আরডুইনো টিউটোরিয়ালঃ এলসিডি ডিসপ্লে তে লিখুন যা খুশি
এলসিডি কন্ট্রোল করার জন্য মাইক্রোকন্ট্রোলার ভেদে বিভিন্ন লাইব্রেরি ব্যবহার করা হয়। আজকে তেমন একটি আরডুইনোপ্রজেক্ট নিয়ে আমাদের এই টিউটোরিয়াল। কোনও প্রজেক্ট এর ভিজুয়াল আউটপুট অর্থাৎ কোনও তথ্য দেখানোর জন্য বিভিন্ন রকমের ডিসপ্লে ব্যবহার করাহয়। যেমন, ডট ম্যাট্রিক্স, সেভেন সেগমেন্ট, এলসিডি, ওএলইডি ইত্যাদি। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো এই এলসিডি।
আজকের আরডুইনো প্রজেক্টঃ
আমরা আজকে শিখবো কি করে আরডুইনোর বিল্টইন এলসিডি লাইব্রেরি দিয়ে এলসিডি ডিসপ্লে ইন্টারফেস করতে হয়। এবং এই আরডুইনো ব্যবহার করে আমাদের পছন্দের লেখা কিভাবে ডিসপ্লে করা যায়।
সাধারণত এলসিডিতে মার্ক করা থাকে কোনদিক থেকে গোনা শুরু করতে হবে এবং কোনটা কোন পিন।
পিন ১কে গ্রাউন্ডের সাথে কানেক্ট করতে হয়, পিন ২ এ ৫ ভোল্ট দিতে হয়।
৩ নং পিনে ভোল্টেজ বাড়িয়ে কমিয়ে এলসিডির কনট্রাস্ট এডজাস্ট করা যায়। সাধারণত একটি পটেনশিওমিটার (ভেরিয়েবলরেজিস্টর) দিয়ে এ কাজটি করা হয়।
৪ নং পিনটি হচ্ছে রেজিস্টার সিলেক্ট (R/S) মোড, যেটায় ডেটা পাঠিয়ে বলা হয় যে এলসিডির ডিজিটাল ইনপুট পিনগুলোতে লেখা পাঠানো হবে না ইন্সট্রাকশন পাঠানো হবে। লেখা বলতে এলসিডিতে কি লেখা উঠবে সেটা, আর ইন্সট্রাকশন বলতে এলসিডির সব লেখা মুছে ফেলা, কিংবা যেই লেখা এখন পাঠানো হবে ওটা ২য় লাইনে দেখানো এরকম।
পিন ৫ হচ্ছে R/W ( Read/Write) মোড। এই পিনে মাইক্রোকন্ট্রোলার দিয়ে ক্যারেকটার পাঠানো যায় অথবা ডিসপ্লেতে এই মুহূর্তে কি লেখা আছে তা পড়াযায়। এ পিনটি সাধারণত গ্রাউন্ড করে রাখা হয়। পিন ৬ হচ্ছে Clock Enable Pin, এই পিনের মাধ্যমে এলসিডি ডিসপ্লে ড্রাইভারের ক্লক চালু করা হয়, যেটার সাহায্যে ড্রাইভার বুঝতে পারে কখন ইন্সট্রাকশন এক্সিকিউট করতে হবে।
D0 থেকে D7 পর্যন্ত ডিজিটাল পিনগুলোয় ক্যারেকটার (লেখা) ও ইন্সট্রাকশন পাঠানো হয়। যদি ৮ বিট মোড ব্যবহার করা হয়, তাহলে সবগুলো পিন ব্যবহার করতে হয়। তবে আরডুইনোতে বাই ডিফল্ট ৪ বিট মোড ব্যবহার করা হয়। তাই D4-D7 পিন আরডুইনোতে লাগালেই কাজ হয়।
A পিনে এলসিডির ব্যাকলাইটের পাওয়ার দেয়া হয়। এখানে ৫ ভোল্ট দিলে লাইট পুড়ে যেতে পারে তাই ৩.৩ ভোল্ট অথবা একটা রেজিস্টর দিয়ে ৫ ভোল্টে কানেক্ট করতে হবে।
K পিনে এলসিডির ব্যাকলাইটের পাওয়ার সোর্সের গ্রাউন্ড কানেক্ট করতে হবে। আরডুইনো থেকে ব্যাকলাইট পাওয়ার করা হলে এই পিনটি আরডুইনোর গ্রাউন্ড এর সাথে লাগিয়ে দিলেই চলবে।
এই লাইনটি দিয়ে এলসিডি ডিসপ্লে ইন্টারফেস করার জন্য লাইব্রেরি ইনক্লুড করলাম। আরডুইনোতে এই লাইব্রেরি বিল্ট ইন থাকে।
LiquidCrystal lcd(12, 11, 5, 4, 3, 2);
এই লাইন দিয়ে এলসিডির কোন পিন আরডুইনোর কোন পিনে লাগালাম সেটা ডিক্লেয়ার করতে হবে। পিনগুলো ডিক্লেয়ার করতে হবে এভাবে (R/S, E, D4, D5, D6, D7)। নামগুলোর জায়গায় যত নম্বর পিনে উক্ত এলসিডি পিন কানেক্ট সেটা লিখতে হবে।
void setup(){
lcd.begin(16, 2);
lcd.begin লিখে এলসিডিতে ডেটা পাঠানো শুরু করতে বলা হয়েছে এবং ব্রাকেটে প্রথমে এলসিডির কলামসংখ্যা ও মাঝখানে একটি কমা দিয়ে এলসিডির Row বা সারি সংখ্যা লিখতে হবে। এলসিডির নামের আগে 16×2 লেখা থাকলে বুঝতে হবে এলসিডিটিতে ১৬টা কলাম ও ২টি রো আছে। নিচে 16×2 ও 20×4 এলসিডি এর ছবি দেয়া হল-
16×2 এলসিডি ডিসপ্লে দেখতে এমন হয়20×4 এলসিডি ডিসপ্লে দেখতে এমন হয়
lcd.setCursor(0, 0);
এই কমান্ড দিয়ে কারসরকে উপরের সারির প্রথম কলামে নেয়া হল। এরপর যা লেখা হবে সেটা কারসরের পজিশন থেকে শুরু হবে। ব্র্যাকেটের ভিতরে প্রথমে কলামের সংখ্যা ও শেষে সারি/রো এর সংখ্যা লিখতে হবে।
lcd.print(“hello, world!”);
এলসিডিতে লাস্ট ডিক্লেয়ার করা কারসর পজিশন থেকে ব্র্যাকেটের ভিতরে লেখা স্ট্রিং বা লেখা প্রিন্ট/ ডিসপ্লে করানো হলো।
lcd.setCursor (0,1);
কারসরের পজিশন ২য় সারির (কলাম ও সারির গণনা ০ থেকে শুরু হওয়ায় ১ লেখা হয়েছে) ১ম কলামে নেয়া হলো।
lcd.print (“AmaderElectronics”);
এই লাইনটির মাধ্যমে, লাস্ট কারসর পজিশনে উক্ত লেখা (“AmaderElectronics”) কে আরডুইনো দিয়ে এলসিডি ডিসপ্লেতে দৃশ্যমান করা হয়েছে। এখানে AamderElectronics এর স্থানে আপনার পছন্দের কিছু লিখতে পারেন।
এলসিডি নিয়ে কিছু ট্রাবলশুটিংঃ
সমস্যা ১– এলসিডির লাইট জ্বলে, কিন্তু লেখা আসেনা অথবা লেখা সাদা ব্লকের জন্য বোঝা যায়না।
খুবই সহজ একটি সার্কিট। একটি C828 ট্রানজিস্টর দিয়ে তৈরী। 50k ভেরিয়েবলটি দিয়ে এই প্রিএম্প এর গেইন কন্ট্রোল করা যাবে। 100 nf ক্যাপাসিটরটি মুলত এর ফ্রীকোয়েন্সী কাট নির্ধারণ করবে। ইনপুটে লেফট ও রাইট দুই চ্যানেলই আসবে কিন্তু আউটপুটে শুধুমাত্র লো ফ্রীকোয়েন্সী আসবে।
যারা অডিও নিয়ে কাজ করছেন প্রাথমিক লেভেলে তাদের জন্য এই সার্কিট। তৈরী করতে অল্পটাকা লাগবে এবং সুযোগ আছে পরীক্ষানিরীক্ষা করবার। 100nf ও আউটপুটের 1mf কে পরিবর্তন করে ফ্রীকোয়েন্সী কাটঅফ কমবেশী করা যাবে তবে পরিবর্তন এরমান খুব কমবেশী না করাই যুক্তিযুক্ত।
**নোটঃ mf দ্বারা এখানে মাইক্রোফ্যারাড বোঝানো হয়েছে।
এই প্রিএম্প সার্কিটটি টেস্টেড না। আমি আশা করছি আপনারা এটাকে টেষ্ট করে এর আউটপুট কেমন হয় তা আমাদের জানাবেন। সহজ সার্কিট দিলাম যাতে করে অল্প সময়ে ও অল্প খরচে সার্কিটটি নিয়ে গবেষণা করতে পারেন। প্রফেশনাল লেভেলের সাবউফারসার্কিট আমাদের টেস্ট পর্যায়ে আছে যা অতীশিঘ্রই আপনাদের কাছে উপস্থাপন করবো, পিসিবি ডিজাইন সহ। প্রফেশনাল লেভেলের সার্কিট করবার আগে এটাকে নিয়ে গবেষণা যদি করেন তবে একটি ভালো আইডিয়া পাবেন যা প্রফেশনাল সার্কিট তৈরী ও এসেম্বল করতে সুবিধা হবে।
এই প্রিএম্প সার্কিট দিয়ে ৫০ ওয়াটের বেশী মানের এমপ্লিফায়ার না চালানোর জন্য বিশেষ পরামর্শ রইলো। এটা যেহেতু সিঙ্গেল সাপ্লাই সার্কিট তাই ডুয়েল সাপ্লাইয়ের এম্পের সাথে ব্যবহারের সময় প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে বিশেষ করে গ্রাউন্ড ও নেগেটিভ সাপ্লাই যেনো কখনো এক সাথে না লাগে।
TDA7294 দিয়ে পাওয়ারফুল এম্পলিফায়ার তৈরি (পিসিবি সহ)
আজকে একটি ৯০ ওয়াটেরশক্তিশালী এম্পলিফায়ার নিয়ে লিখছি। দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য এটি যথেষ্ট পাওয়ারফুল এম্পলিফায়ার। বাজারে TDA7294 দিয়ে রেডিমেড কম্পলিট এম্পলিফায়ার পাওয়া যায় তা হয়ত সবাই জানেন। তবে সেগুলোর গুণগত মান তেমন নয়। আজ TDA7294 এর যে ডায়াগ্রামটি দিচ্ছি তা অনেক মানসম্মত একই সাথে শক্তিশালী। সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এই ডিজাইনে এম্প সার্কিট আর পাওয়ার সাপ্লাই বিল্টইন। ফলে আলাদা ভাবে পাওয়ার সাপ্লাই বানানোর ঝামেলা নেই। সাবউফার স্পিকার ড্রাইভ করবার জন্যও এটি বেশ কার্যকরী। প্রথমেই এই TDA7294 এম্পলিফায়ার এর ডায়গ্রাম দেখি-
আমাদের এই এম্প সার্কিটডায়াগ্রামে মিউট ও স্ট্যান্ডবাই এর মিলিত সুবিধা দেয়া আছে যা নিরাপদ ও কার্যকরী। ডায়াগ্রামে 28V AC এই অংশটুকু পাওয়ার সাপ্লাই ট্রান্সফরমার এর সেকেন্ডারি তে একটি সুইচের মাধ্যমে সংযুক্ত হবে। এই সুইচ অন-অফ এর মাধ্যমে উক্ত সুবিধাটি কার্যকর করা যাবে (মিউট ও স্ট্যান্ডবাই নিয়ে পরে আলোচনা করছি)।
১৮ গেজ এর কপার তার বা সুপার এনামেল ওয়্যার (মোটর বা ট্করান্সফরমারের কয়েলের তার) কে ৩/৮ ড্রিলবিট এর উপরে ১০ থেকে ১১ প্যাঁচ দিতে হবে। সার্কিট বোর্ডে সংযুক্ত করবার মত তার রেখে অতিরিক্ত তার কেটে বাদ দিতে হবে।
TDA7294 এর কিছু বৈশিষ্টঃ
TDA7294 আইসি টি মনোলিথিক। এই প্যাকেজের মাঝেই হাই আউটপুট পাওয়ার দেবার ব্যবস্থা আছে। ফলে নতুন ও হবিস্টদের জন্য বানানো বেশ সুবিধা জনক। আইসি টির কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট নিম্নরূপ-
উন্নত মানের এম্প সিস্টেমে মিউট ও স্ট্যান্ডবাই সুবিধা বিশেষভাবে থাকে। উভয় ক্ষেত্রেই এম্প এর আউটপুট বন্ধহয়ে যায় কিন্তু ২টির সুবিধা এক নয়।
মিউট এর ক্ষেত্রে এম্প সিস্টেমের সম্পূর্ণ ফাংশন চালু থাকে অপরদিকে স্ট্যান্ডবাইএর ক্ষেত্রে সম্পুর্ণ এম্প সিস্টেম টি এমন একটি পর্যায়ে চলেযায় যখন এম্প সিস্টেম সবথেকে কম পাওয়ার কনজিউম করে। কিন্তু স্ট্যান্ডবাই এর বড় অসুবিধা হলো এই অবস্থা থেকে এম্প সিস্টেম কে সম্পূর্ণ কর্মক্ষম হতে কিছু পরিমাণ সময়ের দরকার হয়। অপরদিকে মিউটিং এর ক্ষেত্রে এম্প সিস্টেমের সকল কার্যক্রম চালু থাকে কিন্তু আউটপুট শুধু বন্ধ হয়। ফলে আউটপুট কে দ্রুত সুইচ অন বা অফ করতে মিউট পদ্ধতিই বেশী কার্যকর।
এম্পলিফায়ার এর পাওয়ার সাপ্লাইঃ
সঠিক পাওয়ার সাপ্লাই এম্পলিফায়ারের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ভোল্টজে বেশী হলে যেমন এম্প আইসি কেটে যেতে পারে তেমনি পাওয়ার সাপ্লাই এর কারেন্ট রেটিং কম হলে সাউন্ড নষ্ট হয়।
ডায়াগ্রামে দেখতে পাচ্ছি এটি একটি স্প্লিট টাইপ পাওয়ার সাপ্লাই। ট্রান্সফরমার ও ক্যাপাসিটর অবশ্যই উচ্চমানের হতে হবে। নয়ত নয়েজ বা হাম আসবে। এখানে উল্লেখ্য যে এই এম্পলিফায়ার সার্কিটটির সাথে যে পিসিবি ডিজাইন দেয়া হয়েছে তাতে এই পাওয়ার সাপ্লাই সেকশন ও যুক্ত করা আছে। তারমানে আপনি একই পিসিবি তে এম্পলিফায়ার এবং পাওয়ার সাপ্লাই পাচ্ছেন।
পাওয়ার গ্রাউন্ড আর কানেকশন গ্রাউন্ড/সিগনাল গ্রাউন্ডকে আলাদা রাখতে হবে
মেটাল ক্যাবিনেট ব্যবহার করলে মোটা তার দিয়ে ক্যাবিনেট ও গ্রাউন্ড ঝালাই করতে হবে
ভলিউম কন্ট্রোলসহ টোন কন্ট্রোল ভেরিয়েবল রেজিষ্টরের বডি একসাথে বাড়তি তার দিয়ে যুক্ত করে গ্রাউন্ডের সাথে ঝালাই করে দিতে হবে
আইসি বা ট্রানসিস্টরে ব্যবহৃত হীট সিংক পর্যাপ্ত হতে হবে
ট্রান্সফরমার এর বডিকে রাবার বা প্লাস্টিকের সাহায্যে চেসিস (ক্যাবিনেট) থেকে আলাদা করে রাখতে পারলে ভাল হবে।
ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সতর্ক নজর রাখতে হবে। নয়েজ ও হাম দূর করবার জন্য পূর্বে প্রকাশিত আমার এই লেখাটি পড়তে পারেন।
এম্পলিফায়ার পিসিবি ডিজাইনঃ
এম্পলিফায়ারের নয়েজ দূর করতে চাইলে ভালো মানের পিসিবি ডিজাইন বাধ্যতামূলক। তবে অনেকেরই ডিজাইন করবার মত সুবিধা থাকেনা। চাইলেও পারেন না। তাদের জন্য এই এম্পলিফায়ার টির পিসিবি ডিজাইন দিচ্ছি-
TDA7294 এম্পলিফায়ার সার্কিটের পিসিবি
ডিজাইন টি ডাউনলোড করে ছবিতে দেয়া সাইজ অনুযায়ী প্রিন্ট করতে পারেন। সাইজ নিয়ে সমস্যা হলে নিচে দেয়া পিসিবি ডিজাইনের ডাউনলোড লিংক থেকে PDF File ডাউনলোড করে নিন। PDF ফাইল টিকে লেজার প্রিন্টার দিয়ে প্রিন্টকরে টোনার ট্রান্সফার মেথড দিয়ে পিসিবি বানাতে পারেন।
পিসিবি বানানো নিয়ে আমাদের তরুণ গবেষকদল একটি ভিডিও তৈরী করেছে। তাও দেখতে পারেনঃ সহজ ভাবে পিসিবি তৈরী
পিসিবি ডিজাইন টি প্রিন্ট করবার পর নিচের কম্পোনেন্ট লেয়াউট দেখে পার্টসগুলোকে জায়গামত বসিয়ে সোল্ডার করে নিতে হবে। অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেন ড্রাইসোল্ডার না থাকে।
এম্পলিফায়ার পিসিবি’র জন্য কম্পোনেন্ট লেয়াউট
TDA7294 আইসি টি সিঙ্গেল চ্যানেল। অর্থাৎ কেউ যদি স্টেরিও হিসেবে ব্যবহার করতে চান তাহলে একই রকম ২টি সার্কিট তৈরি করে স্টেরিও করতে হবে। অবশ্যই আইসিতে বড় মাপের হিটসিংক লাগাবেন। থারমাল পেস্ট ব্যবহার করতে হবে। কম্পলিট স্টেরিও করলে দেখতে এমন হবে-
TDA7294 এর স্টেরিও এম্পলিফায়ার সিস্টেম
স্পিকার বাছাইঃ
