EEE ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য পাওয়ার সিস্টেম মেজর বিষয়। বিশেষত যারা পাওয়ার কে মেজর হিসেবে নেয় বা পাওয়ারে কাজ করতে আগ্রহী থাকে। আজকে পাওয়ার সাবস্টেশন সম্পর্কে সংক্ষেপে কিছু লিখছি। কিছু গাণিতিক সমস্যা ও তাঁর সমাধান ও দেবার চেষ্টা করেছি।
এখানে বলে রাখা ভালো যে আমার লেখার অভ্যেস তেমন নাই, অন্য একটি সাইটে অনেককাল আগে জাওয়াদ তাহমিদ এর বাংলায় লেখা ইলেকট্রনিক্স এর খুঁটিনাটি সিরিজ প্রকাশিত হয়েছিল। মূলত আমার DC সার্কিট সম্পর্কে জ্ঞান সে লিখা পড়ে অনেক উন্নত হয়। বেজটা ধরতে শিখি। সেই অনুপ্রেরনায় আমি পাওয়ার সিস্টেম সিস্টেমের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ পাওয়ার সাবস্টেশন নিয়ে লিখছি।
উল্লেখ্য যে, এই সাইটে এমন অনেকেই আছেন যারা এই বিষয়ে আমার চেয়ে অনেক বেশি জ্ঞান রাখেন । আশা করি তারা ভুলত্রুটি শুধরে দেয়ার চেস্টা করবেন। আমি ছাত্র হিসেবে খুবই সাধারন, আমার যতটুকু শেখা তা দিয়ে যদি কারো সামান্য উপকার হয় তবেই আমি সার্থক।
পর্ব – ১
আমরা কমবেশী সকলেই জানি বাসাবাড়ির বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় কোন এক পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে। যেখানে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। এবং এই বিদ্যুৎ বিতরণ করা হয় পাওয়ার সাবস্টেশন এর মাধ্যমে। আসুন সংক্ষেপে যেনে নেই কতগুলো সাবস্টেশন এর কথা।
পরিচ্ছেদসমূহ
সাবস্টেশন কি?
সাবস্টেশন হচ্ছে বিদ্যুৎ উৎপাদন, পরিবহণ, সঞ্চালন, বিতরণ ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার একটি অংশ।
পাওয়ার সাবস্টেশন কত প্রকার ও কি কি?
নিচে পাওয়ার সাবস্টেশন সমূহের প্রধান শ্রেণীবিভাগ দেয়া হলো।
Generating Substation:
মুলত পাওয়ার প্ল্যান্ট গুলো যেখানে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় তাকে জেনারেটিং সাবস্টেশন বলে।
Grid Substation:
পরিবহনকারী তার (transmission line) সমূহ এই গ্রীড সাবস্টেশন নামে পরিচিত।
Secondary Substation:
শিল্পকল-কারখানায় নিজস্ব Transformer গুলো সেকেন্ডারি সাবস্টেশন নামে পরিচিত। এগুলো অনেক উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন।
Distribution Substation:
বাসা-বাড়ি, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মসজিদ ইত্যাদি সাধারন ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ সরবরাহ যেখান থেকে করা হয়, সেটাই ডিস্ট্রিবিউশন সাবস্টেশন- Distribution Substation.
যতই ঘোরা-ঘুরি করুক, একটি প্ল্যান্ট থেকে তৈরী বিদ্যুৎ আমাদের বাসা পর্যন্ত আসতে কমপক্ষে ৫ টা মাধ্যমের সাহায্য নেয় (এর বেশীও হতে পারে, কিন্তু এই ৫টা লাগবেই লাগবেই)। আসুন দেখি কি কি সেই উপাদান গুলো?
বিদ্যুৎ পরিবহনে যেসব উপাদান বহুল ব্যবহৃত হয়ঃ
প্রথমে Synchronous Machine দ্বারা বিদ্যুৎ তৈরী করা হয়। অতঃপর তা Step up Transformer এর মাধ্যমে হাই ভোল্টেজে পরিনত করা হয়।
অতঃপর High voltage Transmission Line এর মাধ্যমে তা পরিবহন করা হয়, এবং নির্দিষ্ট গন্তব্যে প্রেরন করা হয়।
তারপর সেই বিদ্যুৎ কে Step down Transformer এর মাধ্যমে ব্যবহার উপযোগী মানে আমাদের ডিভাইস গুলোর জন্য সুইটেবল করা হয়।
অবশেষ Load মানে ডিভাইস (লাইট, ফ্যান, টিভি ইত্যাদি) গুলো সেগুলো দিয়ে সচল হয়।
অনেকেই প্রশ্ন করতে পারেন High voltage এ কেন পরিনত করতে হয়? যা উৎপাদন করি সেটা কেন পাঠায় না?
