বাড়ি ব্লগ পৃষ্ঠা 17

মোবাইল (DTMF) কন্ট্রোল রোবট

24

একটি রোবট কে ওয়্যারলেস সিস্টেমে কন্ট্রোল করার বিভিন্ন পদ্ধতি আছে যেমন: রিমোটের মাধ্যমে, ব্লুটুথ এর মাধ্যমে, ওয়াইফাই, রেডিও কন্ট্রোল. ট্রান্সমিটার এর মাধ্যমে ইত্যাদি। কিন্তু এসব পদ্ধতিতে সার্কিট ডিজাইন খুবই জটিল আর ব্যয় বহুল। তাই কম খরচে আর সহজ সার্কিট ডায়াগ্রাম নিয়ে এই মোবাইল কন্ট্রোল রোবট। এটি সম্পূর্ন আমার টেস্টেড বা পরিক্ষিত। আর এটা তৈরিতে কোন মাইক্রোকন্ট্রোলার দরকার নাই তাই প্রোগ্রামিংয়েরও ঝামেলা নাই। তাই যারা ইলেকট্রনিক্স জগতে নতুন তারাও এটা বানাতে পারবে বলে আশা করি।

এই রোবট টা কন্ট্রোল করতে আমরা মোবাইলের  DTMF (Dual Tone Multy Frequency) প্রযুক্তি ব্যবহার করব ।

DTMF কি?

সহজ ভাষায়, আমরা যখন কোন সিম কোম্পানির কাস্টমার কেয়ারে কল করি তখন আমরা শুনতে পাই, “বাংলায় শোনার জন্য ১ চাপুন আর ইংরেজিতে শোনার জন্য ২ চাপুন” । ধরেন আপনি ১ চাপলেন, তারপর আপনি সব বাংলায় শুনতে পারলেন । এখন প্রশ্ন হল আপনি আপনার মোবাইলে ১ চাপলেন নাকি ২ চাপলেন এটা কাস্টমার কেয়ারের কম্পিউটার কিভাবে বুঝল? যে পদ্ধতির মাধ্যমে কম্পিউটার এটা বুঝল সেই পদ্ধতিই হল DTMF

এই ব্যাপারটা হয়ত এর থেকেও ভালভাবে বলা যেত। কিন্তু সবাই যেন সহজে বুঝতে পারে তাই খুবই কম কথায় বোঝানোর চেষ্টা করলাম ।

কি কি লাগবে

তাহলে, প্রথমে দেখে নিই এই রোবট তৈরিতে আমাদের কি কি লাগবে । সকল পার্টসই বাংলাদেশে পাওয়া যায় ।

১. রোবট চেসিস
২. CM/MT-8870 আইসি-১টি
৩. L293D আইসি-১টি
৪. 10uf ক্যাপাসিটর-২টি
৫. 7805 ভোল্টেজ রেগুলেটর-১টি
৬. 0.1uf ক্যাপাসিটর-২টি
৭. 3.758Mhz ক্রিস্টাল-১টি
৮. 1K রেজিস্টার-১টি
৯. 100K রেজিস্টার-২টি
১০. 150K রেজিস্টার-২টি
১১. 9V ব্যাটারী-১টি
১২. এলইডি-১টি
১৩. স্ক্রু টার্মিনাল-৪টি (প্রয়োজন হলে)
১৪. কানেকশন তার
১৫. পিসিবি/ভেরোবোর্ড
১৬. মোবাইলের হেডফোন জ্যাক
এবার পার্টস গুলার ছবি দেখে নিই যেন, সবাই ভালভাবে বুঝতে পারে

পার্টসগুলো দেখতে কেমন

১. রোবট চেসিস

রোবট চেসিস
রোবট চেসিস

এটা সেট হিসেবেই কিনতে পাওয়া যায় ।

২. CM/MT-8870 আইসি-১টি ।

CM/MT-8870 আইসি
CM/MT-8870 আইসি

এটা বাজারে MT8870 বা CM8870 বা অন্য নামেও থাকতে পারে । এখানে 8870 নাম্বারটাই আসল ।

৩. L293D আইসি-১টি ।

L293D
L293D

এটা মোটর ড্রাইভার আইসি ।এর সাহায্যে মোটর ড্রাইভ বা কন্ট্রোল করা যায় ।

৪. 10uf ক্যাপাসিটর-২টি ।

10uf cap
10uf cap

এখানে বড় পা টি হল (+) আর ছোট পা টি হল (-)

৫. 7805 ভোল্টেজ রেগুলেটর-১টি ।

7805 ভোল্টেজ রেগুলেটর
7805 ভোল্টেজ রেগুলেটর

উপরের ছবিতে বাঁ দিক থেকে ১. ভোল্টেজ ইন, ২. গ্রাউন্ড বা (-), ৩. ভোল্টেজ আউট ।

৬. 0.1uf ক্যাপাসিটর-২টি ।

0.1uf ক্যাপাসিটর
0.1uf ক্যাপাসিটর

এটা বাজারে 104pf নামে পরিচিত ।

৭. 3.758Mhz ক্রিস্টাল-১টি ।

3.758Mhz ক্রিস্টাল
3.758Mhz ক্রিস্টাল

৮. 1K রেজিস্টার-১টি ।
৯. 100K রেজিস্টার-২টি ।
১০. 150K রেজিস্টার-২টি ।

রেজিস্টার
রেজিস্টার

১১. 9V ব্যাটারী-১টি ।

9V ব্যাটারী
9V ব্যাটারী

১২. এলইডি-১টি ।

এলইডি
এলইডি

১৩. স্ক্রু টার্মিনাল-৪টি (প্রয়োজন হলে) ।

গ্রীন কানেক্টর/স্ক্রু টার্মিনাল
গ্রীন কানেক্টর/স্ক্রু টার্মিনাল

এটা তার গুলা কানেশনের জন্য লাগাতে পারেন । না লাগালেও কোনও সমস্যা নাই ।
১৪. কানেকশন তার ।
তার তো সবাই চিনি তাই এর ছবি দিলাম না ।
১৫. পিসিবি/ভেরোবোর্ড ।

পিসিবি তৈরির পরে
পিসিবি তৈরির পরে
ভেরো বোর্ড
ভেরো বোর্ড

১৬. মোবাইলের হেডফোন জ্যাক ।

মোবাইলের হেডফোন জ্যাক
মোবাইলের হেডফোন জ্যাক

পার্টসের ছবি গুলো দেওয়ার মূল উদ্দেশ্য হল যেন সবাই পার্টস গুলো চিনতে পারে । এবার দেখব মোবাইল রোবটের সার্কিট

মোবাইল রোবটের সার্কিট ডায়াগ্রাম

মোবাইল রোবটের সার্কিট ডায়াগ্রাম
মোবাইল রোবটের সার্কিট ডায়াগ্রাম

সার্কিটটা খুব কঠিন না । আশা করি বানাতে পারবেন । বেশি বর্ণণার প্রয়োজন নাই বলে মনে করি কারণ সার্কিটটা সহজ ।

কীভাবে কাজ করে

এবার আসি কিভাবে এটা কাজ করে । সার্কিট বানানোর পর মোটর, ব্যাটারী, হেডফোন জ্যাকের তার সব সার্কিটের সাথে লাগিয়ে নিই । এবার একটি মোবাইলের হেডফোনের জায়গায় সার্কিটের হেডফোন জ্যাকটি ঢুকান । যে মোবাইলে হেডফোন জ্যাক লাগালাম এটার নাম দিলাম রিসিভার ফোন । আর আপনার কাছে আর একটা ফোন থাকা লাগবে যেটা দিয়ে রিসিভার ফোনে কল দিবেন । আপনার কাছে যে ফোনটি থাকবে এটার নাম দিলাম ট্রান্সমিটার ফোন ।

এবার আপনার হাতের ফোন অর্থাৎ ট্রান্সমিটার ফোন থেকে – রোবটে সংযুক্ত ফোন অর্থাৎ রিসিভার ফোনে কল দিই । কল রিসিভ করার পর হাতের ফোন থেকে ৯ চাপুন, দেখবেন রোবট সামনে যাচ্ছে । আবার, ৬ চাপলে পিছনে যাবে । ৩ চাপ দিলে রোবট থেমে যাবে ।এভাবে এটা ডানে-বাঁয়ে, 360 ডিগ্রিও ঘুরতে পারে । মোবাইলের ০-৯ সবগুলো ডিজিটের সাহায্যে আলাদা আলাদা কমান্ড আছে । কত চাপ দিলে কি কাজ করবে সেটা নিচের চার্টটা দেখলে বুঝতে পারবেন ।

রোবট মুভমেন্ট চার্ট

1 —————Front Right
2 —————Reverse Left
3 —————Stop
4 —————Reverse Right
5 —————360 degree rotation (Right)
6 —————Reverse
7 —————Reverse Right
8 —————Front Left
9 —————Forward
0 —————360 degree rotation (Left)

যেমন, চার্টে 1 চাপলে সামনে ডানে যাবে, 2 চাপলে পিছনে বামে যাবে, 5 চাপলে 360ডিগ্রি ডানে ঘুরবে ইত্যাদি ।চার্ট দেখলে আরও ভালভাবে বুঝা যাবে ।

বানানোর পর দেখতে যেমন হবে

নিচে আমার বানানো রোবটার একটা ছবি দিলাম, এটা দেখলে বুঝতে সুবিধা হবে ।

মোবাইল কন্ট্রোল্ড রোবট বানানোর পরের চিত্র
মোবাইল কন্ট্রোল্ড রোবট বানানোর পরের চিত্র

পরিশিষ্ট

আপাতত আজকের জন্য এতটুকুই।

তাহলে বানিয়ে ফেলুন মোবাইল কন্ট্রোল রোবট আর কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করে জানাবেন। ব্যস্ততার মাঝেও উত্তর দেবার চেষ্টা করবো।

PWM (পিডব্লিউএম ) নিয়ে কিছু কথাঃ ১ম পর্ব

6
PWM (পিডব্লিউএম ) নিয়ে কিছু কথাঃ ১ম পর্ব
PWM (পিডব্লিউএম ) নিয়ে কিছু কথাঃ ১ম পর্ব

PWM (পিডব্লিউএম )কি?

