ডিটিএমএফ কিঃ
ডিটিএমএফ (DTMF) এর পূর্ণরূপ হল Dual Tone Multi Frequency. এটি এমন একটি প্রযুক্তি যার মাধ্যমে একটি টেলিফোন সিস্টেম Switch Center এর সাথে যোগাযোগ করে থাকে। আমরা মোবাইল থেকে কল সেন্টারে যখন ফোন দেই তখন এরকম কথা আমরা শুনে থাকি বাংলার জন্য ১ চাপুন, For English Press 2. ১ অথবা ২ প্রেস করে আমরা অপশন সিলেক্ট করে থাকি। আপনারা খেয়াল করে থাকবেন যে যখন আপনারা বাটন প্রেস করেন তখন এক প্রকার শব্দ শুনতে পান, মূলত ঐসব শব্দই DTMF TONE.
DTMF নিয়ে অনেক প্রজেক্ট করা যায়, ইতিমধ্যে MD Abdur Rahman Wahid ভাই DTMF ব্যবহার করে একটি Robot বানিয়েছেন। ইচ্ছে করলে আপনারা এই Post টি দেখতে পারেন।
পরিচ্ছেদসমূহ
- 1 ডিটিএমএফ কিঃ
- 2 আজকের ডিটিএমএফ (DTMF) প্রজেক্টঃ
- 3 ডিটিএমএফ (DTMF) প্রজেক্ট পার্টস লিস্টঃ
- 4 ডিটিএমএফ (DTMF) আইসি ডাটাশিটঃ
- 5 ডিটিএমএফ (DTMF) প্রজেক্ট এর সার্কিট ডায়াগ্রামঃ
- 6 ডিটিএমএফ (DTMF) ডায়াগ্রামের বর্ণনাঃ
- 7 মেল হেডার লাগানোঃ
- 8 ইনপুট বিষয়কঃ
- 9 পাওয়ার সাপ্লাই বিষয়কঃ
- 10 ডিটিএমএফ (DTMF) সার্কিট টেস্টঃ
- 11 ডিটিএমএফ (DTMF) টেবিলঃ
আজকের ডিটিএমএফ (DTMF) প্রজেক্টঃ
যাহোক আর কথা বাড়াবো না, মূল কথায় আসি। আজকে আমরা ডিটিএমএফ (DTMF) ব্যবহার করে এমন একটি সার্কিট বা মডিউল তৈরি করব, যেটার মাধ্যমে আপনি DTMF Tone Decode করে ব্যবহার করতে পারবেন। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় আপনি মোবাইল এর বাটন প্রেস করে ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি কন্ট্রোল করতে পারবেন। মাইক্রোকন্ট্রোলার এর সাথে ইন্টারফেস করতে পারবেন। এই সার্কিটটি তৈরি করার জন্য আমাদের যা যা লাগবে-
ডিটিএমএফ (DTMF) প্রজেক্ট পার্টস লিস্টঃ
- IC CM/MT 8870 ১ টি।
- আইসি বেস ১৮ পা (অপশনাল)
- ক্যাপাসিটর (Polar) 10 uF 50 v একটি।
- ২২ pF মানের ক্যাপাসিটর দুটি।
- ৩৩০ কিলোওহম রেজিস্টর একটি।
- ১০০ কিলোওহম এর রেজিস্টির দুটি।
- 100n বা ১০৪ পিএফ একটি।
- 3.57 MHz মানের একটি ক্রিস্টাল অসিলেটর।
- লাল এলইডি ৪ টি এবং সাদা বা অন্য কালারের এলইডি একটি। (লাল এলইডি বাতি ব্যবহার করতে হবে এমন নয়, আপনই ইচ্ছা করলে অন্য রঙ এর এলইডি ব্যবহার করতে পারবেন। তবে ৩ মিলি অথবা ৫ মিলিমিটার এর এলইডি হলে ভাল হবে)
- Male Header (বাজারে Male Connector 40 Pin হিসেবে পরিচিত। আমরা ৪০ টার মধ্যে ৫ টা Header ব্যবহার করব)
- Veroboard/Perfboard
- স্টেরিও সকেট বা জ্যাক ১ টি (অপশনাল)
- স্টেরিও পিন জ্যাক (অপশনাল)
- স্টেরিও কেবল (অপশনাল)
নিম্নে সবগুলো পার্টসের বাস্তব ছবি দেয়াহলো-
(বি:দ্র – যেসব জিনিস অপশনাল, সেসব জিনিস আপনি আপনার প্রয়োজন এবং পছন্দ অনুযায়ী ব্যবহার করতে পারবেন। Post টি পড়ে আশা করি এ বিষয়ে আরও তথ্য পাবেন)
এবার চলুন ডিটিএমএফ আইসিটির ডাটাশিট এবং আইসিটি দেখে নেই :
ডিটিএমএফ (DTMF) আইসি ডাটাশিটঃ
http://pdf.eepw.com.cn/m20090915/a30e5bee9716702f606c7ad881309576.pdf ডিটিএমএফ আইসিটি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য এই ডাটাশিট এ পাবেন। যেখানে এই আইসির প্রতিটি পিন ও এর বিস্তারিত কার্যক্রম লেখা আছে। আর অবশ্যই চেষ্টা করবেন ডাটাশিট ফলো করতে। সামনে আমাদের ইলেকট্রনিক্স সাইটে ডাটাশিট নিয়ে লেখা পাবেন।
ডিটিএমএফ (DTMF) প্রজেক্ট এর সার্কিট ডায়াগ্রামঃ
এবার চলুন ডিটিএমএফ ডায়াগ্রামটি দেখে নেই-

