ডিসি টু ডিসি কনভার্টার সিরিজের প্রথম পর্বে ডিসি টু ডিসি কনভার্টার কি, কেনো, ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। এই পর্বে ডিসি টু ডিসি কনভার্টারের শ্রেণীবিন্যাস এবং একটি প্রধান শাখা ভোল্টেজ ডিভাইডার নিয়ে আলোচনা করবো।
ডিসি টু ডিসি কনভার্টারের শ্রেণীবিন্যাস
- ভোল্টেজ ডিভাইডার
- লিনিয়ার রেগুলেটর
- সুইচিং কনভার্টার
ডিসি টু ডিসি কনভার্টারের প্রধান দুটি ভাগের একটি হলো ভোল্টেজ ডিভাইডার, যার একটি বিশেষ শাখা হলো লিনিয়ার রেগুলেটর যেমন LM317, LM350, LM337, কিংবা 78xx সিরিজের রেগুলেটর আইসি।
ভোল্টেজ ডিভাইডার হলো রেজিস্টর বা ক্যাপাসিটর বা অন্যান্য ইলেকট্রনিক্স কম্পোনেন্ট দিয়ে তৈরি এমন একটি লিনিয়ার সিস্টেম, যা মূল ভোল্টেজকে (ইনপুট) দুই বা ততোধিক অংশে বিভক্ত করতে পারে। ভোল্টেজ ডিভাইডারের মধ্যে বহুল প্রচলিত দুটি ডিভাইডার হলো রেজিস্টিভ ভোল্টেজ ডিভাইডার এবং ক্যাপাসিটিভ ভোল্টেজ ডিভাইডার। এরমধ্যে রেজিস্টিভ ভোল্টেজ ডিভাইডারই সর্বাধিক ব্যবহৃত হয়। ফলে আলোচনার জটিলতা কমানোর জন্য এখানে শুধু রেজিস্টিভ ভোল্টেজ ডিভাইডার নিয়ে আলোচনা করবো।
কোনো ভোল্টেজকে কমিয়ে অপেক্ষাকৃত কম মানের ভোল্টেজ (Step Down) পাবার সবথেকে সহজ উপায় হলো ভোল্টেজ ডিভাইডার। নিচের চিত্রটি ভোল্টেজ ডিভাইডারের সাধারণরূপ।
এখানে দুইটি রেজিস্টেন্স দিয়ে একটি সিরিজ নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয়েছে, যার A ও C প্রান্তে ভোল্টেজ ইনপুট দিলে রেজিস্টেন্স দুটির মানের উপর ভিত্তি করে ইনপুট ভোল্টেজের কিছু অংশ R1 এবং কিছু অংশ R2 তে ড্রপ হয়। ফলে B বিন্দুতে ইনপুট ভোল্টেজের চেয়ে অপেক্ষাকৃত কম মানের ভোল্টেজ পাওয়া যায়।
B বিন্দু থেকে গ্রাউন্ডের সাপেক্ষে আউটপুট ভোল্টেজ Vout হিসাব করতে গেলে, কিংবা সার্কিটের যে কোনো অংশের ভোল্টেজ হিসাব করতে গেলে কার্শফের ভোল্টেজের সূত্র (kirchhoff’s voltage law or KVL) এবং ওহমের সূত্র সম্পর্কে জানা জরুরী। আশাকরি পরবর্তীতে অন্য কোনো লেখায় এসব প্রাথমিক সূত্র সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। আপাতত একটি সহজ সূত্রের মাধ্যমে আমরা B বিন্দুতে আউটপুট ভোল্টেজ নির্ণয় করতে পারি। সূত্রটি দেখুন-
এই সূত্রটিই রেজিস্টেন্স দিয়ে তৈরি ভোল্টেজ ডিভাইডারের সাধারণ সূত্র। রেজিস্টেন্স দিয়ে তৈরি করা হয় বলে একে রেজিস্টিভ ভোল্টেজ ডিভাইডারও বলা হয়। প্রকৃতপক্ষে এ সূত্রটিও কার্শফের ভোল্টেজের সূত্র এবং ওহমের সূত্রের সাহায্যেই প্রতিপাদন করা হয়।