PWM এর পূর্নরূপ হলো Pulse Width Modulation. ডিজিটাল ইলেকট্রনিক্স এর জগতে একটি অপরিহার্য পদ্ধতি এই PWM. বিভিন্ন কাজে, যেমন LED এর উজ্জ্বলতা নিয়ন্ত্রন, DC মোটরের গতি নিয়ন্ত্রনসহ নানা কাজে ব্যবহার করা হয় এই পদ্ধতিটি। এনালগ ইলেকট্রনিক্সে মূলত কোন লাইট বাল্বের উজ্জ্বলতা অথবা মোটরের গতি নিয়ন্ত্রন করা হয়ে থাকে দুই ভাবে।

  1. ভোল্টেজ কন্ট্রোল করে, অথবা
  2. কারেন্ট কন্ট্রোল করে।

কিন্তু ডিজিটাল ইলেকট্রনিক্স এর ডিভাইস গুলি যেমন মাইক্রোকন্ট্রলার ভোল্টেজ বলতে চেনে কেবল 0 Volt (0) অথবা 5 Volt(1). সুতরাং সেক্ষেত্রে গতি অথবা উজ্জলতা নিয়ন্ত্রন করা সম্ভবপর হয়ে ওঠে না। দরকার পরে নতুন কোন পদ্ধতির যাকে বলে PWM (পিডব্লিউএম)

একটু সহজ ভাবে পিডব্লিউএম (PWM)

যেহেতু মাইক্রোকন্ট্রোলার শুন্য অথবা ৫ ভোল্ট আউটপুট দিতে পারে সেহেতু যা করার এই দুটো ভোল্টেজ দিয়েই করতে হবে। ধরুন আপনি একটা LED তে ৫ সেকেন্ড ধরে ৫ ভোল্ট দিলেন, এবং ৫ সেকেন্ড ০ ভোল্ট দিলেন। অর্থাৎ, ৫ সেকেন্ড জ্বালালেন এবং ৫ সেকেন্ড নেভালেন।

আপনি একটি Blinking LED তৈরী করে ফেললেন যা জ্বলছে-নিভছে। এখন এই Blinking কে আরো দ্রুত করে দেয়া হলো। সেকেন্ডে ২০ বার জ্বলছে এবং ২০ বার নিভছে। সুতরাং, জ্বলা নেভার ফ্রিকোয়েন্সি ২০ হার্জ। মানুষের চোখ ০.১ সেকেন্ডের পরিবর্তন ধরতে পারে। কিন্তু LED কে জ্বলা-নেভা করা হচ্ছে ০.০৫ সেকেন্ডের মধ্যে। যা মানুষের চোখ ধরতে পারে না। মনেহয় বরং যেন উজ্জ্বলতা কমে গেছে।

এই blinking টা আরো দ্রুত করলে আরো ভালো ফল পাওয়া যাবে। ধরাযাক সেকেন্ডে ৫০০ বার অন এবং ৫০০ বার অফ করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে উজ্জ্বলতা অর্ধেক হয়ে যাবে। শুধু তাই না, খুব দ্রুত অন-অফ সুইচিং হবার কারনে এভারেজ কারেন্ট কমে যাবে এবং তার সাথে সাথে উজ্জ্বলতা কমানো যাবে।

সহজ ভাবে এলইডি দয়ে পিডব্লিউএম (PWM) কিভাবে কাজ করে তা দেখানো হয়েছে
সহজ ভাবে এলইডি দয়ে পিডব্লিউএম (PWM) কিভাবে কাজ করে তা দেখানো হয়েছে

ডিউটি সাইকেল (Duty Cycle) কি?

এখন আসা যাক আরেকটি নতুন কনসেপ্টে, ডিউটি সাইকেল কি?

এই যে LED কে সেকেন্ডে ৫০০ বার অন এবং ৫০০ বার অফ করা হচ্ছে। এখানে অন এবং অফ এর অনুপাত কত? উত্তর ১ঃ১। অর্থাৎ অর্ধেক সময় (১ মিলিসেকেন্ড) অন থাকছে এবং অর্ধেক সময় (১ মিলিসেকেন্ড) অফ। ১০০ এর অর্ধেক ৫০।

সুতরাং এই PWM Frequency এর ডিউটি সাইকেল 50%. উজ্জ্বলতা/ গতি নির্ভর করে এই ডিউটি সাইকেল এর উপর। যেহেতু এক্ষেত্রে ডিউটি সাইকেল 50% সেহেতু LED এর উজ্জ্বলতা অর্ধেক হবে। নিচের ছবিটি লক্ষ্য করুন।

সহজ ভাবে বাল্বের জ্বলা নেভা দিয়ে ডিউটি সাইকেল দেখানো হয়েছে
সহজ ভাবে বাল্বের জ্বলা নেভা দিয়ে ডিউটি সাইকেল দেখানো হয়েছে

একই হিসেবে যদি LED টি যদি ৫০ ভাগ সময়ের পরিবর্তে ২৫ ভাগ সময় অন এবং ৭৫ ভাগ সময় অফ থাকে, তাহলে বেশি সময় সে অফ  থাকছে এবং কম সময় অন  থাকছে। এক্ষেত্রে ডিউটি সাইকেল (Duty Cycle) হলো মাত্র ২৫% । সুতরাং LED এর উজ্জলতা কমে ২৫% হয়ে গেলো। ঠিক একই ভাবে বেশি সময় অন রেখে এবং কম সময় অফ রেখে উজ্জ্বলতা বারানো যায়।

পিডব্লিউএম (PWM) পদ্ধতিতে লাইটের উজ্জ্বলতা নিয়ন্ত্রণ করতে ডিউটি সাইকেলের ব্যবহার
পিডব্লিউএম (PWM) পদ্ধতিতে লাইটের উজ্জ্বলতা নিয়ন্ত্রণ করতে ডিউটি সাইকেলের ব্যবহার

সকলের বোঝার সুবিধার জন্য আরো কিছু ছবি নিচে দেয়া হলো।

পিডব্লিউএম (PWM) পদ্ধতিতে লাইটের উজ্জ্বলতা নিয়ন্ত্রণ করতে বিভিন্ন রকম ডিউটি সাইকেলের প্রয়োগ - ১
পিডব্লিউএম (PWM) পদ্ধতিতে লাইটের উজ্জ্বলতা নিয়ন্ত্রণ করতে বিভিন্ন রকম ডিউটি সাইকেলের প্রয়োগ – ১
পিডব্লিউএম (PWM) পদ্ধতিতে লাইটের উজ্জ্বলতা নিয়ন্ত্রণ করতে বিভিন্ন রকম ডিউটি সাইকেলের প্রয়োগ - ২
পিডব্লিউএম (PWM) পদ্ধতিতে লাইটের উজ্জ্বলতা নিয়ন্ত্রণ করতে বিভিন্ন রকম ডিউটি সাইকেলের প্রয়োগ – ২

আজকের পর্ব এ পর্যন্তই। সামনের পর্বে বাস্তব উদাহরন হিসেবে এবং 555 IC দিয়ে PWM ব্যবহার করে LED’র উজ্জ্বলতা নিয়ন্ত্রনের একটি প্রজেক্ট করে দেখানোর চেষ্টা করা হবে ইন শা আল্লাহ। 

ফ্রীজের জন্য 555 IC দিয়ে বানানো সহজ ডিলে সার্কিট

5

ফ্রীজে ডিলে সার্কিট এর ব্যবহার ও তার কারণঃ

প্রথমেই জেনে নেই ফ্রীজে স্টার্টিং ডিলে সার্কিট কেন ব্যবহার করা উচিৎ-

ফ্রেয়ন নামক এক ধরনের গ্যাসকে অতি উচ্চ চাপ ও বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে recycling সম্পাদান করে ফ্রীজ কে ঠান্ডা করা হয়। এই রিসাইক্লিং প্রকৃয়া ও উচ্চচাপের জন্য কম্প্রেসর ব্যবহৃত হয়। আবার এই recycling টাইম ও আভ্যন্তরীন তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ফ্রীজের ভিতর থাকা থার্মো-কন্ট্রোল ডিভাইস। কমপ্রেসার নিয়মানুযায়ী বন্ধ হলে, উচ্চ চাপের গ্যাস ব্যাক প্রেসার দিয়ে কমপ্রেসার এর ভিতর চলে আসে।

কিন্ত কমপ্রেসার চালু থাকা অবস্থায় হঠাত পাওয়ার ফেইল হয়ে আবার একটিভ হলে গ্যাসের ব্যাক প্রেশারের কারনে কমপ্রেসার কে জ্যাম করে ফেলে। যার ফলে কমপ্রেসার টিতে প্রচুর চাপ পড়ে। ক্ষেত্র বিশেষে পুড়েও যেতে পারে। ফলে টাকা, সময়, ভোগান্তির শেষ থাকে না। কাজেই আমরা যদি এমন একটি ডিভাইস তৈরি করি যা কারেন্ট হঠাত চলে গিয়ে আসলেও সেই পাওয়ার কে নির্দিষ্ট সময়ের পরে অর্থাৎ ডিলে’র মাধ্যমে ফ্রীজে / কম্পেসরে  প্রদান করে তাহলে আর কোনো সমস্যা থাকেবে না। এই সার্কিটকেই ডিলে সার্কিট হিসেবে অভিহিত করা যায়।

কি ভাবে বানাবো এই ডিলে সার্কিট?