এই সার্কিটের সাথে ব্যবহারের জন্য ৮ ইঞ্চি মাপের ও কমপক্ষে ১২০ ওয়াট লোড নিতে সক্ষম স্পীকার ব্যবহার করতে হবে।
প্যাসিভ ক্রসওভার তৈরী ও ব্যবহারঃ
অডিও এমপ্লিফায়ারের আউটপুটে লাগানোর জন্য এই প্যাসিভ ক্রসওভার যা স্পীকারের ধরণ অনুযায়ী অডিও ফ্রিকোয়েন্সীকে আলাদা করে তাতে সিগন্যাল দিবে। এতে করে আউটপুটের শব্দ আরও শ্রুতিমধুর এবং স্পীকারের কর্মক্ষমতা ভাল হবে।
উফার – ৫০০ হার্টজ,
মিডরেঞ্জ – ৫০০- ৩ কিলোহার্টজ এবং
টুইটার ৩ কিলোহার্টজ থেকে ২০ কিলোহার্টজ পর্যন্ত ফ্রিকোয়েন্সী রেঞ্জে কাজ করে।
ভালো বিট পাবার জন্য যেমন ভালো এম্পলিফায়ার সার্কিট, পাওয়ার সাপ্লাই প্রয়োজন তেমনি প্রয়োজন একটি ভালো স্পিকার বক্স। বিশেষ ভাবে বলতে গেলে বুকে ধাক্কা দেবার মত বিট যদি পেতে চাই তাহলে ভালো স্পিকার বক্স ডিজাইনের গত্যান্তর নাই। আমার নিজের ডিজাইন করা একটি ভালো সাবউফার বক্সের ডিজাইন নিচে দিচ্ছি। এটি বানানো যেমন সহজ তেমনি সাউন্ড ও জোড়ালো। এই সাবউফার বক্সের ডিজাইন নিয়ে বিস্তারিত লেখা পাবেন আমাদের সাইটে প্রকাশিত এই লেখায়- সাবউফার বক্স
আশাকরি উপরোক্ত ধাপগুলি সঠিক ভাবে মেনে চললে এম্পলিফায়ার বানানোতে আপনি সফল হবেন। আর আমরা তো আছিই আপনাদের পাশে।
লেখা শুরু করেছিলাম এম্পলিফায়ার নিয়ে। লিখতে লিখতে সম্পূর্ণ এম্পলিফায়ার সিস্টেম নিয়েই বলে ফেললাম। প্রজেক্ট হিসেবেও এই অডিও এম্প সিস্টেম বেশ কাজে লাগতে পারে। এতে যদি আপনার কিঞ্চিৎ উপকার হয় তাতেই এই পরিশ্রম স্বার্থক। অডিও সাউন্ড সিস্টেম নিয়ে আমাদের আরো লেখা পাবেন অডিও বিভাগে। ঘুরে আসবার আমন্ত্রণ রইলো।
Variable Capacitor – বাংলা অর্থ “পরিবর্তনশীল ধারক”। যা কিনা ইলেকট্রন চার্জ ধারণ করতে পারে। যে ক্যাপাসিটরের ক্যাপাসিট্যান্স বা ধারকত্ব –এর মান পরিবর্তন করা যায় তাকে ভেরিয়েবলক্যাপাসিটর বলে। এগুলো সাধারণত এক বা একাধিক মুভিং প্লেটের সমন্বয়ে তৈরি করাহয়। প্লেটের অবস্থান পরিবর্তন করে ক্যাপাসিট্যান্স পরিবর্তন করাযায়। ভেরিয়েবল ক্যাপাসিটরে মুভিং প্লেট গুলোর বিশেষ সজ্জা ও ধর্মের কারণে এরা একটি অপটির উপর বা নিচ দিয়ে মুভ করার সময় বিভিন্ন ধরনের ক্যাপাসিটেন্স প্রদান করে।
এই ধরণের ক্যাপাসিটর গুলিতে একসেট স্থির ধাতব প্লেট থাকে যাদের স্টেটর বলাহয় এবং একসেট মুভেবল ধাতব প্লেট থাকে যাদের রোটর প্লেট বলাহয়। এই রোটর প্লেটসমূহকে শ্যাফটের মাধ্যমে ঘুরানো যায়। যখন ঘুরানো হয় তখন রোটর প্লেটসমূহ স্টেটর প্লেটসমূহের ফাঁকে প্রবেশ করে এবং মাঝখানের বায়ু ডাইইলেকট্রিক হিসাবে কাজ করে, কিন্তু প্লেটগুলি পরস্পর কে স্পর্শ করেনা। ক্যাপাসিটরের ক্যাপাসিট্যান্স নির্ভর করে রোটর প্লেট ও স্টেটর প্লেটের উপরিপাতিত ক্ষেত্রফলের উপর। শ্যাফট ঘুরালে রোটর প্লেট ও স্টেটর প্লেটের মধ্যে উপরিপাতিত ক্ষেত্রফলের পরিবর্তন হয় বলে ক্যাপাসিটরটি পরিবর্তনশীল ক্যাপাসিট্যান্স তৈরী করে।
গ্যাং হচ্ছে এক প্রকার ভেরিয়েবলক্যাপাসিটর, যা আকার বড় হয়। সাধারণত ক্যাপাসিটর এর মানের উপর নির্ভর করে এর আকার বড়-ছোট হতে পারে। গ্যাং ভেরিয়েবলক্যাপাসিটর মান পরিবর্তনের জন্য এর গায়ে নব বা চাকতি লাগানো থাকে।
নব বা চাকতি ঘুরিয়ে গ্যাং এরমান পরিবর্তন করা হয়। বিশেষ ধরনের গ্যাং ভেরিয়েবলক্যাপাসিটর এর মুভিং প্লেট গুলা ভ্যাকুয়াম চেম্বার এর ভিতরে সজ্জিত থাকে। নিচের চিত্রটিতে একটি ভ্যাকুয়াম চেম্বার ভেরিয়েবলক্যাপাসিটর দেখতে পাচ্ছি-
এদের মান শুন্য থেকে সর্বোচ্চতে পরিবর্তন করা করা যায়। গ্যাং ক্যাপাসিটরের মান অনেক বেশী হয়। যেমনঃ ০ থেকে ৫০০ পি এফইত্যাদি। গ্যাং এর একধিক পা বা লিড থাকে। ক্ষেত্রবিশেষে একে গ্যাং কন্ডেন্সার বলেও ডাকা হয়।
ট্রিমার (Trimmer) ক্যাপাসিটরঃ
ট্রিমার হচ্ছে এক প্রকার ভেরিয়েবলক্যাপাসিটর যা আকারে ছোট। তুলনায় আপনার নখের আকারের মত। এটির মান বেশী থাকেনা, কয়েক পিকো ফ্যারাড থাকে। এই ক্যাপাসিটর এর মান কখনো শুন্য করা সম্ভব নয়, এরজন্য এদের মান এভাবে লেখা হয় ২-৩০ পিএফ অথবা ১০ থেকে ২০ পিএফ ইত্যাদি। এই ট্রিমার ক্যাপাসিটর এর উপরিভাগে স্ক্রুর মত দেখতে একটি অংশ আছে। ঐ অংশটা অধাতব স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে ঘুরিয়ে এর মান পরিবর্তন করা হয়।
বিভিন্ন প্রকার ট্রিমার ক্যাপাসিটরের চিত্র
ট্রিমার কে সাধারণ মেটাল স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে টিউন করা হয় না, কারন ট্রিমার ব্যবহার করা হয় অতি সূক্ষ্ণ মান পরিবর্তেনের জন্য। ধাতব বস্তুর স্পর্শে ট্রিমার এর মধ্যকার ক্যাপাসিটেন্স এর পরিবর্তন হয়, ফলে প্রকৃত মান পাওয়া সম্ভব হয় না।
ট্রিমার কে কিভাবে সার্কিটে সংযোগ দেয়ঃ
ট্রিমার এর ২/৩ টি পা বা লিড থাকে। ৩টি পা আছে এমন ক্যাপাসিটরের একটি পা, অপর একটি পায়ের সাথে কানেক্টেড থাকে, এবং ৩ নং পা-টি মুক্তথাকে অর্থাৎ বাস্তবে ২টি লিড কার্যকর। এই ২টি কার্যকর লিডকে সার্কিটের প্রয়োজনীয় স্থানে সংযোগ দিতেহয়।
ট্রিমারের পা গুলো যেভাবে সংযুক্ত থাকে
উপরে একটি ট্রিমারের বিবর্ধিত চিত্র দেখা যাচ্ছে। ভালোকরে খেয়াল করলে দেখাযাবে যে ডান দিকের পা এর সাথে বাম দিকের বা পরষ্পর সংযুক্ত। কিন্তু নিচের দিকে যে পা টি আছে তার সাথে বাকি পায়ের কোনো সংযোগ নেই। ট্রান্সমিটার, রিসিভার বা যেসব সার্কিট এ ট্রিমার ব্যহৃত হয় সেখানে নিচের পা এবং বাকি ২ পায়ের থেকে যেকোনো একটি পা থেকে সার্কিট এ সংযোগ দিতে হয়। নাহলে সার্কিট কাজ করবে না।
আরএফআইডি (RFID) এর পূর্ণরূপ হচ্ছে Radio Frequency IDentification. RFID হচ্ছে ক্রেডিট কার্ডের মত পাতলা এবং ছোট একটা ইলেকট্রনিক ডিভাইস যেটায় খুবছোট একটি চিপ আর একটি কয়েল ও অ্যান্টেনা থাকে। চিপটা সাধারণত সর্বোচ্চ ২০০০ বাইট তথ্য ধারণ করতে পারে।
আরএফআইডি (RFID) এর কাজ কিঃ
RFID ‘র কাজ অনেকটা বারকোডের মতই। শপিংমল কিংবা যেখানে কোনও জিনিস কে ডিজিটাল প্রযুক্তি ও কম্পিউটার দ্বারা সনাক্ত করা লাগে, সেখানে অনেক সময় আরএফআইডি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। প্রত্যেকটি আরএফআইডি ট্যাগের (RFID ডিভাইসকে RFID ট্যাগ বলা হয়) একটি ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন আইডি নাম্বার থাকে। RFID Scanner দিয়ে আরএফআইডি ট্যাগ থেকে এই নম্বরটি বের করা হয়। এবং এই নম্বর দিয়ে প্রত্যেকটা ট্যাগকে আলাদাভাবে শনাক্ত করা হয়।
আরএফআইডি দ্বারা সনাক্তকরণ
আরএফআইডি (RFID) ট্যাগ কিঃ
রেডিও ফ্রিকুয়েন্সি নিয়ন্ত্রিত ছোট ডিভাইস যা কোন বস্তুকে সনাক্ত করতে ব্যবহার করাহয়। এই পদ্ধতিকে কার্যকর করতে RFID Tag ছাড়াও আরও প্রয়োজন হয় একটি তথ্য আদান-প্রদানকারী সিস্টেম (Reader, writer and transmitter) যা কিনা ট্যাগে রেডিও ফ্রিকুয়েন্সি সিগনাল ট্রান্সমিট করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আদানপ্রদান করতে পারে। এবং উক্ত তথ্য প্রসেসিং করে কোন নির্দিষ্ঠ কাজ ও সম্পাদন করা সম্ভব যায়।
প্যাসিভ আরএফআইডি (RFID) ট্যাগ
RFID Tag কত প্রকারঃ
RFID ট্যাগ ২ ধরণের হয়, Active ও Passive। একটিভ ট্যাগে ব্যাটারি লাগে, প্যাসিভ ট্যাগ RFID স্ক্যানার থেকেই পাওয়ার পায়, ওয়্যারলেস পাওয়ার ট্রান্সমিশনের মাধ্যমে।
RFID টেকনোলজি বারকোড টেকনোলজি থেকে অনেক কার্যকর, কারণ আরএফআইডি এর একটি বড় সুবিধা হচ্ছে, একে ঠিক স্ক্যানার এর উপর ধরতে হয়না। বারকোড স্ক্যানার আলোর মাধ্যমে কাজ করে, তাই ঠিক স্ক্যানারের উপর বারকোড না ধরলে স্ক্যান হতে সমস্যা হতে পারে। কিন্তু যেহেতু RFID রেডিও ফ্রিকুয়েন্সির মাধ্যমে কাজ করে, তাই আরএফআইডি ট্যাগকে আসলে RFID Scanner এর কয়েক ফিটের মধ্যে রাখলেই স্ক্যান করা যায়। এমনকি হাই ফ্রিকুয়েন্সির ট্যাগের ক্ষেত্রে ২০ ফিট পর্যন্ত রেইঞ্জ পাওয়া যায়।
আবার, প্যাসিভ RFID ট্যাগ এর ব্যাটারিও লাগেনা, আরএফআইডি স্ক্যানার থেকেই তারহীন ভাবে RFID ট্যাগ এ পাওয়ার সাপ্লাই করা হয়। তাই, আপনি যদি শপিংমলে আরএফআইডি ট্যাগ লাগানো জিনিসপত্র কিনে ব্যাগে রেখে কাউন্টারে আরএফআইডি স্ক্যানারের সামনে ব্যাগটি রাখেন, তাহলেই স্ক্যানার সবগুলো ট্যাগ স্ক্যান করে ফেলতে পারে। এমনকি আপনাকে ব্যাগ থেকে একটা জিনিসও বের করতে হবেনা। তবে এভাবে অনেকগুলো ট্যাগ একসাথে রেখে স্ক্যান করার কিছু অসুবিধাও আছে। পরে সেকথায় আসছি।
আরএফআইডি টেকনোলজি বনাম বারকোড টেকনোলজি
আরএফআইডি টেকনোলজি কবে থেকে চলছে?
আরএফআইডি টেকনোলজি মোটামুটি বছর পঞ্চাশ ধরে পাওয়া যায়। তবে গত কয়েকবছরে আরএফআইডি ট্যাগ এত সস্তা হয়ে গেছে যে বিদেশের অনেক শপিংমলেই বিভিন্ন প্রোডাক্টে এই ট্যাগ পার্মানেন্টলি আটকে দেয়া হয়। Alien Technologies কম্পানি সম্প্রতি Gillette কম্পানিকে ৫০০ মিলিয়ন RFID ট্যাগ বিক্রি করেছে প্রত্যেকটার দাম মাত্র ১০ সেন্ট ধরে।
আরএফআইডি টেকনোলজি এর কিছু সমস্যাঃ
একটু আগে বলেছিলাম যে অনেকগুলো ট্যাগ একসাথে স্ক্যান করার সমস্যাও রয়েছে। এ সমস্যাটিকে বলা হয় ট্যাগ কলিশন, খবরের কাগজের ভাষায় যার অর্থ হচ্ছে- “একাধিক RFID ট্যাগের তথ্যবাহী ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ, আহত ৩, ড্রাইভার পলাতক 😛 “। আসলে যদিও ব্যাপারটা ঠিক তা নয়।
একসাথে সব ট্যাগ ডাটা পাঠালে রিডারের প্যাঁচ লেগে যায়!
যেহেতু আরএফআইডি ট্যাগ পাওয়ার পায় RFID স্ক্যানার থেকে, একসাথে যখন অনেকগুলো ট্যাগকে পাওয়ার করা হয়, তখন প্রত্যেকটা ট্যাগ একসাথে নিজের UID Number (Unique Identification Number) ট্রান্সমিট করা শুরু করে। তখন এতগুলো ট্যাগ একসাথে সামলাতে গিয়ে RFID স্ক্যানারের মাথায় প্যাঁচ লেগে যায় 😀 .
আরএফআইডি টেকনোলজিতে কিছু সমস্যার সমাধানঃ
বিভিন্ন কোম্পানি এ সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন পদ্ধতি অনুসরণ করেন, তবে জনপ্রিয় একটি পদ্ধতি হল, RFID স্ক্যানার যখন বুঝতে পারবে ট্যাগ কলিশন হচ্ছে, তখন সে প্রত্যেকটা ট্যাগকে কতক্ষন পর ইউআইডি (UID) নং পাঠাতে হবে সেটা বলে দিবে। প্রত্যেকটা ট্যাগ তার জন্য নির্ধারিত সময়ে তার ইউআইডি নং সেন্ড করবে, তাই ট্যাগ কলিশন হবেনা।
এছাড়া ২টি স্ক্যানার যদি একসাথে কোনও RFID ট্যাগ স্ক্যান করার চেষ্টা করে, তখন আবার ট্যাগ একসাথে ২টা স্ক্যানারকে ইউআইডি নং পাঠাতে পারেনা, একে রিডার কলিশন বা স্ক্যানার কলিশন সমস্যা বলা হয়।
একটি আরএফআইডি (RFID) সিস্টেমে কি থাকেঃ
একটা RFID সিস্টেমে-
১। একটি স্ক্যানিং অ্যান্টেনা
২। একটি ট্রান্সমিটার ও রিসিভার মডিউল এবং সাথে একটি ডিকোডার থাকে যা প্রাপ্ত তথ্য ডিকোড করে। একেবলে RFID রিডার (স্ক্যানার)
৩। একটি ট্রান্সপন্ডার, যেটা হচ্ছে RFID ট্যাগ
একটি আরএফআইডি সিস্টেমের বিভিন্ন অংশ
নিচে একটি আরএফআইডি সিস্টেমের আর্কিটেকচার দেখানো হলো-
আরএফআইডি সিস্টেমের আর্কিটেকচার
আরএফআইডি (RFID) সিস্টেমের কার্যপ্রণালীঃ
স্ক্যানিং অ্যান্টেনা দুটি কাজ করে থাকে- আরএফ (রেডিও ফ্রিকুয়েন্সি) সিগনালের মাধ্যমে ট্যাগের সাথে যোগাযোগ করে এবং passive ট্যাগ এর ক্ষেত্রে ট্যাগে পাওয়ার ট্রান্সমিট করে ওয়্যারলেস পাওয়ার ট্রান্সমিশন টেকনোলজির মাধ্যমে।
একটা ট্যাগ যখন স্ক্যানিং অ্যান্টেনার রেঞ্জের মধ্যে আসে, তখন ট্যাগ টি স্ক্যানিং অ্যান্টেনাতে সর্বক্ষণ পাঠাতে থাকা একটিভেশন সিগনাল পেয়ে স্ক্যানারকে তার ইউআইডি(UID) পাঠায়।
সংক্ষেপে, এভাবেই একটি RFID সিস্টেম কাজ করে।
ফান ফ্যাক্ট – একটা RFID ট্যাগ পড়তে স্ক্যানার সময় নেয় ১০০ মিলিসেকেন্ড, আপনি চোখের পাতা ফেলতে যা সময় নেন তার ৪ ভাগের ১ ভাগ!