পরবর্তীতে B বিন্দুতে যখন কোনো লোড (ধরুন একটি LED, কিংবা একটি ছোটো লাইট বাল্ব) লাগানো হয়, তখন সূত্রটি নিম্নরূপে পরিবর্তীত হয়-
অর্থাৎ R2 কে এখন R2 এবং RLoad বা লোডের রেজিস্টেন্সের প্যারালাল কানেকশন থেকে সমতূল্য যে রেজিস্টেন্স পাওয়া যাবে, তা দিয়ে প্রতিস্থাপিত করতে হবে।
একটি উদাহরণ দেখা যাক। মনে করুন আপনি ১২ ভোল্টের একটি ব্যাটারি থেকে ৫ ভোল্ট আউটপুট পেতে চাচ্ছেন। তাহলে Vout = 5V । যেহেতু R1 এবং R2 দুটোই আমাদের অজানা, তাই যে কোনো একটিকে আমাদের ইচ্ছামতো ধরে নিতে হবে, অন্যটা সূত্রের সাহায্যে হিসাব করলেই পাওয়া যাবে। ধরুন R2 = 1K Ohms। তাহলে উপরের সূত্রে Vin , Vout এবং R2 এর মান বসালে পাই
তাহলে আমার R1 এর মানও পেয়ে গেলাম। অর্থাৎ চিত্রের মতো করে R1 যায়গায় 1.4K Ohms এবং R2 এর যায়গায় 1K Ohms দিয়ে ইনপুটে ১২ ভোল্টের ব্যাটারি লাগালেই B বিন্দুতে গ্রাউন্ডের সাপেক্ষে (এক্ষেত্রে ব্যাটারির নেগেটিভ প্রান্ত) আমাদের কাংক্ষিত 5V পেয়ে যাবো।
এখানে একটা বিষয় লক্ষণীয়, R2 = 10 Ohms এবং R1 = 14 Ohms ধরলে, অথবা R2 = 470 Ohms এবং R1 = 658 Ohms, অথবা R2 = 1M Ohms এবং R2 = 1.4M Ohms ধরলে, অথবা R2 = 2.2 Ohms এবং R1 = 3 Ohms ধরলেও তো 5V পাওয়া যাবে। তাহলে কেনো আমরা R2 = 1K Ohms ধরলাম?
যে কোনো সার্কিট ডিজাইন করার সময় আমাদেরকে অবশ্যই উক্ত সার্কিট কি পরিমাণ পাওয়ার বা শক্তি অপচয় (dissipated power) করে বা গ্রহণ করে, তা মাথায় রাখতে হবে। এই সার্কিট দ্বারা গৃহীত বা অপচয়কৃত পাওয়ার আমরা নিম্নক্তো সূত্র দ্বারা হিসাব করতে পারি-
যদি R2 = 1K Ohms এবং R1 = 1.4K Ohms ধরা হয়, তাহলে Dissipated Power হয় 60 mW, খুব বেশি না। কিন্তু যদি R2 = 2.2 Ohms এবং R1 = 3 Ohms নেয়া হয়, তাহলে Dissipated Power এর পরিমাণ হবে 27W। এই বিশাল পরিমাণ পাওয়ার রেজিস্টেন্স সহ্য করতে পারবে না, মুহূর্তেই পুড়ে যাবে। তাছাড়া এই বিশাল পরিমাণ শক্তি কোনো কাজেও লাগছে না, শুধুমাত্র তাপশক্তি হিসেবে অপচয় হচ্ছে। তাই এমনভাবে রেজিস্টেন্স নির্বাচন করতে হবে যাতে ডিভাইডার নেটওয়ার্কটি খুব বেশি শক্তি অপচয় না করেই আউটপুটে পর্যাপ্ত ভোল্টেজ তৈরি করতে পারে।
তাহলে আমরা যদি একটু বেশিমানের রেজিস্টেন্স দিয়ে ভোল্টেজ ডিভাইডার তৈরি করি, সেক্ষেত্রে খুব বেশি শক্তির অপচয় না করেই আমাদের দরকারমতো যে কোনো ভোল্টেজ পেয়ে যাবো, কি মজা! তাইনা? উত্তর হলো – না, সমস্যা আরও আছে। একটু বাস্তব উদাহরণ দিয়ে দেখা যাক।