আমরা NE555 টাইমার নিয়ে অনেকেই অনেক প্রজেক্ট বানিয়েছি, আসলে এই টাইমার আইসি টিকে অনেক কাজেই ব্যবহার করা যায়। আজ আমরা এটাকে ফ্রীজের সার্টিং ডিলে সার্কিট হিসাবে কিভাবে ব্যবহার উপযোগী করা যায় তা দেখব। যার ফলে কারেন্ট চলে গিয়ে আবার আসলেও কমপ্রেসারের উপর চাপ না পরে।

555 ডিলে সার্কিট - ডায়াগ্রাম (555 Based Delay Circuit Diagram)
555 ডিলে সার্কিটডায়াগ্রাম

পার্টস লিস্ট

  • ১। ১টি NE555 IC
  • ২। ১টি 7812 IC
  • ৩। ১টি BC558/BC557 ট্রানজিস্টর
  • ৪। ১টি 12V SPDT রিলে
  • ৫। ৫টি 1N4007 ডায়োড
  • ৬। ১টি 1000uf/25V ক্যাপাসিটর
  • ৭। ২টি 100uf/25vক্যাপাসিটর
  • ৮। ১টি 103pf ক্যাপাসিটর
  • ৯। ২টি 2.2k রেজিস্টেন্স (1/4W)
  • ১০। ১টি 2.2k রেজিস্টেন্স (1/4W)
  • ১১। ১টি 1M ওহমস্‌ রেজিস্টেন্স (1/4W)
  • ১২। ২টি LED (লাল এবং সবুজ রং এর)
  • ১৩। ১টি ট্রান্সফরমার(9V-0V-9V Center Tap) বা (0-18V)
555 ডিলে সার্কিট - পিসিবি 3D View
555 ডিলে সার্কিট – পিসিবি 3D View

সার্কিট টির কার্য প্রণালী ও সংযোগ

পাওয়ার সাপ্লাই এর জন্য ১ টি  ৯-০-৯ ভোল্টের ট্রান্সফরমার (আমরা এটাকে ০-১৮ করে নিব) ৪টা ডায়ড, ২টা ফিল্টারিং ক্যাপাসিটর এবং ৭৮১২ আইসি ব্যবহার করে ১২ ভোল্ট রেগুলেটেড পাওয়ার সাপ্লাই তৈরি করে নিলে এটি টাইম এর ভেরিয়েসন আর ডিভাইস এর অপারেটিং ভোল্টেজ কে স্থির রাখবে। এবং  ডিভাইস এর লাইফ টাইম বাড়িয়ে দেবে।

৪নং ও ৮নং পিনে (+) পাওয়ার এবং ১নং পিনে (-) গ্রাউন্ড সংযোগ হবে। ২নং (TRIG) পিন এবং ৬নং (THR) পিন শর্ট করে 1M ওহমস ও 100uf এর সংযোগ হবে।

৭নং (DIS) পিন আমরা ফাকা রাখব। যেন ৬নং ও ২নং পিনের সাথের ক্যাপাসিটর টা ডিসচার্জ না হয়, এতে টাইমার টা একবার টাইম কাউন্ট করে থেমে যাবে (মনো শট)।

  • যখন পাওয়ার রিসেট হবে তখন পুনরায় টাইমার টা কাউন্ট করা শুরু করবে।
  • ৩ নং পিন থেকে আউট পুট এর জন্য 3.3k , BC558, ও ১২ ভোল্ট এর রিলে ব্যবহার করব।
  • ২টা LED ডিলেটাইম একটিভ ও আউট পুট নরমাল একটিভ ইন্ডিকেটর এর কাজ করবে।
  • রিলের COM (Common) ও NO (Normally Open) পিন ফ্রীজের সকেটের সাথে সিরিজ হয়ে যাবে। সংক্ষেপে ডিলে সার্কিট এর কাজ এরূপেই হয়।
ডিলে সার্কিট এর পিসিবি লেয়াউট (PCB Layout)
ডিলে সার্কিট এর পিসিবি লেয়াউট (PCB Layout)

ডিলে সার্কিট পিসিবি ডিজাইন – PDF and proteus file ডাউনলোড লিংক

তো, বানিয়ে ফেলুন এত সহজ ডিলে সার্কিট। আর আসুন আমরা ফ্রীজে এই ডিলে সার্কিট ব্যবহার করে ফ্রীজের আয়ুষ্কাল বাড়াই। সবাইকে অনেক ধন্যবাদ।

নতুনদের জন্য আইপিএস

44
আইপিএস বোর্ড ঝালাইয়ের স্থান
ঝালাইয়ের স্থান

আইপিএস এখন বহুল জনপ্রিয়। লোডশেডিং থেকে পরিত্রাণের সহজ উপায় বাৎলে দিয়েছে এই আই পি এস নামক যন্ত্রটি। আজকাল লোডশেডিং আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অনুষঙ্গই বলা চলে। লোডশেডিং এর ফলে জীবনযাপন, ব্যবসা-বাণিজ্য সহ প্রায় সবকিছুই স্থবির হয়ে পড়ে। বিশেষত বাসা-বাড়িতে শিশু, বয়স্ক লোক ও অসুস্থদের সমস্যা বেশি হয়।

এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আজকাল অনেকেই “আইপিএস” কিনছেন বা কেনার কথা ভাবছেন। বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ হওয়ায় এতে কোনো ঝামেলা নেই। আইপিএস এর মাধ্যমে বাতি, ফ্যান, ফ্রিজ, কম্পিউটার, টিভি, ভিডিও প্লেয়ার প্রভৃতি প্রায় সব ধরনের ইলেকট্রিক বা ইলেকট্রনিক যন্ত্রই চালানো যাচ্ছে।

চার্জ দেওয়ার ব্যবস্থা থাকায় আই পি এস ব্যবহারে কোনো ফুয়েল বা লুব্রিকেন্টেরও প্রয়োজন হয় না। ব্যাকআপ পাওয়া যায় দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা কিংবা আরো বেশি। তবে আইপিএস সম্পর্কে সঠিক তথ্য না জানার ফলে অনেকেই বিভিন্ন ধরনের বিড়ম্বনার সম্মুখীন হচ্ছেন। আসুন আইপিএস সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নিই। একই সাথে বাজারে বহুল প্রচলিত একটি সার্কিট বোর্ড দিয়ে আইপিএস তৈরি করাও শিখবো।

আইপিএস কী

IPS এর অর্থ Instant Power Supply. অর্থাৎ আই পি এস এমন একটি ইলেকট্রনিক ও যান্ত্রিক ব্যবস্থা যার মাধ্যমে ব্যাটারীতে সঞ্চিত ডিসি শক্তিকে এসি প্রবাহে রূপান্তর করে বৈদ্যূতিক লোড যেমন বাতি, পাখা ইত্যাদি চালানো যায়।

যখন বিদ্যূৎ সরবরাহ থাকে তখন চার্জারের মাধ্যমে ব্যাটারীকে চার্জ করে বিদ্যুৎ শক্তি সঞ্চয় করা হয়। আর যখন বিদ্যূৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় তখন উপযুক্ত যন্ত্রাংশের মাধ্যমে ব্যাটারী হতে সঞ্চিত শক্তিকে প্রয়োজনীয় রূপে পরিবর্তন করে বৈদ্যুতিক লোড চালনা করাহয়। এই যন্ত্রের নাম আইপিএস। এবার আসি আসল কথায়, নিজে নিজে আই পি এস কিভাবে বানাবো-

আই পি এস বানাতে আমাদের যা যা লাগবে

  1. সোল্ডারিং আয়রন ও রাং, রজন
  2. প্লায়ার্স
  3. স্ক্রু ড্রাইভার
  4. ড্রিল মেশিন
  5. সুন্দর একটি IPS বক্স
  6. On Off সুইচ
  7. 3 pin সকেট
  8. প্রয়োজনীয় স্ক্রু ও প্রয়োজনীয় সংযোগ তার।
  9. একটি ৬৫০ ভিএ (VA) ট্রান্সফরমার (12-0-12V to 240V)
  10. অনেক গুলো খুটি (সার্কিট বোর্ড বসানোর জন্য)
  11. একটি নাতাসা বা বিমটেক্স সার্কিট বোর্ড ( এটা স্টেডিয়াম মার্কেটে পাবেন)
  12. ডিসি মোটা ক্যাবল – লাল ২.৫ ফিট ও কালো ২.৫ ফিট
  13. কুলিং ফ্যান
  14. একটা হার্জ মিটার (৭০০ টাকা নেবে)
  15. একটা ভোল্ট মিটার

এবার কাজ শুরু করা যাক

প্রথমে ক্যবিনেটের ভিতরে ট্রান্সফরমার বসানোর যায়গা ও সার্কিট বসানোর যায়গা ড্রিল দিয়ে ছিদ্র করে নিন। তার পরে ট্রান্সফরমার স্ক্রু দিয়ে ক্যবিনেটের সাথে ভালো ভাবে আটকে দিন।

ট্রান্সফরমার টেকনিশিয়ান দের দিয়ে এইভাবে ট্যাপ (Tap) বের করে নিবেন-

ট্রান্সফরমার এর ট্যাপ ডিজাইন

আইপিএস ট্রান্সফরমারের ট্যাপ ডিজাইন
আইপিএস ট্রান্সফরমারের ট্যাপ ডিজাইন

যেভাবে ঝালাই করবেন

ক্যাবিনেটের যে পাশে থ্রি-পিন প্লাগ আর কুলিং ফ্যান থাকে এবার কালো তার সেই পাশে নিচের দিকে সমান্তরালে তিনটা ছিদ্র থাকে তার একটা দিয়ে ঢুকিয়ে নাতাসা বা বিমটেক্স বোর্ডের ছবিতে দেওয়া স্থানে ভালো করে ঝালাই করে দিন।

ঝালাইয়ের স্থান
ঝালাইয়ের স্থান

এরপরে লাল তারটি ট্রান্সফরমারের লো ভোল্ট সাইডের যে তিনটা তার থাকে তার মাঝ খানেরটাতে ভালো করে ঝালাই করে দিন নিচের ছবির মতো।

