনুযায়ী প্রাইমারিতে প্রদত্ত এসি কে সেকেন্ডারিতে বাড়ায় অথবা কমায়।

ট্রান্সফরমার কত প্রকার

কোর এর আকার, ব্যবহার ও কাজের প্রকারভেদে অনেক ধরণের পাওয়ার ট্রান্সফরমার রয়েছে। যেমন,

ফেরাইট কোর সাধারণত SMPS ও ডিসি টু ডিসি কনভার্টারে বহুল ব্যবহৃত হয়।

পাওয়ার টান্সফরমার ছাড়াও আরো অনেক রকম ট্রান্সফরমার রয়েছে। যেমন –

নিচের চিত্রে E-I কোর ট্রান্সফরমার, টরোয়ডাল ট্রান্সফরমার, ভেরিয়েবল ট্রান্সফরমার বা VARIAC এর ছবি দখতে পাচ্ছেন-

E-I কোর ট্রান্সফরমার, টরোয়ডাল ট্রান্সফরমার, ভেরিয়েবল ট্রান্সফরমার বা VARIAC
চিত্রে বাম থেকে E-I কোর ট্রান্সফরমার, টরোয়ডাল ট্রান্সফরমার, ভেরিয়েবল ট্রান্সফরমার বা VARIAC

আমরা লেমিনেটেড E-I কোর ট্রান্সফরমার ডিজাইন, তৈরী কৌশল ও হিসাব নিকাশ নিয়ে আলোচনা করব। ট্রান্সফরমার তৈরী বা ডিজাইন করতে প্রথমে অনেক হিসেব নিকেশ করে নিতে হয়, যা বেশ সময় সাপেক্ষ। এই কাজকে সহজ করতে আপনাদের জন্য একটি স্প্রেডশিট ক্যালকুলেটর দিলাম। এখন মিনিটেই হিসাব করে ফেলতে পারবেন। ক্যালকুলেটর টি লেখার শেষে লিংক আকারে দেয়া আছে।

একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়

ট্রান্সফরমার তৈরির আগে কিছু বিষয় জানা থাকা দরকার। আমাদের দেশে পাওয়ার লাইনে (বাসা-বাড়ির লাইনে) ২২০ ভোল্ট ৫০ হার্জ থাকে। একটি ট্রান্সফরমার কে ঠিক যে ফ্রিকুয়েন্সির জন্য ডিজাইন করা হয়েছে, তার চাইতে কম বা বেশি ফ্রিকুয়েন্সিতে কিছুতেই চালানো উচিত নয়। কারন এতে করে ট্রান্সফরমারটিতে ওভার কিংবা লো ভোল্টেজ এফেক্ট এর মত এফেক্ট পড়বে এবং ট্রান্সফরমারটি অনেক গরম হবে, এমনকি সেটি ড্যামেজ হয়ে যেতে পারে।

প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি কিভাবে নির্ণিত হয়

ট্রান্সফরমারের যে কয়েলে ইনপুট ভোল্টেজ দেয়া হয় তাকে প্রাইমারি ওয়াইন্ডিং বা প্রাইমারি কয়েল বলে। আর যে কয়েল থেকে আউটপুট ভোল্টেজ নেয়া হয় তাকে বলে সেকেন্ডারি ওয়াইন্ডিং বা সেকেন্ডারি কয়েল বলে। প্রাইমারি কয়েলে যখন এসি পাওয়ার ইনপুট দেয়া হয় তখন প্রাইমারি কয়েলের চতুর্দিকে ম্যাগনেটিক ফ্লাক্স বা তরিচ্চুম্বকীয় আবেশ তৈরি হয়। আর ট্রান্সফরমারের কোর এই ম্যাগনেটিক ফ্লাক্সের জন্য একটি পরিবাহী হিসেবে কাজ করে।

নিচের চিত্রে দেখুন সবুজ কালী দিয়ে ম্যাগনেটিক ফ্লাস্ক কে ট্রান্সফরমার এর কোরের মধ্য দিয়ে পরিবাহিত হতে দেখা যাচ্ছে। নীল কালি দিয়ে এর সেকেন্ডারি ও লাল কালী দিয়ে এর প্রাইমারি ওয়াইন্ডিং দেখানো হয়েছে।

কোর এর মধ্যদিয়ে ম্যগনেটিক ফ্লাস্ক প্রবাহিত হচ্ছে
কোর এর মধ্যদিয়ে ম্যগনেটিক ফ্লাস্ক প্রবাহিত হচ্ছে