মনে করুন আপনি কোনো সার্কিটে একটি ট্রানজিস্টারকে 5V 1mA এ বায়াসিং করতে চান, অর্থাৎ ট্রানজিস্টরের বেস কারেন্ট 1mA। R2 = 1K Ohms এবং R1 = 1.4K Ohms দিয়ে ভোল্টেজ ডিভাইডার তৈরি করে আউটপুটে 5V পেলেন। ট্রানজিস্টরটি যেহেতু আউটপুটে লোড হিসেবে সংযুক্ত আছে, তাই একে একটি সমতূ্ল্য রেজিস্টেন্স দিয়ে প্রতিস্থাপন করলে তার রেজিস্টেন্স হয় 5V / 1mA = 5K Ohms। তাহলে এখন যেহেতু লোড সংযুক্ত করা হয়েছে, সেহেতু দ্বিতীয় সূত্রের সাহায্যে আমরা আউটপুট ভোল্টেজ বের করতে পারি-
এক্ষেত্রে আউটপুট ভোল্টেজ কাংখিত 5V থেকে কমে 4.47V হয়ে গেছে, সাধারণ কাজের জন্য এটুকু মেনে নেয়া যায়, ট্রানজিস্টারটি কাজ করবে।
কিন্তু যদি এমন হয়, আপনি ট্রানজিস্টার বায়াসিং-এর পরিবর্তে 5V এর একটি ছোটো মটর চালাতে চাচ্ছেন, যেটা 20mA কারেন্ট টানে, কিংবা এই ট্রানজিস্টারের বেস-এই 20mA কারেন্ট সাপ্লাই দেয়া প্রয়োজন, তাহলে কি অবস্থা হবে? V = IR প্রয়োগ করলে লোড রেজিস্টেন্সের মান দাড়ায় RLoad = 5V / 20mA = 250 Ohms । আবারও দ্বিতীয় সূত্রটি প্রয়োগ করলে দেখা যায়
কি হলো? আপনার তো 5V দরকার ছিলো, কিন্তু মাত্র 1.5V পাওয়া গেছে, এ দিয়ে তো কাজ হবে না।
প্রকৃতপক্ষে একটি সাধারণ হিসাব অনুযায়ী যেসব সার্কিটে 10 mA বা তার বেশি কারেন্ট দরকার হয়, সেখানে এ ধরনের ভোল্টেজ ডিভাইডার ব্যবহার করা হয় না, কিংবা প্রতিটা ডিভাইসের জন্য আলাদা আলাদা ভোল্টেজ ডিভাইডার ব্যবহার করতে হয়, বা প্রতিবারে রেজিস্টেন্স পরিবর্তন করতে হয়, যা খুবই বিরক্তিকর।
পাশের চিত্রটি লক্ষ করুন, এটি হলো আগের সার্কিটের সহজতররূপ। এখানে দেখতে পাচ্ছেন R2 এর পরিবর্তে সরাসরি লোডকে লাগানো হয়েছে। এক্ষেত্রে লোডের দুই প্রান্তের ভোল্টেজ নিচের সূত্রের সাহায্যে নির্ণয় করা যায়
লক্ষ করুন, এটি কিন্তু সেই প্রথম সূত্রটিই, শুধু আগে যেখানে আলাদা একটি রেজিস্টেন্স R2 লাগতো, এখন আর সেটা লাগছে না, তারবদলে সরাসরি লোডের রেজিস্টেন্স বসিয়ে হিসাব করা হচ্ছে। এ পদ্ধতি ব্যাবহারের ফলে সার্কিটের জটিলতা কমে আসে, রেজিস্টেন্সও কম লাগে। তাছাড়া মূল সিস্টেমে ডিভাইডার নেটওয়ার্ক আলাদা পাওয়ার নষ্ট করতো, সেই সমস্যাটিও এখানে নেই। চলুন, এ পদ্ধতিতে একটি উদাহরণ দেখা যাক।
মনে করুন আপনি 12V ব্যাটারী থেকে একটি 3mm White LED জ্বালাতে চাচ্ছেন।
ডাটাশিট থেকে দেখা যায় এই LED-র Continuous Forward Current 30mA এবং Minimum Forward Voltage 3.0V । ওহমের সূত্র V = IR প্রয়োগ করলে LED-র রেজিস্টেন্স পাওয়া যায় ১০০ ওহমস। এবার তৃতীয় সূত্র প্রয়োগের মাধ্যমে আমরা R1 এর মান বের করতে পারি