ট্রান্সফর্মারে মাঝের তারটিতে ঝালাই করুন
ট্রান্সফরমারের ঝালাইয়ের স্থান

এরপরে লো ভোল্ট সাইডে বাকি যে দুইটা মোটা তার থাকে তার একটা বোর্ডের একটা হিটসিংকে আর অপরটা অন্য হিটসিংকে স্ক্রু দিয়ে ভালো করে লাগান। (উপরের ছবি দ্রষ্টব্য)

যেভাবে আইপিএস বোর্ডকে ওয়্যারিং করতে হবে

এইবার ওয়্যারিং এর পালা। ওয়্যারিং করার জন্য কম্পিউটারের নষ্ট পাওয়ার সাপ্লাই এর তার হলে খুব ভালো হয়। আমি ওয়্যারিং ডায়গ্রাম নিচে দিলাম।

আইপিএস - ওয়্যারিং ডায়াগ্রাম
আইপিএস – ওয়্যারিং ডায়াগ্রাম

সার্কিট বোর্ডের পিন কানেকশন

উপরের চিত্রে বাঁ থেকে ৬টা পিন পয়েন্ট দেখতে পাচ্ছেন।

  • ১ নং পিনে খেয়াল করুন, একটা ক্যপাসিটর কে বাড়ির লাইনের নিউট্রালের সাথে সিরিজে লাগিয়ে দিন।
  • ২নং পিনে আপনার আইপিএস এর এসি ইনপুট কর্ড এর ফেস (Phase) তারের সংযোগ দিন।
  • ৩নং পিনে আপনার ইনভারটার ট্রান্সফরমার এর আউটপুটের তার (যেটা দিয়ে ২৮০/৩০০ ভোল্ট বেরুবে ) সংযোগ দিন।
  • ৪নং পিন থেকে তার নিয়ে ইনভারটার এর যে আউটপুট সকেট আছে তার ডান পাশের পিনে ভালো করে ঝালাই করে দিন।
  • ৫নং পিন আমরা ব্যবহার করবো কারেন্ট আসলে ইনভার্টার এর মাধ্যমে ব্যটারি চার্জ করার জন্য। এটার সংযোগ হবে পিন থেকে তার নিয়ে ট্রান্সফরমার এর যে ট্যাপ ১৪০ ভোল্ট সেটার সাথে।
  • ৬নং পিন বাড়ির নিউট্রাল (ইনপুট কর্ডের নিউট্রাল) + ইনভারটার ট্রান্সফরমার এর নিউট্রাল এর সাথে এক করে ভালো করে ঝালাই করে দিন। ব্যাস আমাদের ওয়্যারিং শেষ। এখন সংযোগ দেবার পূর্বে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে হবে।

সংযোগ দেবার পূর্বে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ

  • আউটপুটে ৫০ হার্জ করতে হবে হার্জ মিটার দিয়ে মেপে
  • আউটপুট ২৪০ ভোল্ট করতে হবে ভোল্ট মিটার দিয়ে মেপে
  • আউটপুট লাইটের উজ্জ্বলতা ঠিক করতে হবে যত ওয়াটের আইপিএস ততো ওয়াটের লাইট জ্বালিয়ে সার্কিটে থাকা ভেরিয়েবেল ঘুরিয়ে
  • ব্যটারি চার্জ এম্পিয়ার ঠিক করতে হবে (এম্পিয়ার দিতে হবে ব্যটারির এম্পিয়ারকে ৮ দিয়ে ভাগ দিলে যা আসে ততোটুকু) ব্যাটারি পোস্টের যে কোনো একটা তার খুলে সিরিজে একটা এম্পিয়ার মিটার দিয়ে মাপলে বোঝা যাবে এম্পিয়ার কত যাচ্ছে
  • ব্যাটারি চার্জ ভোল্ট ঠিক করতে হবে মানে কত ভল্টে গেলে অটো কাট হবে

পরিশিষ্ঠঃ

আশাকরি যাদের হাল্কা টেকনিক্যাল/ইলেকট্রনিক্স জ্ঞান আছে তারা তৈরি করতে পারবেন। আর তা করতে পারলেই আমার এই কষ্ট করে লেখার স্বার্থকতা। ভুল হতে পারে, ভুল হলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। সকল কে ধন্যবাদ।

বিঃদ্রঃ কিছু না বুঝলে নিচে কমেন্টে জানাবেন। এই আই পি এস ছাড়াও মিনি আইপিএস নিয়ে জাহিদুল হাসান ভাইয়ের লেখা আমাদের সাইটে পড়তে পারেন এই লিংক থেকে – মিনি আইপিএস তৈরি

ওয়াটার পাম্প কন্ট্রোলার (প্রজেক্ট৪)

18
ওয়াটার পাম্প কন্ট্রোলার সার্কিট ডায়াগ্রাম
ওয়াটার পাম্প কন্ট্রোলার সার্কিট ডায়াগ্রাম

সাবধানতাঃ এসি ওয়াটার পাম্প কন্ট্রোলার হাই ভোল্টেজ এবং অনেক হাই কারেন্ট সার্কিট। হাই ভোল্টেজ হাই কারেন্ট সার্কিট সম্পর্কে ধারনা না থাকলে এই প্রজেক্ট করবে না ।

ডার্ক সেন্সর আর ওয়াটার লেভেল ইন্ডিকেটর করা হয়ে গেলে এটি অপেক্ষাকৃত সহজ একটি ছোট প্রজেক্ট। আমরা ঐ দুই প্রজেক্টের জ্ঞান কাজে লাগিয়ে এই প্রজেক্টটি করব। ছবিতে প্রজেক্টের মূলনীতি দেখানো হয়েছে।

এই সার্কিটের মূলে রয়েছে একটি ৫৫৫ আই সি। ৫৫৫ আইসির কার্যপদ্ধতি একটু আবার স্মরন করিঃ

৫৫৫ আইসিকে বহু ভাবে ব্যাবহার করা যায়, যেমন টাইমার, টগল সুইচ ইত্যাদি। বর্তমানে আমরা একে একটি কন্ট্রোলড টগল সুইচ হিসাবে ব্যাবহার করব। যাতে ২ আর ৪ নং পিন ব্যাবহার হবে; আর পিন ৩ হবে আউটপুট।

সেটঃ ৩ নং পিন হাই (ভোল্টেজ আছে)

রিসেটঃ ৩ নং পিন লো (ভোল্টেজ নাই)

সেট হয়ঃ ২ নং পিনের ভোল্টেজ যদি 1/3 x Vcc এর কম হয় ( যেমন Vcc=12 volt হলে ২নং পিন ভোল্ট 4 ভোল্টের কম হলে)।

রিসেট হয়ঃ ৪ নং পিনে ভোল্টেজ যদি গ্রাউন্ড বা নেগেটিভ স্পর্শ করে।

আমরা এক্ষেত্রে ওয়াটার লেভেল ইন্ডিকেটরের আপ বা হাই লেভেলে ৬ নং পিন যুক্ত করব আর নীচ বা লো-র সাথে ২ নং পিন।

ট্যাংক খালি হলেঃ ২ নং পিন পানির ছোয়া থেকে সরে গেল ভোল্টেজ শুন্য হয়ে যাবে ফলে ৫৫৫ আইসি সেট হয়ে যাবে। এতে ৩ নং পিনে ভোল্টেজ এসে রিলে অন করে দিবে। এই অবস্থা চলতে থাকবে যতক্ষন ৫৫৫ আই সি রিসেট না হয়।

ট্যাঙ্ক ফুল হলেঃ আপ বা হাই প্রোব পানি ছোবে আর ট্রানজিস্টর এর বেজ এ ভোল্টেজ দেখা দিবে যা ৪নং পিনকে গ্রাউন্ডের সাথে কানেক্ট করে সার্কিট রিসেট হয়ে ৩ নং পিনের আউটপুট বন্ধ করে দিবে। ফলে রিলে অফ হবে। এই অবস্থায়ই চলতে থাকবে যতখন ৫৫৫ আইসি আবার সেট অবস্থা না হবে।

দ্রষ্টব্যঃ ইলেকট্রিক পাম্প সাধারনত অনেক কারেন্ট টানে তাই উচ্চ এম্পিয়ার রেটিং রিলে ব্যবহার করতে হবে। যেমন আমার বাসায় ২ হর্স পাওয়ারের সাবমারসিবল পাম্প/ সাবমার্সিবল পাম্প ব্যবহৃত হয়। আমি ১২ ভোল্ট ডিসি কন্ট্রোল সাইড, ২৫০ভোল্ট ৩০ এম্পিয়ার এসি লোড রেটিং এর রিলে ব্যবহার করি।

পরবর্তিতে>>> প্রজেক্ট-৫ঃ ফ্লিপ-ফ্লপ তৈরী

লাইন টেস্টার

68
লাইন টেস্টার - সার্কিট ডায়াগ্রাম
লাইন টেস্টার - সার্কিট ডায়াগ্রাম
লাইন টেস্টার - সম্পূর্ণ প্রজেক্ট
লাইন টেস্টার – সম্পূর্ণ প্রজেক্ট

