পরিচ্ছেদসমূহ
ভূমিকাঃ
থ্রি-ফেজ ট্রান্সফরমার বিষয়ে যাদের আগ্রহ রয়েছে তাদের জন্যই এই পোষ্ট, তবে নতুনদের জন্যও সহজে লেখার চেষ্টা করেছি। আমি মোঃ শোয়াইব হোসেন। বাংলাদেশের অন্যতম এক ডিস্ট্রিবিউশন ট্রান্সফরমার ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানীতে কাজ করার সৌভাগ্য হয়েছে আমার। তাই হয়ত আজ এই পোষ্ট লিখতে সক্ষম হয়েছি। পোষ্টটি পড়ে কোনো ভাইয়ের যদি এতটুকুও জ্ঞানচর্চা হয়, সেখানেই আমার স্বার্থকতা। নতুন হিসেবে লেখায় ভুল-ভ্রান্তি হলে নিজগুনে শুধরে নিবেন 🙂
(কেউ যদি ট্রান্সফরমারের বেসিক নির্মান কৌশল জানতে চান তাহলে আমাদের সাইটের এই লেখাটি পড়ার অনুরোধ রইলোঃ https://www.amaderelectronics.com609 )
ভেবেছেন কি??
Power Generation House (বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র) থেকে শুরু করে আমাদের বাসা-বাড়িতে বিদ্যুৎ সরবরাহে ব্যবহৃত বড় বড় ট্রান্সফরমার গুলো দেখেছেন তো? বিশাল বড় আর উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন হয়। এইসকল ট্রান্সফরমারগুলো হাই-ভোল্টেজে অপারেট হয়, যেমন ১১ কেভি, ৩৩ কেভি, ৬৬ কেভি, ১১০ কেভি, ১৩২কেভি ইত্যাদি । ১ কেভি (kV= kilo volt) সমান ১০০০ ভোল্ট। যার মানে দাঁড়ায় ১৩২,০০০ ভোল্ট! বিশ্বের অনেক দেশে বর্তমানে ৭৬৫ কেভি পর্যন্ত বৈদ্যুতিক ট্রান্সমিশন লাইনে ব্যবহৃত হয়। যার হাল্কা ছোঁয়ায় যে কেউ ছাই হয়ে যেতে পারে!!!
সাধারণত ৩৩ কেভির উপরে ট্রান্সমিশন লাইনে ব্যাবহৃত হয়। ৩৩ কেভি বা তার নিচের ভোল্ট ডিস্ট্রিবিউশন লাইন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ট্রান্সফরমার এর রেটিং কেভিএ (kVA) তে প্রকাশ করা হয়, কেননা এর ক্ষেত্রে Apparent Power (P=VI) হিসেব করা হয় ।
…. ভেবেছেন কখনো কীভাবে এত বিশাল দৈত্যাকৃতির জিনিসকে বানায় আর তার পরীক্ষা নিরীক্ষাই বা কিভাবে হয়? আজ আমি স্বল্প পরিসরে সেসব ট্রান্সফরমারের পরীক্ষা সম্পর্কে লিখবো। ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার সুবাদে এবং একটি বড় বহুজাতিক কোম্পানিতে কাজ করার সুবাদে এগুলো নিয়ে কাজ করার সুযোগ হয়েছে। সেই অভিজ্ঞতার আলোকেই এই লেখা। আশাকরি আগ্রহী পাঠক উপকার পাবেন।
কেন উচ্চ ভোল্টে AC সরবরাহ করা হয়?
প্রথমেই বলি কেন আমরা এত উচ্চ ভোল্টে AC কে পরিবহন করি।
পাওয়ার এর সূত্রানুযায়ী, P=VI ( যেখানে, P=পাওয়ার, V= ভোল্টেজ, I= কারেন্ট)
অর্থাৎ, ভোল্টেজ ও কারেন্টের সমন্নয়ই মোট পাওয়ার। অতএব, কারেন্টের পরিমাণ কমিয়ে ভোল্টেজ বৃদ্ধি করলেও মোট পাওয়ার প্রায়ই সমান থাকবে।
কারেন্ট প্রবাহমাত্রা নির্ভর করে ক্যাবলের ক্ষেত্রফলের(Area) ওপর। কারেন্ট প্রবাহ মাত্রা যত কম হবে ক্যাবলের ক্ষেত্রফল(Area) কম ব্যাবহার করা যায়। আর ক্যাবলের ক্ষেত্রফল কম হলে খরচ কম হবে। ট্রান্সমিশন লাইনে বেশি ভোল্টেজ ও কম কারেন্ট ব্যাবহার করলে ট্রান্সমিশন ক্যাবলের খরচ কম পরবে। এছাড়াও কারেন্ট প্রবাহ কম হলে ট্রান্সমিশন লাইন কম উত্তপ্ত হবে তাই কপার লস কম হবে, ফলে লাইনের আড়াআড়ি ভোল্টেজ ড্রপ কম হবে। ইত্যাদি বিষয়সমূহ বিবেচনা করে ট্রান্সমিশন লাইনে পাওয়ার ঠিক রেখে কারেন্ট কমিয়ে ভোল্টেজ বৃদ্ধি করা হয়।
নিচের চিত্রে দেখা যায়, ১৫৪,০০০ ভোল্টে ব্যবহৃত ক্যাবলের তুলনায় ২৭৫,০০০ ভোল্টে ব্যবহৃত ক্যাবলের ক্ষেত্রফল কম ।
আশাকরি পাঠক বুঝে গেছেন বেশি ভোল্টের বিদ্যুৎ পরিবহনের সুবিধা।
কেভিএ(KVA) ট্রান্সফরমার কোথায় ব্যবহার করা উচিৎ?