কারন হচ্ছে পরিবহন খরচ ও অন্যান্য লস কমানোর জন্য এটা করা হয়। সূত্র মোতাবেক-
Ploss = I2R বা I2 × L
এখান থেকে দেখা যায় ভল্টেজ বাড়ার সাথে সাথে কারেন্ট কমে যায়। তাই পরিবহনের সময় High voltage এ রূপান্তর করা হয়।
এ বিষয় নিয়ে Transmission & Distribution নিয়ে বলার সময় বিস্তারিত বলব। তবে এটুকু জেনে রাখা ভাল, ৪৫০V কে High voltage বলা হয়। ৭৫০ v কে extra High voltage বলা হয়।
বাসা-বাড়ি তে যে বিদ্যুৎ ব্যবহার করি তা মুলত ৩ ফেজের। কিন্তু ৩ ফেজের হিসাব করা বেশ দুরহ এবং সময় সাপেক্ষ।
এই কারনে গবেষকগন সহজ ও দ্রুততার সাথে পরিমাপের জন্য একটা পদ্ধতি বের করেছেন। যা Single line diagram/One line diagram নামে পরিচিত।
এই পদ্ধতিতে ৩ ফেজের পরিবর্তে ১ ফেজ নিয়ে হিসাব করা হয়। হিসেব হয়ে গেলে তা সহজেই ৩ ফেজে নিয়ে যাওয়া হয়।
এত জটিলতার মাঝে যাওয়ার দরকার নাই। প্রথমে সিংগেল লাইন ডায়াগ্রাম আঁকা শিখি এর থেকে হিসাব বের করি।
অবশেষে জটিল থেকে জটিলতর আপনি নিজেই পারবেন।
একটা বিশেষ কথা না বললেই নয়, Single line diagram/ One line diagram আঁকতে হলে সিস্টেমকে অবশ্যই balanced এবং symmetrical হতে হবে।
এ নিয়ে চিন্তার কিছু নাই। আসুন আঁকা শিখি। এক সময় আপনি নিজেই ধরতে পারবেন balanced এবং symmetrical কেমন আর কিভাবে হয়!
Single line diagram/ one line diagram আঁকতে হলে নিচের ছক থেকে symbol গুলো মনে রাখতেই হবে। মোটেও জটিল কিছু নয় একবার তাকিয়ে দেখুন।
এখন এই ৫ টা নিয়ে কাজ করব, তাই ৫টাই দিলাম। উল্লেখ্য যে এই ৫টাই বহুল ব্যবহৃত। আরো কিছু চিহ্ন আছে তা পরে দিয়ে দিব। আসুন একটি উদাহারন অনুশীলন করি।
সমস্যা ১
একটা জেনারেটর একটি step up transformer এর মাধ্যমে transmission line এর সাথে যুক্ত, বিপরীত দিক থেকে একটি মোটর একটি step down transformer এর মাধ্যমে transmission line এর সাথে যুক্ত। single line diagram আঁক।
সমাধান- প্রথমে কথা মত আমরা একটা জেনারেটর নিব। চিত্র – ১ এ দেওয়া আছে। সেভাবেই নিচ্ছি।
চিত্র – ২
এরপর নিব স্টেপ আপ ট্রান্সফরমার। কেন? আরে প্রশ্নেই তো বলা আছে জেনারেটর স্টেপ আপ ট্রান্সফর্মার দিয়ে যাবে অর্থাৎ এর সাথে সরাসরি যুক্ত।
আসুন তবে দেখি চিত্র – ১ এ আবার।
এরপরে আসবে ট্রান্সমিশন লাইন। আসুন তবে দেখি চিত্র – ৪
চিত্র – ৪
এরপর নিব স্টেপ ডাউন ট্রান্সফর্মার। কারন মোটর তো সরাসরি ট্রান্সমিশন লাইন এর সাথে যুক্ত নয়।
প্রয়োজনে প্রশ্ন আরেকবার পড়ুন।
এরপর সর্বশেষ অংশ মোটর, যা লোড হিসেবে আছে। মোটর কিন্তু ডায়নামিক লোড।
চিত্র-১ এ দেখি ডায়নামিক লোড কি আছে এবং বসিয়ে দেই।
চিত্র – ৬
তাহলে পুরো ডায়াগ্রামটা কিভাবে হবে?? কিছুই না। শুধু একের পরে এক মিলিয়ে দিন। ব্যাস হয়ে গেল Single line diagram/ one line diagram.
এবার একটি সমস্যা দেই। নিজে নিজে চেষ্টা করেন। একবার পারলেই আর পেছনে ফিরে তাকাতে হবে না।
সমস্যা – ২
একটি সিস্টেম ২ টি জেনারেটর দিয়ে গঠিত। এর একটি একটি reactor দ্বারা ভূমির সাথে যুক্ত। অন্যটি resistor দ্বারা একটি bus এর মাধ্যমে step up transformer এর মাধ্যমে transmission line এর সাথে যুক্ত। একটি মোটর অপর প্রান্ত থেকে একটি bus এর মাধ্যমে step down transformer এর মাধ্যমে transmission line এর সাথে যুক্ত। মটরটি reactor দ্বারা ভূমির সাথে যুক্ত।
Hints: রেজিস্টর, reactor ইত্যাদির সিম্বল বদলায় না। আর আমার চিত্রে step up transformer ও step down transformer সঠিক ভাবে আঁকা সম্ভব হয় নি, আপনারা অবশ্যই সঠিক ভাবে দেবেন। কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্টে জানাবেন।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি, পরবর্তি আলোচনায় impedance and reactance diagram আঁকা শেখাব। ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।
মন্তব্য:Thanks for your thinking & contribution. Best of luck for new way-in……
fb page ar link ta dien
http://www.facebook.com/AmaderElectronics
সাধারনত জেনারেশন ভোল্টজ কত কত হয় আমাদের দেশে।
১১ কিলোভোল্ট থেকে ১৫ কিলোভোল্ট
অনেক প্রায়জনীয় তথ্য।ধন্যবাদ