প্রথমদিকে RFID ট্যাগ শুধুমাত্র জড়বস্তু অর্থাৎ প্রাণহীন জিনিসে লাগানো হত। যেমন সুটকেস, কাপড় ইত্যাদি। বিজ্ঞানের উন্নতির ফলে এখন প্রাণীদেহেও RFID ট্যাগ ব্যবহার করা যায়। প্রাণীদেহের RFID ট্যাগগুলো সাধারণ RFID ট্যাগ থেকে একটু ভিন্ন হয়ে থাকে। এগুলো ক্যাপসুল আকৃতির হয়।
মানব দেহে ক্যাপসুল আকৃতির আরএফআইডি ট্যাগ ব্যবহার হয়
এগুলো এত ছোট করে বানানো হয় যে একেকটা ট্যাগ একটা চালের সমান হয় এগুলোর ক্যাপসুল এমন পদার্থ দিয়ে বানানো হয় যাতে দেহের কোনও ক্ষতি বা অস্বস্তিবোধ না হয়।
এ ট্যাগগুলো প্রাণীদেহে স্থাপনের একটা সাধারণ সমস্যা হচ্ছে, ট্যাগগুলো বারবার এদিক সেদিক সরে যায়। তাই অনেক কোম্পানি ট্যাগের ক্যাপসুল এমন একটি পদার্থ দিয়ে বানান, যেটা আশেপাশের টিস্যুকে নিজের চারপাশে বর্ধিত করে, তখন টিস্যুগুলোই ট্যাগকে আটকে রাখে।
সাধারণত পোষা প্রাণী, গরু ইত্যাদির পরিচয় নির্দিষ্ট করার জন্য RFID ট্যাগ তাদের দেহে সিরিঞ্জের মাধ্যমে ঢুকিয়ে দেয়া হয়। তবে কিছু ট্যাগ মানুষের দেহেও ব্যবহার করা হয়।
আরএফআইডি (RFID) এর ব্যবহারঃ
RFID ট্যাগ বিভিন্ন আকার এবং বিভিন্ন আকৃতিতে পাওয়া যায়, তাদের বিভিন্ন জায়গায় ফিক্স করাযায়। RFID ব্যবহারের কিছু ক্ষেত্র হচ্ছে-
১। কোনও প্রাণী ট্র্যাক(track) বা প্রাণীটিরঅবস্থান নির্ণয়করা
২। স্ক্রু আকৃতির ট্যাগ কে গাছে কিংবা কাঠের জিনিসে লাগানো, যা পরে আইডেন্টিফিকেশনেরসুবিধা দেয়।
৩। ক্রেডিটকার্ড শেপের ট্যাগ ব্যবহার করে অফিস-বাসায় মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রন করা
৪। দোকানে পন্যের মধ্যে RFID ট্যাগ লাগিয়ে চুরি প্রতিরোধ করা (ট্যাগ দোকানের বাইরে গেলেই অ্যালার্ম বেজে উঠবে)
৫। শিপিং কন্টেইনার, ভারী যন্ত্রপাতি ইত্যাদি পরিবহনের সময় RFID ট্যাগ ব্যবহার করে পরিচয় নির্দিষ্ট করা।
RFID সিস্টেম কি নিরাপদ?
দুর্ভাগ্যজনকভাবে, আরএফআইডি (RFID) সিস্টেম খুব একটা নিরাপদ না। RFID ট্যাগ যেহেতু স্ক্যানারের কাছাকাছি রেখেই স্ক্যান করা যায়, তাই কেউ সঠিক ফ্রিকুয়েন্সির স্ক্যানার নিয়ে আপনার পাশ দিয়ে হেঁটে গেলেই আপনার ট্যাগগুলো স্ক্যান করে জেনে নিতে পারবে আপনি কি কি জিনিস কিনেছেন অথবা আপনার পোশাকটি কোন কোম্পানির। এটা হয়তো তেমন মূল্যবান কোনও তথ্য নয়, তবে কোনও মিলিটারি সিচুয়েশনে শত্রুপক্ষ হাই রেঞ্জের স্ক্যানার নিয়ে অপরপক্ষের কাছাকাছি লুকিয়ে গেলেই তাদের মধ্যে কে অফিসার, কে জেনারেল শনাক্ত করে সেভাবে টার্গেট করতে পারবে।
সাধারণত সামরিক আর এধরণের ক্ষেত্রে যেখানে নিরাপত্তা দরকার সেখানে বিশেষ ধরণের RFID ট্যাগ ব্যবহার করা হয় যেগুলো ডেটা এনক্রিপ্ট করে ট্রান্সমিট করে।
এই টেকনোলজির নিরাপত্তা জনিত সমস্যা
কিন্তু সাধারণ ট্যাগ (যেমন যেগুলো শপিং মলে ব্যবহার করা হয়) এর চিপ ডেটা এনক্রিপ্ট করার মত শক্তিশালী হয়না। তাই ইচ্ছা করলে যে কেউ সহজেই আপনার RFID ট্যাগ স্ক্যান করে আপনার সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে পারে।
জম্বি (Zombie) RFID ট্যাগঃ
এরকম সমস্যা নিরসনে জম্বি (Zombie) RFID ট্যাগ নামে একধরণের ট্যাগ আবিষ্কার হয়েছে। জম্বি অর্থ হচ্ছে জীবন্মৃত মানুষ। যারা কবর দেয়ার পর বেঁচে উঠে জীবন্ত মানুষের কলিজা খাওয়ার জন্য (!) ব্যস্ত হয়ে ওঠে। যদিও এর কোনও বাস্তব ভিত্তি নেই।
জম্বি ট্যাগের আইডিয়াটাও অনেকটা সেরকমই। ধরি, একটা কাপড়ের দোকানে কোনও কাপড়ে জম্বি RFID ট্যাগ লাগানো আছে। ট্যাগটি যখন দোকানের ভিতর থাকবে, তখন এটি “জীবন্ত” থাকবে এবং কোনও স্ক্যানার দিয়ে স্ক্যান করা যাবে। কিন্তু ক্রেতা যখন কাপড়টি কিনে দোকান থেকে বের হয়ে যাবে, তখন একটা বিশেষ ডিভাইস RFID ট্যাগটিতে নির্দেশ পাঠাবে “মরে” যেতে, তখন ট্যাগটি আর কোনও স্ক্যানার দিয়ে স্ক্যান করে তথ্য পাওয়া যাবেনা। আবার, ক্রেতা যখন কোনও কারনে কাপড়টি নিয়ে দোকানে আসবে, তখন সেই ডিভাইসটি আবার জম্বি ট্যাগ এ নির্দেশ পাঠাবে “বেঁচে” উঠতে, তখন দোকানের ভিতর আবার স্ক্যানার দিয়ে জম্বি ট্যাগ স্ক্যান করা যাবে।
RFID আধুনিক ও অনেক কাজের উপযোগী একটি প্রযুক্তি। এ লেখায় যেগুলো আছে তার বাইরেও আরএফআইডি এর কাজের অনেক ক্ষেত্র আছে। আবার, আরএফআইডি স্ক্যান করা খুব সহজ হওয়ায় বারকোড ও অন্যান্য প্রচলিত শনাক্তকরণ প্রযুক্তি থেকে RFID অনেক ভাল কাজ করে। বর্তমানে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট, গাড়ির নাম্বার প্লেটেও এই প্রযুক্তি অহরহ ব্যবহার হচ্ছে। তবে, RFID ব্যবহার করায় এখনও কিছু নিরাপত্তা ঝুঁকি রয়েছে। RFID ট্যাগ এ সংরক্ষিত তথ্য যাতে অনাকাঙ্ক্ষিত কেউ দেখতে না পারে সেটি নিশ্চিত করতে হবে, তাহলেই আমরা দৈনন্দিন জীবনে নিশ্চিন্তে আরএফআইডি(RFID) টেকনোলজি সচ্ছন্দে ব্যবহার করতে পারবো।
মোটরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাবলি নিয়ে আজকের এই লেখা। জানতে পারবো মোটর কি, মোটর কত প্রকার, মোটর কিভাবে কাজ করে, ডিসি মোটর কিভাবে কাজ করে, এসি মোটর কত প্রকার ইত্যাদি সম্পর্কে। চলুন পাঠক দেরি না করে শুরু করি।
মোটর কিঃ
মোটর কি? সাধারণ কথায় যা দিয়ে আমরা বাসাবাড়িতে পানি তুলি, তাকেই মোটর বলে ডাকি (ক্ষেত্র বিশেষে পাম্পও বলে)। হ্যাঁ, অনেকটা এরকমই। কিন্তু কিসের জন্য আমরা একই জিনিস কে দুইটি ভিন্ন নামে ডাকি? যেমন একটা জেনারেটরআর আরেকটা মোটর?
একে আমরা এ জন্যই মোটর বলে ডাকি কারণ এই যন্ত্রটি ইলেকট্রিক শক্তি কে মেকানিক্যাল শক্তিতে পরিণত করে। অর্থাৎ আমরা একে চালাতে ইনপুট হিসেবে দিচ্ছি বৈদ্যুতিক শক্তি আর আউটপুটে আমরা এর দ্বারা অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করিয়ে নিতে পারছি। অর্থাৎ, মেশিনের যে দুটি ভাগের কথা বলেছিলাম একটি মোটর আর আরেকটি জেনারেটর, সেই দুটির মধ্যে এটিই হল মোটর, যা কিনা ইলেকট্রিক্যাল শক্তিকে মেকানিক্যাল শক্তিতে পরিণত করতে পারে এবং আমাদের দৈনন্দিন কাজ সম্পাদনে সাহায্য করে।
ইলেকট্রনিক্সইঞ্জিনিয়ারিং এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ আগ্রহীদের জন্য মোটর সম্পর্কে জানা খুবই প্রয়োজন। বিশেষ করে যাদের রোবটও রোবোটিক্সএর উপর কাজ করার ইচ্ছা। কারণ রোবটের মুভমেন্ট কন্ট্রোলিং এরজন্য ভিন্নভিন্ন মোটর ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ে। নামেই পরিচয় বিধায় এসি মোটর আর ডিসি মোটর এর ব্যাখ্যায় গেলাম না।
এছাড়াও ইন্ডাকশনমোটর, সিনক্রোনাস মোটর প্রভৃতি বিভিন্ন ভাগে ভাগকরা যায়, তবে তা নিয়ে আজ লিখবো না। সামনে কোনো এক লেখায় ইন্ডাকশনমোটর, সিনক্রোনাস মোটর সহ আরো বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলবো।
মোটরের কন্সট্রাকশন বা গঠনঃ
আসলে গঠন প্রনালী নিয়ে এক্সট্রা কিছু বলার দরকার পড়েনা। কারন ডিসি মোটর আর ডিসি জেনারেটর এর গঠন প্রনালী প্রায় একই। খুব বেশি পার্থক্য বা এক্কেবারেই কোন পার্থক্য নেই বলা চলে। তবে ডিসি মোটর আর ডিসি জেনারেটর এর কাজের ধরনে আকাশ-পাতাল তফাৎ আছে। দুটিরই কাজ পুরোপুরি ভিন্ন। তবে মোটরের ক্ষেত্রে আরও অতিরিক্ত বিষয় আছে যেগুলো এখন আলোচনা করব।
মোটরের টর্ক(Torque)এর কথা আমরা কমবেশি সবাই শুনেছি। তার পরেও আবার ঝালাই করে নেই সহজ কয়েকটি কথায় যা মনে থাকবেই। ধরুন, আমরা সবাই কমবেশি বাসে উঠেছি। এখন সবাই হয়ত খেয়াল করেছি যে বাস থেমে থেকে যদি হঠাত করে চলতে শুরুকরে তাহলে যাত্রী যারা থাকেন তারা একটু পিছনের দিকে পিছিয়ে যান বা উলটো দিকে একটি ধাক্কা খান। আবার, যদি নৌকা পানিতে থাকা অবস্থায় সেখান থেকে স্থলে লাফ দেওয়া হয় তাহলে নৌকা পিছনের দিকে একটু পিছিয়ে যায়। কিন্তু কেন?
হ্যা, ঠিক ধরেছেন। এটিই সহজ কথায় টর্ক বলাযায়। তবে টর্কের একদম সঠিক সন্ধিবিচ্ছেদ হলঃ শক্তি x কৌণিক দূরত্ব । অর্থাৎ, বিপরীত দিকে উতপাদিত শক্তির পরিমান কে তাদের আভ্যন্তরীন কোণ দিয়ে গুন করলে যে মান পাওয়া যাবে তাকে টর্ক বলে। আহ, একটু বলতে বলতে পুরো মহাভারত বলে ফেললাম। আচ্ছা এবার বিপরীত ভোল্টেজ/Back EMF এর কথায় আসি যা মূলত টর্কেরকারণেই সৃষ্টিহয়।
মোটরের টর্ক কিভাবে সৃষ্টি হয় তার সরল এনিমেশন চিত্র
মোটরের বিপরীত ভোল্টেজ বা Back EMF:
এখন কথাহলো ব্যাক ভোল্টেজ জিনিস টা কি? একই জিনিস কিন্তু একটুখানি ভিন্ন কথা। থিওরি হিসেবে বলতে গেলে বলতে হবে, ”বিপরীত ভল্টেজ হল সেই ভোল্টেজ যা উতপাদিত কারেন্ট এর বিপরীতে শক্তি প্রদান করে এবং শক্তির ক্ষয়করে”। একে একেবারে দূরকরা প্রায় অসম্ভব, তবে যতটা সম্ভব কমিয়ে রাখার ব্যবস্থা আছে।
কথা প্রসঙ্গে বলছি মোটর, রিলে, ট্রান্সফরমার বা যে কোনো তার দিয়ে প্যাঁচানো লোড কে ইন্ডকটিভ লোড বলে। এবং আমরা প্রায় সময়ই ইলেকট্রনিক্সসার্কিট সমূহে এই ব্যাক ইএমএফ থেকা বাঁচবার জন্য নিম্নরূপ সংযোগ দেখতে পাই-
এরফলে হয়কি মোটরের বা রিলের কয়েল থেকে সৃষ্ট ব্যাক ইএমএফ বা বিপরীত ভোল্টেজসার্কিট এ দেখানো ট্রানজিস্টরে প্রবেশ করতে পারেনা। যারফলে ট্রানজিস্টর টি অতিরিক্ত গরম হবার হাতথেকে বাঁচে। ক্ষেত্র বিশেষে এই বিপরীত ভোল্টেজ সার্কিটের সাপ্লাই ভোল্টেজ থেকেও অনেক বেশী হয়ে যেতে পারে যা এই ডায়োড টি সার্কিট এ প্রবেশের হাত থেকে রক্ষাকরে, ফলে বাঁচে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ ও দামী পার্টস। এখানে উল্লেখ্য যে ডায়োড টি ইন্ডাকটিভ লোডের সাপেক্ষেরিভার্স বায়াসে লাগাতে হবে।
শান্ট ওয়াইন্ডিং এবং সিরিজ ওয়াইন্ডিংঃ
এই দুইটি জিনিস প্রতিটি মোটর বা জেনারেটরে থাকবেই। আসলে এটি হছে এক প্রকারের কয়েল বা তারের প্যাঁচ। কিন্তু নামের ভিন্নতা কিসের জন্য? হ্যা সেটাই বলছি। প্র্যাক্টিকালি এবং সরাসরি বলতে গেলে বলতে হবে- যে কয়েলের তার গুলো চিকন কিন্তু অনেক গুলো প্যাঁচ থাকে তাকে শান্ট ওয়াইন্ডিং বা শান্টের প্যাঁচ বলে। এর বিশেষত্ব হল এর প্যাঁচ অনেক এবং তার গুলো অনেক সরু হয়। যারফলে এর মধ্যে দিয়ে খুব বেশি পরিমাণ কারেন্ট প্রবাহিত হতে পারে না, অর্থাৎ এর রেজিস্ট্যান্সবেশি থাকে।
আর অন্যদিকে সিরিজ ওয়াইন্ডিং বা সিরিজ প্যাঁচ পুরোপুরি এর উল্টো। মানে, এখানে প্যাঁচ কম থাকে। তারফলে যাহয় তাহল এর মধ্যে দিয়ে অনেক বেশি পরিমাণের কারেন্ট প্রবাহিত হতে পারে। নিচের চিত্র গুলো দেখলেই আপনাদের ধারণা এ বিষয়ে আরও স্পষ্ট হয়ে যাবে আশা করছি ।
শান্ট ওয়াইন্ডিং এবং সিরিজ ওয়াইন্ডিং
মোটরের RPM/আরপিএম কিঃ
অনেক সময় অনেক ছোট মোটর থেকে বড় বিশাল আকৃতির মোটরের গায়ে এই জিনিস লেখা থাকে। কিন্তু এটা আমাদের কৌতূহলই থেকে যায়। আসলে এর মানে হচ্ছে- “কোন মোটর এক মিনিটে কত বার ঘূর্ণন সম্পন্ন করতে পারে”। সহজ কথায়, একটি মোটর পূর্ণগতি লাভ করার পর যদি কোন একটি নির্দিষ্ট এক মিনিট কে কেন্দ্র করে তার ঘূর্ণন পরিমান করা হয় তাহলে তার পরিমান কে আরপিএম(RPM) বা ঘূর্ণন প্রতি মিনিট বলে।
অনেক সময় বিভিন্ন গাড়ির স্পেসিফিকেশনে বা মোটর সাইকেলের স্পেসিফিকেশনেও এই কথাটি লেখা থাকে। হয়ত তখন জানতাম না। কিন্তু এখন কিন্তু আমরা সবাই জানি এর আসল কথাটি কি বা এটি আসলে কি বুঝায়। এখন হয়ত সবাই সঠিক জিনিস চিনতে আর ভুল করব না।
ঠিক সেরকমই আমরা যে মোটর ব্যবহার করি তার গায়েও একই কথা লেখা থাকে। তারমানে যে মোটর এর আরপিএম যতবেশি তার ঘূর্ণন ক্ষমতা ততো বেশি হবে। কিছু জায়গায় আরপিএমএর স্থানে আরপিএস বা রেভোলুশনব্যবহার করে থাকে। এটি দেখলেও ঘাবড়ে যাওয়ার কোন দরকার নেই। এর মানেও একই, শুধু তারা ঘূর্ণন প্রতি মিনিটের জায়গায় প্রতি সেকেন্ড ব্যবহার করেছে। রেভোলুশন মানেও ঘুর্ণন।
ডিসি মোটরের এফিসিয়েন্সি বা লস সমূহঃ