 ট্রান্সফরমারের মূলনীতি

ফ্যারাডের সূত্রানুসারে-

একটি পরিবাহী এবং একটি চুম্বকক্ষেত্রে যখন আপেক্ষিক গতি এরূপ বিদ্যমান থাকে যে পরিবাহীটি চুম্বকক্ষেত্রকে কর্তন করে তবে পরিবাহীতে একটি EMF আবিষ্ট হয়। যার পরিমান ফ্লাক্স কর্তন এর বা ফ্লাক্স পরিবর্তনের হারের সাথে সরাসরি সমানুপাতিক।

ট্রান্সফরমারের মিউচুয়াল ইন্ডাকশন কি – কোরের মাধ্যমে এই ম্যাগনেটিক ফ্লাক্স সেকেন্ডারি কয়েলে আবিষ্ট হয়ে ভোল্টেজ ও কারেন্ট তৈরি করে।

ট্রান্সফরমারের প্রাইমারি ও সেকেন্ডারিতে বিদ্যুচ্চুম্বকীয় আবেশন প্রকৃয়া
ট্রান্সফরমারের প্রাইমারি ও সেকেন্ডারিতে বিদ্যুচ্চুম্বকীয় আবেশন প্রকৃয়া

ট্রান্সফরমারে বিভিন্ন অংশ সমূহ

নিচে এর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অংশ সমূহের বর্ণনা করা হলো।

কোর

ম্যাগনেটিক মেটারিয়াল দিয়ে তৈরী হয় এটি। বিভিন্ন আকার ও গঠনের হয়ে থাকে। যেমন, E-I কোর, U-T কোর, EE কোর, টরোয়ডাল কোর ইত্যাদি। নিচের চিত্রে টরোয়েড কোর ও E-I কোর দেখতে পাচ্ছেন-

টরোয়েড কোর ও E-I কোর
টরোয়েড কোর ও E-I কোর

কন্ডাক্টর

সাধারণত এনামেল ইন্সুলেশন যুক্ত কপার কন্ডাক্টর ব্যবহৃত হয়। এলুমিনিয়াম তার ও ব্যবহার করা যায়। সেক্ষেত্রে এলুমিনিয়াম কন্ডাক্টরের ব্যাস কপার কন্ডাক্টরের ব্যাসের 1.26 গুন বেশি হতে হবে। কারণ এলুমিনিয়াম তারের কারেন্ট কন্ডাক্টিভিটি কপারের 61%।

ববিন

ববিন এর উপরে কন্ডাক্টরকে কয়েল আকারে পেঁচানো হয়। বিভিন্ন আকারের প্লাস্টিকের ববিন বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। সঠিক মাপের ববিন বাজারে কিনতে না পাওয়া গেলে হার্ড বোর্ড, ফাইবার বোর্ড ইত্যাদি দিয়ে নিজেও তৈরি করে নিতে পারেন। নিচের চিত্রে বাজারে পাওয়া যায় এমন বিভিন্ন সাইজের ববিন এর চিত্র দেখানো হলো-

বিভিন্ন রকম ট্রান্সফরমার ববিনের চিত্র
বিভিন্ন রকম ট্রান্সফরমার ববিনের চিত্র

হাতে তৈরি ববিনের চিত্র নিচে দেখা যাচ্ছে-

হাতে তৈরী করা ট্রান্সফরমারের ববিন
হাতে তৈরী করা ট্রান্সফরমারের ববিন

 ট্রান্সফরমার তৈরি করবার ডিজাইন ও হিসাব 

কোর এর প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল (Area) নির্ণয়

সহজ কথায় কোরের যে অংশ দিয়ে ম্যাগনেটিক ফ্লাক্স লাইন প্রবাহিত হবে তার ক্ষেত্রফলই হচ্ছে কোর এর ক্ষেত্রফল।

EI ট্রান্সফরমারের ক্ষেত্রে কোরের মধ্যবর্তী অংশটি এটি-

কোর এর প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল
কোর এর প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল

উপরের চিত্রে নীল অংশটি ট্রান্সফরমারের কোর এরিয়া বা কোরের ক্ষেত্রফল

প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল = প্রস্থ × উচ্চতা (Cross Sectional Area = Width × Height)

ট্রান্সফরমারের এরিয়া ও পাওয়ারের সূত্র

উক্ত ছবিটি দেখে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন যে কোর এর ক্ষেত্রফল যত বেশী হবে ততো বেশী পরিমান পাওয়ার ট্রান্সফরমার টি প্রদান করতে সক্ষম হবে। মূলত এ কারনেই ইলেকট্রিক্যাল লাইনে ব্যবহৃত হাই পাওয়ার ট্রান্সফরমার গুলো আকৃতিতে বিশাল হয়ে থাকে। নিচে এরিয়া ও পাওয়ারের সমীকরণ টি দেয়া হলো-