লাইন টেস্টার প্রজেক্ট টি অনেক ক্ষুদ্র হলেও আমাদের অনেক জরুরী একটি পরিমাপক সরঞ্জাম। যা আমাদের বাস্তব জীবন কে আরো সহজ করে দেয়। আমাদের এই ডিভাইস কাজ করে মূলত ব্যবহারিত ইলেক্ট্রিক লাইনের আবেশ কে এমপ্লিফাই করে এর আউটপুটকে হাই করে, যা LED কে জ্বালিয়ে রাখে। অর্থাৎ যখন কোন ইলেকট্রিক লাইন এর সংস্পর্শে যাবে, তখন এর LED জ্বলে উঠবে। কোন AC পাওয়ার ক্যাবলের / লাইন এর insulation (অন্তরণ) এর উপর দিয়ে সার্কিটটি নিলে যদি LED জ্বলে, তাহলে আমরা বুঝতে পারব এর পাওয়ার এক্টিভ আছে বা তারের অভ্যন্তরে কারেন্ট প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া কোন পাওয়ার ক্যাবল বা তার এর মাঝে কোন ব্রেক (কাটা) থাকলে তাও আমরা সহজেই খুজে বের করতে পারব। যেমন ধরুন একটি পাওয়ার ক্যাবলের পাওয়ার চালু (throw) আছে কিন্তু লোড পর্যন্ত পাওয়ার যাচ্ছে না। তখন এই লাইন টেস্টার টি তারের উপর দিয়ে চেক করতে থাকলে এক সময় LED অফ হয়ে যাবে, যার অর্থ এখানেই তারটি কাটা আছে। আপনি ওই স্থানে কেটে তারটি পুনরায় জোড়া দিয়ে কাজ চালিয়ে নিতে পারবেন। যা আপনার ভোগান্তি থেকে সহজেই মুক্তি দেবে। আশাকরি এই লাইন টেস্টার প্রজেক্টটি সবার কাজে দেবে ও অনেক ভোগান্তি হতে সবাই মুক্ত থাকতে পারবেন।

লাইন টেস্টার - সার্কিট ডায়াগ্রাম
লাইন টেস্টারসার্কিট ডায়াগ্রাম
লাইন টেস্টার - এন্টিনা হিসেবে ব্যবহৃত তার
লাইন টেস্টার – এন্টিনা হিসেবে ব্যবহৃত তার

লাইন টেস্টার পার্টস্‌ লিস্ট

  1. C828 ২টা।
  2. BC558 ১ টা ।
  3. LED ১টা।
  4. ২টা ব্যাটারি AA সাইজ বা যে কোন পুরাতন মোবাইল ব্যাটারি ১ টা।
  5. সামান্য মোটা তার। (এন্টেনার জান্য)
  6. সুইচ( ব্যাটারি পাওয়ার অন/অফ) ১ টি।

লাইন টেস্টার নিয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে নিচে কমেন্টস বক্স ব্যবহার করুন।

Android ও Arduino দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করুন বাসার বিভিন্ন সুইচ (পর্ব-১)

10

Android ফোন এবং Arduino দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করুন আপনার ঘরের বিভিন্ন সুইচ (Home Automation Basic)

আসুন, দেখে নিই কি ভাবে সার্কিট কি কাজ করে।
আমারা জানি BLUETOOTH রেডিও ব্যাবহার করে ডাটা স্থানান্তরিত বা নির্দিষ্ট ডিভাইস এ পাঠানো যায়। আমরা এখানে Android ফোন ও Arduino কে সংযুক্ত করার জন্য BT প্রযুক্তি ব্যাবহার করব।
আমরা জানি যে 5V এর রিলে তে 5V দিলে সেটি অন হয়ে যায়।আর রিলে টি যদি ২৪০ ভোল্ট এসি লাইনের সাথে সংযুক্ত থাকে তবে রিলে অন করলে আউটপুটে ২৪০ ভোল্ট পাওয়া যায় আর রিলে অফ করলে ০ ভোল্ট।
ধরুন “১” এই সংখ্যাটি যদি BT module এর মাধ্যমে Arduino তে আসে তাহলে রিলে টি অন হবে আর “২” এই সংখ্যাটি যদি BT module এর মাধ্যমে Arduino তে আসে তাহলে রিলে টি অফ হবে। তাহলে Android ফোন দিয়ে “১” আর “২” দুইটি সংখ্যা পর্যায়ক্রমে পাঁঠিয়ে সুইচ নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব ।
আর যদি অনেক গুলো সুইচ নিয়ন্ত্রন করার দরকার হয় তবে প্রতিটি সুইচ বা রিলের জন্য আলাদা দুইটি Command দিয়ে তা নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব ।

Untitled

আমরা এই প্রোজেক্ট টাকে মোট তিন ভাগে ভাগ করব।

১.প্রথমে android ফোন এ ব্যবহার উপযোগী একটা ইন্টারফেস তৈরি করব।

২.Arduino তে প্রোগ্রাম করব।

৩.সার্কিট সংযোগ করব।

ধাপ-১: Android ফোন এ আমরা একটা apps তৈরি করব যা দিয়ে command পাঠানো যাবে। এ জন্য Android Studio এবং Java ইন্টারনেট থেকে নামিয়ে কম্পিউটারে ইন্সটল করে নিতে হবে।

এখানে আমাদের কাজ দুইটি।

১। ইউজার এর জন্য গ্রাফিক্যাল লেআউট তৈরি।

২।মুল কোডিং বা জাভা কোডিং।

এখন Android Studio রান করে Application name লিখে NEXT বাটন এ ক্লিক করতে হবে।

তারপর আবার next বাটন তারপর blank Activity select করে নেক্সট বাটন তারপর ফিনিস এ ক্লিক করতে হবে।তারপর যে উইন্ডো ওপেন হবে সেখানে activity_main.xml এর ভিতর নিচের কোড টা কপি করে দিতে হবে।

Android ও Arduino বেইজ Home Automation এর গ্রাফিক্যাল লেআউট তৈরির জন্য নিচের কোড কপি করুন Android Studio তে

********************************************************

<RelativeLayout xmlns:android="http://schemas.android.com/apk/res/android"
xmlns:tools="http://schemas.android.com/tools"
android:layout_width="match_parent"
android:layout_height="match_parent"
tools:context=".MainActivity">

<RelativeLayout
android:layout_width="match_parent"
android:layout_height="wrap_content"
>

<TextView
android:id="@+id/headertext"
android:layout_width="wrap_content"
android:layout_height="wrap_content"
android:layout_marginTop="10dp"
android:gravity="center"
android:text="@string/header_text"
android:textAppearance="?android:attr/textAppearanceLarge"
android:textColor="#555"
/>

<TextView
android:id="@+id/fan"
android:layout_width="wrap_content"
android:layout_height="wrap_content"
android:layout_alignParentTop="true"
android:layout_marginStart="30dp"
android:layout_marginTop="60dp"
android:text="@string/fan"
android:textAppearance="?android:attr/textAppearanceLarge"
android:textColor="#555" />

<ToggleButton
android:id="@+id/toggleButton1"
android:layout_width="150dp"
android:layout_height="wrap_content"
android:layout_alignParentEnd="true"
android:layout_alignTop="@+id/fan"
android:layout_marginEnd="30dp"/>

<TextView
android:id="@+id/light1"
android:layout_width="wrap_content"
android:layout_height="wrap_content"
android:layout_alignStart="@+id/fan"
android:layout_below="@+id/toggleButton1"
android:layout_marginTop="15dp"
android:text="@string/light_1"
android:textAppearance="?android:attr/textAppearanceLarge"
android:textColor="#555" />

<ToggleButton
android:id="@+id/toggleButton2"
android:layout_width="150dp"
android:layout_height="wrap_content"
android:layout_alignStart="@+id/toggleButton1"
android:layout_alignTop="@+id/light1" />

<TextView
android:id="@+id/light2"
android:layout_width="wrap_content"
android:layout_height="wrap_content"
android:layout_alignEnd="@+id/light1"
android:layout_below="@+id/toggleButton2"
android:layout_marginTop="15dp"
android:text="@string/light_2"
android:textAppearance="?android:attr/textAppearanceLarge"
android:textColor="#555" />

<ToggleButton
android:id="@+id/toggleButton3"
android:layout_width="150dp"
android:layout_height="wrap_content"
android:layout_alignStart="@+id/toggleButton2"
android:layout_alignTop="@+id/light2" />

<TextView
android:id="@+id/light3"
android:layout_width="wrap_content"
android:layout_height="wrap_content"
android:layout_alignEnd="@+id/light2"
android:layout_below="@+id/toggleButton3"
android:layout_marginTop="15dp"
android:text="@string/light_3"
android:textAppearance="?android:attr/textAppearanceLarge"
android:textColor="#555" />

<ToggleButton
android:id="@+id/toggleButton4"
android:layout_width="150dp"
android:layout_height="wrap_content"
android:layout_alignStart="@+id/toggleButton3"
android:layout_alignTop="@+id/light3" />

<TextView
android:id="@+id/tv"
android:layout_width="wrap_content"
android:layout_height="wrap_content"
android:layout_alignStart="@+id/light3"
android:layout_below="@+id/toggleButton4"
android:layout_marginTop="15dp"
android:text="@string/tv"
android:textAppearance="?android:attr/textAppearanceLarge"
android:textColor="#555" />

<ToggleButton
android:id="@+id/toggleButton5"
android:layout_width="150dp"
android:layout_height="wrap_content"
android:layout_alignStart="@+id/toggleButton4"
android:layout_alignTop="@+id/tv" />

<EditText
android:id="@+id/bluetoothName"
android:layout_width="wrap_content"
android:layout_height="wrap_content"
android:layout_alignEnd="@+id/toggleButton5"
android:layout_alignStart="@+id/toggleButton5"
android:layout_alignTop="@+id/button1"
android:hint="@string/device_name" />

<Button
android:id="@+id/button1"
android:layout_width="wrap_content"
android:layout_height="wrap_content"
android:layout_alignEnd="@+id/tv"
android:layout_below="@+id/toggleButton5"
android:layout_marginTop="20dp"
android:text="@string/ok" />

<Button
android:id="@+id/button2"
android:layout_width="wrap_content"
android:layout_height="match_parent"
android:layout_alignBottom="@+id/button1"
android:layout_alignTop="@+id/button1"
android:layout_marginStart="10dp"
android:text="@string/connect" />

<TextView
android:id="@+id/textView1"
android:layout_width="wrap_content"
android:layout_height="wrap_content"
android:layout_alignParentBottom="true"
android:layout_centerHorizontal="true"
android:layout_marginBottom="15dp"
android:text="@string/copyright"
android:textAppearance="?android:attr/textAppearanceSmall"
android:textColor="#555" />

</RelativeLayout>
</RelativeLayout>

********************************************************************

 