আমরা একটি কথা সবাই জানি যে যেকোন মেশিনের ই আলাদা আলাদা এফিসিয়েন্সি বা আউটপুট ক্ষমতা থাকে। অর্থাৎ, একটি মেশিনের ইনপুট অনুযায়ী আউটপুটে কি রকম শক্তি পাচ্ছে তার হিসাব। এপর্যন্ত পৃথিবীতে এমন কোন মেশিনআবিষ্কার হয় নি যা দিয়ে ১০০ ভাগ এফিসিয়েন্সি পাওয়া সম্ভব। মোটরও এর ভিন্ন কিছু নয়।
কিন্তু এই এফিসিয়েন্সি ইনপুটের তুলণায় কম হওয়ার কারণ কি আসুন তা এক নজরে জেনে নেই। ডিসি মোটরের লস বা ক্ষতি সমূহ কে ৩ ভাগে ভাগ করা যায়। তা হলঃ
১। মোটরের কপার ক্ষতি
২। মোটরের লোহার ক্ষতি
৩। মোটরের মেকানিক্যাল ক্ষতি
তাছাড়াও আরও কিছু ক্ষতি বা লস আছে যেগুলো প্রায় সব মেশিনেই হয়ে থাকে যেমন শব্দ দূষন, ঘর্ষণ এর শক্তি, ব্যাক ভোল্টেজ (আগের কলামে উল্লিখিত)।
ডিসি মোটরের এফিসিয়েন্সি বা লস সমূহ
মোটরের স্টার্টারঃ
যেকোন ডিসি মোটরের ভিতরেই স্টার্টার নামের একটা অংশ বা পার্টস বসানো থাকে যার কাজ হল একটি নির্দিষ্ট ভোল্টেজে নিয়ে মোটরটিকে চালু করা। অর্থাৎ এর মধ্যে এমন এক ধরনের অটো ভেরিয়েবল রেজিস্ট্যান্স বসানো থাকে যার কাজ হলো ঐ নির্দিষ্ট ভোল্টেজে না পৌঁছা পর্যন্ত স্টার্টারটি মোটর কে চালু হতে দিবে না।ডিসি মোটরের ক্ষেত্রে এর অবদান অনেক।
ডিসি মোটরের ব্যবহারঃ
বাসাবাড়িতে সোলার প্যানেল কিংবা ব্যাটারি দিয়ে পানি তোলার জন্য, আধুনিক বিভিন্ন গাড়িতে, বিভিন্ন সুপার কারের বিশেষ অংশের পরিচালনার ক্ষেত্রে, লিফটের এস্কেলেটরে, রোবট, এছাড়াও আমরা ডিসি মোটর আরও অনেক কাজে ব্যবহার করে থাকি।
নিচের চিত্রে একটি রোবট আর্ম (Robot arm) দেখতে পাচ্ছেন যাকিনা আধুনিক শিল্পকারখানায় বহুল ভাবে ব্যবহৃত হয় ভারী কোনকিছু তুলতে। একে সচল রাখতে মোটরের ভূমিকা যে অপরিসীম তা বুদ্ধিমান পাঠক নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন।
রোবট আর্মে ডিসি মোটরের ব্যবহার
কেউ যদি পরীক্ষার জন্য কিংবা বিজ্ঞান প্রজেক্টের জন্য হাতে মোটর বানাতে চান তাহলে আমাদের সাইটে প্রকাশিত নিজেই বানাই ইলেকট্রিক মোটর লেখাটি পড়তে পারেন।
শেষ কথাঃ
বলতে বলতে অনেক কথাই হয়ে গেল। আশাকরি লেখা, ছবি ও ভিডিও সব মিলে পুরো বিষয় গুলো আপনাদের কে একটু হলেও শেয়ার করতে পেরেছি। আপনাদের হয়ত বা ভালো লেগেছে। যদি লেগেই থাকে তাহলে অনুগ্রহ পূর্বক লেখাটি শেয়ার করবেন। পরিশেষে বলতে চাই, আধুনিক সভ্যতাকে যেমন “চাকা“ অনেক অগ্রগামী করেছে তেমনি এই চাকাকে এগিয়ে নিয়েগেছে মোটরের গতি। ভেবে দেখুনতো মোটর আর জেনারেটর যদি আবিষ্কার নাহতো তাহলে কি এই লেখা আপনাদের সামনে নিয়ে আসতে পারতাম? অবশ্যই নয়। সামনে এমনি আরো অনেক লেখা নিয়ে আসবো সেই প্রত্যাশা করছি।
এই লেখা সম্পর্কে বা এই সাইটের যেকোন লেখা সম্পর্কে আমাদের কাছে কোন প্রশ্ন জানার থাকলে কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। তাছাড়া ফেসবুকেও আমাদের পেজে লাইক দিয়ে সেখানেও বিভিন্ন প্রশ্ন করতে পারেন। সাথে থাকুন, ভালো থাকুন।
ব্রেডবোর্ড/প্রজেক্ট বোর্ড পরিচিতি ও বেসিক ইলেকট্রনিক্স সার্কিট
ব্রেডবোর্ড/প্রজেক্ট বোর্ডের পরিচিতিঃ
ব্রেডবোর্ড (breadboard) এর নামের মধ্যে ব্রেড থাকলেও আসলে এটির সাথে রুটির, এমনকি খাদ্যেরও কোনও সম্পর্ক নেই। ব্রেডবোর্ড হচ্ছে সার্কিট প্রোটোটাইপ করার জন্য বিশেষ ধরণের বোর্ড যা প্রজেক্ট তৈরি করতে দ্রুত সাহায্য করে থাকে। এজন্য এর অপর নাম প্রজেক্ট বোর্ড। নিচে ব্রেডবোর্ডের একটি ছবি দেখি –
ব্রেডবোর্ডে যে ছিদ্রগুলো দেখা যাচ্ছে ওগুলো কম্পোনেন্ট বসানোর জন্য। মাঝখানের যে ২ সারি ছিদ্র দেখা যাচ্ছে ও গুলো লম্বালম্বি ভাবে একে অপরের সাথে যুক্ত। উপরের ও নিচের সারির ছিদ্রগুলো পাশাপাশি ভাবে একে অপরের সাথে যুক্ত। নিচের ছবি দেখে ব্যাপারটি ভালোমত বোঝা যাবে।
ব্রেডবোর্ড/প্রজেক্ট বোর্ডে ছিদ্রগুলো যেভাবে থাকে
ব্রেডবোর্ডের বিবরণঃ
মাঝখানের ছিদ্রগুলোর ১টি সারির ৫টি ছিদ্র লম্বালম্বি ভাবে কানেক্টেড। কিন্তু পাশাপাশি একটি সারির সাথে আরেকটি সারি কানেক্টেড না।
আবার নিচের ছিদ্রগুলোর ৫০টি ছিদ্র পাশাপাশি যুক্ত, কিন্তু উপরের ও নিচের সারি যুক্ত নয়।
মাঝখানে যে একটি ফাঁকা আছে, এই ফাঁকটি প্রস্থ আইসির এক পা থেকে অপরদিকের আরেক পায়ের দূরত্বের সমান। এবং এই ফাঁকের দুইপাশের সারি যুক্ত না। তাই এই জায়গায় আইসি বসিয়ে কাজ করা যাবে। মাঝখানের ফাঁকের ফলে আইসির দুইদিকের পিন শর্ট হয়ে যাবেনা।
ব্রেডবোর্ডের উপরের ও নিচের সারি কে সাধারণত কমন পাওয়ার লাইন হিসেবে ব্যবহার করা হয় এবং মাঝখানে কম্পনেন্ট বসানো হয়।
কিছু ব্রেডবোর্ডে আবার পাওয়ার লাইনের মাঝখানে ব্রেক থাকে। যেগুলোতে ব্রেক থাকে সেগুলোতে মাঝখানে দুইটা সারির মাঝের দূরত্ব একটু বেশি থাকে। তবে শিওর হওার জন্য মিটার দিয়ে চেক করে নেয়া উচিত।
ব্রেডবোর্ডের সুবিধা হল এখানে কম্পোনেন্ট গুলোকে পার্মানেন্টলি সোল্ডার করতে হয় না। যেকোনো সময় খুলে ফেলা যায়। তাই র্যাপিড প্রটোটাইপিং এর জন্য ব্রেডবোর্ড খুব কাজে লাগে।
ব্রেডবোর্ডে কানেকশন কিভাবে দেয়?
ব্রেডবোর্ডে এক পয়েন্ট থেকে আরেক পয়েন্টে কানেকশন দেয়ার জন্য জাম্পার ওয়্যার (Jumper wire)নামে বিশেষ ধরণের তার ব্যবহার করা হয়। একে মাঝেমাঝে হেডার ওয়্যার ও বলে। জাম্পার ওয়্যার আসলে চিকন সাধারণ তার। যার দুই মাথায় প্লাস্টিকের হাউজিং থেকে শক্ত পিন বের হয়ে থাকে। এই পিন ব্রেডবোর্ডের ছিদ্রতে ঢুকানো হয়।
জাম্পার ওয়্যার/হেডার ক্যাবল
জাম্পার ওয়্যার কত প্রকার?
জাম্পার ওয়্যার ৩ ধরণের হয়-
১। মেইল টু মেইল– এধরণের জাম্পারের দুইমাথা থেকে পিন বের হয়ে থাকে
৩। মেইল টু ফিমেইল – এধরণের জাম্পার একমাথা থেকে পিন বেরিয়ে থাকে, অপর মাথায় পিন ঢুকানোর জায়গা থাকে।
জাম্পার ওয়্যার এর পরিবর্তে কি ব্যবহার করতে পারি?
জাম্পার ওয়্যারের দাম একটু বেশি হওায় অনেকে ইথারনেট কেবলের তার বা Cat5 ক্যাবল ইউজ করেন। আবার সলিড কোর তামার তার ব্যবহার করা যায়।
ব্রেডবোর্ডের দাম কেমন?
ব্রেডবোর্ড বিভিন্ন সাইজের হয় এবং কোয়ালিটি ও সাইজ অনুযায়ী দামও কম-বেশি হয়। একদম ছোট মিনি ব্রেডবোর্ড ৫০-১০০ টাকা দামে পাওয়া যায় এবং স্ট্যান্ডার্ড সাইজের গুলো ১৫০-৩০০ টাকায় পাওয়া যায়। ভালো মানের গুলো দামে বেশী হয়।
ভালো ব্রেডবোর্ড কিভাবে চিনবো?
ভালো মানের ব্রেডবোর্ডে পাওয়ার লাইনে কোনটা পজিটিভ কোনটা নেগেটিভ ইত্যাদি মারকিং করা থাকে। আর সব ব্রেডবোর্ডের নিচেই ডাবল সাইডেড টেপ লাগানো থাকে। যার কভারটা খুলে ব্রেডবোর্ডকে পার্মানেন্টলি কোনও জায়গায় ফিক্স করা যায়।
ব্রেডবোর্ড দিয়ে বেসিক ইলেকট্রনিক্স সার্কিটঃ
চলুন এবার ব্রেডবোর্ডে একটি সার্কিট বানাই। যেহেতু ব্রেডবোর্ডে এটি আমাদের প্রথম সার্কিট, তাই আমরা খুব সহজ ও কাজের একটি সার্কিট, ডার্ক ডিটেক্টর বানাবো। সার্কিটটি বানাতে আমাদের যেসব কম্পোনেন্ট লাগবে, তা হল –
এখানে জাম্পারের কানেকশনগুলো সবুজ দাগ দিয়ে বোঝানো হয়েছে। নিচের পাওয়ার লাইন গ্রাউন্ড লাইন হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে এবং উপরের পাওয়ার লাইন কে পজিটিভ লাইন হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। LDR এর ওপর আলো না পড়লেই LED টি জ্বলে উঠবে এবং আলো পড়লেই LEDটি নিভে যাবে। পটেনশিওমিটার বা ভেরিয়েবল ঘুরিয়ে এর সেন্সিটিভিটি কনট্রোল করা যাবে।
বাস্তব জীবনে আমরা “মেশিন” কথাটি অনেকাংশে ব্যবহার করি ঠিকই কিন্তু সবাই জানি না আসলে এই মেশিন শব্দটির সঠিক বৈজ্ঞানিকঅর্থ কি। তাছাড়া জেনারেটর বা মোটর নিয়ে আমরা দিনের অনেকাংশ সময় কাটিয়ে দেই, যা কিনা প্রকৃতপক্ষে মেশিন। কিন্তু জানা নেই কিভাবে এগুলো কাজ করে। এর পিছনে এমন কি আছে যার ফলে কারেন্ট চলে গেলে আমরা ঘরেই কারেন্ট তৈরি করে আবার আগের মত সব কিছু চালাতে পারছি। এই যান্ত্রিক শক্তি ব্যবহার করে মাটির অভ্যন্তর থেকে মুহূর্তের মধ্যে পানি তুলতে পারছি। কিন্তু একবারও কি নিজেকে প্রশ্ন করেছেন এদের কার্যপ্রণালী সম্পর্কে? আজকে ইলেকট্রিক্যাল শর্ট নোট এর মাধ্যমে জেনে নেই এসমস্ত টুকিটাকি বিষয়গুলো। সেই সাথে ডিসি জেনারেটরের আভ্যন্তরীণ বিভিন্ন অংশ ও এর গঠন প্রণালি সম্পর্কে জানবো।
মেশিন বা যন্ত্র কি?
মেশিন বা যন্ত্রের সংজ্ঞা অনেকটা এরকম- “নির্দিষ্ঠ কার্যদ্ধার কল্পে বিভিন্ন যন্ত্রাংশের সমন্বয়ে যে যান্ত্রিক বস্তু তৈরি করাহয় তাকেই মেশিন বা যন্ত্র বলে“। এই সংজ্ঞা থেকে কিছু জিনিস বুঝতে পারলাম, যেমনঃ একটি মেশিনে কিছু যন্ত্রাংশ থাকে। এই যন্ত্রপাতি গুলোই মেশিন টিকে চালায় এবং এটি একটি নির্দিষ্ঠ কাজ করতে সক্ষম। মেশিন যেমন ইলেকট্রিক্যাল হতে পারে তেমনি মেকানিক্যাল ও হতে পারে। নিচে একটি সরল মেকানিক্যাল মেশিনপুলিও এর দ্বারা কিভাবে কাজ করা হয় তা দেখানো হলো-
সরল মেশিন (যন্ত্র) পুলি ব্যবহার করে কোনো ভারোত্তোলন সহজ হয়
সহজ কথায় ইলেকট্রিক্যাল মেশিন হলো এমন একটি যান্ত্রিক পদ্ধতি যা কিনা ইলেকট্রিক্যাল পাওয়ারকে মেকানিক্যাল এনার্জি তে অথবা মেকানিক্যাল পাওয়ার কে ইলেকট্রিক্যাল এনার্জি তে রূপান্তর করতে পারে। এখন ইলেকট্রিক্যাল মেশিন নিয়ে আরেকটু পরিষ্কার হওয়ার জন্য আমরা জেনারেটর নিয়ে আলোচনায় এগিয়ে যাই-
জেনারেটর কি?
জেনারেটরও মোটর দুটি খুবই কমন মেশিনযা আমরা কমবেশি সবাই চিনি। ধরুন একটি জেনারেটর চালু করলে সেখান থেকে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হচ্ছে, তাহলে এটাকে আমরা বলব জেনারেটর। এখন প্রশ্ন হচ্ছে জেনারেটর এর অর্থ টা আসলে কি। জেনারেটর একটি ইংরেজি শব্দ। যার অর্থ- কোন কিছু উৎপন্ন করা বা জেনারেট করা। কিন্তু কি উৎপন্ন করা? পাওয়ার/শক্তি উৎপন্ন করা। অর্থাৎ আমরা যদি কোন জেনারেটর চালুকরি তাহলে সেটি থেকে নির্দিষ্ট পরিমানের ইলেকট্রিক্যাল এনার্জি উৎপন্ন হবে। তাই যেহেতু এখানে মেকানিক্যাল পাওয়ারকে ইলেকট্রিক্যাল পাওয়ারে রূপান্তর করা হচ্ছে সেহেতু এটিকে আমরা জেনারেটর বলছি। এবং উপরোক্ত সংজ্ঞানুযায়ী এটি একটি মেশিন ও বটে।
মোটর কি?
আচ্ছা এবার আসি মোটর এর কথায়। আমরা আমাদের ব্যক্তিগত জীবনে মোটরের সাথে সবাই কম বেশি পরিচিত। প্রতিদিন আমরা এই মোটর আমরা বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করে থাকি। যেমন সকালের পানি তোলা থেকে শুরু করে আরও অনেক কাজ আছে যা মোটর দ্বারা করা হয়ে থাকে। তাহলে আমাদের মনে এই প্রশ্ন জাগতেই পারে যে এই মোটর কিভাবে কাজ করছে। খুব সহজ ব্যাপার এটি। যেকোন মোটর চালাতে নির্দিষ্ট পরিমানের বিদ্যুৎ শিক্তি প্রবাহিত করতে হয়। আর এই বিদ্যুৎ প্রবাহকেই কাজে লাগিয়ে মোটর দ্বারা আমরা বিভিন্ন কাজ করে থাকে। অর্থাৎ সহজ কথায়- যার মধ্যে ইলেকট্রিক্যাল পাওয়ার ইনপুটে দিলে মেক্যানিকাল পাওয়ার কে আউটপুটে পাওয়া যায় সেটিই মোটর। এটি ঠিক জেনারেটর এর উলটো।
তাড়িত চুম্বক কি?
এখন পরবর্তী ধাপে যাওয়ার আগে আমরা আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জেনে নিই। প্রথমেই আসি, তাড়িতচৌম্বক এর কথায়। তড়িত চুম্বক আসলে কি? এবং, তাড়িত চুম্বক ই বা কি জিনিস? কোন একটি লোহার দন্ডের চারপাশে যদি কিছু পরিমান তার পেঁচিয়ে সলিনয়েড কয়েল তৈরি করে তার মধ্যে দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহ করা হয় তাহলে ওই দন্ডের চার পাশে এক ধরনের চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি হয় যাকে তড়িত চুম্বকীয় বল (Electro Magnetic Force) বলে। আবার যদি তারের মধ্যে দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহ বন্ধ করে দেওয়া হয় তা আবার পুণরায় আগের মত লোহার খন্ডে পরিণত হয়। এই তড়িত চুম্বকীয় বল দ্বারা আবিষ্ঠ চুম্বক কে বলে তাড়িত চুম্বক। এবং এই তড়িচ্চুম্বকীয় বল এর ফলে ঐ দন্ডের চারপাশে যে ক্ষেত্র তৈরি হয় তাকে বলা হয় চৌম্বকক্ষেত্র।
ইন্ডাকশন কি?