এখন আমরা আসি কতো kVA ট্রান্সফরমার কোথায় ব্যবহার করা উচিৎ তার কিছু নিয়ম সম্পর্কে। তবে লেখা দীর্ঘায়ীত না করে সংক্ষিপ্ত ভাবেই বলি- প্রথমে ট্রান্সফরমার এর অনুকূলে লোডের পরিমান নির্ধারণ করা জরুরী। লোডের পরিমাণ দ্বারা কি পরিমাণ কারেন্ট প্রবাহিত হবে তা হিসেব করা হয়। প্রাপ্ত মোট পাওয়ারের সাথে কিছু বাড়তি হিসেব করে কত রেটিং এর ট্রান্সফরমার প্রয়োজন তা নির্ধারণ করা হয়।
বিশালকার ট্রান্সফরমারকে তৈরীর পর কীভাবে পরীক্ষা করা হয়ঃ
এবার আমরা জানবো এসব বিশালকার ট্রান্সফরমারকে তৈরীর পর কীভাবে পরীক্ষা করা হয়। স্বভাবতই এগুলো তৈরি করা হয় কিছু আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসারে এবং এর দীর্ঘস্থায়ীত্ব নিশ্চিত করতে একে পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে প্রতিধাপে পরীক্ষা করা হয়।
ট্রান্সফরমার টেস্টিংঃ
সাধারণত থ্রি-ফেজ ডিস্ট্রিবিউশন ট্রান্সফরমারে একাধিক পরিমাণ টেস্ট করা হয়ে থাকে । স্থান ও ধরন হিসেবে টেস্ট দুই অবস্থায় করা হয়
- ১. ফ্যাক্টরি টেস্ট (Test done at factory)
- ২. সাইট টেস্ট (Test done at Site)
(আমরা ফ্যাক্টরি টেস্ট বিষয়ে আলোচনা করব)
১. ফ্যাক্টরি টেস্ট
ফ্যাক্টরিতে ট্রান্সফরমার তৈরির বিভিন্ন ধাপে ধাপে আমরা বিভিন্ন ধরণের টেস্ট করে থাকি, এবং সর্বশেষে সম্পূর্ণ তৈরি শেষে কিছু টেস্ট করা হয়।
কাস্টমার ডিমান্ড ও সে অনুযায়ী ডিজাইন-কমপ্লিট প্রডাকশন শেষে ট্রান্সফরমারটিকে তার সঠিকতা যাচাই এর জন্য বেশ কিছু টেস্টে সফল ভাবে উত্তির্ণ হতে হয়। যা দ্বারা প্রমাণিত হয় ট্রান্সফরমারটি কাস্টমার ডিমান্ড অনুসারে সঠিক রেটিং এর ট্রান্সফরমার প্রস্তুত আছে।
ফ্যাক্টরি টেস্টেরও কিছু প্রকার ভেদ রয়েছে, এগুলো হলঃ-
- টাইপ টেস্ট,
- রুটিন টেস্ট এবং
- স্পেশাল টেস্ট
টাইপ টেস্ট –
ট্রান্সফরমার এর ইলেক্ট্রিক্যাল ও মেকানিকাল প্যারামিটারগুলো সঠিক আছে কিনা এবং তাদের গুণগত মানের সঠিকতা যাচাই হল টাইপ টেস্টের অংশ ।
রুটিন টেস্টের অংশগুলো হল –
♦♦♦ ওয়াইন্ডিং রেজিস্টেন্স টেস্ট, ট্রান্সফরমার এর HT ও LT সাইডের ফেজ টু ফেজ কয়েল ওয়াইন্ডিং রেজিস্ট্যান্স টেস্ট করা হয় ।
ভোল্টেজ রেশিও টেস্ট
HT সাইডের সাপেক্ষে LT সাইডের ভোল্টেজ রেশিও এর সঠিকতা যাচাই করার জন্য এই টেস্ট করা হয় ।
ডিজাইনে যে রেশিও হিসেব করে HT ও LT কয়েল ওয়াইন্ড করা হয়েছে, সে পরিমাণ রেশিও ঠিক আছে কিনা সেটা পরীক্ষা করার মূল উদ্দেশ্যই রেশিও টেস্ট।