এরপর /res/value ফোল্ডার এর ভিতর string.xml এ নিচের কোড টা লিখে দিন।

****************************************************************
<string name="header_text">Please select what you want to control</string>
<string name="light_1">Light 1:</string>
<string name="light_2">Light 2:</string>
<string name="light_3">Light 3:</string>
<string name="fan">Fan:</string>
<string name="tv">Television:</string>
<string name="ok">Add</string>
<string name="connect">Connect</string>
<string name="device_name">Device Name</string>
<string name="copyright"></string>
<string name="actionbar">HOME AUTOMATION</string>
<string name="about">About</string>
<string name="action_settings">action_settings</string>
<string name="title_activity_actionbar">actionbar</string>
<string name="title_activity_about">about</string>

***************************************************************

এরপর /res/value ফোল্ডার এর ভিতর style.xml এ নিচের কোড টা লিখে দি।

****************************************************************

<resources>

<!--
Base application theme, dependent on API level. This theme is replaced
by AppBaseTheme from res/values-vXX/styles.xml on newer devices.
-->
<style name="AppBaseTheme" parent="android:Theme.Light">
<!--
Theme customizations available in newer API levels can go in
res/values-vXX/styles.xml, while customizations related to
backward-compatibility can go here.
-->
</style>

<!-- Application theme. -->
<style name="AppTheme" parent="AppBaseTheme">
<!-- All customizations that are NOT specific to a particular API-level can go here. -->
</style>

</resources>

******************************************************************

 

আজকের পর্ব এ পর্যন্ত ই ।

 

Android ও Arduino দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করুন বাসার বিভিন্ন সুইচ -২

Android ও Arduino দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করুন বাসার বিভিন্ন সুইচ-৩

ওয়াটার লেভেল ইন্ডিকেটর (প্রজেক্ট ৩)

20
ওয়াটার লেভেল ইন্ডিকেট তৈরি
ওয়াটার লেভেল ইন্ডিকেট তৈরি

ওয়াটার লেভেল ইন্ডিকেটর কেন ব্যবহার করবোঃ ধরাযাক ৮ তলা বাড়ির ছাদে একটি পানির ট্যাঙ্ক বসানো আছে। সেটি তুমি দোতলা থেকে সুইচ দিয়ে কন্ট্রল কর (অন/অফ)। পানির চাহিদা বিভিন্ন সময় উঠানামা করায় ট্যাঙ্কে কখন কতখানি পানি থাকে তা অনিশ্চিত। ফলে এমন প্রায়শই এমন বিড়ম্ববনায় পড়তে হয় যে কখন ঠিক পাম্প ছাড়তে হবে আর কখন পাম্প বন্ধ করতে হবে তা নির্নয় করা যায় না। আবার ৮ তলার ছাদে গিয়ে বার বার ট্যাঙ্ক চেক করাও সম্ভব না। তাই এই বিড়ম্বনা দূর করতে আমাদের এই প্রজেক্ট। এই প্রজেক্টে আমরা একটা ইন্ডিকেটর বানাবো যা ট্যাঙ্কে পানির লেভেল নির্দেশ করবে। ফলে আমরা সার্বক্ষনিক ধারনা থাকবে কখন পাম্প ছাড়তে ও বন্ধ করতে হবে (অটো অন/অফ অন্য প্রজেক্টে করা হবে)।

প্রথম দিকে যে সার্কিটিগুলি করব তা কিছুটা এক্সপেরিমেন্টাল ধরনের। ইচ্ছা করলে ওগুলো তোমরা ব্যাবহার করতে পার। তবে পরবর্তিতে আরো সহজে আরো উন্নত সার্কিট কিভাবে করা যায় সেটা শিখবো।

প্রথম এই সার্কিটের মূলে রয়েছে একটি ট্রাঞ্জিষ্টর। তাই আমি প্রথমে ট্রাঞ্জিষ্টরের কার্য পদ্ধতি নিয়ে সামান্য আলোচনা করব। ছবিতে একটা লেড (LED) সার্কিট দেখানো হয়েছে। বাম পাশের চিত্রে ওটিকে একটি পুশ সুইচ চাপ দিয়ে অন/ অফ করা যায় (পুশ করে রাখলে অন, ছেড়ে দিলে অফ)। এই পুশের মুলে রয়েছে আঙ্গুল দিয়ে প্রদত্ত বল, যা স্প্রিং এর বাধা অতিক্রম করে সার্কিটের দু প্রান্তকে এক করে।

এখন যদি এই বলকে ভোল্টেজ দিয়ে প্রতিস্থাপন করা যায় তবে কেমন হয়? চিত্রে মাঝেরটায় এমনই ধারনা দেখানো হয়েছে। ডান পাশেরটায় যে ভাবে ইলেক্ট্রনিকালি করা সম্ভব তাই দেখানো হয়েছে। এখানে পুশ সুইচের বদলে একটি ট্রাঞ্জিষ্টর ব্যাবহার করা হয়েছে। ট্রাঞ্জিষ্টারের তিনটি পা থাকে। বেস, কালেক্টর ও ইমিটর। কালেক্টর ও ইমিটর সার্কিটে সরাসরি যুক্ত।

কিন্ত এতে কারেন্ট প্রবাহ ততক্ষন হয় না যতক্ষন বেসে (চিত্রে ট্রাঞ্জষ্টরের উপরিভাগে, আমরা ইচ্ছাকরে ইমিটার কালেক্টর মার্ক করিনি, কারন ট্রাঞ্জিষ্টরে ধরন অনুযায়ি বিভিন্ন চিত্র হতে পারে) উপরের সামান্য ভোল্টেজ না দেয়া হয়। বেসের ঐ ভোল্টেজ পুশ বা ধাক্কার কাজ করে যা কালেক্টর আর ইমিটরের মধ্যকার সেমিকন্ডাকার রোধ বাধা (স্প্রিং এর বাধার মতো) দূর করে দেয়। যতক্ষন বেস ভোল্টেজ পায় ততক্ষন কালেক্টর আর ইমিটারে সংযোগ থাকে ( যেমন পুশ সুইচে যতখন পুশ ততক্ষন অন)। বেসে যে ভোল্টেজ লাগে তা অত্যন্ত সামান্য কিন্তু তা দিয়েই কালেক্টর ও ইমিটারে প্রচুর ভোল্টেজ পাস করানো যায়।

ট্রানজিস্টর এর সুইচিং কিভাবে হয়
ট্রানজিস্টর এর সুইচিং কিভাবে হয়

এই মূল নীতিতেই আমাদের ওয়াটার লেভেল ইন্ডিকেটরের মূলনীতি। আমরা চিত্রের ডান পাশের চিত্রে বেসটিকে ভোল্টেজ প্রবাহ থকে বিচ্ছিন্ন দেখতে পাচ্ছি, কারন বেস আর মূল সার্কিটে একটা গ্যাপ আছে। এই গ্যাপ দুটোর মাঝখানে যদি এমন কিছু রাখা হয় যা সামান্য পরিমানে বিদ্যুৎ প্রবাহিত করতে পারে তবে বেসটি ভোল্টেজ পাবে আর লেডটি জ্বলে উঠবে। এই এমন কিছু স্বাভাবিক পানিও হতে পারে।

একেবারে বিশুদ্ধ পানি স্বাভাবিক অবস্থায় বিদ্যুৎ পরিবহন করেনা। কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে ট্যাঙ্কের পানি একেবারে বিশুদ্ধ নয়। এতে আয়রন, লবন এবং আরো দ্রবিভূত অনেক উপাদান থাকে যা বিদ্যুৎ পরিবহন করে। তাই ট্যাঙ্কের পানি যদি এই গ্যাপ পুরা করতে পারে এবং এতে বেস ভোল্টেজ পাবে আর লেডও জ্বলে উঠবে।

ছবিতে ছবিতে সবচেয়ে সরল ওয়াটার ইন্ডিকেটর দেখানো হল। পরের ছবিতে একাধিক ট্রাঞ্জিষ্টরের সমন্বয়ে মাল্টি লেভেল ইন্ডিকেটর বানানো হয়েছে। এভাবে যতখুশি ট্রাঞ্জিষ্টর যুক্ত করে ইচ্ছামত লেভেল দেখানো সম্ভব। সবার উপরের লেভেলে একটি বাজার (শব্দ উৎপাদক) যুক্ত করা হয়েছে যা ট্যাংক ফুল হলে আমাদের সংকেত দিবে পাম্প বন্ধ করার জন্য। লক্ষ্যনীয় যে একটা পজেটিভ প্রোব সার্বক্ষনিক পানিতে ডুবিয়ে রাখার ব্যাবস্থা করতে হবে।

সহজ ওয়াটার লেভেল ইন্ডিকেটর
সহজ ওয়াটার লেভেল ইন্ডিকেটর
একটু জটিল ওয়াটার লেভেল ইন্ডিকেটর
একটু জটিল ওয়াটার লেভেল ইন্ডিকেটর

শুধু একটি ট্রাঞ্জিষ্টর বেসড সার্কিটের দুর্বলতা হলো বেসে খুবি কম কারেন্ট পাস করায় ইমিটার আর কালেক্টরে কম কারেন্ট প্রবাহিত হতে পারে। এতে লেড খুব দুর্বল ভাবে জ্বলে কখোনো দিনের আলোয় দেখা নাও যেতে পারে। তাই আমাদের কারেন্ট বাড়ানোর ব্যাবস্থা করা দরকার। এর আগেও আমরা দেখেছি একাধিক ট্রাঞ্জিষ্টার ব্যাবহার করে সেটি করা যায়। এবারও তাই করা হবে তবে আমরা এবার একটা ডার্লিংটন পেয়ার ট্রাঞ্জিষ্টর ব্যাবহার করব।