এবার আসি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে। তা হল ইন্ডাকশন (Induction)। ইন্ডাকশন শব্দটি এসেছে ইন্ডিউস থেকে। যার অর্থ কোন কিছু জমা হওয়া। তাহলে এখানে কি জমা হওয়ার কথা বলা হচ্ছে? এক কথায় এখানে জমা হচ্ছে পাওয়ার বা শক্তি। তাহলে এখান থেকে খুব সহজেই বলা যায় যে, “যদি কোন তাড়িতচৌম্বক ক্ষেত্রের চারপাশে একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের মধ্যে একটি কন্ডাক্টর বা কোন পরিবাহী নাড়াচাড়া/অবস্থার পরিবর্তন করাহয় তাহলে ওই কন্ডাক্টরের দুই প্রান্তে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হবে।“ আর একেই বলা হয় তাড়িত চৌম্বকীয় আবেশবা ইন্ডাকশন। যে বিদ্যুৎ আউটপুটে পাওয়া যায় তাকে বলা হয় “ইন্ডিউসড কারেন্ট”।
একটি তারের কয়েল যদি চৌম্বকক্ষেত্রের মধ্যে কোন অবস্থানের পরিবর্তন আনে তাহলে সেখানে ইলেক্ট্রমোটিভ ফোর্স তৈরি হবে যদি কন্ডাক্টর সার্কিট টি পরিপূর্ণ থাকে।
একটি ডিসি জেনারেটরের গঠন প্রনালী
একটি ডিসি জেনারেটরে নিম্নোক্ত অংশগুলো দ্বারা নির্মিত হয়-
একটি ডিসি জেনারেটর মেশিন এর বিভিন্ন আভ্যন্তরীন অংশ
ইয়োকঃ
মেশিনের বাইরের আবরনী কেই ইয়োক বলা হয়। ছোট জেনারেটর এর ক্ষেত্রে এই ইয়োকে কাস্ট আয়রণ ব্যবহার করা হয়।আর বড় জেনারেটর এ স্টিল ব্যবহৃত হয়।
স্ট্যাটর ম্যাগ্নেট/ফিল্ড ম্যাগ্নেটঃ
এর মধ্যে ২ টি অংশ থাকে যাদের কে একাধারে পোল শ্যু ও পোল কোর বলা হয়। পোল শ্যু এর প্রধান কাজ হচ্ছে ম্যাগ্নেটিক ফিল্ড কে তার অভ্যন্তরীন জায়গার মধ্যে চার পাশে ছড়িয়ে দেওয়া।
ফিল্ড ওয়াইন্ডিং ও পোল কয়েলঃ
এটি তামার তার দ্বারা তৈরি থাকে। প্রতিটি পোলে এটি সুবিন্যস্ত ভাবে সাজানো থাকে।
আর্মেচার কোরঃ
জেনারেটর এর ভিতরের যে অংশ টুকু ঘুরতে সক্ষম তার সবটুকুকেই আরমেচার কর বলা হয়। এটি দেখতে অনেকটা সিইলিন্ডারের মত দেখতে যাতে তামার কন্ডাক্টর পেচানো থাকে।
আর্মেচার উইন্ডিংঃ
এটি হল আরমেচার স্লটের বাকি অংশ যেটুকু পেচানো থাকে।
আর্মেচার/আরমেচারঃ
এটি জেনারেটরের মধ্যে একমাত্র ঘুরন্ত অংশ যার সাথে বারে বের হওয়া শ্যাফট লাগানো থাকে।
কমিউটেটর:
এটি দেখতে অনেকটা গোলাকার বিয়ারিং এর মত ,যার মাধ্যমে কারেন্ট এসে এখানে জমা হয় পরবর্তী ধাপে যাওয়ার জন্য।
ব্রাশঃ
এটি জেনারেটরের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। এর কাজ হল উৎপাদিত এসি কারেন্ট কে ডিসি তে রূপান্তর করা। এটি দেখতে অনেকটা চতুষ্কোণাকার আকৃতির। এটি প্রধানত কার্বন/গ্রাফাইট দিয়ে তৈরি করা হয়ে থাকে।
স্লিপ রিংসঃ
এটি কমিউটেটরের সাথে সংযুক্ত থাকে।
ব্রাশ ড্রপঃ
এখানে সামান্য কিছু পরিমান ভোল্টেজ ড্রপ দেখা যায়। এটি জেনারেটরের অভ্যন্তরীন রেজিস্ট্যান্স এর জন্য। তবে এটি সাধারনত ১-২ ভোল্টের বেশি হয় না।
জেনারেটরের মধ্যে কয়েল গুল বিভিন্ন ভাবে সাজানো থাকে। কতগুলো থাকে একক ভাবে পেচানো বা সিঙ্গেল টার্ন, আবার কতগুলো মাল্টি টার্ন, যেখানে একসাথে অনেকগুলো কয়েল পেচানো থাকে।
নোটঃ এখানে উল্লেখ্য যে জেনারেটরের ডিজাইন ভেদে বিভিন্ন অংশের নাম ভিন্নভিন্ন হতে পারে। এবং কিছু অতিরিক্ত অংশ ও যুক্ত থাকতে পারে।
সমাপ্তিঃ
আজকের পর্বে আপাতত এ পর্যন্তই। সাথেই থাকুন। খুব তাড়াতাড়ি এর পরবর্তী পর্ব প্রকাশিত হবে যেখানে থাকছে জেনারেটর/মোটর সম্পর্কিত সকল গানিতিক ব্যাখ্যা ও যুক্তি। তাছাড়াও আরও একটি মজার বিষয় নিয়ে লিখবো যা এখনি বলছি না। সুতরাং আশাকরি সাথেই থাকবেন। পোস্টটি ভাল লাগলে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আপনাদের একটি শেয়ার আমাদের পরবর্তী ধাপে এগিয়ে নিয়ে যেতে অনেক সাহায্য করে। ধন্যবাদ।
টিউব লাইট বা ফ্লুরোসেন্ট বাতি এখন বহুল জনপ্রিয়। সেই সাথে এনার্জি সেভিং লাইট, স্টার্টার, ব্যালাস্ট ও অহরহই আমাদের চোখে পড়ে। এটি আসলে মারকারি ভ্যাপার ল্যাম্প (Mercury vapor lamp) এর সহোদর ভাই যা গ্যাস ডিসচার্জ প্রযুক্তিতে চালিত হয়। কিন্তু আমরা অনেকেই এর বৈজ্ঞানিক কর্ম পদ্ধতি সম্পর্কে জানিনা। চলুন আলোচনার মাধ্যমে কিছু ধারনা নেয়া যাক। এই আলোচনার মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারবো কি করে এই সাদা রঙের বাতিটি এতো উজ্জ্বল আলো প্রদর্শন করে। আরো জানবো এই বাল্ব কেন আমাদের সাধারন ইনক্যান্ডসেনট (incandescent) বাল্বের তুলোনায় বেশি উপযোগী। এছাড়াও এতে আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগ সম্পর্কেও জানবো। সাথে আরো জানবো টিউবলাইটে ব্যবহৃত স্টার্টার সুইচ, ব্যালাস্ট সম্পর্কে। এদের সুবিধা অসুবিধা সম্পর্কে। অধুনা বহুল ব্যবহৃত এনার্জি বাল্বে টিউবলাইটের ব্যবহার, এলইডি টিউব এবং এদের সুবিধা অসুবিধা নিয়েও টুকটাক আলোচনা করবো। চলুন তাহলে যাত্রা হোক শুরু।
আলোর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাঃ
আলো কি?
আলোর উৎস সম্পর্কে জানার আগে চলুন আলোসম্পর্কে কিছু জেনে নেয়া যাক। স্বাভাবিক ভাবে বলা যায় যে আলো এক প্রকার শক্তি। যার মূল উৎস পরমাণুর ভেতরে ইলেকট্রন নামক একটি ক্ষুদ্র কনিকার নড়াচড়া। অবশ্য আলো কেও অতি ক্ষুদ্র এক ধরণের গতিশীল কণিকা ধরা হয় যার শক্তি ও ভরবেগ আছে কিন্তু ভর নেই। একেক বর্ণের বা রং এর আলোর জন্য এই সব আলোর কণিকা এক একটি গুচ্ছ আকারে আসে। এইসব ক্ষুদ্র কণিকা কে ফোটন (photon) নামে ডাকা হয়। মূলত এই ফোটনই আলো তৈরি হবার পেছনে দায়ী।
ইলেকট্রন ও ফোটনঃ
একটি পরমাণু থেকে তখনি ফোটন নির্গত হয় যখন এর ভিতরে ইলেকট্রন গুলো উত্তেজিত হয়। এই ইলেকট্রন গুলো পরমাণুর ভিতরে নিউক্লিয়াস এর চারিদিকে ঘোরে। ইলেকট্রন এর এই ঘুর্ণন একটি নির্দিষ্ট বৃত্তাকার পথে হয়। এই বৃত্তাকার পথ কে orbital বলে। ইলেকট্রন গুলো মূলত negative charge যুক্ত আর কেন্দ্রের নিউক্লিয়াস এ যে প্রোটন আর নিউট্রন আছে তা positive charge যুক্ত হয়। যেহেতু বিপরীত চার্জ পরস্পর কে আকর্ষণ করে তাই ইলেকট্রন, নিউক্লিয়াস কে কেন্দ্র করে ঘোরে। এই আকর্ষন বল কে বলা হয় electrostatic force বা স্থিরতাড়িত শক্তি.
ইলেকট্রনের শক্তি গ্রহণ ও নিষ্ক্রমনঃ
Orbital গুলো যত শক্তি সম্পন্ন হয় এগুলো নিউক্লিয়াস থেকে ততো দূরে থাকে। ইলেকট্রন গুলো যখন বাইরে থেকে শক্তি গ্রহণ করে তখন এটি নিজের orbital ছেড়ে আরো বেশি শক্তি সম্পন্ন অরবিটাল এ যেতে পারে। আবার যখন এটি শক্তি নির্গত করে তখন এটি কম শক্তি সম্পন্ন orbital এ আসে। এই শক্তি মূলত তাড়িতচৌম্বক তরঙ্গ (electromagnetic wave) আকারে নির্গত হয়। এই তরঙ্গের বিভিন্ন ধরনের wavelength এর জন্য আমরা বিভিন্ন ধরনের শক্তি পাই। এই wavelength বা তরঙ্গ দৈর্ঘ্য নির্দিষ্ট একটি সীমার মধ্যে হলে একে আলো বলে। বাকি তরঙ্গ দৈর্ঘ্য এর শক্তি গুলো আমাদের কাছে দৃশ্যমান না। বাকি অদৃশ্যমান শক্তি শুধু আমরা অনুভব করি।
ইলেকট্রনের উত্তেজনাঃ
ফোটন বিচ্ছুরণ পদ্ধতি
কোন পদার্থের মধ্যে পরমাণু যখন সংঘর্ষে লিপ্ত হয় তখন electron গুলো উত্তেজিত হয়ে যায় অর্থাৎ কিনা শক্তি প্রাপ্ত হয়। তখন এগুলো নিজের orbital ছেড়ে বেশি শক্তি সম্পন্ন orbital এ যায় কিন্তু electron এর ঘূর্ণন নির্দিষ্ট ছকে বাঁধা। তাই একে আবার আগের শক্তি স্তরে ফিরে আসতে হয়। এসময় এটি আবার শক্তি বিকিরণ করে। এই শক্তির তরঙ্গ দৈর্ঘ্য (wavelength) এর ওপর নির্ভর আমরা কোন ধরণের শক্তি পাব। এই তরঙ্গ দৈর্ঘ্য নির্দিষ্ঠ সীমার মধ্যে হলে আমরা তাকে দৃশ্যমান আলো বলি। ডানপেশের চিত্রটি দেখলে আশাকরি বুঝতে কিছুটা সুবিধে হবে। প্রয়োজনে ছবিতে ক্লিক করে দেখুন-
আলো কি তরঙ্গ না কণা?
একটা confusion দূর করা দরকার। একটু আগে আমরা জেনেছি আলোএকধরণের কণিকাযার নাম photon. আবার এর পরেই শুনছি আলো আসলে তরঙ্গ। প্রকৃত অর্থে আলো দুইরূপ আচরণই করতে পারে। এ বিষয়ে বিজ্ঞানীদের বিভিন্ন রকম তাত্ত্বিক বিশ্লেষন আছে। সে গভীরতায় না গিয়ে আমাদের আলোচনার সুবিধার জন্য আমরা ধরে নিচ্ছি ফোটন এক ধরনের কণা, যা কিনা তরঙ্গ আকারে প্রবাহিত হয়। তবে সুপ্রিয় পাঠক মনে রাখবেন যে এটি শুধুমাত্র বুঝবার সুবিদার্থে উল্লেখ করা, এর বৈজ্ঞানিক কোন ভিত্তি নেই।
আলোর রং কিভাবে হয়?
নির্গত আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের উপর নির্ভর করে কতটুকু শক্তি বিকির্ণ হয়েছে তার ওপর। আবার বিকির্ণ শক্তির পরিমাণ নির্ভর করে electron এর নির্দিষ্ট অবস্থান এর ওপর। বিভিন্ন পরমাণুর ক্ষেত্রে electron এর অবস্থান বিভিন্ন হয়। তাই একেক রকম পরমাণু একেক ধরনের আলো বা শক্তি ত্যাগ করবে। আলোর রঙ ও এর ওপর নির্ভর করে। অন্য কথায়, আমরা বিভিন্ন মৌলের পরমাণু কে উত্তেজিত করে বিভিন্ন রং এর আলো পেতে পারি। উদাহরণ হিসাবে এলইডি এর কথা ধরা যায়। এই এলইডি এর রং বিভিন্ন রকম হতে পারে এবং প্রতিটি ভিন্ন রং এর এলইডি এর পূর্ণ প্রজ্জ্বলন ভোল্টেজ ও ভিন্ন ভিন্ন।
নিচের চিত্রে আমাদের দৃশ্যমান আলোক বর্ণালীর সারণি তুলে ধরা হলো। এখানে দেখা যাচ্ছে যে আলোক তরঙ্গ দৈর্ঘ্য ছোট হয়ে একদম অতিবেগুনি রশ্মির নিকট ঠেকেছে। একই ভাবে তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বড় হয়ে লাল আলোর উপরে চলে গেছে। এই উভয় সীমার আগে ও পরে আমরা মানুষেরা দেখতে পাই না। কিন্তু এখানে উল্লেখ থাকে যে কিছু কিছু প্রাণী অতিবেগুনি রশ্মি ও অবলোহিত রশ্মি তাদের চোখ দিয়ে দেখতে পায়। যেমন পতঙ্গ অতিবেগুনি রশ্মি দেখতে পায়। আবার যাযাবর গোত্রিয় হাঁস ম্যাগনেটিক নর্থ দেখতে পারে।
দৃশ্যমান আলোক বর্ণালি
এটিই মূলত আলো ও আলোক বর্ণালি উৎপন্ন হবার মূল কৌশল।
টিউব লাইট কে আবিষ্কার করেছিলেন?
একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে সামনে এগুনো ঠিক হবেনা। সেটি হলো টিউবলাইটের আবিষ্কারক কে?