Area      ⇒ √Power / 5.58

Power    ⇒ (5.58 × Area)= 31.136 × A2

অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন যে এই ৫.৫৮ মানটি আসলে কী। সহজ ভাবে বললে এটি সমীকরণের ধ্রুবক বা কনস্ট্যান্ট (এধরণের ট্রান্সফরমার এর জন্য)।

কয়েলের জন্য পাক সংখ্যা (Number of turns, N) নির্ণয়

N = 10⁄ (4.44 × ƒ × H × A)

এখানে,

  • N = প্রতি ভোল্ট এর জন্য পাক সংখ্যা
  • F = অপারেটিং ফ্রিকুয়েন্সি
  • H = কোর এর প্রতি বর্গ ইঞ্চি প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফলে ম্যাগনেটিক ফ্লাক্স লাইন সংখ্যা
  • A = বর্গ ইঞ্চিতে কোরের প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল

উদাহরণ

চলুন এখন একটি ট্রান্সফরমার ডিজাইনের হিসাব খাতা কলমে ও সফটওয়্যারে দুই ভাবেই করে দেখি।

আমরা একটি ট্রান্সফরমার তৈরী করবো যার ইনপুট 220 ভোল্ট, একটি আউটপুট হবে 12 ভোল্ট 3 এম্পিয়ার সেন্টার ট্যাপ সহ এবং অপর একটি আউটপুট হবে 6 ভোল্ট 2 এম্পিয়ার।

সর্বমোট আউটপুট পাওয়ার হবে –

ট্রান্সফরমার ক্যালকুলেটর দিয়ে হিসাব

এটি একটি মাইক্রোসফট এক্সেল স্প্রেডশিট ক্যালকুলেটর। এটিকে ওপেন করতে হলে আপনার কম্পিউটারে মাইক্রোসফট এক্সেল, ওপেন অফিস, লিব্রে অফিস অথবা যেকোন স্প্রেডশিট এপ্লিকেশন ইন্সটল থাকতে হবে। স্মার্ট ফোনেও একই ভাবে মাইক্রোসফট এক্সেল, গুগল শিটস অথবা অন্য কোন স্প্রেডশিট এপ্লিকেশন ইন্সটল থাকতে হবে। প্রথমে পাশের লিঙ্ক থেকে এক্সেল স্প্রেডশিট টি ডাউনলোড করে নিতে পারেন ট্রান্সফরমার ক্যালকুলেটর লিংক থেকে।

ট্রান্সফরমার ক্যালকুলেটর ব্যবহার বিধি

হাতে কলমে হিসেব করার সময় (নীচে বিস্তারিত আছে) ট্রান্সফরমারের লস হিসেব করতে হয়। সফটওয়্যার ব্যবহার করলে লস হিসেব করতে কষ্ট করতে হবে না, সফটওয়্যার অটোমেটিক্যালি সেটা করে নেবে। তাই বাড়তি ঝামেলা নেই। চলুন দেখে নিই কিভাবে ডাটা ইনপুট দিবেন।

ক্যালকুলেটর দিয়ে ট্রান্সফরমারের হিসাব বের করা
ক্যালকুলেটর দিয়ে ট্রান্সফরমারের হিসাব বের করা

উপরের ছবিতে এই নীল রং এর সেল গুলো ডাটা ইনপুট সেল এবং এই কমলা রং এর সেল গুলো রেজাল্ট এর সেল। আমরা পূর্বের হিসাব অনুযায়ী 48VA এর ট্রান্সফরমার ডিজাইন করবো।

মনে করুন আপনার কাছে যে কোর আছে তার Width হচ্ছে 1 ইঞ্চি, এবং ট্রান্সফরমারের আউটপুট পাওয়ার হতে হবে 48VA. তাহলে Transformer-3 এর Row তে Width এর নীচে 1 ইনপুট দিলাম, তার ডানপাশে Power এর নিচে 48 ইনপুট দিলাম। একই রো তে ডানপাশে আউটপুট গুলো চলে এসেছে-

Height = 1.31 ইঞ্চি ও Turn per volt = 5.736 পাওয়া গেল।

এবার,

নীচের ছবিটিতে দেখুন Volts লিখার জন্য নীল রং এর কতগুলো সেল আছে। আগের ছবিতে Transformer-3 তে ইনপুট দিয়েছিলাম। তাই এখানেও Transformer-3 এর নীচের Volts লিখার সেল গুলোতে বিভিন্ন কয়েলের Voltage লিখব। ডান পাশে কমলা রং এর সেলে Turn সংখ্যা 1262 ও কারেন্ট এর মান 0.24 Ampere পাওয়া গেল।