এ পদ্ধতি ব্যবহার করে খুব সহজেই যে কোনো ভোল্টের ব্যাটারী থেকে অপেক্ষাকৃত কম ভোল্টের LED বা অন্য কোন লোড চালাতে পারবেন। কিন্তু পূর্বের আলোচিত সমস্যা থেকেই যাচ্ছে, মানে লোড পরিবর্তন করলে ডিভাইডারের রেজিস্টেন্সও পরিবর্তন করতে হচ্ছে।
আসুন ভোল্টেজ ডিভাইডারের সুবিধা অসুবিধাগুলো দেখে নেয়া যাক।
সুবিধা
- জটিলতা কম, সহজে তৈরি করা যায়
- খরচ সাশ্রয়ী
- ইনপুট থেকে কম মানের যে কোনো ভোল্টেজই তৈরি করা যায়
অসুবিধা
- আউটপুট স্থির (Constant) নয়
- এক লোডের জন্য তৈরি ডিভাইডার অন্য লোডে ব্যবহার করা যায় না
- ইনপুট ভোল্টেজের থেকে বেশি ভোল্টেজ পাওয়া যায় না
- ইনভার্ট বা উল্টো ভোল্টেজ যেমন 12V ইনপুট থেকে -12V আউটপুট পাওয়া যায় না
- এফিসিয়েন্সী বা কর্মদক্ষতা কম
এবারে মনে করুন, আপনি লোডের কোনো পরিবর্তন করবেন না। ধরুন আপনি 12V ব্যাটারী থেকে ভোল্টেজ ডিভাইডারের মাধ্যমে 6V, 0.9W এর একটি ছোটো লাইট বাল্ব জ্বালাতে চাচ্ছেন, এই ডিভাইডার দিয়ে আপনি অন্য কিছু চালাবেন না, সবসময় এই লাইট বাল্বটি জ্বালানোর কাজেই ব্যবহার করবেন। তাহলে P=VI প্রয়োগ করে লাইট বাল্বের কারেন্ট পাওয়া যাবে 0.15A বা 150mA, এবং V=IR প্রয়োগ করে বাল্বের রেজিস্টেন্স পাওয়া যাবে 40Ω। তাহলে তৃতীয় সূত্র প্রয়োগ করলে R1 ও 40Ω -ই পাওয়া যায়।
এখানে লক্ষনীয়, সমান মানের দুইটি রেজিস্টেন্স দিয়ে ভোল্টেজ ডিভাইডার তৈরি করলে আউটপুট ভোল্টেজ, ইনপুটের অর্ধেক হবে।
আপনি সবকিছু ঠিকঠাকভাবে হিসাব-নিকাশ করে 40Ω এর একটি রেজিস্টেন্সের সাথে লাইটবাল্বটি লাগিয়ে জ্বালানো শুরু করলেন। ভবিষ্যতে কখনো লাইট বাল্বের পরিবর্তে এই নেটওয়ার্কে মটর বা অন্য কোনো মানের লাইট বাল্ব, কিংবা অন্য কোনো লোড চালাবেন না, সে বিষয়েও সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলেন। তাহলে নিয়ম অনুযায়ী আউটপুটে সবসময়ই 6V পাওয়া যাবার কথা, এবং বাল্বের ভেতর দিয়ে সবসময়ই 0.15A কারেন্ট প্রাবহিত হবার কথা।
সত্যিই কি আউটপুট ভোল্টেজ এবং কারেন্ট অপরিবর্তীত থাকবে? সূত্রগুলো আরও একবার দেখুন। যেহেতু তিনটিই একই সূত্র, তাই এই উদাহরণে হিসাবের সুবির্ধার্থে তৃতীয় সূত্রটিকেই বিবেচনা করা হলো।
এখানে আউটপুট ভোল্টেজ Vout সর্বদা স্থির বা অপরিবর্তনীয় (Constant) থাকবে, যদি এবং কেবল যদি
- Vin অপরিবর্তনীয় থাকে
- R1 এবং RLoad অপরিবর্তনীয় থাকে