আসলে টিউবলাইট বা ফ্লুরোসেন্ট লাইট সরাসরি আবিষ্কার হয়নি। প্রথমে আবিষ্কৃত হয় মারকারি ভ্যাপার ল্যাম্প যার জনক পিটার কুপার হিউইট (Peter Cooper Hewitt) ১৯০১ সালে। কিন্তু তার মধ্যে ফ্লুরোসেন্ট পদার্থটি ছিল না। যারফলে তখনকার মারকারি ভ্যাপার ল্যাম্প গুলো সবুজাভ আলো বিকিরণ করতো। সেসময় এই মারকারি ল্যাম্প কে ভিন্নকাজে ব্যবহৃত হতো। তার আগে নিকোলা টেসলা ও টমাস আলভা এডিসন এ নিয়ে কিছু গবেষনা করেছিলেন। কিন্তু তাদের সে গবেষণা বাণিজ্যিক সাফল্য আনতে পারেনি। এছাড়াও আরো অনেক গবেষক লুমিনিসেন্স ও ফ্লুরোসেন্স নিয়ে গবেষণা করেছেন যা ধারাবাহিক ভাবে টিউবলাইট এর উন্নতি সাধনে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছিল।
আবিষ্কারক পিটার কুপার হিউইট ও তাঁর আবিষ্কৃত মারকারি ভ্যাপার ল্যাম্প
ফ্লুরোসেন্ট বাল্ব ও সাধারণ বাল্বের মূল পার্থক্য
সাধারণ incandescent বাল্বের সাথে ফ্লুরোসেন্ট বাল্ব (যাকে আমরা টিউবলাইট বলি) এর পার্থক্য হল- পরমানু কে সক্রিয় বা উত্তেজিত করার প্রসেস এর মধ্যে। সাধারন বাল্ব গুলোতে পরমাণু কে সক্রিয় করা হয় উত্তপ্ত করার মাধ্যমে। আর ফ্লুরোসেন্ট বাল্বে এই কাজটি করা হয় তড়িত রাসায়নিক ক্রিয়ার মাধ্যমে। অবশ্য এই প্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল এবং বিস্তৃত যা আমাদের এই আলোচনার মধ্যে কিছুটা ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করবো।
টিউব লাইট সিস্টেম এর উপাদান সমূহ
টিউব লাইট এর গাঠনিক উপাদান হল একটি বায়ুরোধী কাঁচনল যাকে কমন ভাবে বলে সীলড গ্লাস টিউব (SEALED glass tube)। এই টিউব টি বায়ুরোধী। টিউবের মধ্যে থাকে সামান্য পরিমাণ মারকারি (পারদ)। আরো থাকে একটি নিষ্ক্রিয় গ্যাস (সাধারণত Argon). এই টিউব টির ভিতর দিক দিয়ে ফসফরাসএর আবরন দেয়া থাকে। এজন্য একে সাদা দেখায়। টিউবের দুই প্রান্তে থাকে দুইটি ইলেকট্রোড (electrode) যা এর মধ্যে তড়িৎক্ষেত্র সৃষ্টি করতে পারে। এই electrode দুটো আবার একটি electrical circuit এর সাথে সংযুক্ত থাকে। ইলেকট্রিক্যাল এই সার্কিটে সাধারণত থাকে স্টার্টার সুইচ ও ব্যালাস্ট। এই সার্কিট যুক্ত থাকে আমাদের AC সাপ্লাই এর সাথে। নিচের চিত্রটি দেখলে আমরা কিছু ধারণা লাভ করতে পারবো-
টিউবলাইট সিস্টেমের বিভিন্ন অংশ
এটি ম্যাগনেটিক ব্যালাস্ট সম্বলিত পুরানো সিস্টেম। আধুনিক ও উন্নত সিস্টেমে এটি কিছুটা আলাদা তবে মূল অংশ একই। নিচে পর্যায়ক্রমে বর্ণিত হচ্ছে।
চলুন সুইচ অন করি
যখন আমরা টিউবলাইট এর সুইচ on করি তখন শুরুহয় টিউব এর মাঝে electron এর খেলা। টিউব এর দুই পাশের electrode এ একটি এমন একটি মাত্রার voltage দেয়া হয় (আসলে potential difference) যার ফলে টিউবের ইনার্ট গ্যাসের মধ্য দিয়ে electron প্রবাহিত হয়।
আসলে সুইচ on-off কমার্শিয়াল শব্দ। বিজ্ঞান এর ভাষায় এটি হবে switch open এবং switch closed. Switch open থাকার অর্থ circuit টি open বা মুক্ত। অর্থাৎ current flow হবে না। closed switch হল এর উল্টোটি।
Electron গুলো এখানে কোনো মাধ্যম ছাড়াই বিভব পার্থক্যের কারনে মুক্ত ভাবে প্রবাহিত হয়। এর ফলে টিউবের ভিতরে কিছু পারদ বাষ্প হয়ে যায় (electron গুলো পারদ কে আঘাত করে ফলে শক্তি নির্গত হয়, এবং এটি মারকারি কে বাষ্পে পরিনিত করে)। এই প্রক্রিয়ায় যখন electron প্রবাহিত হতে থাকে তখন এগুলো পারদ বাষ্প এর সাথে সংঘর্ষ ঘটায়। এর ফলে পারদ পরমাণু গুলো উত্তেজিত হয়। ফলে এর ভিতরের electron গুলো উচ্চ শক্তি স্তরে যায়। আবার যখন এরা নিজের শক্তিস্তরে ফিরে আসে তখন photon নির্গত করে (প্রকৃতপক্ষে electromagnetic wave এর বিকিরন ঘটায়)।
টিউবলাইট এ বৈদ্যুতিক প্রবাহ
আগের অংশে আমরা জেনেছি, টিউব এর মধ্যে যে তরিৎ প্রবাহের ফলে electron এর ফ্লো হয়। এর কারনে পারদ পরমাণু গুলো electron এর সাথে সংঘর্ষ প্রাপ্ত হয়ে উত্তেজিত হয়। এই ফাঁপা টিউবের মধ্যে এই যে তড়িৎ প্রবাহ সেটা সাধারন বৈদ্যুতিক তার এর প্রবাহের মতই। তবে সেখানে solid (সাধারণত ধাতু) বস্তুর মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহিত হয় আর এখানে সেটা হয় গ্যাস এর মধ্যে দিয়ে। দুই ধরনের পরিবাহি (conductor) দুই রকম। তবে gas conductor আর metal conductor (ধাতব পরিবাহী) এর মাঝে আরো কিছু পার্থক্য রয়েছে।
মেটাল conductor এ charge পরিবাহিত হয় মুক্ত electron এর মাধ্যমে। Electron গুলো এক পরমাণু থেকে অন্য পরমানুতে লাফ দিয়ে negatively charged area থেকে positively charged area তে যায়। আমরা জানি যে electron গুলো negatively charged এর অর্থ এরা সবসময় positive charge এর দিকে আকর্ষিত হয়। গ্যাস এর মধ্যেও electrical charge মুক্ত electron দিয়ে পরিবাহিত হয় ইলেকট্রন গুলো এক্ষেত্রে পরমাণু থেকে মুক্ত হয়ে প্রবাহিত হয়। আবার গ্যাস এর মধ্য দিয়ে positive বা negative আয়ন চার্জ পরিবহন করে (আয়ন হল সেই সকল পরমাণু যেগুলো electron ত্যাগ করেছে বা গ্রহন করেছে)।
আয়ন গুলোও বিপরিতধর্মী charge দ্বারা আকর্ষিত হয়। আমরা আগেই জেনেছি, পরমাণু থেকে যে electromagnetic wave বের হয় তার ওয়েভ লেংথ নির্ভর করে পরমাণু তে electron এর সজ্জাবিন্যাস এর ওপর। আর পারদের পরমাণু তে electron এর সজ্জাবিন্যাস এমন যে, এ থেকে নির্গত electromagnetic wave দৃশ্যমান আলো না হয়ে UVR বা আলট্রা ভায়লেট রশ্মি হয়। এখন এই টিউব থেকে আলো পাবার জন্য এই wavelength কে convert করতে হবে যার ফলে তা দৃশ্যমান হবে। এখানেই টিউবলাইটের সাদাপ্রলেপ তথা ফসফরের ভূমিকা আসছে।
নিচের ছবিতে টিউবের মধ্যে কিভাবে ইলেকট্রন ফ্লো হয় তা দেখানো হয়েছে-
টিউব লাইটের মধ্য দিয়ে কিভাবে ইলেকট্রন ফ্লো করে
টিউব লাইটের সাদা প্রলেপ টি কি?
টিউব লাইটে যে সাদা প্রলেপ টি দেখি সেটিই মূলত সাদা আলো উৎপন্ন করবার জন্য দায়ী। তাই বলে ভাববেন না যে হলুদ রঙ করে দিলে সেটি হলুদ আলো দিবে। এটি মূলত ফসফরাস পাউডার যা কিনা আলট্রা ভায়োলেট রশ্মি কে সাদা বর্নের আলোতে পরিণত করে। Phosphorous এর এই ধর্মের কারনে একে অনেক কাজে ব্যবহার করা হয়। যেমন একে TV তেও ব্যবহার করা হয়। Phosphorous ছাড়াও এরকম আরো কিছু বস্তু আছে যারা এই রকম কাজ করে। এদের প্রতিপ্রভবা ফ্লুরোসেন্ট – fluorescentবলে। ফসফরোসেন্ট(phosphorescent – অনুপ্রভ) পদার্থও আছে। জিংকসালফাইড, কুইনাইন প্রভৃতি একধরনের Fluorescence পদার্থ। ফ্লুরোসেন্ট পদার্থ দিয়ে এটি তৈরী হয় বিধায় টিউব লাইটের অপর নাম ফ্লুরোসেন্ট বাতি বা ফ্লুরোসেন্টল্যাম্প।
নিচের ছবিতে দেখতে পাচ্ছি টিউবলাইটের আভ্যন্তরীণ দৃশ্য-
একটি টিউবলাইটের আভ্যন্তরীণ চিত্র(আংশিক)
সাধারণ বাতি ও ফ্লুরোসেন্ট বাতির মূল পার্থক্য
আমরা সাধারণভাবে যে বাল্ব ব্যবহার করি (incandescent বাল্ব) সেগুলোতেও এরকম UVR উৎপন্ন হয়। কিন্তু সেগুলো দৃশ্যমান আলো তে transform করা হয় না বলে এইসব বাতিতে অনেক energy loss হয়। আবার এইসব বাতিতে যে আলো তৈরি হয় সেগুলো লালচে হয়। এর অর্থ হলো এর থেকে অনেক infrared ও তৈরি হয়। এজন্য এইসব বাতির আলো গরম হয়। সেই তুলনায় fluorescentবাতি গুলো অনেক উন্নত। এখানে energy loss অত্যন্ত কম, আলো ততোটা গরম না (এই আলো থেকে infrared রশ্মি কম বের হয়, সেই জন্য এই বাতি গুলোর আলো তে লালচে ভাব না থেকে কিছুটা নীলাভ হয়) ।
আমরা এতক্ষণ জানলাম কি করে এই টিউব এর মধ্যে বৈদ্যুতিক শক্তি থেকে আলোক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। এখন আমরা জানবো কিভাবে এর মধ্যে current flow হয়।
কিভাবে টিউব লাইটের মধ্যে কারেন্ট ফ্লো হয়?
এই গ্যাস টিউব এর মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহিত করার জন্য ফ্লুরোসেন্ট লাইট এর দুটি ব্যাপার নিশ্চিত করতে হয়, তাহলো-
১. মুক্ত electron এবং আয়ন।
২. টিউব এর দুই প্রান্তে বিভব পার্থক্য (চার্জ এর ঘনত্বের পার্থক্য – voltage)
সাধারনভাবে গ্যাস এর মধ্যে মুক্ত electron এবং আয়ন থাকেনা। কারন সব পরমানুই চার্জ নিরপেক্ষ ধর্ম প্রদর্শন করে থাকে। যখন আমরা কোন ফ্লুরোসেন্ট বাতির সুইচ অন করি তখন এটি কাজ করার জন্য প্রয়োজন অনেক পরিমাণ মুক্ত electron যা টিউব এর দুই পাশের electrode থেকে বের করে আনতে হয়।
এর পেছনে বেশকিছু পদ্ধতি ও কৌশল আছে যেগুলো নিচে আলোচনা করা হয়েছে-
টিউব লাইটে স্টার্টার এর ভূমিকা
সাধারন fluorescent lamp design এ এটিকে জ্বালানোর জন্য starter switch (light এর এক পাশে ছোট্ট একটি যন্ত্র) ব্যাবহার করা হয় (আজকালের ইলেকট্রনিক ব্যবস্থায় অবশ্য এটা দেখা যায় না)। নিচের ছবির মাধ্যমে এটার mechanism দেখান হল।
স্টার্টার কিভাবে কাজ করে?
বাইপাস সার্কিট তৈরি
যখন আমরা বাতির সুইচ অন করি তখন starter এর মধ্য দিয়ে একটি bypass circuit সম্পূর্ণ হয়। (তখনো গ্যাস টিউব এর মধ্যে কোন circuit সম্পূর্ণ হয় না)। এই bypass circuit টিউব এর দু’পাশের electrode এর মধ্য দিয়ে আলাদা ভাবে সম্পূর্ণ হয়। electrode গুলো সাধারন ফিলামেন্ট এর মত (যেমন টি আমরা incandescent বাল্ব এ দেখি)। যখন এই bypass circuit দিয়ে তড়িৎ প্রবাহিত হয় তখন বিদ্যুত এই ফিলামেন্ট কে উত্তপ্ত করে। এই তাপে আবার ধাতব পৃষ্ঠের electron মুক্ত হয়ে গ্যাস এ প্রবেশ করে এবং গ্যাস কে আয়নিত করে।
স্টার্টার এর গঠন ও পর্যায়ক্রমিক কাজ
ঠিক একই সময়ে বৈদ্যুতিক প্রবাহ starter switch এর মধ্যে কয়েকটি মজাদার পর্যায়ক্রমিক কাণ্ড ঘটায়। আমাদের ব্যবহৃত starter switch আসলে একধরনের ছোট্ট discharge bulb. যার মধ্যে থাকে neon gas. এই বাল্ব এর মধ্যে আছে দু’টা electrode যেগুলা পাশাপাশি অবস্থান করে। যখন প্রাথমিক ভাবে বাইপাস সার্কিট এর মাধ্যমে electricity প্রবাহিত হয়, তখন একটা electrical arc এর সৃষ্টি হয় এবং ইলেকট্রোড দুটির মাঝে কানেকশান তৈরি করে এবং বাইপাস সার্কিট টি সক্রিয় হয়। এজন্যই টিউব লাইট জ্বলবার আগে আমরা স্টার্টার কে জ্বলতে নিভতে দেখি। নিচের চিত্রে একটি স্টার্টার সুইচের গঠন দেখতে পাচ্ছি-
স্টার্টার সুইচের আভ্যন্তরীণ গঠন
দ্বীধাতু ও ইলেকট্রিক্যাল আর্ক
ইলেকট্রিক্যাল আর্ক হল বিদ্যুত এর ঝলকানি। এর ফলে আলো ও অল্প তাপ সৃষ্টি হয় ঠিক যেভাবে মূল টিউব এ হয় (এই কারণেই টিউব লাইট জ্বলবার আগে স্টার্টার কে পিটপিট করে জ্বলে যা আগেই বলেছি)। স্টার্টার এর মধ্যে অবস্থিত দুটি ইলেকট্রোড এর একটি নির্মিত হয় দ্বিধাতব পাত দ্বারা, যা উত্তপ্ত হলে বেঁকে যায়। electrical arc এর সৃষ্টি হলে পাত টি গরম হয় এবং দ্বিধাতুর বৈশিষ্ঠ্য অনুযায়ী এটি বেঁকে যায়। এর ফলে দুটি ইলেকট্রোড এর মধ্যে সংযোগ হয়। ফলে electrical arc আর উৎপন্ন হওয়া থেমে যায়। যে কারনে আর তাপও উৎপন্ন হয় না। ফলে পাতটি আবার ঠান্ডা হয়ে সোজা হয়ে যায়। উক্ত পাতটি সোজা হয়ে বাইপাস সার্কিট টি আবার মুক্ত করে দেয়। অর্থাৎ ঐ সার্কিট দিয়ে আর কোন ইলেকট্রিসিটি ফ্লো করেনা।
স্টার্টার এ বিদ্যুৎ প্রবাহিত হলে এমন ইলেকট্রিক্যাল আর্ক উৎপন্ন হয়
মারকারি গ্যাস আয়নিত করণ
এই সময় এর মধ্যেই মূল টিউব এর ফিলামেন্ট গরম হয়ে ভিতরের মারকারি গ্যাস কে আয়নিত করে। আর আমরা সবাই জানি যে- যে কোন ধাতুই বিদ্যুৎ পরিবাহী। এই মারকারি গ্যাস অন্য গ্যাসের তুলনায় অধিক বিদ্যুৎ পরিবাহী। এর ফলে electricity প্রবাহের জন্য টিউব লাইটের মধ্যে একটা মাধ্যম তৈরি হয়। এখন এই টিউব এ প্রয়োজন একটা শক্তিশালি voltage kick যাতে টিউব এর দুই পাশের electrode এর মাঝে electric arc তৈরি হতে পারে। তাহলেই অবিচ্ছিন্ন তড়িৎ প্রবাহিত হতে পারবে টিউব এর মধ্য দিয়ে। এই ভোল্টেজ কিক টি ব্যালাস্ট(ballast) এর মাধ্যমে তৈরি হয়। এইভাবে টিউব এর মধ্যে বিদ্যুৎ প্রবাহ শুরু হলে এটি জ্বলে উঠে।
টিউব এ প্লাজমা উৎপাদন
যখন কারেন্ট বাইপাস সার্কিট দিয়ে যায়, তখন একটি magnetic field সৃষ্টি হয়। এই magnetic field, প্রবাহিত তড়িতের পরিমান দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। যখন বাইপাস সার্কিট টি বন্ধ হয়ে যায় তখন ব্যালাস্ট তড়িত প্রবাহ হঠাৎ করেই বৃদ্ধি করে দেয় (একেই ভোল্টেজ কিক বলে)। এই কারেন্ট প্রবাহের হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে গ্যাস এর মধ্য দিয়ে electric arc তৈরি তে সাহায্য করে। স্টার্টার এর মধ্য দিয়ে কারেন্ট প্রবাহের পরিবর্তে সময় electrical current টিউব এর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়। এর ফলে এর মধ্যে দিয়ে মুক্ত electron প্রবাহিত হয়। এগুলো আবার মারকারি পরমানুর সাথে সংঘর্ষ ঘটায় ফলে আয়ন সৃষ্টি হয়। ফলস্বরূপ plasma অবস্থার সৃষ্টি হয় যা কিনা মুক্ত আয়ন আর ইলেকট্রনে এ পরিপূর্ণ একটি গ্যাস। এভাবে তড়িত প্রবাহের জন্য রাস্তা তৈরি হয়।