বাংলাদেশের সাপেক্ষে ট্রান্সফরমার এর HL সাইডে ইনপুট ভোল্টেজের ভেরিয়েশন হওয়া খুবই স্বাভাবিক। তাই HT ওয়াইন্ডিং এ বেশ কিছু পরিমান ট্যাপ পজিশন রাখা হয়, আর তাই প্রতিটা ট্যাপ পজিশনেই HT সাইডের সাপেক্ষে ভোল্টেজ রেশিও পরিমাপ করা হয়। যেমনঃ একটি ১১০০০/৪১৫ ভোল্টের থ্রি-ফেজ ট্রান্সফরমার এর ভোল্টেজ রেশিও ২৬.৫০ প্রায়। সহজে রেশিও টেস্ট এর জন্য ট্রান্সফরমার এর HT সাইডে আমরা ৪১৫ ভোল্টেজ সাপ্লাই দিয়ে LT সাইডে এর রেশিও পরীক্ষা করি ।
ভেক্টর গ্রুপ ও পোলারিটি টেস্ট
HT ও LT কয়েলের কানেকশন ডায়াগ্রাম অনুযায়ী বিভিন্ন গ্রুপের ট্রান্সফরমার আছে, আমাদের প্রডাক্ট Dyn11 গ্রুপের । আমরা ভেক্টরগ্রুপ টেস্টের জন্য ট্রান্সফরমার এর HT সাইডে ৪১৫ ভোল্ট সাপ্লাই দিই এবং এর পূর্বে HT এর “A” ফেজ ও LT এর “a” ফেজ একটি ক্যাবলের দ্বারা শর্ট করে দেই।
এরপর ৪১৫ ভোল্ট প্রয়োগ করে B ও b, এবং B ও c ফেজের ভোল্টেজ পরিমাপ করি। শর্ত সাপেক্ষে Bb ও Bc উভয় ফেজদ্বয়ের ভোল্টেজ সমান হবে ।
আবার অপরদিকে C ও c এবং C ও b এর ভোল্টেজ পরিমাপ করলে Cc এর ভোল্টেজের তুলনায় Cb এর ভোল্টেজ বেশি হবে । ভোল্টেজের মান অনুযায়ী নিম্নের ভেক্টর ডায়াগ্রাম বিবেচনা করি –
ডাই-ইলেক্ট্রিক টেস্ট
সহজ কথায় সম্পুর্ণ ট্রান্সফরমারটির ইনসুলেশন পরিমাণ পরিমাপ করাই হল ডাই-ইলেকট্রিক টেস্ট।
যেহেতু HT ও LT কয়েলের মধ্যে সরাসরি ইলেকট্রিক্যালি কানেকশন নেই, তাই এই দুই ওয়ান্ডিং এর মাঝে High-Resistance থাকা আবশ্যক। রেজিস্ট্যান্স এর পরিমান নির্ভর করে ওয়াইন্ডিং সমূহের ইনসুলেশন ও ইনসুলেটিং ইলিমেন্টের শুষ্কতার ওপর।
আমাদের কোম্পানি স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী উক্ত রেজিস্ট্যান্সের মান 2 Giga ohms বা 2000 Mega ohms. এর বেশি। ডাই-ইলেক্ট্রিক টেস্টার মিটারকে মেগার মিটার বলা হয় ।
ফুল লোড লস/ শর্ট সার্কিট/ কপার লস টেস্ট
ট্রান্সফরমার এর LT সাইডের সবগুলো টার্মিনাল শর্ট করে HT সাইডে উক্ত ট্রান্সফরমার এর রেটেড কারেন্ট সাপ্লাই দিয়ে ওয়াট মিটারের দ্বারা লোড লস পরিমাপ করা হয় । রেটেড কারেন্ট সাপ্লাই দিলে HT সাইডের লাইন ভোল্টেজ যা পাওয়া যায় তাকে ইম্পিড্যান্স ভোল্টেজ বলা হয় ।
ওপেন সার্কিট টেস্ট/ নো লোড/ কোর লস টেস্ট
এই টেস্টে ট্রান্সফরমার এর LT সাইডে রেটেড ভোল্টেজ সাপ্লাই দেয়া হয়, তখন যে পরিমান কারেন্ট নেয় তাকে নো লোড কারেন্ট বলা হয় । এজন্য HT সাইডে ট্রান্সফরমার রেটেড ভোল্টেজ(I.e. 11000) আবিষ্ট হয়। আর অপরদিকে LT সাইডে রেটেড ভোল্টেজ দেয়ায় কিছু কারেন্ট লোড নেয়ার জন্য যে লস হয় তাকেই নো-লোড লস/ কোর লস বলা হয় ।
হাই-ভোল্টেজ টেস্ট
HT ও LT উভয়ই সাইড আলাদা ভাবে শর্ট করে HT টার্মিনালে হাই-ভোল্টেজের ফেজ ও LT টার্মিনাল ট্রান্সফরমার এর বডির সাথে একত্র করে গ্রাউন্ড সংযোগ দেয়া হয়। এরপর HT রেটেড ভোল্টেজের সাধারণত ২.৫ গুন ভোল্টেজ দিয়ে এক মিনিটের জন্য টেস্ট করা হয়।