ডায়াগ্রামে আমাদের প্রজেক্ট এর সবকিছুর মান লেখা আছে, বুঝতে যাতে অসুবিধা না হয় সেজন্য আপনাদের ডায়াগ্রামটি সহজ ভাবে ব্যাখ্যা করছি।
ডিটিএমএফ (DTMF) ডায়াগ্রামের বর্ণনাঃ
ডায়াগ্রামে আইসির পিন বাম দিক থেকে শুরু হয়েছে। ১, নাম্বার পিন এবং ৪ নং পিন শর্ট করা হয়েছে। ২ এবং ৩ নাম্বার পিন হচ্ছে সিগনাল ইনপুট পিন। ক্যাপাসিটর এর (+) পা দিয়ে সিগনাল ইনপুট করা হয়েছে। ইনপুটে দুইটি রেজিস্টর রয়েছে। উভয়ের মান ১০০ কিলো ওহম। ৫,৬,৯ নাম্বার পিন শর্ট করে গ্রাউন্ড বা পাওয়ার সাপ্লাই এর (-) এর সাথে কানেক্ট করা হয়েছে। ৭ এবং ৮ নাম্বার পিন এর মাঝে কালো চতুর্ভুজাকৃতি যে জিনিসটি আছে, সেটা ক্রিস্টাল অসিলেটর। যার মান 3.57 MHz। এর পোলারিটি বা (+/-) নেই। তাই যেভাবে লাগান, সমস্যা নেই। তবে ডায়াগ্রামে নির্দেশিত জায়গায় লাগাতে হবে। আর দুইটি ২২ pF মানের ক্যাপাসিটর লাগিয়ে তা গ্রাউন্ড এর সাথে সংযুক্ত করা হয়েছে। ১০,১৮ নাম্বার পিন শর্ট করা হয়েছে। এই দুটি পিন দিয়ে পাওয়ার সাপ্লাই করা হয়েছে সার্কিট এ। ১৬, ১৭ নাম্বার পিন এর মাঝে ৩৩০ কিলো ওহম এর রেজিস্টর লাগানো হয়েছে, যা একটি 100n সিরামিক ক্যাপাসিটর এর মাধ্যমে VCC বা 5v+ এর সাথে শর্ট করা হয়েছে।
আইসির ১১,১২,১৩,১৪,১৫ নাম্বার পিন হচ্ছে আউটপুট পিন। এই পিনগুলোর নাম যথাক্রমে Q1,Q2,Q3,Q4, STD যা আমরা ডেটাশিটে দেখেছি। যখন সার্কিট এ সিগনাল প্রবেশ করানো হবে তখন এই আউটপুট পিনগুলো এলইডি জ্বলা-নেভার মাধ্যমে আউটপুট দিবে। সার্কিট এ Male Header ব্যবহার করা হয়েছে যাতে এই আউটপুট কাজে লাগিয়ে ট্রানজিস্টর, রিলে ইত্যাদি এর মাধ্যমে সুইচিং বা যন্ত্রপাতি কন্ট্রোল করা যায়। আবার এই পিনের মাধ্যমে আপনি মাইক্রোকন্ট্রোলার এর সাথে ইন্টারফেস করতে পারবেন। সার্কিটটি আপনি ব্রেডবর্ড এ বানাতে পারেন। যদি Soldering না করতে চান তাহলে Veroboard বা Perfboard এ করতে পারেন। আর PCB তে করলে আরও ভাল হয়।
মেল হেডার লাগানোঃ
সার্কিট এ মেল হেডার লাগাবেন এলইডি বাতির আগে। সহজ কথায়, আউটপুট পিন থেকে Male HEADER তারপর LED আপনাদের সুবিধার্থে একটি ছবি দিয়ে দিলামঃ