Electron এর মুক্তভাবে বিচরনের ফলে এটি ফিলামেন্ট কে গরম রাখে। ফলে আরো মুক্ত electron আসতেই থাকে। ফলে যতক্ষন AC supply থাকবে আর ফিলামেন্ট ঠিক থাকবে ততক্ষন আলো জ্বলতেই থাকবে।
ব্যালাস্ট (ballast) কি
স্টার্টারের পরেই যে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান টি টিউবলাইট কে প্রজ্জ্বলনের জন্য দায়ী তার নাম ব্যালাস্ট। একটি টিউব লাইট সিস্টেমের মধ্যে ব্যালাস্ট এর মূল ভূমিকা কারেন্ট নিয়ন্ত্রক ও প্রজ্জ্বলক হিসাবে। এটি টিউব লাইটে পর্যাপ্ত ভোল্টেজও ওয়েভ ফর্ম সরবরাহ সুনিশ্চিত করে। এখন আমরা ব্যালাস্ট সম্পর্কে কিছু জানবো।
টিউবলাইট এর ব্যালাস্ট কত প্রকার
দৈনন্দিন ব্যবহারিক দিক থেকে চিন্তা করলে টিউব লাইটের ব্যালাস্ট তিন প্রকার-
১। ইলেকট্রিক্যাল বা ম্যাগনেটিক ব্যালাস্ট
২। ইলেকট্রনিক ব্যালাস্ট
৩। হাইব্রিড বা উপরোক্ত দুই পদ্ধতির মিশেল
তবে কর্মপদ্ধতির দিক থেকে ব্যালাস্ট কে নিম্নোক্ত ভাবে বিভক্ত করা হয়ঃ
এখানে উল্লেখ্য যে আমেরিকান ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড ইন্সটিটিউট (American National Standard Institute – ANSI) কর্তৃক নির্ধারিত আছে নিম্নোক্ত ব্যালাস্ট পদ্ধতি –
আমরা পুরানো দিনের টিউব লাইট সিস্টেমে যে ধরনের ব্যালাস্ট দেখতাম তা আসলে ইলেকট্রিক্যাল ব্যালাস্ট যা কিনা প্রিহিট পদ্ধতি তে টিউব লাইট কে প্রজ্বলিত করে। নিচে কিছু ব্যালাস্টের চিত্র দেয়া হলো-
ম্যাগনেটিক ব্যালাস্টইলেকট্রনিক ব্যালাস্ট
টিউব লাইটে ব্যালাস্ট এর ভূমিকাঃ
ব্যালাস্ট (Ballast) শব্দের অর্থ ভারসাম্য রক্ষাকারী। মূলত টিউব লাইট সিস্টেমেও ব্যালাস্ট ভারসাম্য রক্ষাকারীর ভূমিকা পালন করে থাকে। কারেন্ট ও ভোল্টেজের স্থিতাবস্থা আনয়ন করে এটি। এই ব্যালাস্ট ছাড়া কোনো টিউব লাইট কে যদি সরাসরি মেইন লাইনের সাথে সংযুক্ত করাহয় তাহলে টিউব লাইটে মাত্রাতিরিক্ত কারেন্ট প্রবাহিত হবে। এরফলে টিউব লাইট টি প্রায় সাথে সাথেই নষ্ট হয়ে যাবে।
বিভিন্ন প্রকার ব্যালাস্টের কাজ কি কি
আমরা উপরের লেখা থেকে আগেই জেনেছি যে মারকারি গ্যাস কিভাবে আয়নিত হয়ে টিউবের মধ্যে একটি গ্যাসিয় কন্ডাক্টরের মত আচরন করে। এরজন্য প্রয়োজন তাপ ও উপযুক্ত ভোল্টেজ কিক। যা কিনা টিউব কে জ্বলতে সাহায্য করে। কিন্তু কিভাবে? এরজন্য সচারচর ৩টি পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। প্রিহিট, ইন্সটেন্ট স্টার্ট ও র্যাপিড স্টার্ট।
প্রিহিট ব্যালাস্টঃ
প্রিহিট এর ক্ষেত্রে টিউব লাইটের মধ্যস্থিত ইলেকট্রোড বা ফিলামেন্ট গুলোকে স্টার্টারের মাধ্যমে উত্তপ্ত করা হয়। (স্টার্টার কিভাবে কাজ করে তা উপরে জেনেছি)। উত্তপ্ত হবার ফলে টিউবের আভ্যন্তরীণ মারকারি বাষ্পীভূত হয়ে গ্যাসিয় আকার ধারণ করে। যার ফলে টিউব লাইটের মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহ শুরু হয় এবং যারফলে আমরা আলো দেখতে পাই (এই পদ্ধতির বিস্তারিত উপরে দেয়া হয়েছে)। কিন্তু এই পদ্ধতির বড় অসুবিধা হলো যে টিউব লাইট সুইচ অন করবার সাথে সাথেই না জ্বলে কিছুটা দেরি করে। এই অসুবিধা দূর করবার জন্যই তৈরি হয়েছে ইন্সটেন্ট স্টার্ট ব্যালাস্ট। এক্ষেত্রে টিউব লাইটের ফিলামেন্ট কে আলাদা ভাবে উত্তপ্ত করা হয়না। বরং উচ্চ ভোল্টেজ প্রবাহিত করাহয় টিউব লাইটের ইলেকট্রোডে। এই উচ্চ ভোল্টেজ (সাধারণত ৪০০ ভোল্ট বা তার বেশী) খুব দ্রুত টিউবের মধ্যস্থিত মারকারি কে গ্যাসে পরিণত করে ফেলে। কাজেই সুইচ অন করবার আনুমানিক ৫০ মিলি সেকেন্ডের মধ্যেই টিউব লাইট জ্বলে উঠে। তাই এই পদ্ধতির অপর নাম ইন্সটেন্ট স্টার্ট।
র্যাপিড স্টার্ট ব্যালাস্টঃ
র্যাপিড স্টার্ট ব্যালাস্ট এর ক্ষেত্রে প্রিহিট ও ইন্সটেন্ট স্টার্ট উভয়েরই সাহায্য নেয়া হয়। এরজন্য সার্কিটে টিউব লাইটের ইলেকট্রোড দুটিতে আলাদা ভাবে কানেকশন দেয়া থাকে যা প্রিহিট হতে টিউব কে সাহায্য করে। টিউব টি প্রিহিটেড হলে (অর্থাৎ মারকারি গ্যাসিয় আকার ধারণ করলে) এরপর অপেক্ষাকৃত কম ভোল্টেজে টিউব টি জ্বালানো হয়।
প্রোগ্রামড স্টার্ট ব্যালাস্টঃ
প্রোগ্রামড স্টার্ট ব্যালাস্ট আসলে র্যাপিড স্টার্টেরই আরেকটু ভিন্ন ও আধুনিক রূপ। এই পদ্ধতি প্রয়োগ করে ক্ষেত্র বিশেষে টিউব লাইটের স্থায়ীত্ব সাধারণের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ করা সম্ভব হয়েছে। একই সাথে এটি এনার্জি এফিশিয়েন্টও। এটি টিউবের উপরে গ্লো কারেন্ট (Glow Current) এর নেতিবাচক প্রভাব ও দূর করতে সক্ষম। যে কারেন্ট প্রবাহিত হয়ে টিউব লাইট এর দুই প্রান্ত কালো বর্ণ ধারণ করে এবং ল্যাম্প এর দীর্ঘ স্থায়ীত্বের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে তাকেই গ্লো কারেন্ট বলে। তাই অত্যাধুনিক টিউবলাইট এর ব্যালাস্ট গুলোতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করাহয়। এছাড়াও ডিমএবল ব্যালাস্ট ও আছে যা কিনা টিউবের উজ্জ্বলতাকে কমাতে ও বাড়াতে সাহায্য করে। সাধারণত ডিমএবল ব্যালাস্ট টিউবলাইট এর ভোল্টেজ কে ঠিক রেখে কারেন্ট প্রবাহ কম বেশী করে উজ্জ্বলতা বাড়ায়-কমায়।
উপরোক্ত বিভিন্নভাবেই একটি টিউব কে প্রজ্বলন করা সম্ভব। মূল বিষয় হচ্ছে টিউব এর মধ্যস্থত মারকারি কে গ্যাসিয় এবং আয়নিত করা এবং এর মধ্যদিয়ে ইলেকট্রন প্রবাহিত করা, যার ফলাফলে টিউবটি জ্বলতে পারে। তবে এক্ষেত্রে আরো একটি বড় বিষয় হচ্ছে কারেন্ট লিমিট করা। যখন মারকারি শীতল থাকে এবং আয়নিত অবস্থার বিপরীতে থাকবার সময় টিউবের আভ্যন্তরীন রোধ(রেজিস্টেন্স – Resistance) অনেক উচ্চ থাকে। কিন্তু যখনি মারকারি বাষ্প তৈরি হয় তখন টিউব এর আভ্যন্তরীণ রোধ অনেক নিচে নেমে আসে। প্রায় শর্ট সার্কিটের মত অবস্থা তৈরি হয়। এমন অবস্থায় সরাসরি এসি লাইনে সংযোগ থাকলে টিউব যেমন ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে তেমনি আগুন লাগাও বিচিত্র কিছু নয়। তাই কারেন্ট লিমিটিং এর ক্ষেত্রেও ব্যালাস্ট এর ভূমিকা অপরিসিম।
ইলেকট্রনিক ব্যালাস্ট কি
আমরা পূর্ববর্তি অনুচ্ছেদে জেনেছি বিভিন্ন রকম ব্যালাস্ট এর কথা এবং সেগুলোর কর্ম পদ্ধতি। এসকল ব্যালাস্ট টিউবলাইট এর আলো কিভাবে উৎপন্ন করে তাও জেনেছি। এখন জানবো ইলেকট্রনিক ব্যালাস্ট সম্পর্কে। প্রিহিট পদ্ধতিতে টিউবলাইট কে জ্বালাতে গেলে কিছু সমস্যার কথা উপরে উল্লেখ করা হয়েছে। মূলত এ সমস্যা দূর করার লক্ষ্যেই প্রস্তুত হয় ইলেকট্রনিক ব্যালাস্ট। এরফলে টিউবলাইট টি সুইচ অনকরা মাত্রই জ্বলে উঠে ঘরবাড়ি প্রজ্বলিত করে। যে ধরনের ব্যালাস্টের মাধ্যমে এই কাজ করা হয় তাকে ইলেকট্রনিক ব্যালাস্ট বলে। আরেকটু সংক্ষেপে বললে বলাযায় যে- যে ব্যালাস্টে অর্ধপরিবাহী পদার্থ ব্যবহার করে টিউবলাইট কে প্রজ্জ্বলিত করা হয় তাকে ইলেকট্রনিক ব্যালাস্ট বলে। সংজ্ঞা থেকেই বুঝতে পারছি এতে ট্রানজিস্টরডায়োড এমনকি আইসি ও ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সেই সাথে প্রয়োজন অনুযায়ী রেজিস্টর, ক্যাপাস্টর ও ব্যবহার করাহয়।
ইলেকট্রনিক ব্যালাস্ট এর সুবিধা কি?
নিচে ইলেকট্রনিক ব্যালাস্ট এর কিছু সুবিধা তুলে ধরা হলো-
আকৃতিগত দিক থেকে
আকৃতিগত দিক থেকে ইলেকট্রনিক ব্যালাস্ট বিভিন্ন রকম হয়। যদিও এর আকার কে বিভিন্ন রূপ দেয়া সম্ভব তবুও ইলেকট্রিক্যাল ব্যালাস্ট কে সাধারণ ম্যাগনেটিক ব্যালাস্ট এর মত আকার দেয়া হয়। এটি করাহয় মূলত ব্যবহার যোগ্যতা বৃদ্ধি করতে। যার ফলে ব্যবহারকারী খুব দ্রুত তার পুরানো ইলেকট্রিক্যাল ব্যালাস্টের স্থানে এই ইলেকট্রনিক ব্যালাস্টকে প্রতিস্থাপিত করতে পারেন।
ওজনগত দিক থেকে
প্রায় সবধরনের ইলেকট্রনিক ব্যালাস্ট অন্যগুলোর তুলনায় হাল্কা হয়ে থাকে। এর প্রধান কারণ ইলেকট্রনিক ব্যালাস্টে মেটাল বা ধাতুর ব্যবহার অনেক কম। এই ধাতু কম ব্যবহারের ফলে এই ধরনের ব্যালাস্ট হাল্কা হলেও তাপ সুপরিবাহী না হবার কারণে ইলেকট্রনিক ব্যালাস্ট অপেক্ষাকৃত বেশী গরম হয়। একটি ইলেকট্রিক্যাল ব্যালাস্ট আনুমানিক ভাবে ১-১.৫ কিলোগ্রাম ওজনের হয়ে থাকে, পক্ষান্তরে ইলেকট্রনিক ব্যালাস্ট ২৫০ গ্রাম থেকে ১ কেজি পর্যন্ত ওজন হতে পারে।
শব্দগত দিক থেকে
সাধারণ ব্যালাস্ট গুলোতে আয়রন কোর ব্যবহৃত হয়। যা কিনা এসি লাইনের ফ্রিকুয়েন্সি তে কাঁপতে পারে এবং এক ধরনের হামিং নয়েজ উৎপন্ন করে। এই শব্দ মাত্রা খুব ক্ষীণ থেকে বেশ জোরালো হতে পারে যা কিনা ব্যালাস্টের গুনগত মানের উপর নির্ভরশীল। মজার বিষয় হচ্ছে ইলেকট্রনিক ব্যালাস্টে এই সমস্যা খুবই সামান্য যা প্রায় ধরাই যায় না।
তাৎক্ষনিক প্রজ্জ্বলন
আগেই বলেছি সাধারণ ব্যালাস্ট দিয়ে টিউব লাইট জ্বলতে কিছুটা সময় লাগে। অনেক ক্ষেত্রেই তা ১ সেকেন্ড থেকে শুরু করে কয়েক সেকেন্ড ও হতে পারে। কিন্তু এ সমস্যা প্রায় নেই বললেই চলে ইলেকট্রনিক ব্যালাস্টের ক্ষেত্রে। র্যাপিড স্টার্ট প্রযুক্তি ব্যবহার করেই হোক কিংবা ইন্সটেন্ট স্টার্ট প্রযুক্তি ব্যবহার করে হোক, উভয় ক্ষেত্রেই ইলেকট্রনিক পদ্ধতি সুবিধাজনক। সাধারণত ইলেকট্রনিক ব্যালাস্ট গুলো ৫০ মিলি সেকেন্ডের মাঝে পূর্ণ শক্তিতে প্রজ্বলিত হতে পারে।
দীর্ঘ স্থায়ীত্বের দিক থেকে
সাধারণ ব্যালাস্টে গ্লো কারেন্টের এফেক্ট টিউবলাইট কে অত্যন্ত দ্রুত নষ্ট করে ফেলে। যার কারণে টিউবের উভয় প্রান্ত কালো হয়ে যাওয়ার মত সমস্যা তথা টিউবের দীর্ঘস্থায়ীত্ব কমে যায়। এই ব্যাপারটি ইলেকট্রনিক ব্যালাস্ট খুব সুন্দর ভাবে নিয়ন্ত্রন করা সম্ভবপর হয় বিধায় টিউব এর স্থায়ীত্ব ও নিশ্চিত হয়। আরো অন্যান্য টিউব এর অভ্যন্তরিস্থ ইলেকট্রোডের তাপমাত্রা, ভোল্টেজ (Cathode heating voltage) এসব নিয়ন্ত্রন করা সম্ভবপর হয়ছে এই ধরনের ব্যালাস্ট দিয়ে। মূলত ইলেকট্রোডকে উত্তপ্ত করবার ও প্রবাহিত ভোল্টেজ এবং কারেন্ট কে সূক্ষ্ণ সময় নিয়ন্ত্রিত করে এই কাজটি করাহয়।
ইনপুট ভোল্টেজের দিক থেকে
সাধারণ ব্যালাস্ট খুব একটা নিম্ন ভোল্টেজে চলতে সক্ষম নয়। যদিও ক্ষেত্র বিশেষে বিশেষ ডিজাইন করা সম্ভবপর হয়েও থাকে তা অনেক উচ্চমূল্য ও বিভিন্ন অসুবিধা সম্পন্ন। এদিক থেকেও এগিয়ে আছে ইলেকট্রনিক ব্যালাস্ট গুলো। এগুলো অনেক কম ভোল্টেজেও চলতে সক্ষম। এমনকি ৭০ ভোল্ট AC তেও এই ব্যালাস্ট গুলো কাজ করতে পারে যারফলে লো-ভোল্টজ প্রবন এলাকাতে এটি যথেষ্ঠ উপযোগী।
নিচে ল্যাবরেটরি তে ব্যালাস্ট ও টিউব কিভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ফলাফল যাচাই করাহয় তার তুলনামূলক ডায়াগ্রাম দেয়া হলো-
ল্যাবরেটরি তে ব্যালাস্ট ও টিউব পরীক্ষা করবার পদ্ধতিগত ডায়াগ্রাম
ইলেকট্রনিক ব্যালাস্ট এ স্টার্টার
আরো একটি বড় সুবিধা হচ্ছে এ ধরনের ইলেকট্রনিক ব্যালাস্টে স্টার্টার ব্যবহার করতে হয়না। এই ব্যালাস্ট সার্কিট থেকে দুটি সংযোগ টিউবের ফিলামেন্ট তথা ইলেকট্রোডে যায়। আর এই ইলেকট্রনিক্সসার্কিট প্রয়োজন মত সুইচিং, ভোল্টেজ, কারেন্ট কে উপযুক্ত ওয়েভ শেপ এর মাধ্যমে টিউবে প্রেরণ করে টিউব কে প্রজ্জ্বলিত করে। তাই ইলেকট্রনিক্স ব্যালাস্টে স্টার্টারের প্রয়োজন হয়না। নিচে ইলেকট্রনিক ব্যালাস্ট কে সংযুক্ত করবার সার্কিটডায়াগ্রাম দেয়া হলো।
লেখার প্রারম্ভেই ম্যাগনেটিক ব্যালাস্ট ও স্টার্টার সুইচের এর সংযোগ পদ্ধতি দেয়া হয়েছি বিধায় তা আর দিলাম না।
ব্যালাস্ট ফ্যাক্টর কি
আমরা সাধারণত টিউবলাইটের উজ্জ্বলতা কে লুমেন (lumen) দিয়ে প্রকাশ করি। ইলেকট্রনিক কিংবা ইলেকট্রিক্যাল যে ধরনের ব্যালাস্ট ই হোক না কেন এই ব্যালাস্ট ফ্যাক্টরের উপরেই নির্ভর করে এই উজ্জ্বলতা। সঠিক ভাবে বললে ব্যালাস্ট ফ্যাক্টরের উপরে। একটা সহজ হিসাব আছে যা কিনা নর্থ আমেরিকান স্ট্যান্ডার্ড কর্তৃক (IES – Illuminating Engineering Society of North America) সারা বিশ্বে গৃহিত। শোবার ঘর, বসবার ঘর এমন সমস্ত স্থানে অর্থাৎ যেখানে বেশী আলো প্রয়োজন হয়না সেখানে ০.৭৭ ব্যালাস্ট ফ্যাক্টর সম্বলিত ব্যালাস্ট ব্যবহার করলেই চলে। অপরদিকে যেখানে বেশী আলো প্রয়োজন হয় যেমন রান্নাঘর, গুদাম প্রভৃতি স্থানে উচ্চ ব্যালাস্ট ফ্যাক্টর সম্বলিত (১.১ বা এর বেশী) ব্যালাস্ট ব্যবহার করা উচিৎ। তাতে আলো অধিক পাওয়া যায়।