ডার্লিংটন পেয়ার হলো দুই ট্রাঞ্জিষ্টরের যুক্ত ফল। দুইটা হুবুহু ট্রাঞ্জিষ্টর এমন ভাবে জোড়া দেয়া হয় যাতে একটার ইমিটার আউটপুট অন্যটার বেস সিগনাল হিসাবে কাজ করে। চিত্রে এমন দেখা যাচ্ছে। ফলাফল ট্রাঞ্জিষ্টার দিয়ে প্রচুর কারেন্ট পাওয়া যায় যা দিয়ে এল ই ডি কেন ডিসি মোটর পর্যন্ত ড্রাইভ করা যায়।

ডার্লিংটন পেয়ার ট্রানজিস্টরের ভেতরে
ডার্লিংটন পেয়ার ট্রানজিস্টরের ভেতরে

আমাদের প্রতিটি একক ট্রাঞ্জিষ্টরের বদলে যদি একটা করে ডার্লিংটন পেয়ার ট্রাঞ্জিষ্টর দিয়ে করি তবে সহজেই আমরা কাংখিত ফলাফল পাব। সুতরাং প্রতিটি লেভেল ইন্ডিকেটরে এক জোড়া করে যদি ৭ টি লেভেল ইন্ডিকেটর চাই তবে আমাদের ১৪ টি ট্রাঞ্জিষ্টর লাগানো উচিত। কিন্তু হাতে বানানো এমন পেয়ার কমার্শিয়াল রেডিমেড পেয়ারের চেয়ে নিম্নমানের হতে পারে।

সৌভাগ্যক্রমে বাজারে ৭ ডার্লিংটন পেয়ার ট্রাঞ্জিষ্টরের প্যাকেজ রেডিমেড পাওয়া যায়। ULN2oo3/ULN2004 এমন প্যাকেজ আইসি। এদের ভোল্টেজ ও কারেন্টও খুব হাই। তাই অনেক মোটর ড্রাইভার এইগুলাকে দিয়ে বানায়। চিত্রে ULN2004 এর ভিতরের গঠন দেখানো হয়েছে।

জনপ্রিয় আইসি ULN2004
জনপ্রিয় আইসি ULN2004
ULN2004 Darlington ট্রানজিস্টর
ULN2004 Darlington ট্রানজিস্টর

এই আইসির প্রতিটা ইনপুটের জন্য (বেস ইনপুট) সংশ্লিষ্ট একটা আলাদা আউটপুট আছে। ফলে আমরা ১ থেকে ৭ পর্যন্ত যে কোন সংখক লেভেল একটা আইসি দিয়েই করতে পারব। এর বেশী চাইলে আরো আইসি আলাদা আলাদা ভাবে ব্যাবহার করতে পারব।

ULN2004 আইসির ১-৭ পিনে টাঙ্কিতে ডুবানোর জন্য প্রোব সংযুক্ত করতে হবে। ৮ নং পিন নেগেটিভ বা গ্রাউন্ড। ৯ নং পিনে সাপ্লাই দিতে হবে। ১০ থেকে ১৬ যথাক্রমে ৭-৬-৫ …-১ নং প্রোবের সংশিষ্ট লেড যা ১ কে রেজিষ্ট্যান্স দিয়ে যুক্ত। যে কোন প্রোবকে হাই লো বা অন্যান্য লেভেল ইন্ডিকেটর হিসাবে ধরতে পারি তবে এখানে আমরা যদি ৭ নং পিনের প্রোবকে লো লেভেল ইন্ডিকেটর ধরি তবে ১ নং পিনের প্রোবকে হাই লেভেল ইন্ডিকেটর ধরব। আমরা হাই লেভেল ইন্ডিকেটরের সাথে একটি ডিসি বাজার লাগিয়েছি।

uln2004 আইসি দিয়ে তৈরি ওয়াটার লেভেল ইন্ডিকেটর
uln2004 আইসি দিয়ে তৈরি ওয়াটার লেভেল ইন্ডিকেটর

এই আইসি অনেক হাই কারেন্ট সাপ্লাই দেয় তাই অবশ্য অবশ্য লেডের সাথে রেসিষ্টর ব্যাবহার করতে হবে।

টাংকিতে সরাসরি তার ডা না ডূবিয়ে পানিতে ডুবানোর জন্য আলাদা প্রোব (পরিবাহি কাঠি) বানানো উচিত। তার সাধারনত নমনীয় প্রকৃতির হয় তাই পানিতে ভেসে উঠে আর পানির আয়রন লবনের বিক্রিয়ায় সহজেই ক্ষয় হয়ে যায়। তাই প্রোব হিসাবে শক্ত মোটা ও পানিতে সহজে বিক্রিয়া করেনা এমন প্রোব নির্বাচন করা উচিত। প্রোব হিসাবে লোহার বস্তু নির্বাচন করা উচিত না। লোহা সহজেই পানির সাথে বিক্রিয়ায় মরিচা উৎপাদন করে ট্যাঙ্কির পানি দূষিত করে। সম্ভব হলে পিভিসি সিথিং (খোল/কভার) সহ মোটা তামার লেভেল অনুযায়ী উপর নীচ করে তার একত্রে বেধে দেয়া যায়। আমার বাসায় আমি একটা প্লাষিকের পাইপে লেভেল অনুযায়ী ছিদ্র করে ২০ গেজি তামার তার পিভিসি কভার সহ একেকে ছিদ্রে বেধে দিয়ে ঐ পাইপটি ট্যাংকে খাড়া রাখার ব্যাবস্থা করেছি। ঐ প্রোবগুলাকে RJ-45 বা ল্যান/ইন্টারনেটের তার দিয়ে যুক্ত করে নিচে বাসায় রাখা সার্কিটে যুক্ত করেছি।

my-Tank-arrangement

সার্কিটটাকে আকর্ষনিয় ভাবে উপস্থাপনের জন্য তোমরা ছবির মতো ডিসপ্লে বোর্ড বানাতে পার। বাজারে সুইচ বোর্ড হিসাবে প্লাষ্টিকের যে বোর্ড পাওয়া যায় তা কেটে এরকরম করলে তা প্রজেক্টকে আরো আকর্ষনীয় করবে।

ওয়াটার লেভেল ইন্ডিকেটর এলইডি গুলো বক্সের মধ্যে সংযুক্ত করবার পরে
ওয়াটার লেভেল ইন্ডিকেটর এলইডি গুলো বক্সের মধ্যে সংযুক্ত করবার পরে

পরবর্তিতেঃ  প্রজেক্ট-৪ ওয়াটার পাম্প কন্ট্রোলার

অডিও সিস্টেম

5

গান শুনবার জন্য আমরা যে যন্ত্র ব্যবহার করি তাই আসলে অডিও সিস্টেম। একটি বেসিক অডিও সিস্টেমে নীচের জিনিস গুলো থাকে

  • ১. শব্দ গ্রহণের জন্য একটি মাধ্যম – ইনপুট জ্যাক, বিভিন্নধরনের মেমোরীকার্ড স্লট, ব্লুটুথ
  • ২. এমপ্লিফায়ার বা শব্দকে বিবর্ধনের যন্ত্র
  • ৩. শব্দকে আমাদের কানের শুনবার উপযোগী করবার জন্য ড্রাইভার বা স্পীকার
  • ৪. সম্পূর্ণ সার্কিটে শক্তি সরবরাহের জন্য পাওয়ার সাপ্লাই ব্যবস্থা
  • ৫. একটি বাক্স যা সম্পূর্ণ ব্যবস্থাটিকে ধারণ করে

এই ব্যবস্থায় যখন একটি চ্যানেলে শব্দকে বিবর্ধিত করা হয় তখন তা মনো সিস্টেম, যখন দুইটি চ্যানেলে শব্দকে বিবর্ধিত করা হয় তখন তা স্টেরিও সিস্টেম। বর্তমানে নিখুত ও শব্দের মান বাড়াতে ৪:১, ৫:১, ৭:১, ৫:২, ৭:২, ১০:১ ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। : এর পরের সংখ্যাটি এর সাথে যুক্ত সাবউফারের সংখ্যা নির্দেশ করে। :১ মানে একটি সাব উফার, :২ মানে দুইটি সাব উফার।

সাবউফার হলো মুলত একটি এমপ্লিফায়ার যাতে শুধুমাত্র ৩০ থেকে ২৫০ বা ৫০০ হার্টজ পর্যন্ত শব্দকে বিবর্ধিত করা হয়। কম্পিউটারের সাথে ব্যবহার করা বড় একটি এবং ছোট দুইটি স্পীকারের মধ্যে বড়টি সাব উফার আর ছোট দুইটি স্যাটেলাইট স্পীকার। হোম থিয়েটার বা সিনেপ্লক্স সিনেমাহলে ৫:১ বা তদুর্ধ সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার করা হয়। যাতে পিছনের স্যাটেলাইটগুলো বিশেষ ভাবে প্রোগ্রামকরা ব্যবস্থার মধ্যে সঠিকভাবে শব্দপুনরুৎপাদন করতে পারে।

এর পাশাপাশি আমরা হাইফাই নামক একটা শব্দ দেখতে পাই বিভিন্ন এমপ্লিফায়ারের গায়ে। এই হাইফাই এর বিশেষ মানে আছে যদিও বাজে মানের সিস্টমেও কথাটা অহরহ লিখা থাকে। হাই ফাই মানে হলো কোন এমপ্লিফায়ারের ইনপুটে ১ কিলোহার্জ মানের সিগন্যাল দেওয়ার পর যদি এর আউটপুটে ০.১% এর কম ডিস্টরশন হয় তবে তা হাইফাই সিস্টেম। ডিস্টরশন হলো ইনপুটে যা দেওয়া হলো আউটপুটে বিবর্ধিত হতে গিয়ে তার বিচ্যুতির মাত্রা। সাধারণত দামী ও সঠিক প্রকৌশল ব্যবহার করে তৈরী করা অডিও সিস্টেম হাইফাই মানের হয়। একটি প্রকৃত হাইফাই মানের সাউন্ড সিস্টেম বা অডিও সিস্টেম তৈরী করতে শ্রম এবং অধ্যাবসায় প্রয়োজন সেই সাথে প্রচন্ড ধৈর্য্য আর কাজ করবার দক্ষতা।