এই দুইটি শর্তের যে কোনো একটির পরিবর্তন হলেই আউটপুটের ভোল্টেজও পরিবর্তীত হবে। সুতরাং আউটপুটে স্থির (Constant) ভোল্টেজ পেতে হলে এ শর্তদুইটি অবশ্যই পূরণ করতে হবে। কিন্তু বাস্তব জীবনে তা কখনো সম্ভব নয়। কেনো সম্ভব নয়? চলুন দেখা যাক-
১ম শর্তের জন্য-
- ব্যাটারী ধীরে ধীরে তার চার্জ হারায়, ফলে ইনপুট ভোল্টেজ কমে যায়
- সোলার সেলে দিনের আলো কমা বাড়ার সাথে সাথে ভোল্টেজও কমে-বাড়ে
- উইন্ড/ওয়াটার টারবাইনের ভোল্টেজ বাতাস বা পানির গতিবেগের সাথে পরিবর্তিত হয়
- গ্যাসচালিত জেনারেটরে ভোল্টেজ তার ইঞ্জিনের ঘূর্ণনের উপর নির্ভর করে কমে-বাড়ে
- বাসাবাড়ির গ্রীড পাওয়ার সাপ্লাই হিসেবে ব্যবহার করলে সেটিও কখনোই স্থির 220V নয়, বরং বিভিন্ন কারণে 200V-230V এর মাঝে ওঠানামা করে। ক্ষেত্রবিশেষে আরও বেশি কমে বা বাড়ে
সুতরাং দেখা যায় সাধারণভাবে প্রাপ্ত কোনো উৎস থেকে কোনোভাবেই Vin বা ইনপুট ভোল্টেজ স্থির রাখা সম্ভব নয়। ফলে ১ম শর্ত অপরিবর্তীত রাখা সম্ভব নয়, অর্থাৎ আউটপুট ভোল্টেজও স্থির রাখা সম্ভব নয়।
একমাত্র রেগুলেটেড পাওয়ার সাপ্লাই থেকেই মোটামুটি স্থির মানের ভোল্টেজ পাওয়া সম্ভব, আর সেটিই আমার এই লেখাই চুড়ান্ত উদ্দেশ্য। আপাতত আলোচনার সুবিধার্থে কোনোভাবে Vin কে স্থির রাখা হলো। এবারে দ্বিতীয় শর্তের দিকে নজর দেয়া যাক-
বাস্তবজীবনে কোনো লোডই স্থির রেজিন্টেন্স বা ইমপিডেন্স-এর হয় না। রেজিস্টেন্সের মধ্যে দিয়ে কারেন্ট প্রবাহিত হলে রেজিস্টেন্স গরম হয়, যার ফলে তার রেজিস্টেন্স আরও বৃদ্ধি পায়। একই কথা লাইট বাল্বের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। অন্যদিকে লাইটবাল্বের পরিবর্তে অন্য কোনো লোড লাগালেও তার রেজিস্টেন্স বা ইম্পিডেন্স পরিবর্তীত হবে। যেমন মটরের ইম্পিডেন্স তার ম্যাকানিকাল লোডের সাথে সাথে পরিবর্তিত হয়। ফলে দ্বিতীয় শর্তও পূরণ করা সম্ভব নয়।
সুতরাং দেখা গেলো বাস্তবক্ষেত্রে দুইটি শর্তের একটিও মেনে চলা সম্ভব নয়। ফলে ভোল্টেজ ডিভাইডার থেকে প্রাপ্ত আউটপুট ভোল্টেজও স্থির রাখা সম্ভব নয়।
তাহলে এমন কোনো কম্পোনে্ট বা ডিভাইস কি নেই, যা দিয়ে এই দুইটি শর্ত না মানলেও আউটপুটে স্থির ভোল্টেজ পাওয়া সম্ভব? হ্যা, সম্ভব, কিন্তু আজ আর না, এ বিষয়ে পরবর্তী পর্বে আলোচনা করবো। ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের সাথেই থাকুন। কোনো প্রশ্ন থাকলে, বা লেখাতে কোনো ভূল-ভ্রান্তি থাকলে নিচে কমেন্টস বক্স ব্যবহার করুন, চাইলে ফেসবুক পেজ থেকেও ঘুরে আসতে পারেন।
ধন্যবাদ
P = IV
V = IR
মূল মিনিং কি? বুঝিয়ে বলুন। 🙂
Watt (P) = Voltage(V) x Ampere (A)
কিন্তু I R এই দুটির মিনিং কি?