এই টেস্টের মূল উদ্দেশ্য ট্রান্সফরমার এর ভিতরে ব্যাবহৃত ডাই-ইলেক্ট্রিক ম্যাটেরিয়াল গুলোর Di-electric strength পরিমাপ করা। ডাই-ইলেক্ট্রিক শক্তি বৃদ্ধি করার জন্য ট্রান্সফরমার অয়েল ব্যাবহৃত হয়। ফেজ টু গ্রাউন্ড এর নির্দিষ্ট (i.e- 2mm) দূরত্বে ট্রান্সফরমার অয়েলের ব্রেকডাউন ভোল্টেজ অনেক উচ্চ মানের, যা প্রায় ৪০-৭০ কেভি পর্যন্ত
উদাহরণ স্বরূপ ১১০০০/৪১৫ স্টেপ ডাউন ট্রান্সফরমারের ক্ষেত্রে এর HT সাইডে –
১১০০০ x ২.৫= ২৭৫০০ তথা ২৮০০০ ভোল্টেজ দেয়া হয়
তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ২.৫ গুনেরও কম দেয়া হয়, যেমন 33kv লাইনের ট্রান্সফরমার এর ক্ষেত্রে এর HT সাইডে ৭০০০০ ভোল্টেজ দেয়া হয় ।
এর দ্বারা হাই ভোল্টেজে ট্রান্সফরমার এর ইনসুলেশন পরিমাণ টেস্ট করা হয় ।
পাদটিকাঃ
HT– এর সম্পুর্ণ অর্থ High Tension. উচ্চ-বিভব বা হাই ভোল্টেজ কেই High Tension বলা হয়ে থাকে।
LT – এর সম্পুর্ণ অর্থ Low Tension. কম ভোল্টেজ বা লো ভোল্টেজের অংশকেই Low Tension বলে
ভোল্টেজ রেশিও – ট্রান্সফরমার এর প্রাইমারী ও সেকেন্ডারি সাইডের ভোল্টেজের পার্থক্যকেই ভোল্টেজ রেশিও বলা হয়। অর্থাৎ কোন স্টেপ ডাউন ট্রান্সফরমার এর ভোল্টেজ রেশিও যদি ১০০ হয়, তবে প্রাইমারী সাইডে ১০০ ভোল্ট দিলে সেকেন্ডারি সাইডে ১ ভোল্ট পাওয়া যাবে।
পোষ্ট দীর্ঘ না করে লেখালেখি আজ এখানেই শেষ করতে হচ্ছে, পরবর্তীতে এ বিষয়ে আরো কিছু লেখার চেষ্টা করব, আশা করছি এর পরের পোষ্টে ট্রান্সফরমার এর ফ্যাক্টরি মেকিং প্রসেস বিষয়ে আলোচনা করবো, ভাল থাকুন সবাই, আল্লাহ হাফেজ।
১. ট্রান্সফরমার রেটিং ১১কেভি বা এর গুণিতক আকারে হয় কেনো? ১০কেভি বা ১৫কেভি হয় না কেনো?
২. রেটেড ভোল্টেজ এবং রেটেড কারেন্ট- এক্ষেত্রে কিসের উপর ভিত্তি করে রেটিং করা হয়?
৩. HT-LT এবং HV-LV এর মধ্যে পার্থক্য বা সম্পর্ক কি?
hi.ভাইয় আই সি কি?
আই সি এর কাজ কি?
আইসি সম্পর্কে জানতে আমাদের সাইটে প্রকাশিত এই লেখা গুলো পড়তে পারেনঃ https://www.amaderelectronics.comtag/আইসি
মন্তব্য: I also raise the same question like s.b Dada . why not it is replied yet . I think, the writers any articles got fruitful after it is clear to all ..and of course by getting a logical answer from the writer. we need to be more careful about it .otherwise the readers may be upseted and the goal of your slogan will never be achieved…thanks
many many thanks