অডিও সিস্টেম বানানোর পর কিছু সমস্যা প্রায় সব নতুন হবিষ্টদের ক্ষেত্রে দেখা যায়। আমি নিজেও যখন শুরু করেছিলাম আমার বানানো প্রায় সব এম্প এ এই সমস্যা থাকত। কখনই প্রফেশনাল মানে ভলিউম লেভেল বাড়ানো অবস্থায় সাইলেন্ট মোড পেতাম না। আপনারা নতুন শুরু করলে এই সমস্যায় পড়বেন বা পড়তে পারেন যার জন্য সাধের এম্পটি কখনই মনের মত হবে না। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাবার জন্য আসুন দেখা যাক কি কি করতে পারি আমরা :-
- ১. প্রথমে আমাদের নজর দিতে হবে এম্প সার্কিটের পিসিবির দিকে। ভাল মানের পিসিবি ব্যবহার করা বাধ্যতামুলক। পিসিবির একটা বড় অংশ জুরে যেন গ্রাউন্ড ছড়ানো থাকে তা লক্ষ্য রাখতে হবে। সেই সাথে পিসিবির সকল কানেকশন পরিস্কার থাকতে হবে।
- ২. এরপর পিসিবিতে যুক্ত পার্টসের দিকে নজর দিতে হবে। একটি এম্প সার্কিটে মোটামুটি চার ধরনের পার্টস থাকে – ইলেক্ট্রোলাইটিক ক্যাপাসিটর, ননইলেক্ট্রোলাইটিক ক্যাপাসিটর, রেজিস্টর আর আইসি, এর বাইরে ডায়োড থাকতে পারে। সকল পার্টস অবশ্যই ভাল মানের হতে হবে। ভাল একটি এম্প বানাতে সস্তা নকল পার্টস ব্যবহার করা যাবে না। বাজারে নকল পার্টসের ছড়াছড়ি তাই বিশ্বস্ত দোকান থেকে পার্টস কিনতে হবে আর যদি নিজে পার্টস চিনেন তবে ত কথাই নেই। ননইলেক্ট্রোলাইটিক ক্যাপাসিটর ব্যবহারের জন্য মাইলার বা পলিস্টার ক্যাপাসিটর ব্যবহার করবেন – পারতপক্ষে সস্তা সিরামিক ক্যাপাসিটর ব্যবহার করা যাবে না। ইলেক্ট্রোলাইটিক ক্যাপাসিটরের ক্ষেত্রে চায়না ক্যাপাসিটর না ব্যবহার করাই ভাল।
- ৩. সার্কিটে ব্যবহার করা সকল তার ভাল মানের হতে হবে। ২/৩ টাকা গজের সস্তা চিকন তার ব্যবহার করা হলে কখনই ভাল আউটপুট পাবেন না। ইনপুটের ওয়্যারিয়ে ভাল মানের কোএক্সিয়াল তার ব্যবহার করতে হবে।
- ৪. অডিও সিস্টেমে যে আইসি বা ট্রানসিস্টর ব্যববহার করবেন তা অবশ্যই অরিজিনাল হতে হবে। অরিজিনাল পার্টসের গায়ে পার্টসের নাম এ উৎপাদনকারীর নাম পরিস্কারভাবে ও উজ্জল হরফে লিখা থাকবে। অস্বচ্ছ আর কোন রকমে লিখা পার্টস ব্যবহার করবেন না। তাহলে নয়েজ ত আসবেই সাথে আউটপুটে পাওয়ারও অনেক কম পাবেন ডায়াগ্রামে উল্লেখিত পরিসমাণের চেয়ে।
- ৫. আউটপুটের ড্রাইভার বা স্পীকার ভাল মানের হতে হবে। সস্তা জিনিস ব্যবহার করলে নয়েজ কিছুটা আসবেই যত যাই করেন না কেন।
- ৬. পাওয়ার গ্রাউন্ড আর কানেকশন গ্রাউন্ড আলাদা রাখতে হবে।
- ৭. মেটাল ক্যাবিনেট হলে গ্রাউন্ডের সাথে তা মোটা তার দিয়ে ঝালাই করে দিতে হবে।
- ৮. ভলিউম কন্ট্রোলসহ টোন কন্ট্রোল ভেরিয়েবল রেজিষ্টরের বডি একসাথে বাড়তি তার দিয়ে যুক্ত করে গ্রাউন্ডের সাথে ঝালাই করে দিতে হবে।
- ৯. প্রতিটি কানেকশনের ঝালাই যেন পরিস্কার আর ড্রাই সোল্ডার মুক্ত হয় সেটা খেয়াল রাখতে হবে।
- ১০. আইসি বা ট্রানসিস্টরে ব্যবহৃত হীট সিংক পর্যাপ্ত হতে হবে।
হাম বা ভো ভো শব্দ দুর করবার জন্য যা করতে হবে :-
- ১. এসি কে ডিসি করবার রেক্টিফায়ার ডায়োড ভাল মানের আর উপযুক্ত এম্পের লাগাতে হবে।
- ২. ফিল্টারিং ক্যাপাসিটরের মান কমপক্ষে ১০০০০ মাইক্রোফেরাড হওয়া উচিৎ সেই সাথে মানের ব্যপারে আপোষ করা চলবে না।
- ৩. কানেকশনের তার মোটা আর ভাল মানের হতে হবে।
- ৪. ট্রান্সফরমার ভাল মানের ও উপযুক্ত এম্পের হতে হবে।
- ৫. ট্রান্সফরমার হতে এম্পসার্কিট যতটা সম্ভব দুরে স্থাপন করতে হবে।