ক্যালকুলেটর দিয়ে প্যাঁচ ও কারেন্ট সংখ্যা নির্ণয়
ক্যালকুলেটর দিয়ে প্যাঁচ ও কারেন্ট সংখ্যা নির্ণয়

এখন (এই লেখার একদম শেষে দেয়া) SWG টেবিল হতে 0.24 Amp কারেন্ট ক্যাপাসিটির তার খুজে 30 SWG পাওয়া গেল। একই ভাবে 6V কয়েলের কারেন্ট 2 Amp এর জন্য তার 20 SWG. 12V সেন্টার টেপড কয়েলের কারেন্ট 3 Amp এর অর্ধেক বা 1.5 Amp এর জন্য তার 21 SWG পেলাম।

হিসেব থেকে যা পেলাম এক নজরে দেখে নেয়া যাক,

  • 220V কয়েল 1262 turns 30 SWG
  • 6V কয়েল 35 turns, 20 SWG
  • 12V কয়েল 69 × 2 turns, 21 SWG

নিচের চিত্রটি দেখুন-

আমাদের ডিজাইনকৃত ট্রান্সফরমার টির বিস্তারিত
আমাদের ডিজাইনকৃত ট্রান্সফরমার টির বিস্তারিত

ট্রান্সফরমার হাতে কলমে হিসাব করা

আপনি এই ক্যালকুলেটর ব্যবহার না করে হাতে কলমে হিসেব করতে চাইলেও করতে পারেন। সময় বাঁচাতে ও নির্ভুল হিসেব পেতে ক্যালকুলেটর ব্যবহার করাই ভালো।

প্রথমেই ট্রান্সফরমারের পাওয়ার লস হিসাব করতে হবে। প্রত্যেক ট্রান্সফরমার এর কিছু লস আছে। এটি হয় মূলত এতে ব্যবহৃত কোর, কয়েল ইত্যাদির উপর নির্ভর করে তাপ, শব্দ প্রভৃতি উপায়ে নির্গত হয়ে যায়।

সাধারণত আমরা যেসকল ট্রান্সফরমার কোর ব্যবহার করি তাতে ১০-২০% পাওয়ার লস হয়।

মনেকরি আমাদের ট্রান্সফরমারটির লস হবে 10% বা এফিসিয়েন্সি 90%। কাঙ্খিত 48 VA আউটপুট পেতে 48 এর 10% বেশি পাওয়ার বা 53.33 VA এর জন্য ডিজাইন করতে হবে।

এরিয়া’র সূত্র থেকে পাই-

Area      ⇒ √Power / 5.58

= √W/5.58

= √53.33/5.58 

= 1.3088 Square Inch

সুতরাং আমরা যে ট্রান্সফরমার টি ডিজাইন করব তার প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল হবে 1.3088 বর্গ ইঞ্চি
এখন 1.3088 বর্গ ইঞ্চির কোর নির্বাচন করতে হবে।

ট্রান্সফরমার কয়েলের টার্ন সংখ্যা নির্ণয়

কয়েলের প্যাঁচ সংখ্যা নির্ণয়ের সূত্র প্রয়োগ করে আমরা পাই-

N = 10⁄ (4.44 × ƒ × H × A)

10⁄ (4.44 × 50 × 60000 × 1.3088)

= 5.736 Turns/Volt 

এখানে,

Area      = 1.3088 Square Inch (আগের সূত্র থেকে পাওয়া)

f           = 50Hz

H          = 60000 (আয়রন কোরের ক্ষেত্রে প্রতি বর্গ ইঞ্চিতে ফ্লাক্স লাইন ৬০০০০ থেকে ৬৫০০০ ধরা হয়)

সুতরাং,

  • প্রাইমারী বা 220 ভোল্ট কয়েলে প্যাঁচ সংখ্যা = 220 × 5.736 = 1262 প্যাঁচ।
  • সেকেন্ডারি 12-0-12 ভোল্ট কয়েলে প্যাঁচ সংখ্যা = 12 × 2 × 5.736 = 69 × 2
    (এখানে 69 প্যাঁচ করে দুই কয়েল, যেহেতু এটি সেন্টার ট্যাপ হবে)।
  • সেকেন্ডারি 6 ভোল্ট কয়েলে প্যাঁচ সংখ্যা = 6 × 5.736 = 35