একটি অডিও সিস্টেমের প্রাণ হলো এর এমপ্লিফায়ার সার্কিট। তৈরী করবার পদ্ধতির উপর এর বিভিন্ন প্রকার ভেদ আছে। এই প্রকারভেদ মুলত এর দক্ষতা ও তৈরীর কৌশলের উপর নির্ভর করে। ক্লাশ এ , বি , সি , ডি ইত্যাদি নামে এইগুলোকে চিহ্নিত করা হয়। আমাদের এতটা গভীরে যাওয়া লাগবে না আলোচনার। জানবার ইচ্ছা থাকলে ধীরে ধীরে নিজেই জেনে নিতে পারবেন।

বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন কোম্পানীর তৈরী করা ভাল মানের এমপ্লিফায়ার তৈরী করবার আইসি পাওয়া যায়। যা মানসম্মত শব্দ (হাইফাই সহ) উৎপাদন করতে পারে যদি সঠিকভাবে ব্যবহার করা যায়। এছাড়াও বেশী ক্ষমতার (৫০ ওয়াটের বেশী) এমপ্লিফায়ার তৈরীর জন্য ট্রানসিস্টর বা মসফেট দ্বারা তৈরী সার্কিট ব্যবহার করা হয়।

গাড়িতে ব্যবহার করবার জন্য ১২-১৪ ভোল্ট ডিসি বা ডাইরেক্ট কারেন্টে চালানোর উপযোগী সার্কিট সাধারণত ব্যবহার করা হয়। TDA সিরিজের আইসি নির্মিত এমপ্লিফায়ার গাড়িতে ব্যবহার করবার জন্য বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় দামে সস্তা ও দামের অনুপাতে শব্দের মানের উৎকর্ষতার জন্য।

শব্দ কানের শুনবার উপযোগী করবার জন্য ড্রাইভার বা স্পীকার ব্যবহার করা হয়। এমপ্লিফায়ার যত ওয়াটের হবে তার চেয়ে কমপক্ষে ২০% বেশী ওয়াটের স্পীকার ব্যবহার করা উচিৎ। এতেকরে শব্দের মান ভাল হয়। সস্তা ভারতিয় বা নকল চায়নীজ স্পীকার ব্যবহার না করাই ভাল যদি আপনি ভাল একটি অডিও সিস্টেম চান।

একটি অডিও সিস্টেমের মোট দামের প্রায় ৪০% এর ড্রাইভারের পিছনে ব্যয় হবে আপনার। আর ৩০-৪০% এর পাওয়ার সাপ্লাইয়ের জন্য। বুঝতেই পারছেন এখন মুল এমপ্লিফায়ারকে চালানোর জন্যই বড় আয়োজন লাগবে।

পুর্বে  এখানে প্রকাশিত

ডিসি টু ডিসি কনভার্টার (১ম পর্ব)- প্রাথমিক আলোচনা

6

ইলেকট্রনিক্সের কোনো প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করার সময় সবথেকে বড় যে সমস্যাগুলো দেখা দেয়, তারমধ্যে অন্যতম হচ্ছে সার্কিটে দরকার মতো ভোল্টেজের ব্যবস্থা করা। ভোল্টেজ বা পাওয়ার সোর্স হিসেবে সাধারণত ব্যাটারী, সোলারসেল, ডিজেল জেনারটর, উইন্ড টারবাইন, বা সরাসরি গ্রীড পাওয়ার ব্যবহার করা হয়। পাওয়ার গ্রীড বা জেনারেটর ভোল্টেজকে ট্রান্সফর্মার দিয়ে কমিয়ে রেক্টিফায়র দিয়ে ডিসি করা যায়, যেখানে ট্রান্সফর্মার সাধারণত 3V/6V/9V/12V ইত্যাদি ভোল্টেজের হয়ে থাকে।

Batteries - ডিসি টু ডিসি কনভার্টার
Batteries – ডিসি টু ডিসি কনভার্টার

ব্যাটারীর মধ্যে লেড এসিড ব্যাটারিই সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় যেগুলো সাধারণত 4.4V, 6V, 12V এবং 24V ই বাজারে বেশি প্রচলিত। ড্রাইসেল 1.5V, নিকেল ক্যাডমিয়াম সেলগুলো সাধারণত 1.2V – 1.8V এবং লিথিয়াম আয়ন বা লিথিয়াম পলিমার সেলগুলো 3.7V এর হয়ে থাকে। বাজারে প্রচলিত সোলার প্যানেল সাধারণত 12V, 18V বা 24V হয়ে থাকে।

অন্যদিকে আমাদের প্রজেক্টের লোড হিসেবে একটি সাধারণ বাল্ব থেকে শুরু করে ছোটো মটর, রিলে, মাইক্রোকন্ট্রোলার বোর্ড, মোবাইল ফোন বা এলইডি যে কোনো কিছুই হতে পারে। এদের প্রত্যেকেরই অপারেটিং ভোল্টেজ ভিন্ন ভিন্ন। যেমন আকার এবং রং ভেদে এলইডি সাধারণত 1.5v থেকে 4.5V, মটর 3/6/9/12V, মাইক্রোকন্ট্রোলার বা অন্যান্য ডিজিটাল সার্কিটের জন্য প্রয়োজন হয় 5V এর।

কিন্তু সার্কিটের চাহিদা অনুযায়ী ভোল্টেজ সোর্স সবসময় সরাসরি পাওয়া যায় না। ধরুন মাইক্রোকন্ট্রোলার নিয়ে কাজ করছেন, যেখানে 5V সাপ্লাই দরকার। কিন্তু 5V এর ব্যাটারী সচারচর পাওয়া যাবে না। কিংবা ধরুন কোনো সার্কিটে ঠিক 7V সাপ্লাই দরকার। তখন কি করবেন? বাজারে 7V এ তো কোনো ব্যাটারিই নেই। কিংবা ধরুন সার্কিটে 6V ই লাগবে, 6V ব্যাটারি তো বাজারে পাওয়াই যায়, কিন্তু আপনার কাছে 12V ব্যাটারি আছে, কিংবা 6V ট্রান্সফর্মার ছাড়া আর কিছুই নেই। 6V ট্রান্সফর্মারকে ডায়োড দিয়ে রেক্টিফাই করে ক্যাপাসিটর দিয়ে ফিল্টার করলে প্রায় 8.4V ডিসি পাওয়া যাবে। কিন্তু আপনার তো দরকার 6V, এক্ষেত্রে কি করবেন? ভোল্টেজকে কোনো না কোনোভাবে কমিয়ে দরকারমতো ভোল্টেজে নামিয়ে আনা ছাড়া কোনো উপায় নেই।
আবার যদি এমন হয়, আপনার কাছে 3.7 ভোল্টের একটি লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি আছে, আপনি সেটা দিয়ে মোবাইল চার্জ করতে চাচ্ছেন (পাওয়ার ব্যাংক সার্কিট), মোবাইলে তো 5V দরকার। এক্ষেত্রে ভোল্টেজ বাড়িয়ে 5V করতে হবে।

আর এই কাজগুলো করতেই দরকার পড়বে ডিসি টু ডিসি কনভার্টার, অর্থাৎ এমন একটা আলাদা সার্কিট যা দিয়ে ডিসি ভোল্টেজকে দরকারমতো কমিয়ে বা বাড়িয়ে এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে উল্টিয়ে বা ইনভার্ট করে (যেমন 12V থেকে -12V এ) মূল সার্কিটে ব্যবহার করা যাবে। সার্কিট ডিজাইন, আকার-আকৃতি, সুবিধা-অসুবিধা, ব্যবহার ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে অনেক ভাবেই ডিসি টু ডিসি কনভার্টার সার্কিট তৈরি করা যায়। সাধারণ একটা রেজিস্টেন্সকে লোডের সাথে সিরিজে লাগালেই যেমন ডিসি টু ডিসি কনভার্টার হয়ে যায়, তেমনি ইন্ডাক্টর ক্যাপাসিটর, মসফেট, ট্রানজি্স্টর ইত্যাদি ব্যবহার করে সুইচিং টেকনোলজির মাধ্যমে জটিল সার্কিট তৈরি করেও ডিসি টু ডিসি কনভার্টার তৈরি করা যায়। প্রত্যেকেরই কিছু সুবিধা-অসুবিধা আছে।

এ্রই টিউটোরিয়ালে পরবর্তীতে ধারাবাহিকভাবে সাধারণ রেজিস্টেন্স দিয়ে তৈরি রেজিস্টিভ ভোল্টেজ ডিভাইডার থেকে শুরু করে একে একে ডায়োড ভোল্টেজ রেগুলেটর, ট্রানজিস্টার ভোল্টেজ রেগুলটর, লিনিয়ার রেগুলেটর, এবং সবশেষে Switch Mode আইসি MC34063 দিয়ে তৈরি বাক কনভার্টার, বুস্ট কনভার্টার এবং ভোল্টেজ ইনভার্টিং কনভার্টার, এদের প্রত্যেকটির গঠন, কার্যপ্রণালী, সুবিধা-অসুবিধা ইত্যাদি নিয়ে যথাসম্ভব বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করবো।

ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের সাথেই থাকুন। কোনো প্রশ্ন থাকলে নিচে কমেন্টস বক্স ব্যবহার করুন, চাইলে ফেসবুক পেজ থেকেও ঘুরে আসতে পারেন

ধন্যবাদ

ডিসি সংক্রান্ত কিছু মজার প্রজেক্ট নিয়ে পড়তে চাইলে ঘুরে আসুন – মিনি আইপিএস তৈরি, ট্রান্সফরমার এর বিভিন্ন অংশএল ই ডি লাইট

আপডেট
দ্বিতীয় পর্ব: ডিসি টু ডিসি কনভার্টার (২য় পর্ব)- ভোল্টেজ ডিভাইডার