ইনপুট বিষয়কঃ
এখন ডিটিএমএফ (DTMF) সার্কিট এ সিগনাল ইনপুট এর বিষয়ে কিছু কথা বলা যাক। ইনপুট আপনি দুইভাবে দিতে পারবেনঃ
- ১ সার্কিট এ সরাসরি একটি স্টেরিও পিন সংযুক্ত করে
- ২ স্টেরিও সকেটের মাধ্যমে
উপরে উল্লিখিত দুটি পদ্ধতির উভয়ের মাধ্যমে সার্কিট এ আপনি ইনপুট দিতে পারবেন। আমি সকেট দিয়ে ইনপুট এর ব্যবস্থা করেছি।

পাওয়ার সাপ্লাই বিষয়কঃ
সার্কিট এ ইনপুট ভোল্টেজ ৫ ভোল্ট। এখন পাওয়ার সাপ্লাই নিয়ে কিছু বলি। পাওয়ার সাপ্লাই হিসেবে মোবাইলের USB Charger ব্যবহার করতে পারেন। তাছাড়া 5V Adapter ও ব্যবহার করতে পারবেন। যদি আপনার কাছে এসব না থাকে তাহলে একটি ৯ অথবা ১২ ভোল্ট এর ট্রান্সফরমার ব্যবহার করে নিচের ডায়াগ্রাম ব্যবহার করে একটি ৫ ভল্ট এর পাওয়ার সাপ্লাই বানাতে পারেনঃ

ডিটিএমএফ (DTMF) সার্কিট টেস্টঃ
সার্কিট বানানো শেষ হলে মাল্টিমিটার দিয়ে ভোল্ট মেপে শিওর হয়ে নিবেন যে ৫ ভোল্ট আছে কিনা। ৫ ভোল্ট পেলে সার্কিট এ ইনপুট দিয়ে রেগুলেটেড ভোল্টেজ মূল সার্কিট এ সাপ্লাই দিন। তারপর মোবাইল এর সাথে স্টেরিও পিন দিয়ে সার্কিট কানেক্ট করুন। কানেক্ট করার আগে শিওর হয়ে নিবেন মোবাইল সাইলেন্ট নয় এবং DTMF Tone Test করার জন্য ডায়ালার এ ডায়েল করে দেখবেন। ইনপুট দিয়ে ডায়ালার এ ডায়াল করলে দেখা যাবে এলইডি জ্বলা-নেভার মাধ্যমে আউটপুট দিচ্ছে।
আপনি ইচ্ছা করলে কল দিয়ে এই কাজটি করতে পারবেন। এর জন্য তখন দুইটি মোবাইল লাগবে এবং দুটি মোবাইলই যেন DTMF Tone তৈরি করে সেটা সিউর হতে হবে।
নিচে আমার টেস্টিং পদ্ধতির ২টি ছবি দিলাম-


ডিটিএমএফ (DTMF) টেবিলঃ
এবার দেখে নেই কোন বাটন প্রেস করলে কি আউটপুট পাওয়া যাবে-

এই টেবিলে 1 দ্বারা আউটপুট অন এবং 0 দ্বারা আউটপুট অফ বুঝিয়েছে।
নোটঃ সার্কিটে প্রাপ্ত আউটপুট বাইনারি
আজ এটুকুই, আশা করি আপনারা সার্কিটটি বানাতে সফল হবেন। যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে আপনারা কমেন্ট এর মাধ্যমে জানাতে পারবেন, এছাড়াও আমাদের হেল্পডেস্ক তো রয়েছেই!!
ধন্যবাদ সবাইকে।
ধন্যবাদ! অনেক কিছু জানলাম!