I = current, R = resistor
বুঝলাম না। রেজিষ্টরের প্রথম অক্ষর R। এজন্য R হবে বুঝলাম। কিন্তু কারেন্টের প্রথম অক্ষর কি? এর সাথে I এর সম্পর্ক কি?
ওয়াট কেও তো P হিসেবে উল্লেখ করে। আবার কোনো কোনো সার্কিটে রেজিস্টেন্স কে E হিসেবে উল্লেখ থাকে। এগুলো আসলে বিজ্ঞানীদের স্থির করে দেয়া স্ট্যান্ডার্ড। যেমন অভিকর্ষ বল কে G দ্বারা প্রকাশ করে। তেমনি…
ও তাহলে বিজ্ঞানিদের মাতবারির সংকেত এগুলো। 🙂 তবে আমরা বাংগালী। ওয়াটের প্রথম অক্ষর W না লিখে P লেখা হয়। এই P এর মিনিংটা পাওয়ার। সো ওয়াট আর পাওয়ার একই কথা। তবে কারেন্টের সংকেত I লিখে উল্লেখ করা থাকুক আমার আপত্তি নাই। কারন সব মাতবারি ঐ ইংলিশ বিজ্ঞানিদের। 🙂 তবে I এর মিনিংটা আমি জানতে চাই।
বিজ্ঞানের কোনোকিছুই মাতবরি করে আসে না, বিজ্ঞান মাতবরির জায়গা না। কোনো একটি বিষয় যিনি আবিষ্কার করেন, নামকরণের সময় তার বা এই আবিস্কারের সাথে জড়িত অন্য কোনো বিজ্ঞানীর নামানুষারে করা হয়। এক্ষেত্রে আবিষ্কারকের বা আবিষ্কারের দেশের ভাষাই প্রাধান্য পায়। আপনি হয়ত হিগস বোসন বা ঈশ্বর কণা-র নাম শুনে থাকবেন, যেটি পদার্থবিজ্ঞানী পিটার হিগস ও সত্যেন বোস-এর নামে নামকরণ করা হয়েছে। এই সত্যেন বোস একজন বাঙ্গালী। মাতবরি করে হলে নিশ্চয় কোন বাঙ্গালীর নামে নামকরণ হতো না 🙁
ওয়াট (W) হলো পাওয়ারের (P) একক। তাই পাওয়ার বোঝাতে P ব্যবহার করা হয়। যেমন P = 10W, অর্থাৎ পাওযার = ১০ ওয়াট।
রেজিস্টেন্সকে কখনোই E লেখা হতো না। E হলো Electromotive Force এর প্রতীক, যা একটি বল
কারেন্টের প্রতীক I লেখা হয়, কারণ এ বিষয়ে প্রথম দিকে যারা গবেষণা করেছেন, তাদের মধ্যে André-Marie Ampère অন্যতম, এবং খুব সম্ভবত তিনিই প্রথম কারেন্টকে সংজ্ঞায়ীত করেছেন। আর উক্ত ঘটনার নামকরণও তিনিই করেন। যেহেতু তিনি একজন ফরাসী, তাই নামকরণও ফরাসী ভাষাতেই করেছেন। ফরাসী ভাষা intensité de courant এর ইংরেজী প্রতিশব্দ current intensity কেই আমরা সংক্ষেপে Current বলে থাকি। আর এজন্যই কারেন্টের প্রতিক I, C বা অন্য কোনো লেটার নয়। অন্যদিকে কারেন্টের একককে André-Marie Ampère এর নামানুষারে এম্পিয়ার (Ampere) নামকরণ করা হয়েছে, যার প্রতীক A। উধাহরণ: I = 2A, অর্থাৎ কারেন্ট = ২ এম্পিয়ার