নিচের চিত্রটিতে বিভিন্ন ধরনের ব্যালাস্টের ফ্যাক্টর সমূহ দেখানো হয়েছে এবং এর সংক্ষিপ্ত সুবিধা অসুবিধাও দেয়া আছে-
বিভিন্ন ধরণের ব্যালাস্টের ফ্যাক্টর
এনার্জি লাইট এ টিউব এর ব্যবহার
ইদানীং এনার্জি লাইটের প্রচলন অনেক বেড়েছে। এর প্রকৃত নাম সিএফএল (CFL – Compact Fluroscent Lamp). মূলত এর ব্যবহারিক সুবিধাই এর জনপ্রিয়তার জন্য দায়ী। আগে যে বাল্ব হোল্ডারে সাধারণ ইনক্যান্ডেস্যান্ট বাতি ব্যবহার করা হতো সেখানে এনার্জি বাল্ব লাগিয়ে দিলেই এর সুবিধা ভোগ করাযায়। তবে এই এনার্জি বাল্বেও টিউব ব্যবহার করা হয়। এবং এতে ছোট ইলেকট্রনিক্স ব্যালাস্ট ও আছে। এনার্জি বাল্বের ঢাকনা খুলে ফেললে ভেতরে দেখা যায় মূল সার্কিট টি। উপরে প্যাঁচানো কাঁচের নলটির নাম যে টিউব তা এতক্ষণে অভিজ্ঞ পাঠক ঠিকই বুঝেছেন আশাকরি। নিচের চিত্রে একটি এনার্জি বাল্ব তথা সিএফএল এর বিভিন্ন অংশ দেখতে পাচ্ছি-
এনার্জি বাল্ব (সিএফএল) এর বিভিন্ন অংশ
টিউব লাইট বনাম এনার্জি লাইট
আগেই উল্লেখ করেছি যে সিএফএল বা এনার্জি বাতিতে টিউব ব্যবহার হয়। এর সুবিধাও উল্লেখ করেছি। এর ছোট আকৃতির ফলে এটি সহজেই বহন যোগ্য। এতে ব্যবহৃত ইলেকট্রনিক ব্যালাস্ট টি এতই কর্মক্ষম যে অনেক নিম্ন ভোল্টেজেও খুব ভালোভাবেই টিউব কে জ্বালাতে পারে।
তবে একটি ছোট সমস্যা কারো কারো ক্ষেত্রে দেখা যায়। যাদের চোখ উজ্জ্বল আলোর প্রতি সংবেদনশীল তারা এই এনার্জি বাতি তে অস্বস্তি বোধ করেন। তাদের জন্য টিউবলাইট উপযুক্ত পরিগণিত হয়। এটি ঘটে মূলত এনার্জি বাতির আয়তনের জন্য। এটি তুলনা মূলক ভাবে অনেক বেশ ছোট, অপরদিকে টিউবলাইটের আয়তন বড় ও দীর্ঘ। ছোট আলোক উৎস থেকে উজ্জ্বল আলোকচ্ছটা কারো কারো চোখের জন্য অসহনীয় হতেপারে।
সেসমস্ত ক্ষেত্রে এনার্জি বাতি (ছোট আলোক উৎস) এর চাইতে টিউবলাইট (বড় আয়তনের আলোক উৎস) ব্যবহার করা সুবিধা জনক।
এছাড়াও দামে সস্তা করবার লক্ষ্যে অনেক ব্যবসায়ী নিম্ন মানের পার্টস ব্যবহার করে এই সিএফএল উতপাদন করেন, যারফলে নিম্নমানের এই বাতিগুলোর আলো দ্রুত কম্পনশীল হয়। যা উক্ত আলোক সংবেদনশীল ব্যক্তিদের মাইগ্রেন, বমি ভাব সাহ আরো কিছু উপসর্গ তৈরী করে।
এমন অবস্থা এড়াতে উচ্চ গুনগত মানের এনার্জি বাতি ব্যবহার করে দেখা যেতে পারে। এছাড়া নিম্নমানের এসমস্ত বাল্বের উপরে ঘোলা ঢাকনা (Diffuser) জাতীয় কিছু ব্যবহার করা যেতে পারে যেন এর আলো সরাসরি চোখে না লাগে।
টিউব লাইট বনাম এলইডি লাইট
সচারচর আমরা টিউবলাইট কে কাঁচের তৈরি দেখতে পাই। এবং এরমধ্যে ইলেকট্রোড/ফিলামেন্ট থাকে। কিন্তু নতুন এলইডি প্রযুক্তি এসে এর আমূল পরিবর্তন সাধন হয়েছে। এখন এলইডি টিউব লাইট ও পাওয়া যায়। প্রকৃতপক্ষে এই এলইডি টিউবলাইট গুলোতে ছোট ছোট চিপ এলইডি (Chip LED) ব্যবহার করাহয়। এবং সেগুলোকে একটি লম্বা সার্কিট বোর্ডে সংযুক্ত করা থাকে। যার ফলে এটি অল্প ওয়াট-শক্তি খরচ করেও অনেক বেশী উজ্জ্বল আলো দিতে পারে।
সাধারণ ভাবে এলইডি টিউব লাইট গুলো ১৮-২২ ওয়াটের হয়ে থাকে। এবং এলইডি এর গুনগত মানের উপর নির্ভর করে সাধারণ ৪০ ওয়াটের টিউবলাইট (আসলে ৩২-৩৬ ওয়াট) তুলনায় সমান কিংবা দ্বীগুণের ও অধিক আলো দিতে সক্ষম।
সাধারণত এলইডি টিউব লাইট ডিসি পাওয়ার সাপ্লাই ড্রাইভারদ্বারা চালিত হয় বিধায় এর আলো কাঁপে না। তাই আলোক সংবেদন ব্যক্তিদের জন্য এটি বিশেষ ভাবে উপযোগী। ক্ষেত্র বিশেষে একই ক্ষমতার সাধারণ ক্ষুদ্র আয়তনের এলইডি লাইটের চেয়ে লম্বাটিউব এলইডি ব্যবহার বাঞ্চনীয় কারণ, আলোক উৎস যদি আয়তনে বড় হয় তাহলে আলোক উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায় (আসলে আমাদের চোখে উজ্জ্বলতা বেশী বলে অনুভূত হয়)। নিচের চিত্রে একটি এলইডি টিউব লাইট দেখতে পাচ্ছি।
এলইডি টিউব লাইট
নিচে একটি অত্যাধুনিক এলইডি টিউবলাইটের বিভিন্ন অংশের চিত্র দেয়া হলো-
অত্যাধুনিক এলইডি টিউব লাইট এর বিভিন্ন অংশ
টিউব লাইটের ব্যবহারিক সমাপ্তি
এখন আমরা জানবো ব্যবহারিক দিক থেকে একটি টিউবলাইট কখন অযোগ্য হয়ে যায়। একটি টিউবলাইটের আয়ুষ্কাল বেশকিছু বিষয়ের উপর নির্ভরশীল। ব্যবহারিক পদ্ধতি, পারিপার্শ্বিক তাপমাত্রা, বায়ুচাপ, ব্যবহারের স্থান প্রভৃতি।
সাধারণ ভাবে টিউব লাইটের উজ্জ্বলতা কমে গিয়ে গোলাপী বর্ণ ধারণ করতে পারে। মূলত আভ্যন্তরীণ মারকারি বা পারদ শেষ হয়ে যাওয়াই এর কারণ। বাল্বটি বারংবার ফ্লিকার বা অন-অফ হতে থাকে। বাল্বের মধ্যস্থ ইলেকট্রোড গুলো ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে নষ্ট হয়ে যাবার ঘটনাও অনেক সময় পরিলক্ষিত হয়।
দীর্ঘদিন ধরে ইলেকট্রোড গুলো ইলেকট্রন নিক্ষেপের ফলে অথবা নিম্নমানের কাঁচামাল দ্বারা প্রস্তুত করলে এই ক্ষয়প্রাপ্ত দ্রুতহয়। এছাড়াও ব্যালাস্ট ও স্টার্টার সুইচ যদি মান সম্পন্ন না হয় তাহলে টিউবলাইটের উপরে চাপ পড়ে তার আয়ু কমিয়ে দেয়।
টিউবের মধ্যস্থ ফসফর প্রলেপ দূর্বল হয়ে গিয়ে এর ব্যবহারকি ঔজ্জ্বল্য নষ্ট করে। সাধারণত উন্নত মানের টিউবলাইটের ফসফরাস প্রলেপ ২৫,০০০ ব্যবহারিক ঘন্টা প্রজ্জ্বলনে সক্ষম। এরপর উক্ত টিউবলাইটের উজ্জ্বলতা অর্ধেকে নেমে আসে; অর্থাৎ অর্ধজীবন চক্র বা হাফ-লাইফ (Half-life) সম্পূর্ন করে। ক্ষেত্রবিশেষে ফিলামেন্ট জ্বলে/কেটে যাবার ঘটনাও পরিলক্ষিত হয়।
টিউব লাইট ব্যবহারের কিছু আবশ্যিক সতর্কতা
যেকোনো কাঁচের বাল্বকে সতর্ক ভাবেই ব্যবহার করা উচিৎ। কিন্তু টিউবলাইটের ক্ষেত্রে এই সতর্কতা আরো বেশী হওয়া বাঞ্চনীয়। এর মধ্যে ব্যবহৃত মারকারি বা পারদ (Mercury,Hg – Hydrargyrum) মানব দেহের নিকট বিষ। এই বিষক্রিয়া অত্যন্ত খারাপ যার ফলে শ্বাসনালী’র রোগ থেকে শুরুকরে আরো অনেক জটিল উপসর্গ ও স্বাস্থ্য জটিলতা দেখাদিতে পারে। এছাড়াও নিম্নমানের ইলেকট্রনিক ব্যালাস্টে এমন সমস্ত উপাদান ব্যবহৃত হয় যার মধ্যে অধিক পরিমাণে সীসা (Plumbum, Pb – Lead) ব্যবহৃত হয় যা স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ায়। এবং অবশ্যই বৈদ্যুতিক কাজকর্ম করবার সতর্কতা অবশ্যই নিতে হবে।
শুভ্র উজ্জ্বল আলোয় আলোকিত হোক আমাদের প্রাত্যহিক দিন। তবে সেটি এলইডি নাকি টিউব লাইট দিয়ে তা বিচারের ভার পাঠকের হাতেই ন্যস্ত রইলো।
সম্পাদনা ও পুনঃসংকলনঃ সৈয়দ রাইয়ান
তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট, বিভিন্ন ব্লগ, উইকি ও গবেষনা পত্র হতে গৃহীত।
আজকে আমরা শিখবো কি করে প্রসেসিং এ বিভিন্ন কন্ডিশন ব্যবহার করতে হয়। আমরা বাস্তব জীবনেই প্রত্যেকদিন বিভিন্ন শর্ত বা কন্ডিশন মেনে চলি। যেমন, চা বানাতে গিয়ে যদি দেখি চিনি শেষ হয়ে গিয়েছে, তখন বাজারে গিয়ে চিনি কিনে আনি। এখানে শর্তটা হচ্ছে, চা বানানোর প্রয়োজনীয় উপকরণ আছে কিনা সেটা চেক করা। যদি থাকে তাহলে চা বানাই, না থাকলে উপকরণটা কিনে আনি। প্রসেসিং এর কন্ডিশন ব্যাপারটাও এরকম। কোডে লেখা থাকে কি চেক করতে হবে। কম্পিউটার সেটি চেক করে যদি পজিটিভ রেজাল্ট পায়, তাহলে একটি সিদ্ধান্ত নেয়। নেগেটিভ রেজাল্ট পেলে আরেকটি সিদ্ধান্ত নেয়। কি সিদ্ধান্ত নিবে সেটাও কোডে লিখে দিতে হবে।
কন্ডিশনাল স্টেটমেন্ট ও এর উদাহরনঃ
কন্ডিশনাল স্টেটমেন্ট অনেক ধরণের আছে, আমরা আজকে খুব বেসিক ২টি স্টেটমেন্ট শিখবো, if-else স্টেটমেন্ট আর for স্টেটমেন্ট। সাথে কিছু অপারেটরের বিষয়েও জানবো।
নিচের কোডটি দেখি –
int variable = 50;
if (variable < 50){
println (“variable is smaller than 50”);
}
else {
println (“variable is greater than 50”);}
এখানে, প্রথমে variable নামে একটি ভ্যারিয়েবল ডিক্লেয়ার করেছি যার মান হচ্ছে ৫০। এরপর if লিখে () ব্র্যাকেটের মধ্যে কন্ডিশনটি লিখেছি, যা হচ্ছে variable এর মান ৫০ অপেক্ষা ছোট কিনা। যদি ছোট হয়, তাহলে {} ব্র্যাকেটের মধ্যে লেখা কোড রান করবে। আর যদি ৫০ অপেক্ষা ছোট না হয়, তাহলে else এর পরে {} এর ভিতর যে কোড লেখা আছে, সেটি রান করবে।
আপনি ইচ্ছা করলে একাধিক if ও ব্যবহার করতে পারেন, উদাহরন-
if (a<123){println (“something”);}
if (a>123){println (“something something”);}
উপরের কোডে নতুন একটি ফাংশন ব্যবহার করা হয়েছে, println নামে। println(); লাইনটি লিখে আপনি ব্র্যাকেটের ভেতর ডাবল ইনভারটেড কমার ভিতরে যা লিখবেন, সেটি Console এ দেখা যাবে। আপনি যদি নিচের কোডটি রান করেন –
তাহলে Console এ বারবার Bangladesh লেখাটি প্রিন্ট হতে থাকবে। তবে প্রত্যেকবার লেখাটা নতুন একটি লাইনে প্রিন্ট হবে। কিন্তু আপনি যদি শুধু print() ফাংশন ব্যবহার করেন, তাহলে লেখা বারবার পাশাপাশি প্রিন্ট হতে থাকবে, অর্থাৎ BangladeshBangladeshBangladesh। আশা করি পার্থক্যটি বুঝতে পেরেছেন।
println() ফাংশন বিভিন্ন কাজে ব্যাবহার করা যায়। যেমন, আপনার একটি ভ্যারিয়েবল এর মান কোড চলাকালে কত বাড়ছে বা কমছে সেটি জানা দরকার, আপনি তখন খালি কোডে একটি লাইন লিখে দিবেন,
println(myvariable);
এখানে myvariable এর জায়গায় আপনার ভ্যারিয়েবল এর নাম বসবে।
এখানে, প্রথমে for লিখে তারপর () এর ভিতর কন্ডিশন লিখবেন। তবে এখানে কন্ডিশনটি একটু অন্যরকম হবে।
ফর স্টেটমেন্ট (For Statement) এর কন্ডিশনে ৩টি পার্ট থাকে। প্রথমেই, int variable= 0; লিখে variable নামে একটি ভ্যারিয়েবল ডিক্লেয়ার করা হল। এরপর variable>100 কন্ডিশনটি লেখা হল। তারপর variable++ লেখা হল। ++ হচ্ছে জাভা ল্যাঙ্গুয়েজের একটি গাণিতিক অপারেটর। যার অর্থ হচ্ছে যেই ভ্যারিয়েবল এর পরে ++ লেখা হবে সেই ভ্যারিয়েবলটির মানের সাথে ১ যোগ হবে। — অপারেটর দিয়ে আবার ভ্যারিয়েবল থেকে ১ বিয়োগ করা যায়। আরও বিভিন্ন অপারেটর সম্পর্কে ভবিষ্যতে আলোচনা করা হবে।
ফর স্টেটমেন্ট হচ্ছে আসলে একটি লুপ। অর্থাৎ ফর লুপের {} ভিতরে যেই কোডটি থাকবে সেই কোডটি বারবার রান করানো হবে। কতবার রান করানো হবে তা নির্ভর করে ফর লুপের কন্ডিশনের উপর। উপরে যেই কন্ডিশন দেয়া হয়েছে, সেই কন্ডিশন অনুযায়ী কম্পিউটার প্রথমে variable নামে একটি ভ্যারিয়েবল এর ইনিশিয়াল ভ্যালু ০ ধরে যতক্ষণ variable এর মান ১০০ অপেক্ষা ছোট থাকে ততক্ষন variable এর মান ১ করে বাড়াতে থাকবে। এবং Bangladesh কথাটি প্রিন্ট করতে থাকবে।
কোড দেখে মনে হতে পারে, Bangladesh কথাটি ১০০ বার প্রিন্ট হবে, তবে গুনে দেখলে আসলে দেখা যাবে, ৯৯ বার Bangladesh কথাটি প্রিন্ট হয়েছে। কারণ, < অথবা > অপারেটর দিয়ে আসলে বোঝানো হয় চিহ্নের ডানদিকের সংখ্যা থেকে ছোট, কিন্তু সমান নয়। তাই আপনি যদি ১০০বার লেখাটি প্রিন্ট করাতে চান, তাহলে আপনাকে লিখতে হবে <=, যেই অপারেটরটির মানে হচ্ছে ১০০ থেকে ছোট অথবা সমান। >= অপারেটরও একই ভাবে কাজ করে।
বিভিন্ন অপারেটরঃ
প্রোসেসিং এ বিভিন্ন ধরণের অপারেটর রয়েছে, আপাতত কাজ করার জন্য বেসিক কয়টি অপারেটর দেখি-
“&&” অপারেটরঃ
এই অপারেটর মাঝখানে দিয়ে বোঝানো হয় যদি এটা হয় “এবং” যদি ওটা হয়। উদাহরন – if (a>34 && b <34){} । ইফ স্টেটমেন্ট এ একাধিক কন্ডিশন দিতে পারেন এই অপারেটরের সাহায্যে।
“||” অপারেটরঃ
কিবোর্ডের এন্টার কি এর পাশে এই কি’টি থাকে।এটা দিয়ে বোঝানো হয় যদি এটা হয় অথবা ওটা হয়। উদাহরন – if (a <24 || b<24){println(“do something”);}
“+=” অপারেটরঃ
এই অপারেটর আপনি কোনও ভ্যারিয়েবল এর পাশে বসিয়ে যে সংখ্যাটি লিখবেন, সেটি ভ্যারিয়েবলটির সাথে যোগ হবে। উদাহরন, –
int myvariable = 50;
myvariable += 50;
এখন ৫০ যোগ করার ফলে ভ্যারিয়েবলটির মান হবে ১০০।
“-=” অপারেটরঃ
এই অপারেটর আপনি কোনও ভ্যারিয়েবল এর পাশে বসিয়ে যে সংখ্যাটি লিখবেন, সেটি ভ্যারিয়েবলটি থেকে বিয়োগ হবে। উদাহরন, –
int myvariable = 50;
myvariable -= 50;
এখন ৫০ বিয়োগ করার ফলে ভ্যারিয়েবলটির মান হবে ০।
“*” অপারেটরঃ
এই অপারেটরের সাহায্যে একটি ভ্যারিয়েবলকে আরেকটি ভ্যারিয়েবল এর সাথে গুন করতে পারবেন। উদাহরন –
int a = 50;
int b= 60;
println (a*b);
কনসোলে a ও b এর গুণফল ৬০০০ প্রিন্ট হবে।
“/” অপারেটরঃ
এই অপারেটরের সাহায্যে একটি ভ্যারিয়েবলকে আরেকটি ভ্যারিয়েবল দ্বারা ভাগ করতে পারবেন। যেমন –
int a = 50;
int b= 10;
println (a/b);
কনসোলে 5 প্রিন্ট হবে, যেহেতু a এর মান b এর মান দ্বারা ভাগ করলে হয় 5।
আজকের মত এটুকুই। এর পরের পর্বে আশাকরি অ্যানিমেশন নিয়ে লিখবো।