- ৬. কানেকশেনর কোন তার যেন ট্রান্সফরমারের উপরদিয়ে বা পাশদিয়ে না যায় তা খেয়াল রাখতে হবে।
- ৭. ট্রান্সফরমারের বডিকে রাবার বা প্লাস্টিকের সাহায্যে চেসিস (ক্যাবিনেট) থেকে আলাদা করে রাখতে পারলে ভাল হবে।
- ৮. সম্ভব হলে এম্প ও প্রি এম্পের জন্য আলাদা ট্রান্সফরমার ব্যবহার করতে হবে।
মোটামুটিভাবে উপরে লিখা মোতাবেক কাজগুলো ভাল ভাবে করতে পারলে একটি ক্রিস্টাল ক্লিয়ার সাউন্ড মেশিন আপনি নিজেই বানাতে পারবেন। তবে কথা থাকে যে এই কাজে কখনই তাড়াহুড়ো করবেন না। আর প্রতিটি কানেকশন কমপক্ষে ৩ বার চেক করবার পর পাওয়ার দিবেন সার্কিটে। যা জানেন না তা নিয়ে অভিজ্ঞ কারও সহায়তা ছাড়া এক্সপেরিমেন্ট করতে যাবেন না। ইলোক্ট্রোলাইটিক ক্যাপাসিটর ভুল কানেকশনের ফলে বিস্ফোরিত হয়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বা আপনি মারাত্বক রকমের ব্যদ্যুতিক শক খেতে পারেন। সাধারণ সতর্কতা পালন করতে হবে এবং সেই সাথে আমার লিখা পড়ে কিছু করতে গিয়ে উল্টাপাল্টা করে ফেলেন যদি তবে আমাকে দায়ী করা যাবে না।
পুর্বে এখানে প্রকাশিত: www.muktochintablog.com/blogpost/details/18565
১২”x২ ইচপিকারের জন্য একটা ডায়াগ্রাম দিলে খুসি হতাম
বলেরাখা ভালজে অল্প ছাউন্টটে হবি বেজ+টাবল থাকবে
10 হাজার মাইক্রোফেরাড পামু কৈ?
এমপ্লিফায়ারের জন্য হাই মাইক্রোফ্যারাড বিক্রয় করে। ১০ হাজার এমনি
Hi মাইক্রোফেরাড বলতে কত মানের বুঝাতে চান? 4700uf?
৪৭০০ দিয়ে হলে ভালো না হলে ১০,০০০ মাইক্রো হতে পারে কিংবা ৩টা ৪৭০০ মাইক্রো কে প্যারালাল করলেও হবে। তবে বড় জাপানী গুলো ইউজ করাই সর্বোত্তম।
এই যে আমার হাতে একখান আছে। দ্যাহেন তো এইডা কোন দেশি?
পোষ্টের ৬নং এ লেখা আছে- “পাওয়ার গ্রাউন্ড আর কানেকশন গ্রাউন্ড আলাদা রাখতে হবে” কথাটার অর্থ কি? এ ব্যাপারে পূর্ণ ব্যাখ্যা চাই।
অডিও যেদিক দিয় ইনহয় সেতাই এখানে কানেকশন গ্রাউন্ড বুঝিয়েছে। সেটা থেকে পাওয়ার সাপ্লাইয়ের গ্রাউন্ড কে আলাদা রাখতে হবে।
Audio ইন এ দুটা কানেকশন তার থাকে। একটা পজেটিভ, অন্যটা নেগেটিভ (গ্রাউন্ড)। এই নেগেটিভ পয়েন্ট অবশ্যই পাওয়ার সাপ্লাই থেকে একটা উপযুক্ত মানের তার দিয়ে কানেক্ট করতে হয়। নয়তো অডিও ইন এ গ্রাউন্ড ফেল (মিস) করবে। আর গ্রাউন্ড ফেল করলে গান আর শুনতে হবে না। 🙂
power supply এর সাথে অবশ্যই কানেক্ট থাকবে কিন্তু তা উপযুক্ত ফিল্টারিং এর পরে আর পাওয়ার সাপ্লাই থেকে দূরেঃ)
ব্যাখ্যাখানা আমা হইতে পরিস্কার করিয়া তুলিয়া ধরা হইয়াছে।
পরিষ্কার করিবার চেষ্টা হেতু এক খানা ভার্চুয়াল ক্যাপাসিটর গিফট করা হইলো 😀
কৈ? দ্যান দ্যান হবিরি দ্যান।
কামিং শুন, ঢাকা’র জ্যামে আটকা পড়ছে :/
Lol
পোষ্টের হেড লাইন দেখেই আইডিয়া করলাম, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও ডিমান্ডেবল পোষ্ট । ধন্যবাদ
ভালো লাগলো
ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর ও সরলভাবে প্রযেক্টগুলোর উপস্থাপন করার জন্য। যা আমি কোনো সাইটে পাইনি।চালিয়ে যান আমাদের সাথে নিয়ে…..
পাওয়ার
গ্রাউন্ড আর কানেকশন গ্রাউন্ড আলাদা
রাখতে হবে।
এটা একটা ডায়াগ্রাম এর সাহায্যে দেখাতে পারবেন?
আমি ঠিক ভাল ভাবে বুঝতে পারলাম না।
মন্তব্য:
পাওয়ার
গ্রাউন্ড আর কানেকশন গ্রাউন্ড আলাদা
রাখতে হবে।
এটা একটা ডায়াগ্রাম এর সাহায্যে দেখাতে পারবেন?
আমি ঠিক ভাল ভাবে বুঝতে পারলাম না।
অনেক কাজে লাগবে। ধন্যবাদ। 🙂