অসংখ্য ধন্যবাদ বিশ্বাস দাদাকে।
কারেন্টকে C দিয়ে সূচিত করা যেত কিন্তু তা ক্যাপাসিটেন্স এর একক হিসাবে পরিচিত। তাই কনফিউশন এর সম্ভাবনা থেকে যায়। তাই অনেকক্ষেত্রেই ইংরেজি আদ্যাক্ষরকে প্রতিক হিসাবে নেয়া যায়নাই।
বিজ্ঞানের অনেকক্ষেত্রেই এমন দেখা যায়। যেমন সোডিয়ামের প্রতিক Na কিন্তু S নয় কারন S সালফার এর প্রতিক।
great hoice…vai
আগে এই সূত্রটি লেখা হতো এভাবেঃ P = E x I, এখানে P = Power, E = Electromotive Force, I = (এখন মনে পড়ছে না)… এই ” I ” সম্ভবত ল্যাটিন ভাষা থেকে নেয়া হয়েছে। বিজ্ঞানের অনেক কিছুই আদি ল্যাটিন ভাষা দিয়ে প্রকাশ করে। যেমন রাসায়নিক সংকেত গুলো ল্যাটিন হয়। সূত্রগুলো ল্যাটিন হয়। উদাঃ খাবার লবনের রাসায়নিক সংকেত NaCl. ইংরেজীতে সোডিয়াম ক্লোরাইড যা কিনা নামের সাথে মিলে না। কিন্তু ল্যাটিন নাম ন্যাট্রিয়াম ক্লোরাইড (Natrium Cloride) এর সাথে মিলে। এমনি কিছু… পরে কোনো সময় মনে পড়লে জানাবো কেন I = Ampere হলো। গুগোল করেও দেখতে পারো। বিস্তারিত থাকার কথা। “Why letter I is assigned for Ampere”.. অন্যকেউ জানলেও বলতে পারেন। সবাই নতুন কিছু জানলাম… 🙂 @ব্লুবয়
ল্যাটিন নামকরণ পদ্ধতি শুধুমাত্র কেমিকেল রিএকশানের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আমার জানামতে বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখায় ল্যাটিনের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই
জীববিদ্যার অনেক যায়গায় ল্যাটিন, গ্রিক শব্দ ব্যাবহার হয়েছে
ঠিক, মনে ছিলো না :/
Plz chk it… অনুপম বড়ুয়া
I = intensity of current (দাদা যেমনটা বলেছেন)
ধন্যবাদ সকলকে সুন্দর তথ্য দিয়ে হেল্প করার জন্য।
vai chk this article… Ali Hayder
Vai DC to DC step up converter banabo kon IC diye r kivabe, jodi bolten khub valo hoto. Amar at least 9 V theke 15 V step up converter dorker. Plz help………..
You can use MC34063 IC based boost ckt… Search on google 🙂
বুঝলাম না এখানে কি ইইই স্টুডেন্ট রা কেউ একটা কমেন্ট ও করে নি নাকি… ? ?
তা না হলে I কি R কি V কি আস্ক করছে…
যদি Z, Tx, X, KVA, EMM এইসব নিয়ে লেখত তাহলে তো হয়ছিলই… ? ?