এ ধরনের ট্রান্সফরমারের তাপমাত্রা, কুলিং ব্যবস্থা বিবেচনা করে তামার তারের প্রতি বর্গ ইঞ্চি প্রস্থচ্ছেদ ক্ষেত্রফলের জন্য কারেন্ট ক্যাপাসিটি 2000 এম্পিয়ার ধরা হয়।

নীচের টেবিলে 2000 এম্পিয়ার/বর্গ ইঞ্চি হিসেবে কারেন্ট ক্যাপাসিটি দেয়া আছে।

S.W.G
Diameter in Inch
Current at 2000 A/Inch2
Sectional area of wire in Inch2
1
0.3
142
0.07
2
0.27
120
0.06
3
0.25
100
0.05
4
0.23
84
0.04
5
0.21
70
0.03
6
0.19
58
0.028
7
0.17
48
0.024
8
0.16
40
0.02
9
0.14
32
0.016
10
0.12
26
0.013
11
0.11
22
0.01
12
0.10
18
0.008
13
0.09
14
0.007
14
0.08
10
0.005
15
0.07
8
0.0047
16
0.06
6
0.003
17
0.05
4
0.0025
18
0.048
3.6
0.002
19
0.04
2.6
0.0013
20
0.036
2
0.001
21
0.034
1.6
0.0008
22
0.028
1.2
0.0006
23
0.024
1
0.0005
24
0.022
0.8
0.0004
25
0.02
0.6
0.0003
26
0.018
0.50
0.00025
27
0.017
0.42
0.0002
28
0.015
0.34
0.00017
29
0.013
0.30
0.00014
30
0.012
0.24
0.00012
31
0.011
0.2
0.00011
32
0.0108
0.18
0.00009
33
0.01
0.14
0.00008
34
0.009
0.12
0.00007
35
0.008
0.10
0.00006
36
0.007
0.08
0.00005

 

এখন আমরা সূত্র মোতাবেক জানি যে Current,  I = Power ⁄ Voltage

220V কয়েলের জন্য নির্নেয় কারেন্ট হবে = input power⁄input voltage

= 53 VA ⁄ 220 Volt

= 0.24 A

টেবিল হতে 0.24 A কারেন্ট ক্যাপাসিটির তার খুজে 30 SWG পাওয়া গেল। একই ভাবে-

  • 6V কয়েলের কারেন্ট 2 Amp এর জন্য তার 20 SWG.
  • 12V সেন্টার ট্যাপড কয়েলের কারেন্ট 3 Amp এর অর্ধেক বা 1.5 Amp এর জন্য তার হবে 21 SWG.

সম্পূর্ণ হিসেব থেকে যা পেলাম এক নজরে দেখে নিই,

  • 220V কয়েল 1262 turns 30 SWG
  • 6V কয়েল 35 turns, 20 SWG
  • 12V কয়েল 69 turns × 2, 21 SWG

সতর্কতা ও কিছু নির্দেশনা

  1. তার প্যাচানোর সময় যেন তারের এনামেল ইন্সুলেশন নষ্ট না হয়ে যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
  2. তার কোরের সাথে যেন লেগে না যায় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
  3. কয়েল গুলো সুষম ভাবে প্যাচাতে হবে।
  4. ট্রান্সফরমারের হাম (Hum) কমাতে কয়েল প্যাচানোর পর ইন্সুলেটিং ভার্নিশ দিয়ে রোদে শুকাতে হবে।
  5. কয়েল থেকে বাইরে সংযোগ তার বের করতে সোল্ডারিং করার আগে কয়েলের প্রান্ত সিরিশ কাগজ অথবা ছুরি দিয়ে এনামেল ইন্সুলেশন তুলে নিতে হবে।
  6. কয়েল থেকে বাইরে সংযোগ তার বের করতে ইন্সুলেটিং টিউব অথবা Heat Shrink Tube ব্যবহার করা ভাল।
  7. একটি কয়েল প্যাচানোর সময় সব প্যাচ একই দিকে দিতে হবে। অর্থাৎ এক কয়েলের সব প্যাচ Clockwise অথবা Anti-clockwise ভাবে ববিনে প্যাচাতে হবে।
  8. বাড়তি নিরাপত্তা হিসেবে ট্রান্সফরমারের বডি বা চেসিস আর্থিং করতে হবে।

সমাপ্তি

আশাকরি ট্রন্সফরমার তৈরী করবার এই ক্যলকুলেটর ও লেখাটি সবার উপকারে আসবে। তাহলেই আমার পরিশ্রম স্বার্থক। সবাই ভালো থাকবেন। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি।