কিভাবে আপনি নিজেই আরডুইনো বোর্ড তৈরি বা আরডুইনো ক্লোন/বুটলোডার বানাতে পারেন তাই নিয়েই আজকে লিখছি। তাহলে কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক।
আরডুইনো বর্তমানে ইলেকট্রনিক্স হবিস্টদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটা জিনিস। কত অসাধ্যই না সাধন করা যায় এর দ্বারা। ছোট্ট এলইডি জ্বালানো থেকে শুরু করে রোবট কন্ট্রোল পর্যন্ত সবই করা সম্ভব এর দ্বারা। চায়না বাবার দয়ায় আরডুইনো ক্লোনিং ব্যাপক ভাবে চালু হয়ে খুব কম মূল্যেই হাতে পেয়ে যাচ্ছি এই আরডুইনো বোর্ড।
এখন প্রাথমিক টেস্টিং আর হবিস্টদের জন্য সরাসরি বোর্ডে কাজ করতে সুবিধা হলেও যারা আরডুইনো দিয়ে নিজস্ব প্রোডাক্ট বানাতে চান, যেখানে অনেক আরডুইনো চিপ দরকার তাদের কাছে প্রতিটি প্রোডাক্টের জন্য একটি করে আরডুইনো বোর্ড কেনা নিশ্চই বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। কারণ তাঁর শুধুমাত্র আরডুইনোতে ব্যবহৃত ৩২৮ চিপ টা প্রয়োজন।
আবার অনেকেই নিজস্ব ডেভেলপমেন্ট বোর্ড বানাতে চান। যেখানে মাইক্রোকনট্রোলার হিসেবে আরডুইনোর চিপ কে ব্যবহার করবেন। আপনি বাজার থেকে একই চিপ বা মাইক্রোকন্ট্রোলার কিনে খুব সহজেই এই কাজটা করতে পারেন। এতে আপনার খরচ কমে আসবে প্রায় ৪ থেকে ৭ গুণ! আমি আপনাদের এটাই শেখাব আজ।
একটা কথা প্রথমেই বলে রাখছি, আপনি বাজার থেকে চিপ কিনলেই কাজ হবে না, কিছু কাজ করতে হবে। তার আগে আসুন কিছু দরকারি কথা জেনে নেই।
কেন আরডুইনো এত জনপ্রিয়?
কেন আরডুইনো এত জনপ্রিয়? বাজারে এর থেকে কম মূল্যে মাইক্রোকন্ট্রোলার, প্রোগ্রামার, বার্নার কিনতে পাওয়া যায়। যা দিয়ে সহজেই আমরা সব কাজ করতে পারি। তা পাওয়া গেলেও সেক্ষেত্রে আমাদের প্রত্যেকটা কাজ আলাদা আলাদা ভাবে করতে হয়।
মানে প্রোগ্রামিং এক সফটওয়্যারে করতে হয়। আবার এই প্রোগ্রাম লোড করার জন্য আলাদা সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আবার দুটোই একই সফটওয়্যারে করা যায় যা অনেক ক্ষেত্রে কাজ নাও করতে পারে । আবার হার্ডওয়্যার এর ক্ষেত্রে প্রোগ্রামার ও মাইক্রোকন্ট্রোলার আলাদা ভাবে কানেকশন দিতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে প্রোগ্রামারে চিপ বসানোর সুবিধা থাকলেও তাতে সব মাইক্রোকন্ট্রোলার চিপ কাজ করে না!
আরডুইনোর সুবিধাঃ
কিন্তু আরডুইনোতে এইসব কোন ঝামেলাই নেই। এতে সবকিছুই একটি বোর্ডেই ইনস্টল করা আছে। অর্থাৎ একই বোর্ড প্রোগ্রামার ও ব্রেক আউট বোর্ড হিসেবে কাজ করে। এতে আলাদা কোন প্রোগ্রামার বা টেস্ট করার জন্য ব্রেডবোর্ডএর প্রয়োজন হয় না। কারণ এই বোর্ডে আরো একটি মাইক্রোকন্ট্রোলার আছে যা অপর মাইক্রোকন্ট্রোলার প্রোগ্রামার/বার্নার হিসেবে কাজ করে। শুধু তাই না, প্রোগ্রামিং/ কোডিং এর জন্য এর নিজস্ব সফটওয়্যার (IDE) আছে। সেখানে কোড লিখে সরাসরি ইউএসবির মাধ্যমে প্রোগ্রাম কে মাইক্রোকনট্রোলারে আপলোড করা যায়, কোন প্রকার ঝামেলা ছাড়াই।
পার্থক্য কি?
এখন এই দুটো সিস্টেমের মধ্যে পার্থক্য হল প্রথম ক্ষেত্রে (আলাদা প্রোগ্রামার ও আলাদা মাইক্রোকন্ট্রোলার) আপনি যে কোন নতুন মাইক্রোকন্ট্রোলারে আপনার লিখিত প্রোগ্রাম আপলোড করতে পারেন। কিন্তু আরডুইনো বোর্ড কেনার সময় যে চিপটি থাকে সেটা ব্যতীত একই মডেলের অন্য চিপে আপনি প্রোগ্রাম করতে পারবেন না। কারণ আরডুইনো বোর্ড নতুন কোন মাইক্রোকন্ট্রোলার চিনতে পারে না। তাহলে কিভাবে চিনবে? এর জন্যই ব্যবহার করাহয় বুটলোডার।
বুটলোডার কি?
নতুন আরডুইনো কেনার সময় যে চিপ টি থাকে এর মধ্যে আগে থেকেই একটি ছোট প্রোগ্রাম লোড করে দেয়া থাকে। যা আরডুইনোর জন্য ঐ চিপের একটি আইডি হিসেবে কাজ করে। একে বলা হয় বুটলোডার (Bootloader)। প্রোগ্রাম লোড করার সময় আরডুইনো প্রথমে এই আইডি চেক করে তারপর প্রোগ্রাম লোড করে। বুটলোডার না থাকলে আরডুইনো চিপ ডিটেক্ট করবে না, এবং প্রোগ্রাম লোডে এরর দেখাবে। বুটলোডার অনেকটা আমাদের কম্পিউটার বা ল্যাপটপে থাকা বায়োস (BIOS – Basic input output system) এর মত।
কাজেই আমরা যদি আলাদা ভাবে মাইক্রোকন্ট্রোলার চিপ টি দিয়ে আরডুইনো ক্লোন বোর্ড বানাতে চাই তাহলে আমাদের ঐ বুটলোডার টি কে ইন্সটল দেয়া লাগবে। এখন আসুন দেখি কিভাবে আমরা নতুন মাইক্রোকন্ট্রোলার চিপে বুটলোডার ইনস্টল করতে পারি।
বুটলোডার কিভাবে ইন্সটল দিতে হয়?
কয়েক ভাবেই বুটলোড করা যায়-
আরডুইনো ব্যবহার করে। অর্থাৎ আলাদা আরডুইনোকে প্রোগ্রামার হিসেবে ব্যবহার করে।
আবার আরডুইনো ছাড়াই যে কোন AVR প্রোগামার দিয়ে। যেমন, AVR programmer/Burner, AVRISP programmer, USBASP programmer ইত্যাদি । আমার ক্ষেত্রে আমি USBASP ব্যবহার করেছি কারণ এটা অন্যান্য প্রোগ্রামারের তুলনায় সস্তা। আরডুইনো দিয়ে বুটলোড করতে অনেক সময় কিছু এরর দেখা দেয় বিধায় আমি প্রোগ্রামার বেছে নিয়েছি। আপনারা চাইলে আরডুইনো বোর্ড দিয়েও করতে পারেন।
বুটলোড এর মূল ধাপ গুলো দেখিঃ
তাহলে আসুন এবার দেখি কিভাবে বুটলোড করব। বুটলোডের জন্য আমরা ATMEGA8A ব্যবহার করছি। বুটলোডের পদ্ধতি আরডুইনোর নিজস্ব ওয়েবসাইট arduino.cc তে দেয়া আছে। মূলত চারটি স্টেপে এই কাজ করা হয়।
১। বুটলোড সেকশন কে আনলক করা।
২। হাই ফিউজ বিট ও লো ফিউজ বিট সেট করা।
৩। বুটলোডার ফাইল (ATmegaBOOT.hex) মাইক্রোকনট্রোলারে লোড করা।
৪। বুটলোড সেকশন পুনরায় লক করা।
বুটলোড করতে কি কি লাগবে?
বুটলোডকরার জন্য যা যা লাগবে-
১। একটি AVR programmer. আমি USBASP ব্যবহার করেছি।
USBASP দেখতে যেমন হয়eXtreme Burner সফটওয়্যার এর চিত্র
৫। ২ টি 22p বা 33p সিরামিক ডিস্ক ক্যাপাসিটর।৬। ব্রেডবোর্ড এবং কিছু জাম্পার ক্যাবল।
ব্রেড বোর্ডজাম্পার ওয়্যার
প্রয়োজনীয় সার্কিট ডায়াগ্রামঃ
প্রথমে সার্কিটডায়াগ্রাম অনুযায়ী ব্রেডবোর্ডে মাইক্রোকনট্রোলার, ক্রিস্টাল ও ক্যাপাসিটর সংযোগ করি। এরপর প্রোগ্রামারের সাথে মাইক্রোকনট্রোলার সংযোগ করি।
কেবল দিয়ে প্রোগ্রামারকে কম্পিউটারের সাথে সংযোগ করি।
সফটওয়্যার এ যে কাজ গুলো করতে হবেঃ
এবার আসি সফটওয়্যারের চারটি স্টেপ নিয়ে।
এই স্টেপ শুরু করার আগে eXtreme Burner সফটওয়্যারটি চালু করি। Chip মেনু থেকে আমাদের নির্ধারিত মাইক্রোকন্ট্রোলার টি নির্বাচন করে দেই।
এরপর Chip Erase বাটনে ক্লিক করে চিপটি ক্লিয়ার করে নেই।
এখন ১ম স্টেপ হল বুটলোড সেকশন অনলক করা। এর জন্য লক ফিউজের ঘরে 0x এর পরের ঘরে FF লিখি এবং Write এর ঘরে টিক চিহ্ন দেই। এখন নিচে Write বাটনে ক্লিক করলেই চিপের বুটলোড সেকশন আনলক হয়ে যাবে।
এখন Lock Fuse এর ঘরে Write এর ঘরের টিক চিহ্ন তুলে দেই।
এবার ২য় স্টেপে হাই ফিউজ বিট ও লো ফিউজ বিট সেট করতে হবে। এর জন্য প্রথমে Low Fuse এর ঘরে 0x এর পর DF এবং হাই ফিউজের ঘরে 0x এর পর CA লিখি। এবার High Fuse ও Low Fuse এর ঘরের Write চেক বক্সে টিক চিহ্ন দিয়ে নিচের Write বাটনে ক্লিক করলেই ফিউজ বিট দুটি সেট হয়ে যাবে।
এবার Write চেক বক্স দুটি আনচেক করে দেই।
৩য় স্টেপে বুটলোড ফাইল আপলোড করতে File থেকে Open Flash এ ক্লিক করি। এখান থেকে C:\Program Files (x86)\Arduino\hardware\arduino\avr\bootloaders\atmega8 এই লোকেশন থেকে ATmegaBOOT-prod-firmware-2009-11-07.hex ফাইল টি ওপেন করি। এবার Write অপশন থেকে Flash এ ক্লিক করলেই হেক্স ফাইলটি মাইক্রোকন্ট্রোলারে লোড হয়ে যাবে।
সর্বশেষ স্টেপে বুটলোড সেকশন আবার লক করে দিতে হবে। এর জন্য Fuse Bit/Settigs ট্যাবে ক্লিক করে, Lock Fuse এর ঘরে 0x এর পর 0F লিখে Write চেক বক্সে টিক চিহ্ন দিয়ে নিচের Write বাটনে ক্লিক করে বুটলোড সেকশন লক করে দেই।
বিঃদ্রঃ ২য় ও ৩য় স্টেপ দুটি আপনি একই সাথে করতে পারেন। এজন্য প্রথমে ২য় স্টেপের ফিউজ বিট সেট করে Write না করে ৩য় স্টেপের হেক্স ফাইলটি ওপেন করার পর উপরে Write All বাটনে ক্লিক করলেই দুটি স্টেপ একসাথেই সম্পন্ন হবে।
ব্যাস… আপনার কাজ শেষ। এবার চিপটি আরডুইনোUNO বোর্ডে বসিয়ে প্রোগ্রাম লিখে আপলোড করে দিলেই চিপ কাজ করবে।
লক্ষণীয় যে, আমরা যে চিপটি বুটলোড করলাম, এটি মূলত Arduino NG বোর্ডে ব্যবহৃত হত। এটি প্রথম দিকের আরডুইনো বোর্ড। তাই বলে যে Arduino UNO বোর্ডে এই চিপ কাজ করবে না, তা না। যদি আপনার কাছে Arduino NG বোর্ড না থাকে তাহলে Aroduino UNO তে চিপটি বসিয়ে Arduino IDE এর Tools মেনু এর Board অপশন থেকে Aroduino NG or Older সিলেক্ট করতে হবে। এরপর Processor অপশন থেকে ATmega8সিলেক্ট করে দিতে হবে। এরপর Port অপশনে গিয়ে যে পোর্টে Arduino UNO কানেক্ট আছে, সেটি সিলেক্ট করে দিতে হবে। এক্ষেত্রে শুধু পোর্ট নাম্বারও থাকতে পারে, আবার সরাসরি Arduino UNO ও লেখা থাকতে পারে। সব সিলেকশন হয়ে গেলে Upload বাটনে ক্লিক করলেই কোড আপলোড হয়ে যাবে।
হুবুহু আরডুইনোর ক্লোন করতে চাইলে যা করতে হবেঃ
এখন কেউ যদি চান যে Arduino UNO এর ই ক্লোন বা কপি বানাবেন, তাহলে শুধু ৩ টি জিনিস পরিবর্তন করতে হবে।
লক ফিউজ বিট আনলক করার জন্য 0xFF এর পরিবর্তে 0x3F, হাই ফিউজ বিট 0xCA এর পরিবর্তে 0xDE, লো ফিউজ বিট 0xDF এর পরিবর্তে 0xFF, এবং লক ফিউজ বিট পুনরায় লক করার জন্য 0x0F ই থাকবে।
বুটলোড ফাইলের লোকেশন পরিবর্তন হয়ে C:\Program Files (x86)\Arduino\hardware\arduino\avr\bootloaders\atmega এই লোকেশনের ATmegaBOOT_168_atmega328.hex ফাইলটি ওপেন করে লোড করে দিতে হবে।
বাদ বাকি সব কানেকশন একই থাকবে।
তাহলে দেরি না করে নিজেই বানিয়ে ফেলুন আরডুইনো বোর্ড এর ক্লোন। আর চায়নাদের দেখিয়ে দিন আপনার সুউচ্চ বৃদ্ধাঙ্গুলী। :p
অপারেশনাল এমপ্লিফায়ার আইসি 741 পরিচিতি ও মজার ইলেকট্রনিক প্রজেক্ট
আজকে আমরা শিখব অপারেশনাল এমপ্লিফায়ার বা অপ-এম্প আইসি (Operational Amplifier/Op-Amp IC) এর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজ। এরই সাথে আমরা যে আইসি টি ব্যবহার করতে যাচ্ছি তার একটি সুন্দর @প্রজেক্ট ও বানাবো।
আজকে আমরা একটি বেসিক অপারেশনাল এমপ্লিফায়ার আইসি দিয়ে শুরু করব। যেটা এতটাই বেসিক যে কাউকে অপ-এম্প শিখাতে গেলে প্রথমে এটাই ব্যবহার করা হয়। তো, আমি আশা করতেই পারি অনেক মজা করে এবং গুরুত্ব দিয়ে আমরা এটা শিখে ফেলব।
অপারেশনাল এমপ্লিফায়ার আইসি পরিচিতিঃ uA741 Op-AMP
এটি একটি অপারেশনাল এমপ্লিফায়ার আইসি। যার মোট পিনের সংখ্যা ৮ টি। তবে এখানে ৮ টি পিনই এক সাথে একই কাজে ব্যবহার করা হয় না। আইসি এর পিন নির্ণয় আশা করি আমরা সবাই জানি। আর যারা জানি না তারা এখানে ক্লিক করলে দেখে নিতে পারব কিভাবে আইসি এর পিন সংখ্যা নির্ণয় করতে হয়।
এই 741 আইসি ‘র ভেতরে কি আছে?
আমরা যদি এই আইসি টিকে আলাদা করে কোন পিসিবি তে বানাই তাহলে দেখতে পাবো এর মধ্যে-
আডাফ্রুট কোম্পানির তৈরি করা এমনি একটি ছবি নিচে দেখতে পাচ্ছেন-
741 IC এর অভ্যন্তরে
তাহলে বুঝতেই পারছেন এই বিশাল অপারেশনাল এমপ্লিফায়ার সার্কিট টিকে মাত্র কত ছোট করে 741 আইসি আকৃতি দেয়া হয়েছে। নিচের দেখতে পাচ্ছেন এমন ৪ পিন আইসি’র প্রকৃত আকারের তুলনা মূলক চিত্র-
এই অপারেশনাল এমপ্লিফায়ার আইসির ২ ও ৩ নাম্বার পিনটি আমরা ইনপুট সিগনাল এর ক্ষেত্রে ব্যবহার করি। অর্থাৎ কোন সিগনাল কে যদি আমরা এমপ্লিফাই করতে চাই তাহলে আমাদের ২ ও ৩ নাম্বার পিনে উক্ত সিগনাল টি ইনপুট দিতে হবে।
এই ২ নং পিনটি (ইনভারটিং – Inverting) পিন এবং ৩ নং পিনটি (নন-ইনভারটিং – Non Inverting) পিন হিসেবে ব্যবহার করা হয়। অর্থাৎ আইসি প্রস্তুতকারক কোম্পানি এইভাবে এটার নির্দিষ্ঠ করে দিয়েছেন।
১ ও ৫ নাম্বার পিনটি ব্যবহৃত হয় অফসেট-নাল (Offset null) এর জন্য। এটি দিয়ে অপারেশনাল এমপ্লিফায়ার আইসি এর আউটপুটে যদি কোন অবাঞ্চিত ভোল্টজ আসে তা বাদ দেয়া যায়।
আর ৮ নাম্বার পিনটি কোন কিছুর সাথে যুক্ত নেই। এটি শুধু এই DIL8 প্যাকেজের অংশ মাত্র।
এই আইসিটির সাপ্লাই ভোল্টেজ মিনিমাম ১৫ ভোল্ট। কিন্তু সরাসরি ১৫ ভল্ট লাগালেই কি এটি চালু হয়ে যাবে? অবশ্যই না। তাহলে এখন উপায়?
আচ্ছা, তো এবার আসি সবচেয়ে প্রধান কথায় । সেটি হল সাধারণত আমরা জানি যেকোন পাওয়ার এমপ্লিফায়ার আইসি এর ইনপুট পাওয়ার সাপ্লাই এর জন্য আমরা সাপ্লাই এর পজেটিভ ও গ্রাউন্ড পিন ব্যবহার করি । কিন্তু এই আইসি টির ক্ষেত্রে তা অনেক ভিন্ন। মানে এটাকে যদি ব্যবহার এর জন্যে সক্রিয় করতে চাই তাহলে এর মধ্যে বায়াসিং করে নিতে হবে এবং পাওয়ার সাপ্লাই হিসাবে স্প্লিট পাওয়ার সাপ্লাই ব্যবহার করতে হবে।
741 IC টির পাওয়ার সাপ্লাই ও বায়াসিংঃ
প্রশ্নঃ অপ-এম্প 741 IC বায়াসিং কিভাবে করতে হয় ?
উত্তরঃ এর জন্য আমাদের ২ টি সেল ব্যাটারী অথবা স্প্লিট পাওয়ার সাপ্লাই এর ৩ প্রান্তই দরকার পড়বে, অর্থাৎ প্লাস মাইনাস ও গ্রাউন্ড ব্যবহার করতে হবে। যদি তা সেল ব্যাটারী অথবা ভিন্ন ২ টি করে আউটপুট সম্বলিত সাপ্লাই হয়ে থাকে তাহলে ২ টি পাওয়ার সাপ্লাই এর একটির নেগেটিভ (-) প্রান্ত এবং অপরটির পজেটিভ (+) প্রান্ত একসাথে করে সেটি গ্রাউন্ড হিসেবে ব্যবহৃত করতে হবে। অপর যে ১ টি পজেটিভ (+) প্রান্ত ও একটি নেগেটিভ (-) প্রান্ত থাকল সেগুলো আইসির পিনের মধ্যে যাবে। আর উল্লিখিত এই 741 অপ-এম্প আইসি টির –
৪ নাম্বার পিন দিয়ে নেগেটিভ (-) ১৫ ভোল্ট ইনপুট হিসেবে দিতে হবে। তাহলেই আইসি টিকে চালু করা সম্ভব।
এখানে উল্লেখ্য যে বিশেষ বিশেষ কিছু সার্কিটে 741 IC কে সাধারন পাওয়ার সাপ্লাই দ্বারা চালানো যায়। সেক্ষেত্রে এর দক্ষতাও উল্লেখযোগ্য হারে কমে আসে অথবা পূর্ণ দক্ষতায় ব্যবহার করতে চাইলে সার্কিটের জটিলতা বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়।
741 আইসি দিয়ে মজার প্রজেক্টঃ লো-পাস একটিভ ফিল্টার
তো আশা করি সবাই আইসিটির বাপ দাদা ১৪ গুস্টি জেনে গেছেন। তাহলে এবার চলুন এর একটি সক্রিয় প্রজেক্ট আমরা দেখে আসি ।
আমরা যেটা বানাতে চলেছি সেটা হল লো-পাস একটিভ ফিল্টার।
প্রশ্নঃ ফিল্টার কি?
উত্তরঃ ফিল্টার বলতে এক কথায় আমাদের মাথায় যেটা আসে তাহলো – পানির ফিল্টার। একদমই সঠিক
প্রশ্নঃ ফিল্টার এর কাজ কি?
ফিল্টার এর মধ্যে অবিশুদ্ধ ময়লা যুক্ত পানি দিলে আমরা সেখান থেকে পরিশোধিত পানি/পরিষ্কার পানি /বিশুদ্ধ পানি পেয়ে থাকি ।
কিন্তু যখন আমরা ইলেক্ট্রনিক্স এ ফিল্টার পড়ব তখন আমরা একটু আলাদা ভাবে পড়ব কিন্তু প্রসেস টা একই । ইলেকট্রনিক্স এ আমরা যা কিছু পাই তার অধিকাংশই সিগনাল নিয়ে। অর্থাৎ আমরা যা কিছুই করি সবই সিগনাল নিয়ে কাজ করি। তেমনি এটাও অন্য কিছু নয়। তাহলে প্রশ্নটিকে সাজিয়ে লিখতে পারি এভাবে-
প্রশ্নঃ ইলেকট্রনিক ফিল্টার কি ও এর কাজ কি?
ইলেকট্রনিক্স এ ফিল্টার হচ্ছে এম একটি ডিভাইস বা পদ্ধতি যেটা ব্যবহার করে আমরা শুধুমাত্র, যে মাপের সিগনাল চাই বা যেটুকু বাদ দিতে চাই তাকেই বলা হয়। তাহলে কিন্তু পানির ফিল্টার আর ইলেক্ট্রনিক্স ফিল্টার এর কাজ প্রায় একই কিন্তু উপাদান আলাদা।
ইলেকট্রনিক ফিল্টারের প্রকার ভেদ
ফিল্টার প্রধানত ২ প্রকার হয়ে থাকে । যথাঃ
প্যাসিভ ইলেকট্রনিক ফিল্টার
একটিভ ইলেকট্রনিক ফিল্টার
একটিভ ইলেকট্রনিক ফিল্টারঃ
যে ফিল্টার বানাতে আমরা অপারেশনাল এমপ্লিফায়ার আইসি, ট্রানজিস্টর সহ এমন একটিভ পার্টস গুলো ব্যবহার করি সেগুলোই একটিভ ফিল্টার নামে পরিচিত। একটিভ ফিল্টার প্রধানত ৪ প্রকারের হয়ে থাকে । সেগুলো হলঃ
লো-পাস ফিল্টার
হাই পাস ফিল্টার
ব্যান্ড পাস ফিল্টার
নচ-ফিল্টার
ইতিমধ্যেই ফিল্টার সম্পর্কে আমরা আমাদের সাইট থেকে লেখা প্রকাশ করেছি। এখানে ক্লিক করুন লেখাটি পড়তে। তাই আমরা এখানে আর বিস্তারিত না পড়ে শুধু লো-পাস ফিল্টার সম্পরকেই জানব।
লো-পাস ফিল্টার
নাম দেখেই বোঝা যাচ্ছে এটি লো ফ্রিকুয়েন্সির সিগনাল গুলোকে পাস করবে। অর্থাৎ এই ফিল্টার এর মধ্যে দিয়ে যদি আমরা বিভিন্ন মানের ফ্রিকুয়েন্সি প্রবেশ করাই তাহলে আমাদের হিসেব এর উপর ভিত্তি করে এটি শুধু একটি নির্দিষ্ট মানের লো ফ্রিকুয়েন্সি এর সিগনাল গুলোকেই প্রবাহিত হতে দিবে। কাটঅফ ফ্রিকুয়েন্সির পরবরতী গুলোকে অর্থাৎ হাই ফ্রিকুয়েন্সি গুলোকে সে আগেই আটকিয়ে দিবে। এটিই লো-পাস ফিল্টারের কাজ। আর এই কাজ টা যদি কোন অপ-এমপ্লিফায়ারআইসি, ট্রানজিস্টর দিয়ে করা হয় তাহলে তাকে আমরা একটিভ লো-পাস ফিল্টার বলব।
কোথায় ব্যবহার হয় লো-পাস ফিল্টার?
স্বভাবতই প্রশ্ন আসে কোথায় ব্যবহার হয় এই লো-পাস ফিল্টার সার্কিট গুলো? আমরা সাধারণত লো-পাস ফিল্টার গুলোকে –
ডিজিটাল সিগনাল প্রসেসিং এর সময় অবাঞ্চিত হাই ফ্রিকুয়েন্সি নয়েজ গুলো দূর করবার জন্য
কমুনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং এর ক্ষেত্রে ক্যারিয়ার ফ্রিকুয়েন্সি থেকে আসল ফ্রিকুয়েন্সি কে আলাদা করবার জন্য ব্যবহার করতে পারি।
741 IC দিয়ে লো-পাস ফিল্টার প্রজেক্ট
তো চলুন বানিয়ে ফেলি একটিভ লো-পাস ফিল্টার সার্কিট।
এই প্রজেক্ট এর জন্য যা যা লাগবে
অপারেশনাল এমপ্লিফায়ার আইসি – uA741
C1 Capacitor – 0.1 uF, 25V (Electrolytic or ceramic)
R1 Resistor – 470 Ohm, 1/4W
ডায়াগ্রাম অনুযায়ী সব কম্পোনেন্ট গুলো কানেক্ট করলেই ব্যাস কাজ শেষ। আমি এখানে ডায়াগ্রাম আর এর আউটপুট ফ্রিকোয়েন্সি রেসপন্স এর কয়েকটি ছবি দিয়েছি। এখান থেকে সাহায্য নিতে পারেন ।
লো-পাস মানে হচ্ছে সেট করে দেয়া নির্দিষ্ট রেঞ্জের লো ফ্রিকোয়েন্সি গুলোকেই এর মধ্য দিয়ে যেতে দিবে। হাই ফ্রিকোয়েন্সি গুলোকে আটকে দিবে বা প্রতিহত করবে।
আউটপুট ফ্রিকোয়েন্সি রেসপন্স কার্ভঃ
আমরা যদি এই অপারেশনাল এম্পলিফায়ার আইসি দিয়ে তৈরি লো-পাস ফিল্টারের ফ্রিকুয়েন্সি রেসপন্স কার্ভের দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাচ্ছি এর ইনপুটে ৮০-৯০ হার্জের উপরে ফ্রিকোয়েন্সি কে যেতে বাঁধা দিচ্ছে। মূলত এভাবেই লো-পাস ফিল্টার কাজ করে থাকে।
741 IC দিয়ে তৈরি লো-পাস ফিল্টার সার্কিটের ফ্রিকোয়েন্সি রেসপন্স কার্ভ
এই অপারেশনাল এমপ্লিফায়ার আইসি 741 দিয়ে বানানো প্রজেক্টের ব্যবহারঃ
আমি এটাকে পাওয়ার এমপ্লিফায়ার এর আউটপুটে সাব উফারের জন্য ব্যবহার করেছিলাম। অর্থাৎ যেকোন পাওয়ার এমপ্লিফায়ার এর আউটপুটে এটা লাগালে আউটপুট লোডে শুধু বেস পাওয়া যাবে। তাছাড়াও প্রয়োজন মত লবন, মশলা ও মনের মাধুরী মিশিইয়ে নিজেদের মত তৈরি করে নিতে পারেন।
এই প্রজেক্ট সম্পর্কিত যেকোন প্রকার প্রশ্ন অথবা অন্য কোন প্রশ্ন থেকে থাকলে নিচে কমেন্ট করে তা জানিয়ে দিতে পারেন অথবা এখানে ক্লিক করে আমার ফেসবুক প্রোফাইলেও জানাতে পারেন । যথাসাধ্য চেষ্টা করব আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে ।
আইসি 741 নিয়ে এই লেখাটিকে লাইক ও শেয়ার করতে ভুলবেন না। আপনাদের একটি লাইক আমাদের পরবর্তী লেখার জন্য সাহস যোগায়। ধন্যবাদ সবাইকে।
ডাটাশিট দিয়ে ট্রানজিস্টর নির্বাচন অনেকের জন্যই বেশ কষ্টকর। আজ এই লেখার মাধ্যমে ট্রানজিস্টর নির্বাচন এর জন্য #ডাটাশিট কে কিভাবে কাজে লাগানো যায় তাই জানবো। আমরা অনেক ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ট্রানজিস্টর বাজারে পাই না। তখন দরকার হয় অল্টারনেট বা বিকল্প কোন ট্রানজিস্টর ব্যবহার করা। কিন্তু কিভাবে বুঝবো আমার সার্কিট টিতে বিকল্প হিসাবে কোন ট্রানজিস্টরটি ঠিকমত কাজ করবে? ঠিক এমন অবস্থাতেই ডাটাশিট দরকার হয়ে পড়ে।
এছাড়াও একটি #ট্রানজিস্টর এর ডাটাশিটে বিভিন্ন রকমের অক্ষর, নাম্বার লেখা থাকে। যা মূলত উক্ত কম্পোনেন্টের বিভিন্ন বৈশিষ্ট তুলে ধরে। এর মাধ্যমেই আমরা এসব কম্পোনেন্টকে আলাদা আলাদা ভাবে চিনতে পারি (দেখতে একই হলেও)। এই আপাতঃ দূর্বোধ্য লেখাগুলো কে সহজবোধ্য করবার জন্যও আমাদের প্রয়োজন একটি অনন্য তথ্যভাণ্ডার, “ডাটাশিট“।
সতর্কবার্তাঃ একদম নতুনদের জন্য এই পদ্ধতিটি যথেষ্ট জটিল মনে হতে পারে। দীর্ঘ অনুশিলন ও বাস্তব প্র্যাকটিসের মাধ্যমে একে আয়ত্ব করতে হবে।
ডাটাশিট কি?
ডাটাশিট বলতে আমরা কি বুঝি?ডেটা/ডাটা (Data) শব্দের অর্থ তথ্য বা উপাত্ত আর শিট (Sheet) মানে পাতা বা কাগজ। অর্থাৎ ডাটাশিট মানে কোন নির্দিষ্ট বিষয় বা বস্তু সম্পর্কে তথ্য সংবলিত পাতা বা কাগজ। সুতরাং বলা যায় ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স কম্পোনেন্ট এর বিস্তারিত তথ্য, বৈশিষ্ট্য সংবলিত নথিপত্র কে কম্পোনেন্ট এর ডাটাশিট বলে।
ডাটাশিট একটি ইলেকট্রিক্যাল বা ইলেকট্রনিক কম্পোনেন্টের সকল তথ্য ধারণ করে। অর্থাৎ একটি কম্পোনেন্টের বিভিন্ন মান, লোড ইত্যাদি তথ্য এতে লেখা থাকে। বলা যায় ম্যানুয়াল এর মতো। কোনো জিনিসের ম্যানুয়ালে যেমন জিনিসটির ব্যবহারবিধি সম্পর্কে বিস্তারিত লেখা থাকে, তেমনি ডাটাশিটে কম্পোনেন্ট এর সকল প্রকার তথ্য বিস্তারিত লেখা থাকে।
ডাটাশিট (Datasheet) কিভাবে পড়তে হয়?
চলুন এবার মূল কথায় আসি। আজকে আমরা আলোচনা করব ট্রানজিস্টরডাটাশিট পড়া বা রিডিং নিয়ে। এবং ডাটাশিট কে কাজে লাগিয়ে একই রকমের বিকল্প ট্রানজিস্টরকিভাবে বের করা যায় তা নিয়ে। ডাটাশিট এর বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বুঝতে চাইলে কিছু বেসিক বিষয় জানা জরুরী। যেহেতু আজকে আমরা ট্রানজিস্টর ডাটাশিট নিয়ে আলোচনা করছি তাই আমাদের আলোচনা কে সহজবোধ্য করতে ট্রানজিস্টর এর প্রাথমিক কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো।
ট্রানজিস্টর এর গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য সমূহঃ
আজকে আমরা বাইপোলার কমন ট্রানজিস্টর নিয়ে আলোচনা করবো। প্রথমে এই ট্রানজিস্টরের কিছু বেসিক বৈশিষ্ট্য বুঝতে চেষ্টা করবো। পরবর্তী কোন এক পর্বে আমরা আইসি ডাটাশিট নিয়েও জানবো।
একটি ট্রানজিস্টরএর প্রয়োজনীয় বৈশিষ্ট্য গুলো নিম্নরূপঃ
* এটি সর্বনিম্ন বা সর্বোচ্চ কত কারেন্ট, ভোল্টেজ, ফ্রিকুয়েন্সি, সুইচিংগ্রহণ ও নিয়ন্ত্রণ করতে পারে
* পিন কনফিগারেশন বা এর বিভিন্ন পাএর সজ্জা
* এটি কোথায় ব্যবহার করা হয়
মোটামুটি ভাবে উপরের বৈশিষ্ট্য গুলোই ট্রানজিস্টর এর প্রধান এবং সচরাচর বৈশিষ্ট্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
একটি কমন ট্রানজিস্টর ডাটাশিট দেখিঃ
এখন আমরা বর্তমানে বহুল ব্যবহার হওয়া BC547, BC546 NPN ট্রানজিস্টর এর ডাটাশিটের প্রথম পাতা দেখে বুঝতে চেষ্টা করবো বিভিন্ন তথ্যসমূহ। সুবিধের জন্য পাঠকগণ নিচে দেয়া লিংক থেকে ডাটাশিট টি ডাউনলোড করে নিতে পারেন। তাহলে লেখার সাথে মিলিয়ে বুঝতে সুবিধা হবে।
BC547 ও BC546 এর ডাটাশিট টি ডাউনলোড করতে পারেন এই লিংক থেকে
আমরা জানি মোটামুটি সব জায়গায় পাওয়া যায় এই BC547 ট্রানজিস্টর টি। আমরা যদি ডাটাশিট লক্ষ্য করি তাহলে দেখবো এই ট্রানজিস্টর ডাটাশিট এর মূল বিষয়বস্তুগুলো হলঃ
Description – ট্রানজিস্টরটির টাইপ, প্যাকেজ, ভার্শন ইত্যাদি বর্ণনা
Limiting Value – সীমাবদ্ধতা বা সর্বোচ্চ/সর্বনিম্ন সীমা
Characterestic – বিশেষ গুনাগুণ সমূহ
এখন আমরা পর্যায়ক্রমে এই বিষয় গুলো সম্পর্কে জানবো।
ফিচার (Features) বা বৈশিষ্ট সমূহঃ
উপরে দেয়া ডাটাশিটের ছবি’র 1 নাম্বার পয়েন্টে BC547 এর Features এ লেখা আছে Low Current (Max. 100mA). এর মানে হচ্ছে ট্রানজিস্টরটি সর্বোচ্চ ১০০ মিলি এম্পিয়ার কারেন্ট সহ্য করতে পারবে অথবা হ্যান্ডেল করতে পারবে।
Low Current এর নিচে লেখা আছে Low voltage (Max. 65v) অর্থাৎ ট্রানজিস্টরটি সর্বোচ্চ ৬৫ ভোল্ট সহ্য করতে পারবে (BC547 এর ক্ষেত্রে )।
যদি আপনার কোন সার্কিট এর কারেন্ট রেটিং ১০০ মিলিএম্পিয়ার এর বেশি হয়, অথবা সার্কিট এর ভোল্টেজ যদি ৬৫ ভোল্ট এর বেশি হয় (BC546 এর ক্ষেত্রে ৬৫ ভোল্ট। BC547 এর ক্ষেত্রে এটি সর্বোচ্চ ৪৫ ভোল্ট) এবং আপনি সেখানে এই ট্রানজিস্টরটি ব্যবহার করেন, তাহলে ট্রানজিস্টরটি অকার্যকর হয়ে যাবে। নিচের চিত্রটি দেখলে আশাকরি বুঝতে সহজ হবে-
উপরের চিত্রে মেক্সিমামের ঘরে লাল চিহ্নিত অংশটুকু দ্বারা BC547; BC547B; BC547C ট্রানজিস্টরের ভোল্টেজ 45V কে নির্দেশ করা হয়েছে। BC546A; BC546B এর ক্ষেত্রে তা ৬৫ ভোল্ট।
ট্রানজিস্টরের Vceo এবং Vcbo কি?
Vceo দ্বারা ট্রানজিস্টরের বেজ এ কোন সিগনাল প্রদান না করে কালেক্টর থেকে ইমিটার ভোল্টেজ এর সর্বোচ্চ মান কে বোঝানো হয়। কমন কালেক্টর টাইপ সার্কিট এর ক্ষেত্রে এই Vceo মান কেই ট্রানজিস্টরের সর্বোচ্চ ভোল্টেজ বলে গণ্য করা হয়।
অনুরূপভাবে, Vcbo দ্বারা কালেক্টর ও বেজ ভোল্টেজ এর সর্বোচ্চ সীমা নির্দেশ করে। কমন বেজ টাইপ সার্কিটের ক্ষেত্রে এই মানটি দ্বারাই উক্ত ট্রানজিস্টরের সর্বোচ্চ ভোল্টেজ নির্দেশিত হয়।
ট্রানজিস্টরের বেজ এ সর্বোচ্চ কত ভোল্ট দেয়া যায়?
এটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্নসার্কিট ডিজাইনিং এর ক্ষেত্রে যার উত্তর ও ডাটাশিটে দেয়া আছে। উপরে দেয়া ছবিতে লক্ষ্য করেলে দেখতে পাবেন Vebo নামক একটি ঘর আছে।
এই Vebo দ্বারা কোন ট্রানজিস্টরের ইমিটার ও বেজ এর মধ্যকার সর্বোচ্চ ভোল্টেজ উল্লেখ করা থাকে (কমন কালেক্টর সার্কিটের ক্ষেত্রে)। এই ট্রানজিস্টরটির ক্ষেত্রে এটি ৬ ভোল্ট।
সাধারণত ট্রানজিস্টর এর তিনটি পা থাকে। যথাঃ বেস, কালেক্টর এবং ইমিটার। আবার মসফেটের ক্ষেত্রে পা গুলোর নাম ভিন্ন (ড্রেন, গেট ও সোর্স)। BC547 এর ডাটাশিট এ সুন্দর করে চিত্রের মাধ্যমে এর পিন আউট দেখানো হয়েছে। বোঝানোর সুবিধার্থে ছবি দিয়ে তা দেখানো হলো।
ডাটাশিট এ ট্রানজিস্টরের পিনিং/পিন আউট
আমরা যারা হবিষ্ট আছি তারা মোটামুটি সবাই BC547 ট্রানজিস্টর এর সাথে পরিচিত। মূলত আমরা, হবিস্টরা যেসব সার্কিট নিয়ে কাজ করে থাকি তার মধ্য সবচেয়ে বেশি সুইচিং, ভোল্টেজ প্রভৃতিকে ড্রাইভ দেওয়ার জন্য এই ট্রানজিস্টরই ব্যবহার করে থাকি।
এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে বিভিন্ন কারণে ডাটাশিটে উল্লেখকৃত পিন আউট এর সাথে বাস্তব ক্ষেত্রে ট্রানজিস্টরের পিন আউট মিলে না। এর প্রধান কারণ-
একই ট্রানজিস্টর বিভিন্ন ম্যানুফেকচারার গণ প্রস্তুত করেন। এবং তাঁদের নিজস্ব স্ট্যান্ডার্ড মোতাবেক ডাটাশিটে এই পিন আউটের কথা উল্লেখ থাকে। কিন্তু আমরা সচারচর নেটে পাওয়া যায় এমন ডাটাশিট গুলো ফলো করি যেখানে ঐ ম্যানুফেকচারারের পিন আউট বা লেগ কনফিগ থাকে না।
একই ম্যানুফেকচারার কোম্পানি একই পার্টসের বিভিন্ন ভার্শনে এই পিন আউটের পরিবর্তন ঘটালেও এই ঘটনা দেখা যায়।
অধিক মুনাফার আশায় স্থানীয় ব্যবসায়ীগণ ক্ষেত্র বিশেষে ভিন্ন কোন সস্তা পার্টসের নাম্বার মুছে অধিক দামী পার্টসের নাম্বার স্থাপন করে তা বিক্রি করেন।
এসমস্ত ঝামেলা এড়াতে মাল্টিমিটার দিয়ে ট্রানজিস্টরের লেগ বের করে নেয়াই সবচেয়ে ভালো উপায়।
একটি ট্রানজিস্টর সর্বোচ্চ কত এম্পিয়ার কারেন্ট দিতে পারে?
আমরা সচারচর ট্রানজিস্টরের আউটপুট নেই কালেক্টর থেকে। সুতরাং আমরা যদি জানতে পারি যে আমাদের নির্দিষ্ট ট্রানজিস্টরের কালেক্টর সর্বোচ্চ কত এম্পিয়ার কারেন্ট দিতে পারে তাহলেই আমরা উক্ত ট্রানজিস্টরের মেক্সিমাম কারেন্ট রেটিং বুঝতে পারবো। উদাহরণ স্বরূপ আমাদের নেওয়া BC547 ট্রানজিস্টরের কথা বলছি। নিচের চিত্রটিতে এর সর্বোচ্চ কারেন্ট রেটিং ডাটাশিট থেকে তুলে দেওয়া হলো-
ডাটাশিট এ উল্লেখিত ট্রানজিস্টরের সর্বোচ্চ কারেন্ট রেটিং
এখানে Ic দ্বারা ট্রানজিস্টরের সর্বোচ্চ কালেক্টর কারেন্ট বোঝানো হয়েছে। Icm দ্বারা পিক কারেন্ট বোঝানো হয়েছে। সাধারন ভাবে হিসাব করবার সময় কালেক্টর কারেন্ট (Ic) কেই মূল ধরা হয়। এই ট্রানজিস্টর ডাটাশিট অনুযায়ী-
BC546, BC547 ট্রানজিস্টর দ্বয় সাধারণ ভাবে ১০০ মিলি এম্পিয়ার বা ০.১ এম্পিয়ার কারেন্ট সরবরাহ করতে পারে যা Ic (Collector Current) দ্বারা ডাটাশিট টিতে প্রকাশ করা হয়েছে।
খুব স্বল্প সময়ের জন্য (মাত্র কয়েক ন্যানো সেকেন্ড থেকে কয়েক মিলি সেকেন্ড) সর্বোচ্চ ২০০ মিলি এম্পিয়ার বা ০.২ এম্পিয়ার কারেন্ট সরবরাহ করতে পারে যা কিনা এই ডাটাশিটে Icm (Collector Current, Maximum) দ্বারা নির্দেশিত হয়েছে।
এপ্লিকেশন (Applications) – ব্যবহারঃ
ট্রানজিস্টর টির Applications এর দিকে তাকালে দেখতে পাই এটি General Purpose Switching And Amplification এ ব্যবহৃত হয়। যার অর্থ এটি সাধারণ একটি ট্রানজিস্টর এবং সাধারণ দৈনন্দিন কাজ যেমন: সুইচিং, ড্রাইভিং, ছোট এম্পিলিফিকেশন এর জন্য ব্যবহার করা যায়।
এখন Description নিয়ে কিছু বলা যাক। BC547 এর ডাটাশীট টিতে লেখা আছে এটি একটি NPN transistor in a TO-92; SOT-54 plastic package। যার অর্থ ট্রানজিস্টরটি একটি npn transistor এবং ট্রানজিস্টরটি TO-92; SOT-54 Plastic Package এ আবৃত।
এখানে উল্লেখ্য যে বিভিন্ন ট্রানজিস্টরের প্যাকেজ বলতে ট্রানজিস্টরের বাইরের আকৃতিকে বুঝায়।
উদাহরণ হিসাবে BD139, BD140 ট্রানজিস্টরের কথা বলা যেতে পারে। এই ট্রানজিস্টর দুটি TO225 প্যাকেজের আওতাভুক্ত। একই ভাবে 2N3055, MJE3055 প্রভৃতি TO204AA গোত্রের অন্তর্ভুক্ত। নিচের ছবিতে কিছু কমন ট্রানজিস্টরের ভিন্ন ভিন্ন প্যাকেজের ছবি দেয়া হলো-
বিভিন্ন ট্রানজিস্টরের প্যাকেজ বা বহিঃ আকৃতি
ক্যারেক্টারিস্টিক (CHARACTERISTICS) – গুণাবলীঃ
ক্যারেক্টারিস্টিক অংশটি যেকোন ডাটাশিটের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ যার মাধ্যমে কোন ইলেকট্রনিক পার্টসের বিশেষ গুণাবলীসম্পর্কে আমরা অবহিত হতে পারি। যেমন কোন ট্রানজিস্টর সর্বোচ্চ কত ফ্রিকোয়েন্সি পর্যন্ত ভালোভাবে কাজ করতে পারবে, এর সর্বোচ্চ এম্পলিফিকেশন বা গেইন কত হবে তা এই অংশ থেকেই জানা যায়। মূলত ডাটাশিটে এই টেবলিটির মাধ্যমেই আমরা কোন পার্টসের বিকল্প বা অল্টারনেটিভ বের করতে পারি। নিচে আমরা ডাটাশিট থেকে প্রাপ্ত BC546/BC547 এর ক্যারেক্টারিস্টিক টেবিল টি দেখতে পাচ্ছি-
ডাটাশিট এ ট্রানজিস্টরের গুণাবলী বা ক্যারেক্টারিস্টিক টেবিল
প্রস্তুত কারক কোম্পানি কোন ট্রানজিস্টর তৈরি করবার পরে উক্ত ট্রানজিস্টরকে বিভিন্ন ভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা লব্ধ ফলাফল লিপিবদ্ধ করেন। এই টেবলটিতে উক্ত পরীক্ষা নিরীক্ষার বিভিন্ন মান কেই তুলে ধরা হয়েছে। যে কারনে ডাটাশিট এর ক্যারেক্টারেস্টিকটেবিলটি লক্ষ্য করলে আমরা Minimum, Maximum, Typical সহ বিভিন্ন রকম টেস্টিং Condition ও দেখতে পাই। নতুন কোন সার্কিট ডিজাইন করতে গেলে সাধারণত এই টিপিক্যাল (Typical) ভ্যালু কে ধরেই বাদ বাকি কম্পোনেন্টের মান বের করা হয়।
আমরা এখন এই টেবিলের বিভিন্ন প্যারামিটার সম্পর্কে সংক্ষেপে জানবো। প্রসঙ্গত এখানে উল্লেখ থাকে যে ভিন্ন ভিন্ন ম্যানুফেকচারার গণ ক্ষেত্রবিশেষে এই শব্দগুলোর কিছুটা এদিক সেদিক করে ব্যবহার করে থাকেন।
ট্রানজিস্টরের Icbo কি?
ডাটাশিটে Icbo দ্বারা কোন ট্রানজিস্টরের কালেক্টর প্রান্ত থেকে বেজ এর কাট অফ কারেন্ট কে নির্দেশিত করে যা এই ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২৫ ন্যানো এম্পিয়ার পর্যন্ত হতে পারে।
ডাটাশিটে ট্রানজিস্টরের Iebo কি
Iebo দ্বারা ইমিটার প্রান্ত থেকে বেজ এর কাট অফ কারেন্ট কে নির্দেশ করে
ট্রানজিস্টরের hFE কি?
ডাটাশিটে ট্রানজিস্টরের hFE অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। কারণ আমরা জানি ট্রানজিস্টর বিবর্ধক বা এম্পলিফায়ার হিসেবে কাজ করতে পারে। আবার সব ট্রানজিস্টরের এম্পলিফাই করবার ক্ষমতাও সমান নয়। তাই ডাটাশিটে hFE দ্বারা কোন ট্রানজিস্টরের এম্পলিফাই করবার ক্ষমতাকে প্রকাশ করাহয়। hFE কে সাধারণ ভাষায় গেইন বলা হয়ে থাকে। সহজ ভাষায় বললে ট্রানজিস্টরের বেজ এ কারেন্ট দিলে তা আউটপুটে কত গুণ এম্পলিফাই হবে সেটি।
1 নাম্বার পয়েন্ট টি লক্ষ্য করলে আমরা দেখবো যে BC546B; BC547B এর টিপিক্যাল hFE ভ্যালু দেয়া আছে ১৫০। একে পড়তে হয়, BC547B এর কমন কালেক্টর কারেন্ট গেইন ১৫০.
অর্থাৎ, এই ট্রানজিস্টরটির বেজ এ যদি ১ মিলি এম্পিয়ার কারেন্ট দেয়া হয় তাহলে তাকে ১৫০ গুণ এম্পলিফাই বা বিবর্ধন করে কালেক্টরে এই কারেন্টের পরিমাণ হবে ১৫০ মিলি এম্পিয়ার।
VceSat কি?
ডাটাশিটে VceSat দ্বারা ট্রানজিস্টরের কালেক্টর এবং ইমিটার এর স্যাচুরেশন ভোল্টেজ কে বুঝিয়ে থাকে।
VbeSat কি?
ডাটাশিটে VbeSat দ্বারা বেজ এবং ইমিটারের স্যাচুরেশন ভোল্টেজ কে বোঝায়।
Cc ও Ce কি?
Cc দ্বারা কোন ট্রানজিস্টরের কালেক্টর ক্যাপাসিটেন্স ও Ce দ্বারা ইমিটার ক্যাপাসিটেন্স বোঝায়। হাই ফ্রিকোয়েন্সি সার্কিট ডিজাইন ও ট্রাবলশুটিং এর সময় এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সাধারণ ইলেকট্রনিক সার্কিটে তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়।
ডাটাশিটে fT দ্বারা কি বুঝায়?
এখন ডাটাশিটের আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো যাকে ডাটাশিটে fT দ্বারা প্রকাশ করা হয়। fT একটি সংক্ষিপ্ত রূপ যার পূর্ণ রূপ হচ্ছে ফ্রিকোয়েন্সি ট্রানজিশন। আমরা জানি ট্রানজিস্টর কোন সিগনাল কে এম্পলিফাই করবার পাশাপাশি সুইচ হিসাবেও খুব দক্ষভাবে কাজ করতে পারে। কিন্তু কত দ্রুত অন বা অফ হতে পারে তাকে fT এর মাধ্যমে বোঝা যায়।
বিকল্প বা অল্টারনেট ট্রানজিস্টর নির্বাচন করাঃ
প্রথমতই বুঝতে হবে আমার সার্কিট টি কি ধরনের এবং ব্যবহৃত ট্রানজিস্টর টির ভূমিকা কি উক্ত সার্কিটে। (সুইচিং, ড্রাইভিং, বাফারিং, ইম্পিড্যান্স ম্যাচিং ইত্যাদি)
আমি যে ট্রানজিস্টরের অল্টারনেটিভ/বিকল্প খুঁজছি সেটি কি ধরনের (ক্যারেক্টারিস্টিক, বিশেষত্ব, বিশিষ্ট প্রভৃতি)
দ্বিতীয় অংশটুকু বোঝা বেশ সহজ। কোন ট্রানজিস্টরের ডাটাশিট পড়লে তা বোঝা যায়। তবে প্রথম অংশটুকু বুঝতে গেলে কিছুটা সময় আর পরিশ্রমের প্রয়োজন।
সহজ একটা বুদ্ধি হচ্ছে, একই ধরণের অন্যকোন ট্রানজিস্টর ব্যবহার করা।
কিভাবে বুঝবো কোন ট্রানজিস্টর টি একই ধরণের?
প্রথমে আমার হাতে যে ট্রানজিস্টর টি আছে তার ডাটাশিট ভালোভাবে পড়তে ও বুঝতে হবে।
কোন ম্যানুফেকচারার বা কোম্পানির তৈরি তা বের করলে অনেক ক্ষেত্রে সুবিধা হয়।
চেষ্টা করতে হবে উক্ত ম্যানুফেকচারার কোম্পানি কর্তৃক অল্টারনেট কোন ট্রানজিস্টরের নির্দেশনা দেয়া আছে কিনা তা খোঁজা। এজন্য ইন্টারনেটের সাহায্য নিতে পারেন। অনেক সময়ই ম্যানুফেকচারার কোম্পানি গুলো অল্টারনেট মডেল সাজেস্ট করেন। সম্ভব হলে সেটি ব্যবহার করা উচিৎ।
এসবের পরেও বিকল্প/অল্টারনেট পাওয়া না গেলে ডাটাশিটবা ডাটাবুকথেকে এমন একটি ট্রানজিস্টর বের করতে হবে যার-
আসল ট্রানজিস্টরের মত এটিরও মেক্সিমাম কারেন্ট ডেলিভারি বা হ্যান্ডেল করবার ক্ষমতা থাকতে হবে।
আসল ট্রানজিস্টরের ডাটাশিটে প্রাপ্ত মেক্সিমাম ফ্রিকোয়েন্সি সীমার নিচে অল্টারনেট ট্রানজিস্টর টিকে কাজ করতে হবে।
সংক্ষেপে বললে- আসল ট্রানজিস্টরের গেইন, মেক্সিমাম ভোল্টেজ, মেক্সিমাম কারেন্ট ও মেক্সিমাম ফ্রিকোয়েন্সি মিলিয়ে যেকোন অল্টারনেট ট্রানজিস্টর ব্যবহার করা যায়।
তাহলেই আমরা পেয়ে যাবো আমাদের কাঙ্ক্ষিত ট্রানজিস্টরের সমকক্ষ একটি অল্টারনেট ট্রানজিস্টর। ডাটাশিটের এই পদ্ধতিতে শতকরা ৯০ ভাগ ক্ষেত্রেই সাফল্য লাভ করা যায়। শতভাগ সফলতার জন্য ম্যানুফেকচারার কোম্পানি কর্তৃক নির্দেশিত অল্টারনেট বা বিকল্প ব্যবহার করাই বাঞ্চনীয় যা অনেক সময়ই সহজলভ্য হয়না।
বি.দ্রঃ বহুল জনপ্রিয়তা, ব্যবহার্য্য দিক ও সুবিধার কথা ভেবে এই লেখায় উল্লেখিত তথ্য সমূহ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কমন কালেক্টর টাইপ ও কমন ইমিটার টাইপ সার্কিট কে মাথায় রেখে লেখা হয়েছে।
আলট্রাসনিক/সোনার সেন্সর হ্যাকঃ এক পিনেই করুন ইন্টারফেসিং (HC-SR04)
ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যালের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সেন্সর। আধুনিক গাড়ি, উড়োজাহাজ থেকে শুরু করে কোয়াড কপ্টার, ড্রোন, রিমোট চালিত খেলনা গাড়ি, রোবট সবকিছু তেই সেন্সর পরিলক্ষিত হয়। আজকে আমরা তেমনি খুব জনপ্রিয় একটি সেন্সরকে হ্যাক করবার পদ্ধতি জানবো।
সেন্সর কি?
সেন্সর হচ্ছে এমন একধরণের বিশেষ যন্ত্র, যা আশেপাশের পরিবেশের নির্দিষ্ট কোনও তথ্য/উপাত্ত সংগ্রহ বা “সেন্স”করতে পারে। বিভিন্ন ধরনের সেন্সর বিভিন্ন রকমের তথ্য সংগ্রহ করে। যেমন, থারমিস্টর তাপমাত্রা সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করতে পারে, ফ্লেম সেন্সর আগুনের উপস্থিতি বুঝতে পারে, দূরত্ব নির্ণয় করতে পারে ডিসট্যান্ট মেজারিং সেন্সর। ইত্যাদি ছাড়াও প্রক্সিমিটি সেন্সর, স্মোক সেন্সর, গ্যাস সেন্সর প্রভৃতি বহুল ভাবে জনপ্রিয়।
সেন্সর কিভাবে কাজ করে?
সেন্সরপরিবেশের বিভিন্ন তথ্য বা উপাত্ত গ্রহণ করে সেগুলোকে বৈদ্যুতিক সিগনালে পরিবর্তন করে। আমরা সেই সিগনাল দ্বারা কোন ডিভাইস কে অন-অফ করতে পারি। আবার প্রয়োজনে তাকে মাইক্রোকন্ট্রোলার ও ডিসপ্লের সাথে সংযুক্ত করে তথ্যটিকে দৃশ্যমান করতে পারি। প্রয়োজনে এই উপাত্ত গুলোকে স্থায়ী ভাবে সেভ করেও রাখা যায়।
ডিস্ট্যান্ট মেজারিং সেন্সরঃ
বস্তুর দূরত্ব মাপার জন্য বিভিন্ন সেন্সর ব্যবহার করা হয়। তবে প্রায় নিখুঁত রিডিং ও সহজলভ্যতার কারণে বেশিরভাগ হবিস্টই আলট্রাসনিক সেন্সর ব্যবহার করেন। যদিও ডপলার এফেক্ট ব্যবহার করে এমন সেন্সর দিয়েও ডিস্ট্যান্ট মেজারিং করা যায় কিন্তু তা অনেক দামী। আমাদের ব্যবহৃত সেন্সরটিকে আলট্রাসনিক সেন্সর, ডিস্ট্যান্ট মেজারিং সেন্সর, সোনার সেন্সর ইত্যাদি নামেও ডাকা হয়। এদের মধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে সহজলভ্য HC-SR04 সেন্সর। তবে এই সেন্সর মাইক্রোকন্ট্রোলারের সাথে ইন্টারফেস করার জন্য ২টি পিন লাগে। মাত্র ১টি পিন দিয়েই ইন্টারফেস করা যায় এরকম সেন্সরও পাওয়া যায়, তবে সেগুলোর দাম অত্যন্ত বেশি এবং আমি যতদূর জানি, বাংলাদেশে সহজলভ্য নয়।
তবে, চিন্তার কোনও কারণ নেই, একটু মাথা খাটিয়ে HC-SR04 এর মাত্র ১টি পিন দিয়েই মাইক্রোকন্ট্রোলারের সাথে ইন্টারফেস করা যায়! সেটিই আজকে আমরা দেখবো। যদিও এই টিউটোরিয়ালে আরডুইনো বোর্ড ব্যবহার করা হয়েছে, তবে এই টেকনিক অন্যান্য মাইক্রোকন্ট্রোলার প্লাটফর্মেও কাজ করবে।
সেন্সরের কেন ১টি পিন ব্যবহার করছি?
এখন আপনার মনে হতে পারে কেন আমরা ২টি পিনের বদলে ১টি পিন ব্যবহার করছি। এখানে উদাহরণ হিসেবে ডিজিটাল মেজারিং টেপ প্রজেক্টের কথা বলা যায়। যেখানে, মাটি থেকে সিলিং এর উচ্চতা মাপবেন। ডিজিটাল মেজারিং টেপ লম্বালম্বি করে সিলিং এর দিকে তাক করলে এলসিডিতে সিলিং এর উচ্চতা প্রিন্ট হবে। এমন ধরনের প্রজেক্ট গুলোতে এলসিডি ডিসপ্লে ছাড়াও আরো অনেক সেন্সর ব্যবহার করতে হয়। তখন দেখা যায় মাইক্রোকন্ট্রোলারের পিনের স্বল্পতা। আবার অন্য বেশি পিন সংবলিত মাইক্রোকন্ট্রোলারের দাম ও হয় অনেক। সেসব ক্ষেত্রে এই পদ্ধতিটি কাজে আসবে। অর্থাৎ, প্রজেক্ট সম্পূর্ণ করার জন্য মাইক্রোকন্ট্রোলারে যখন পিন অবশিষ্ট থাকে না তখন এটি বেশ কার্যকরী।
কিভাবে ১টি পিন দিয়ে কাজ সারা হয়?
আমরা জানি, HC-SRO4 সেন্সরের ট্রিগার পিনে ইনপুট দিয়ে সাউন্ড পালস সেন্ড করতে হয়। এবং ইকো পিনে রিসিভ করতে হয়। তবে, যখন একটা পিন কাজ করে, তখন বিপরীত পিন টা ফ্রোজেন বা অকার্যকর থাকে। অর্থাৎ, যখন ইকো পিনে সিগনাল আসে তখন ট্রিগ পিন অকার্যকর থাকে। আবার, ট্রিগার পিনে সিগনাল দেয়ার সময় ইকো পিন অকার্যকর থাকে।
তাই, আমরা ইকো আর ট্রিগার পিন শর্ট করে দিয়ে ট্রিগার পিনে যা ইনপুট দেয়ার কথা সেই সিগনাল শর্ট করা ইকো আর ট্রিগার পিনে দিয়ে যদি তার পরপরই আরডুইনোর উক্ত পিনটি ইনপুট পিন হিসেবে কোডে ডিক্লেয়ার করে দেই, তাহলে ইকো পিনের সিগনাল উক্ত পিনে রিসিভ করতে পারবো, তাহলে ১টা পিন দিয়েই ট্রিগার ও ইকো পিনের কাজ হয়ে যাবে।
উল্লেখ্য যে, এই টেকনিক আরডুইনোর যেকোনো মডেলে কাজ করে।
উপযুক্ত সার্কিট ডিজাইনঃ
এরজন্য প্রথমে উপযুক্ত ভাবে সার্কিট টিকে ডিজাইন করতে হবে। যার ফলে আরডুইনোর সাথে সেন্সর সঠিক ভাবে সংযুক্ত থাকে। আমরা নিচের ডায়াগ্রাম অনুযায়ী সংযোগ দেবো-
রোবট আমরা প্রায়ই মুভি তে দেখে থাকি। রোবট তৈরী করার স্বপ্নও দেখেছি।
কেউ কেউ হয়তো খেলনা গাড়ি খুলে সেটা দিয়ে রোবট বানানোর চেষ্টা করেছি। আপনি যদি রোবটিক্স ভালমত শেখেন, তাহলে হয়তো একদিন সত্যি সত্যিই সিনেমার টারমিনেটর এর মত রোবট তৈরী করেতে পারবেন!
কিন্তু সেজন্য আপনাকে প্রথমে একটি ছোট রোবট বানিয়ে রোবটিক্স এর জগতে প্রবেশ করতে হবে। আজকে আমরা তেমনি একটি রোবট তৈরির কৌশল নিয়ে লিখছি।
আমরা আজকে বানাবো অবস্টাকল এভয়ডার রোবট গাড়ি। শুরুতেই কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন যেমন রোবট কাকে বলে, রোবট কি এসম্পর্কে জেনে নেই
রোবট কী বা রোবট কাকে বলে
রোবট (robot) হচ্ছে যান্ত্রিক ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (Artificial Intelligence – AI) সম্পন্ন বিশেষ যন্ত্র। যা কিনা প্রোগ্রামিং, ইলেকট্রনিক এবং ইলেকট্রিক্যাল সার্কিট দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।
রোবট কিভাবে কাজ করে?
সব রোবটেরই একটি “ব্রেইন” থাকে, যেখানে যাবতীয় প্রাপ্ত তথ্য প্রক্রিয়াজাত করা হয় এবং সে অনুসারে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়ে থাকে। এ ব্রেইন CPU (Central Processing Unit) নামেও পরিচিত।
ধরুন, একটি রোবট চলছে। হটাত তার সামনে থাকা সেন্সর রোবটের ব্রেইনে তথ্য পাঠালো যে সামনে পানি আছে। ব্রেইন তখন তার প্রোগ্রাম অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিবে যে সামনে পানি থাকলে যাওয়া যাবেনা।
তখন সে মোটরকে থামার নির্দেশ দিবে এবং পিছিয়ে যাবে। বেসিক একটি রোবট মূলত এভাবেই কাজ করে।
আরসি গাড়ি (RC Car) ও রোবটের মাঝে মূল পার্থক্য
আরসি বা ইংরেজী RC এর পূর্ণরূপ হচ্ছে রিমোট কন্ট্রোল। অর্থাৎ যে গাড়ি কে রিমোটের মাধ্যমে দূরে থেকে নিয়ন্ত্রণ বা কন্ট্রোল করা যায় তাকেই আরসি গাড়ি বলে।
একই রকম ভাবে আরসি প্লেন, কোয়াড কপ্টার ও আছে। কিন্তু এই আরসি সুবিধা সম্পন্ন যন্ত্রগুলো কোনটিই রোবট নয়। কারণ রোবটের মূল সূত্র হচ্ছে-
A machine capable of carrying out a complex series of actions automatically, especially one programmable by a computer. (source: Google Arts & Culture)
অর্থাৎ-
যে মেশিন নিজে নিজেই বিভিন্ন জটিল সমস্যার সমাধান করতে পারে বিশেষত যেটি প্রোগ্রামের মাধ্যমে চালিত হয় বা নিয়ন্ত্রণ করা যায় তাকে রোবট বলে।
কাজেই, শুধু প্রোগ্রাম করলে বা দেখতে “রোবট” বা মানুষ সদৃশ হলেই যেমন একটি রোবট তৈরী হয়ে যাবে না তেমনি কোন যন্ত্র যদি বিভিন্ন জটিল অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে নিজে নিজে সিদ্ধান্ত নিতে না পারে তাহলেও রোবট হবে না।
ঠিক একই কথা ড্রোন এর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। সত্যিকারের ড্রোন অবশ্যই বিভিন্ন জটিল অবস্থায় (রিমোট কন্ট্রোল রেঞ্জ এর বাইরে চলে গেলে, ফুয়েল/ব্যাটারি চার্জ কমে গেলে, শত্রু দ্বারা আক্রান্ত হলে, ইত্যাদি) নিজস্ব সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতা থাকতে হবে।
তাহলেই তাকে ড্রোন বলে পরিগণিত করা যাবে। শুধু রিমোট, ভিডিও ক্যামেরা (FPV), দেখতে প্লেন এর মত হলেই সেটি ড্রোন নয়।
রোবটের ব্রেইন
রোবটের ব্রেইন হিসেবে সাধারণত মাইক্রোকন্ট্রোলার অথবা মাইক্রোপ্রসেসর ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
তবে মাইক্রোকন্ট্রোলার কোনও এক্সট্রা কিছুর সাহায্য ছাড়া একাই চলতে পারে, যেখানে মাইক্রোপ্রসেসরের বিভিন্ন জিনিস যেমন মেমোরি স্টোরেজ, অপারেটিং সিস্টেম ইত্যাদি দরকার হয়।
উদাহারন হিসাবে দেয়া যায়ঃ AVR কোম্পানির Atmega328, Attiny85 ইত্যাদি মাইক্রোকন্ট্রোলার।
যেহেতু আমাদের বানানো প্রথম রোবট খুব কঠিন কোন কাজ করবেনা, তাই আমরা মাইক্রোকন্ট্রোলারই ব্যবহার করব।
পরে আরও এডভান্সড কাজ করার জন্য আপনি রাস্পবেরি পাই, ব্যানানা পাই মাইক্রোপ্রসেসর সম্বলিত মাইক্রকম্পিউটার ব্যবহার করতে পারেন।
তৈরী করি আজকের রোবট – অবস্টাকল এভয়ডার
আমরা আজকে এমন একটি রোবট বানানো শিখবো, যেটি নিজে থেকেই চলতে পারে এবং সামনে যদি কোনও বাঁধা আসে, তাহলে সে নিজে থেকেই ঘুরে বাঁধা এড়িয়ে চলতে পারে। রোবটটি বানানোর জন্য যা যা দরকার হবে তা হলো –
৮। সোল্ডারিং আয়রন, সল্ডার, হটগ্লু গান ও গ্লুস্টিক, সুপারগ্লু।
রোবটের চেসিসঃ
রোবটের চেসিস হিসেবে আপনি ইচ্ছা করলে বিভিন্ন অনলাইন শপে এভেইলেবল প্লাস্টিকের চেসিস গুলো কিনতে পারেন। তবে আমি রেকমেন্ড করব নিজেই বানিয়ে নেয়ার।
নিজে বানিয়ে নিলে নিজের পছন্দমতো মাপের বানাতে পারবেন। উপাদান হিসেবে হালকা কাঠ অথবা পিভিসি শিট (যা প্লাস্টিক উড নামেও পরিচিত) ব্যবহার করতে পারেন। ছোটখাট হালকা রোবট এর জন্য পিভিসি শিটই বেস্ট।
আমাদের অবস্টাকল এভয়েডিং রোবটের চ্যাসিসটি খুব সহজ। তাই স্টেপ বাই স্টেপ ছবি দিলাম না। আশা করি নিচের ছবিগুলো দেখে নিজেই বানিয়ে নিতে পারবেন।
অবস্টাকল এভয়ডিং রোবটের চেসিসচেসিসের মধ্যে ক্যাস্টর হুইল বসানোর প্রকৃয়াচেসিস নির্মান সম্পন্ন হবার পরে
মোটর কন্ট্রোলার/ড্রাইভার
রোবটকে চালানোর জন্য আমাদের মোটর প্রয়োজন। এই মোটর প্রচুর কারেন্ট টানে, তাই মাইক্রোকন্ট্রোলারের পিন থেকে সরাসরি পাওয়ার দেয়া সম্ভব নয়।
এজন্য মোটরকে মোটর ড্রাইভারের মাধ্যমে মাইক্রোকন্ট্রোলার দিয়ে কন্ট্রোল করা হয়। এছাড়া মাইক্রোকন্ট্রোলার বোর্ডের একটি সুবিধা হল, এর মাধ্যমে মোটরকে সোজা-উল্টো যেকোনো দিকেই ঘোরানো যায়।
আপনি আপনার রোবটের আকার ও কাজের ধরণ অনুযায়ী যেকোনো আরডুইনো বোর্ড ব্যবহার করতে পারবেন। যদি মাঝারি সাইজের হয় তাহলে আরডুইনো উনো ব্যবহার করতে পারেন।
আর যদি বেশি মেমোরি/অনেকগুলো ইনপুট/আউটপুট পিন দরকার হয় এবং রোবটের সাইজ মোটামুটি বড় হয় তাহলে আরডুইনো মেগা ব্যবহার করতে পারেন।
তবে উনো/মেগাতে হয় জাম্পার তার দিয়ে কানেকশন দিতে হবে, অথবা শিল্ড বানিয়ে নিতে হবে। এই তার লুজ হয়ে বারবার খুলে যায়।
সেজন্য আমার বেশিরভাগ রোবটে আরডুইনো ন্যানো ব্যবহার করি। ন্যানোর নিচে মেইল হেডার থাকায় একটা ভেরোবোর্ডে ২ সারি ফিমেল হেডার সোল্ডার করে ন্যানো কে সেটায় বসাই।
রোবটের অন্যান্য কানেকশন সেই সার্কিটে সোল্ডার করে দেই।
এ পদ্ধতির সুবিধা হচ্ছে, আমি যেকোনো সময় ন্যানোটা সার্কিট থেকে খুলে অন্য জায়গায় ব্যবহার করতে পারি, আবার রোবট চালানোর সময় ন্যানো প্রোগ্রাম করে সার্কিটে বসিয়ে দিলেই হয়। কিন্তু উনো/ মেগা ও সিমিলার বোর্ডগুলোতে জাম্পার দিয়ে কানেকশন দেয়ার জন্য আরডুইনো খোলার জন্য সব সার্কিট খুলতে হয়। তাই ছোট রোবটে ব্যবহার করার জন্য এবং স্থায়ী রোবট (যেটা পরবর্তীতে খোলা হবেনা) এর জন্য ন্যানো আর ন্যানোর জন্য সার্কিট বানিয়ে ব্যবহার করাই ভাল।
এই সেন্সরের কাজ হচ্ছে সামনে কোনও বস্তু থাকলে কত দূরত্বে আছে তা মাপা। এই কাজটি করা হয় সোনার (Sonar) ওয়েভের সাহায্যে।
সেন্সর প্রথমে একটা হাই ফ্রিকুয়েন্সি সাউন্ড পালস পাঠায় তারপর প্রতিধ্বনির জন্য অপেক্ষা করে।
যখন প্রতিধ্বনি ফেরত আসে সেটা রিসিভারে ডিটেক্ট করে হিসেব করে বের করে যেখানে প্রতিধ্বনিত হয়ে শব্দটি ফেরত এসেছে সে জায়গা বা বস্তুটি কত দূরে।
মানুষের কান ২০-২০০০০ হার্জ পর্যন্ত শব্দ শুনতে পারে। এই শব্দের ফ্রিকোয়েন্সি এর চেয়ে বেশি হওয়ায় আমরা এই শব্দ শুনতে পারিনা।
যেহেতু এটি আলট্রা সাউন্ড ব্যবহার করে এই কাজটি করে থাকে তাই এর আরেক নাম আলট্রাসনিক সেন্সর।
এতে ৪টি পিন আছে। প্রথম পিন হচ্ছে VCC, এতে ৫ ভোল্ট দিতে হয়। সাধারণত আরডুইনোর ৫ ভোল্টপাওয়ার লাইন থেকে এখানে পাওয়ার সাপ্লাই করা হয়।
এরপরে ট্রিগার পিন। এখানে মাইক্রোকন্ট্রোলার দিয়ে সিগনাল দিলে সাউন্ড পালস পাঠানো হয়। প্রতিধ্বনি ফেরত আসলে ইকো পিনে আউটপুট আসে। আর গ্রাউন্ড পিনকে গ্রাউন্ডে লাগাতে হয়।
গিয়ার মোটর ও ক্যাস্টর হুইল
সাধারণ মোটর এর গতি বেশি থাকে কিন্তু সেগুলো বেশি ওজন নিতে পারেনা। কিন্তু রোবটের জন্য দরকার হয় এমন মোটর যার গতি খুব বেশি না কিন্তু যথেষ্ট ওজন বহন করতে পারে।
তাই মোটরে বিভিন্ন গিয়ার যোগ করে গতি কমিয়ে এবং ওজন নেয়ার ক্ষমতা বা টর্ক (Torque) বাড়িয়ে গিয়ার মোটর বানানো হয়। এবং এ গিয়ার মোটর উপযুক্ত চাকা লাগানো হয়।
রোবটের মোটর কে চালানোর জন্য পাওয়ার সোর্স হিসেবে বিভিন্ন ধরণের ব্যাটারি ব্যবহার করতে পারেন। তবে ৯ ভোল্টের ব্যাটারি ব্যবহার করা যাবেনা, কারণ এধরণের ব্যাটারির কারেন্ট ডিসচার্জ রেট কম থাকায় মোটর ঠিক মত চলতে পারেনা।
রোবটের জন্য আরও ২ ধরনের ব্যাটারি ব্যবহার করা যেতে পারে, ৪ ভোল্টের লেড এসিড ব্যাটারি ও নরমাল কার্বন জিঙ্ক AA ব্যাটারি। ৪ ভোল্টের লেড এসিড ব্যাটারির সুবিধা হচ্ছে বারবার চার্জ করা যায়, তবে অসুবিধা হচ্ছে ওজন বেশি এবং কারেন্ট ডিসচার্জ রেট কম থাকায় ২টি ছোট ব্যাটারি একসাথে প্যারালাল করতে হয় অথবা বড় ব্যাটারি ব্যবহার করতে হয়। মোবাইল ফোনের চারজার বা ৬ ভোল্টের ডিসি পাওয়ার সাপ্লাই দিয়ে এ ব্যাটারি চার্জ করা যায়।
কার্বন জিঙ্ক ব্যাটারির ওজন তুলনামুলকভাবে কম থাকলেও বারবার চার্জ করা যায়না। তবে আমার পার্সোনাল ফেভারিট হচ্ছে লিথিয়াম আয়ন (LiOn) অথবা লিথিয়াম পলিমার ব্যাটারি (LiPo)। এগুলোর ভোল্টেজ ৩.৭ ভোল্ট করে থাকে, ১৮০০-৩০০০ মিলিঅ্যাম্প/ঘন্টা (MA/H) হয় এবং ডিসচার্জ রেটিং অনেক বেশি থাকে। ওজনেও খুব হালকা হয়ে থাকে। ফোন এর ব্যাটারি, ল্যাপটপের ব্যাটারি থেকে এগুলো বের করে নেয়া যায়। বাজারে নতুন ব্যাটারি কিনতেও পাওয়া যায়। তবে এসব ব্যাটারির একটা বড় অসুবিধা হল এগুলো চার্জ করার জন্য স্পেশাল চারজার লাগে এবং খুব সাবধানে ব্যবহার করতে হয়। কারণ লিথিয়াম ব্যাটারি শর্ট করলে ব্যাটারিতে আগুন ধরে যেতে পারে, বিস্ফোরণ ও হতে পারে। বিশেষ চারজার ছাড়াও চার্জ করা যায়না। আমি ২টা ব্যাটারি আলাদা আলাদা করে TP4056 লিথিয়াম ব্যাটারি চারজিং মডিউল দিয়ে চার্জ করে তারপর সিরিজ করে রোবটে ব্যবহার করি।
এছাড়া বড় রোবটের জন্য ৬ ভোল্টের বড় লেড এসিড ব্যাটারি ব্যবহার করা যেতে পারে।
লিথিয়াম আয়োন ব্যাটারি ও ছোট লেড এসিড ব্যাটারি
আরডুইনো তে পাওয়ার দেয়া
আপনি ইচ্ছা করলে আরডুইনোকে লম্বা ইউএসবি কেবল দিয়েই পাওয়ার করতে পারেন। তবে রোবটটা সম্পূর্ণ তারহীন করতে চাইলে একটা ৯ ভোল্টের ব্যাটারির পজিটিভ আরডুইনোর VIN পিনে এবং ব্যাটারির গ্রাউন্ড আরডুইনোর গ্রাউন্ডে লাগিয়ে আরডুইনোপাওয়ার করতে পারেন। আরডুইনো তার ইন্টারনাল রেগুলেটর দিয়ে ৯ ভোল্ট কে ৫ ভোল্টে কমিয়ে নেবে। তবে ৯ ভোল্টের নরমাল (নন-রিচার্জেবল) ব্যাটারি ১ ঘন্টার বেশি ব্যাকআপ দেবেনা।
রোবটের মোটর বাদে অন্য কম্পোনেন্টগুলো নিজের ইচ্ছামত জায়গায় বসাতে পারেন। তবে সামনে যেহেতু একটা ক্যাস্টর হুইল থাকবে, তাই সামনের দিকে দুইপাশে সমান ওজন রাখতে হবে।
নইলে যেকোনো একপাশে বেশি ওজন দিলে রোবটের বডি ওইদিকে কাত হয়ে যেতে পারে। অবশ্য সামনে দুইদিকে দুইটা ক্যাস্টর হুইল কিংবা ২টা গিয়ার মটোর+চাকা দিলে ওয়েইট ব্যালেন্স নিয়ে তেমন না ভাবলেও চলবে।
রোবটে যদি ২x১ চাকার কম্বিনেশন অর্থাৎ পিছনে ২টা চাকা আর সামনে ১টা ক্যাস্টর হুইল থাকে, তাহলে চেষ্টা করতে হবে বেশিরভাগ ওজন পিছনের দিকে মাঝখানে রাখতে।
কারন চাকায় যদি যথেষ্ট গ্রিপ না থাকে, তাহলে চলার সময় স্লিপ কাটতে পারে। যার ফলে এনার্জি লস আর চলতে সমস্যা হতে পারে। তাই মাঝখানে ব্যাটারি দিলে দুই চাকার উপর সমান ওজন পড়বে, তাই স্লিপও কম কাটবে।
সোনার সেন্সর রাখতে হবে সামনের দিকে ঠিক মাঝখানে। খেয়াল রাখতে হবে সেন্সরের সামনে যেন কোনও বাঁধা না থাকে।
সম্ভব হলে সেন্সরকে রোবটের ৪ সে.মি ভিতরে রাখতে হবে, তাতে রোবট চলার সময় সেন্সরে আঘাত লাগার সম্ভাবনা কমে যাবে, এছাড়া সোনার সেন্সরের মিনিমাম রেঞ্জ ৪ সে.মি, তাই ৪ সে.মি ভিতরে রাখলে রেঞ্জ কমে যাবেনা।
আরডুইনো রাখতে হবে বডির বাইরের দিকে সহজেই কাজ করা যায় এমন জায়গায়। কারণ রোবট ট্রাবলশুট করার সময় বারবার কোড আপলোড, জাম্পার ওয়্যার লাগাতে/খুলতে হতে পারে।
আরডুইনো এমনভাবে ঘুরিয়ে রাখতে হবে যেন ইউএসবি পোর্ট বাইরের দিকে থাকে।
কোনও সুইচ লাগাতে চাইলে মটরের ব্যাটারির পজিটিভ প্রান্তে একটি সুইচ প্যারালালে কানেক্ট করতে হবে এবং আরডুইনোর পাওয়ার সোর্সের পজিটিভ প্রান্তে একই ভাবে একটি সুইচ কানেক্ট করতে হবে।
আরডুইনোর ডিজিটাল পিনে, মোটর এর জায়গায় মোটরের তার কানেক্ট করা আর VCC জায়গায় ব্যাটারি লাগালেই হবে।
উল্লেখ্য – এখানে ব্যাটারি ও আরডুইনোর গ্রাউন্ড এবং অন্য কোনও পাওয়ার সোর্স থাকলে সেটার গ্রাউন্ডও একসাথে যুক্ত করে দিতে হবে।
আরডুইনোতে কোড আপলোড করা
আরডুইনো সফটওয়্যার খুলে নিচের কোডটি কপি করে পেস্ট করে আপলোড করি –
int mlf = 9, mlr = 8, mrf = 4, mrr = 3; /* ml= motor left, mr= motor right,f= forward, r= reverse*/ int trig = 11, echo = 10; long distance, duration;
void setup() {
pinMode (mlf, OUTPUT);
pinMode (mlr, OUTPUT);
pinMode (mrf, OUTPUT);
pinMode (mrr, OUTPUT);
pinMode (trig, OUTPUT);
pinMode (echo, INPUT);
}
void loop() {
duration = pulseIn (echo,HIGH);
distance = duration / 58.2;
delay (2);
digitalWrite (trig, HIGH);
delayMicroseconds (10);
digitalWrite (trig, LOW);
if (distance <= 20) {
digitalWrite (mlf, LOW);
digitalWrite (mrf, LOW);
digitalWrite (mrr, HIGH);
delay (500);
}
else {
digitalWrite (mrr, LOW);
digitalWrite (mlf, HIGH);
digitalWrite (mrf, HIGH);
}}
এবার কোডটি কিভাবে কাজ করছে দেখি –
int mlf = 9, mlr = 8, mrf = 4, mrr = 3;
এই লাইনটি দিয়ে মোটর কন্ট্রোলের জন্য ব্যবহৃত পিনগুলো ভ্যারিয়েবলে ডিক্লেয়ার করা হয়েছে।
int trig = 11, echo = 10; সোনার সেন্সরে যুক্ত পিনগুলোর ভেরিয়েবল ডিক্লেয়ার করা হলো।
long distance, duration২টি ব্ল্যাঙ্ক long ভ্যারিয়েবল ডিক্লেয়ার করা হলো।
পরে distance ভেরিয়েবল এ সেন্সরের সামনের বাঁধার দূরত্ব এবং duration ভেরিয়েবল সোনার পালস পাঠানোর পর প্রতিধ্বনির আগে কতক্ষন সময় পার হয়েছে সেই তথ্য রাখা হবে।
void setup() {
pinMode (mlf, OUTPUT);
pinMode (mlr, OUTPUT);
pinMode (mrf, OUTPUT);
pinMode (mrr, OUTPUT);
pinMode (trig, OUTPUT);
pinMode (echo, INPUT);
}
এখানে মটর কনট্রোল পিনগুলো আউটপুট পিন, সোনার সেন্সরের trigger পিনকে আউটপুট পিন এবং echo পিনকে ইনপুট পিন হিসেবে ডিক্লেয়ার করা হলো।
void loop() { duration = pulseIn (echo,HIGH);
void loop শুরু করা হল এবং duration ভ্যারিয়েবল এর ভ্যালু এর জায়গায় pulseIn (echo) লিখে ডিক্লেয়ার করা হলো।
pulseIn বা পালস-ইন আরডুইনোর একটা বিল্ট ইন ফাংশন,
এটার সাহায্যে কোনও ইনপুট পিনে কতক্ষন হাই (High) সিগন্যাল আসলো (এক্ষেত্রে echo পিন) তা পরিমাপ করা যায়।
distance = duration / 58.2;
distance ভ্যারিয়েবল এর ভ্যালু ডিক্লেয়ার করা হলো duration/৫৮.২।
ডিউরেশনকে ৫৮.২ দিয়ে ভাগ করলে সোনার এর সামনের বস্তুর দূরত্ব সেন্টিমিটারে পাওয়া যাবে।
আবার দূরত্ব ইঞ্চি তে পাওয়ার জন্য (duration/2) / 74 সুত্র ব্যবহার করতে হবে।
delay (2);কোড স্টেবল রাখার জন্য ২ মিলিসেকেন্ড পজ দেয়া হলো।
ট্রান্সফরমার সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর (টরোয়েড সহ)
অনেকের মনেই #ট্রান্সফরমার নিয়ে শত শত প্রশ্ন লেগেই থাকে। আজ তারই একটা সুরাহা করতে এসেছি। লেখার শেষে নতুনদের বিশেষ আকর্ষন টরোয়েড ট্রান্সফরমার এর সুবিধা অসুবিধা নিয়েও লিখেছি। তাহলে আর দেরি না করে চলুন শুরু করে ফেলি …
প্রশ্নঃ ট্রান্সফরমার কি?
উত্তরঃ সহজ কথায় বলা যায়, এমন একটি ইলেক্ট্রনিক/ইলেকট্রিক্যাল যন্ত্র যেটি ইনপুট হিসেবে ইলেক্ট্রিক পাওয়ার নিয়ে আউটপুটেও ইলেকট্রিক পাওয়ার দিবে, কিন্তু এদের মধ্যে কোন তারের সংযোগ থাকবে না।
কিন্তু, তাত্ত্বিক ভাবে বলতে গেলে বলতে হবে, ”ট্রান্সফরমার এমন একটি স্থির যন্ত্র বিশেষ যেখানে কারেন্টের সাপেক্ষে, এসি সাপ্লাই এর ভোল্টেজ বাড়ানো হয় নয়ত কমানো হয়”।
ইংরেজি শব্দ ট্রান্সফরম (Transform) থেকে ট্রান্সফরমার (Transformer) নামটি উদ্ভুত। যার বাংলা অর্থ কোন কিছুকে ট্রান্সফরম বা রূপান্তর করা। আমাদের দৈনন্দিন দেখা ট্রান্সফরমার সমূহ ভোল্টেজ ও কারেন্ট কে ট্রান্সফরম করে ব্যবহার উপযোগী করে বিধায় এটির নাম এমন দেয়া হয়েছে।
প্রশ্নঃ ট্রান্সফরমার কিভাবে কাজ করে?
ট্রান্সফরমার মূলত মিউচুয়াল ইন্ডাকশনের মাধ্যমে কাজ করে। প্রাইমারী থেকে সেকেন্ডারী তে পাওয়ার ট্রান্সফার করে এই পদ্ধতি তে। এ সম্পর্কে ৮ নাম্বার পয়েন্টে বিস্তারিত লেখা হয়েছে।
প্রশ্নঃ ট্রান্সফরমার কেন ব্যবহার করা হয়?
উত্তরঃ
ধরুন পাওয়ার স্টেশন থেকে আপনার বাসা অনেক দূরে। তখন আপনি যদি আপনার প্রয়োজনীয় ভোল্টেজ পেতে চান তাহলে সেখানে একটি স্টেপআপ ট্রান্সফরমার দিয়ে বাড়িয়ে তা দূরবর্তী স্থানে যেখানে আপনার বাসা অবস্থিত, সেখানে সঞ্চালিত করা হয়।
আবার, আপনার বাসায় এসি লাইন দিয়ে সরাসরি শখের প্রজেক্ট কিংবা সার্কিট কিংবা জরুরী ব্যবহার্য্য টিভি, ডিভিডি, টর্চ, চার্জ লাইট ইত্যাদি কে কখনই চালাতে পারবেন না। প্রথমে আপনাকে অবশ্যই মেইন লাইনের ভোল্টেজ কে কমিয়ে উক্ত সার্কিট বা যন্ত্রের উপযুক্ত করতে হবে। আর এই কাজটিই করে থাকে ট্রান্সফরমার।
অর্থাৎ, ভোল্টেজও কারেন্টেরসমন্বয়েই মোট পাওয়ার। অতএব, কারেন্টের পরিমাণ কমিয়ে ভোল্টেজ বৃদ্ধি করলেও মোট পাওয়ার প্রায়ই সমান থাকবে।
আবার, কারেন্ট প্রবাহমাত্রা নির্ভর করে ক্যাবলের পুরুত্ব বা ক্যাবল কতোটা মোটা তার উপরে। অর্থাৎ ক্যাবল মোটা হলে বেশি কারেন্ট প্রবাহিত হতে পারবে আবার চিকন হলে কম কারেন্ট প্রবাহিত হবে। অন্যদিকে ক্যাবলের কম পুরু হলে খরচ কম হবে। ট্রান্সমিশন লাইনে ভোল্টেজ বাড়িয়ে, কম কারেন্ট ব্যবহার করলে ট্রান্সমিশন ক্যাবলের খরচ কম পড়বে।
এছাড়াও কারেন্ট প্রবাহ কম হলে ট্রান্সমিশন লাইন কম উত্তপ্ত হবে তাই কপার লস কম হবে, ফলে লাইনের আড়াআড়ি ভোল্টেজ ড্রপ কম হবে।
ইত্যাদি বিষয়সমূহ বিবেচনা করে ট্রান্সমিশন লাইনে মোটপাওয়ারকে ঠিক রেখে কারেন্ট কমিয়ে দিয়ে ভোল্টেজ বৃদ্ধি করে সঞ্চালন করা হয়।
প্রশ্নঃ ট্রান্সফরমারের সিম্বল বা চিহ্ন কি?
ইলেকট্রিক্যাল বা ইলেকট্রনিক সার্কিট এ আমরা সচারচর এই চিহ্ন বা সিম্বল ব্যবহার করেই ট্রান্সফরমারকে চিহ্নিত করে থাকি-
বিভিন্ন রকম ট্রান্সফরমারের সিম্বল ও আঁকবার সঠিক পদ্ধতি
প্রশ্নঃ ট্রান্সফরমার মূলত কি কি জিনিস নিয়ে তৈরি হয়?
উত্তরঃ ট্রান্সফরমার মূলত নিম্নোক্ত জিনিস গুলো দ্বারা তৈরি হয়।
এছাড়াও প্রকারভেদ ও প্রয়োজন অনুসারে আরো বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ব্যবহার হয়ে থাকে।
প্রশ্নঃ বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমারের বিভিন্ন পার্টস দেখতে কেমন?
নিচে হাই ভোল্টেজ থ্রী ফেজ ট্রান্সফরমারের কিছু বাহ্যিক পার্টস দেখানো হলো-
থ্রী ফেজ ট্রান্সফরমার এর বিভিন্ন বাহ্যিক যন্ত্রাংশ
প্রশ্নঃ সংযোগ ছাড়া এক কয়েল থেকে অপর কয়েলে কিভাবে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়?
উত্তরঃ এটাকে বলা হয় মিউচুয়াল ইন্ডাকশন। অর্থাৎ প্রাইমারী কয়েলে বিদ্যুৎ প্রবাহিত করলে এর চার পাশে একটি ম্যাগনেটিক ফিল্ড বা তড়িৎ চুম্বকীয় আবেশের সৃষ্টি হয়। আর এই ফিল্ড থেকে ফ্লাক্স সংগ্রহ করে সেকেন্ডারী কয়েল। তখন তাদের মধ্যে একটি মিউচুয়াল/কমন ইন্ডাকশন এর তৈরি হয়। যার ফলে সেকেন্ডারীতে তড়িৎ প্রবাহিত হয়। এই প্রবাহিত তড়িৎ এর মান নির্ভর করে সেকেন্ডারী ও প্রাইমারী তে ব্যবহৃত প্যাঁচ সংখ্যার উপরে। যাকে বলে ট্রান্সফরমারমেশন রেশিও।
প্রশ্নঃ ট্রান্সফরমার কোন সূত্রের উপর ভিত্তি করে চলে?
উত্তরঃ এটি ফ্যারাডের সূত্রের উপর ভিত্তি করে চলে। এখন প্রশ্ন জাগতে পারে ফ্যারাডে সাহেব তো বলেছিলেন যে-
একটি ম্যাগনেটিক ফিল্ডকে আরেকটি কয়েল দ্বারা আবিষ্ট করতে হলে অবশ্যই তাদের যে কোন একটি কে নড়াচরা করতে হবে। তাছারা ফ্লাক্স আবিষ্ট হবে না।
হ্যা, তবে সেটা ছিল ডিসি এর ক্ষেত্রে। আর ট্রান্সফরমার এসি বা পালসেটেড ডিসি তে চলে। তাই এটাকে আর আলাদা করে নাড়াতে হয় না। কারন এর তরঙ্গ আপনা আপনি ই অনুড়িত হতে থাকে।
প্রশ্নঃ একটি ট্রান্সফরমার এর এফিশিয়েন্সি শতকরা কত?
উত্তরঃ পৃথিবীতে কোন মেশিনই আজ পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয় নি যার এফিশিয়েন্সি বা আউটপুট ১০০ ভাগ। একমাত্র ট্রান্সফরমারই এমন একটি যন্ত্র যার আউটপুট পাওয়ার প্রায় ইনপুটের ৯০% থেকে ৯৯%। মানে এখানে পাওয়ার লস খুবই কম বা এক্কেবারেই নগন্য।
এফিশিয়েন্সি মানে হচ্ছে কোন যন্ত্রের ইনপুট ও আউটপুটে প্রদত্ত শক্তির তুলনা যার মাধ্যমে যন্ত্রটির দক্ষতা পরিমাপ করা যায়।
প্রশ্নঃ ট্রান্সফরমার এর ক্ষমতার একক কি এবং কেন?
উত্তরঃ ট্রান্সফরমারের ক্ষমতার একক কেভিএ(KVA)। অর্থাৎ কিলোওয়াট ভোল্ট এম্পিয়ার। কারণ টা হল, আমরা জানি যেকোন মেশিনের ক্ষমতার একক নির্ধারণ করা হয় তার #লস এর উপর ভিত্তি করে। এখানেও ঠিক একই বিষয়। ট্রান্সফরমারের লস গুলো হল
১। আয়রন লস/কোর লস
২। কপার লস
আচ্ছা, তো এখন আয়রন লস মানেই ভোল্টেজ এর ব্যাপার, আর কপার লস মানেই কারেন্ট এর লস। তাহলে মোটের উপর দাঁড়াল ভোল্ট এম্পিয়ার। এ জন্যেই ট্রান্সফরমার এর ক্ষমতার একক হিসেবে কিলোওয়াট ভোল্ট এম্পিয়ার বা কেভিএ (kVA) লেখা হয়ে থাকে।
প্রশ্নঃ আইডিয়াল ট্রান্সফরমার কি?
উত্তরঃ আসলে যেকোন মেশিন বা বস্তুর ই আইডিয়াল ফর্ম বা তার আদর্শ একটি অবস্থাকে বুঝায় যেখানে তার লসের পরিমাণ ০%। মূলত ল্যাবরেটরিতে গবেষণার সময় এই আদর্শ মান কে ব্যবহার করা হয়। মানে ইনপুটে দেয়া পাওয়ারের ১০০%-ই আউটপুট পাওয়া যাবে। কিন্তু বাস্তবিক পর্যায়ে তা হয় না। কারণ যখন ওই যন্ত্রকে যখন বাস্তবে রূপ দেওয়া হয় তখন অনেক গুলো লসএসে সামনে পথ আটকায়।
প্রশ্নঃ ট্রান্সফরমার এর কোরের মধ্যে ইনসুলেশন বা পাতলা আবরণ কেন ব্যবহার করা হয়?
উত্তরঃ ছোট ট্রান্সফরমারের কোরের মধ্যে আসলে অনেক গুলো (E) এবং (I) এবং বড় সাইজের ট্রান্সফরমারের আলাদা আকৃতির স্টিলের পাত দেখা যায়। আসলে এই প্রতিটি পাতের গায়ে এক প্রকার ভারনিশ/লেমিনেশন পেইন্ট ব্যবহার করা হয়। কারন এতে ইলেকট্রিক শর্ট সার্কিট হওয়ার ভয় থাকে না।
কিন্তু ইন্সুলেশন দেওয়ার প্রধান কারণ হল যাতে একেকটি কোর আলাদা ভাবে থাকতে পারে। তারা যেন একে অন্যের গায়ে লেগে না যায়। এতে তাদের আলাদা আলাদা কোরের রেজিস্টেন্স অনেক কম থাকে বিধায় ভোল্টেজ ড্রপ কম হয়।
যদি কোন ইনসুলেশন ব্যবহার না করা হত তাহলে সবগুলো কোর মিলে একটি বড় সাইজের কোরে পরিণত হতো এবং এর আয়তন বেড়ে যেত। ফলে এর রেজিস্টেন্স ও অনেক বেশি হয়ে যেত। ফলে অনেক ভোল্টেজ ও ড্রপ হত। তাই এই লস ঠেকাতেই ট্রান্সফরমারে ইনসুলেশন ব্যবহার করা হয়।
প্রশ্নঃ এডি কারেন্ট লস কি?
উত্তরঃ ট্রান্সফরমারের আয়রন লস টা নির্ভর করে ম্যাক্সিমাম ফ্লাক্স ঘনত্ব আর সাপ্লাই ফ্রিকোয়েন্সি এর উপর। যেহেতু ট্রান্সফরমার সব সময় নির্দিষ্ট অর্থাৎ ফিক্সড ফ্রিকোয়েন্সি আর সাপ্লাই ও ফিক্সড তাহলে এখানে কোর ও আয়রন লস প্র্যাক্টিক্যাল যেকোন লোডের জন্যই সমান হয়। অর্থাৎ এখানে আয়রন/কোর লস কন্সট্যান্ট বা অপরিবর্তিত লস হিসেবে গণ্য হয়। আর এটিই মুলত এডি কারেন্ট লস নামে পরিচিত।
প্রশ্নঃ এডি কারেন্ট লস কিভাবে কমানো যায়?
উত্তরঃ এডি কারেন্ট লস কমাতে চাইলে অবশ্যই কোরের লেমিনেশন গুলো কে যথা সম্ভব পাতলা/চিকন করতে হবে। এবং লেমিনেশন গুলোকে ভালভাবে লেমিনেটিং বা ইনসুলেটিং করা যায় তাহলে এডি কারেন্ট লস অনেকাংশে কমানো সম্ভব।
প্রশ্নঃ হিসটেরেসিস লস কিঃ
আমরা জানি ট্রান্সফরমার তৈরি হচ্ছে তড়িৎ চৌম্বকীয় বস্তু যেমন লোহা, ফেরাইট কোর প্রভৃতি দ্বারা। এখন এই ট্রান্সফরমার যখন কোন অল্টারনেটিং কারেন্টের দ্বারা বারবার ম্যাগনেটাইজও ডি-ম্যাগনেটাইজ করা হয় তখন এর অভ্যন্তরে থাকা অণু বা কোর ম্যাটেরিয়াল গুলো বারংবার দিক পরিবর্তন করতে থাকে। এই দিক পরিবর্তনের ফলে কিছু শক্তি তাপ হিসাবে নির্গত হয় যা কোন কাজে লাগে না। একেই হিসটেরেসিস লস বলে।
এখানে উল্লেখ্য যে এই হিসটেরেসিস লস শুধু যে ট্রান্সফরমারেই হয় তা কিন্তু নয়। মোটর, জেনারেটর, ফ্যানথেকে শুরু করে যেখানেই কোন কয়েল কে চৌম্বকীয় বস্তুর উপর প্যাঁচানো হয় সেখানেই হিস্টেরেসিস লসদেখা যায়। তবে জেনারেটর আর ট্রান্সফরমার এ এই হিস্টেরেসিস লস টি বেশি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়।
প্রশ্নঃ স্টেপ আপ ট্রান্সফরমার কাকে বলে?
যে ট্রান্সফরমারের প্রাইমারীতে ভোল্টেজ দিলে সেকেন্ডারীতে উচ্চ ভোল্টেজ পাওয়া যায় তাকে স্টেপ আপ ট্রান্সফরমার বলে। আমরা ইউপিএস, আইপিএস, ইনভার্টার প্রভৃতি যন্ত্রপাতিতে যে ট্রান্সফরমার ব্যবহার করে থাকি সেগুলো স্টেপআপ প্রকৃতির ট্রান্সফরমার।
প্রশ্নঃ স্টেপ ডাউন ট্রান্সফরমার কাকে বলে?
যে ট্রান্সফরমার এর প্রাইমারীতে ভোল্টেজ দিলে সেকেন্ডারীতে অপেক্ষাকৃত নিম্ন ভোল্টেজ পাওয়া যায় তাকে স্টেপ ডাউন ট্রান্সফরমার বলে। বেশীরভাগ ঘরের যন্ত্রপাতি যা আমরা ব্যবহার করি সেগুলোর ভেতরে স্টেপ ডাউন ট্রান্সফরমারই ব্যবহার করা হয়।
প্রশ্নঃ কিভাবে একটি স্টেপ আপ ট্রান্সফরমার কে স্টেপ ডাউন করবো?
উত্তরঃ যদি আমরা কোন ট্রান্সফরমার কে স্টেপআপ করতে চাই তাহলে ট্রান্সফরমারের প্রাইমারী কয়েলের প্যাঁচ সংখ্যার তুলণায় সেকেন্ডারী কয়েলের প্যাঁচ বেশি করতে হবে। আর এই প্যাঁচ সংখ্যা নির্ণয় করতে হলে আমাদের কে ট্রান্সফরমারের প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল জানতে হবে এবং সূত্রানুযায়ী ট্রান্সফরমারের প্রাইমারী ও সেকেন্ডারী কে প্রয়োজন মত প্যাঁচ দিয়ে নিতে হবে। আমাদের ইলেকট্রনিক্স সাইটে এ বিষয়ে পূর্বেই লেখা হয়েছে বিধায় আমি আর তা পুনরাবৃত্তি করলাম না। লেখাটি পড়ুন এই লিংক থেকে।
প্রশ্নঃ ট্রান্সফরমার রেশিও বলতে কি বুঝায়?
ট্রান্সফরমারের প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি কয়েলের ভোল্টেজ, প্যাঁচ সংখ্যা ও কারেন্টের মধ্যে যে সম্পর্ক থাকে, তাকে ট্রান্সফরমারের ট্রান্সফরমেশন রেশিও বলে। একে নিম্নোক্ত ভাবে প্রকাশ করা যায়-
নিচের চিত্রটি লক্ষ্য করলে বুঝতে সুবিধা হবে আশাকরি-
ট্রান্সফরমেশন রেশিও
প্রশ্নঃ কোন ট্রান্সফরমার এর এফিসিয়েন্সি কখন ম্যাক্সিমাম হয়?
উত্তরঃ যখন আয়রণ লস ও কপার লস প্রায় সমান হয় তখনই ওই ট্রান্সফরমারের ইফিসিয়েন্সি ম্যাক্সিমাম হতে পারবে।
প্রশ্নঃ ট্রান্সফরমার ঠান্ডা রাখার সবচেয়ে জনপ্রিয় বা ব্যবহৃত উপায় কি?
উত্তরঃ অয়েল কুলিং বা তেল দিয়ে করা হয়। এ ছাড়াও হাল আমলে এয়ার কুলিং, নাইট্রোজেন কুলিং, ওয়াটার কুলিং প্রভৃতিও ব্যবহার করা হয়।
প্রশ্নঃ লিকেজ ফ্লাক্স কি?
উত্তরঃ আমরা জানি ট্রান্সফরমার মিউচুয়াল বা কমন ইন্ডাকটেন্স এর মাধ্যমে বিদ্যুৎ প্রবাহিত করে। এখন, লিকেজ ফ্লাক্স বলতে বুঝায় প্রাইমারী ও সেকেন্ডারী কয়েলের যে ফ্লাক্স উৎপন্ন হয়। আর আরেকটি কথা হল যদি সেকেন্ডারি কয়েলের ফ্লাক্সের পরিমাণ প্রাইমারী এর চেয়ে বেশি হয় তাহলে আউটপুটেও স্বাভাবিকের চেয়ে কম ভোল্টেজ উতপন্ন হবে।
প্রশ্নঃ ট্রান্সফরমার কোর কি দিয়ে তৈরি হয়?
উত্তরঃ আসলে ট্রান্সফরমারের কোর গুলো নরমাল স্টেনলনেস স্টিল দিয়ে হয় না। এটার জন্য #সিলিকন #স্টিল নামক একধরনের স্টিল এর পাত ব্যহার করা হয় যা বাজারে পাওয়া যায়। তবে আসল নকল এর ও একটা বিষয় কিন্তু সব জায়গাতেই আছে।
উত্তরঃ আসলে এই লেমিনেশন স্বাভাবিক ভাবে ০.৪মিমি থেকে ০.৫ মিমি পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে পাওয়ার লাইনে ব্যবহৃত অনেক ট্রান্সফরমারের লেমিনেশনের পুরুত্ব অনেক কম হয় (০.২ মিমি)।
প্রশ্নঃ একটি ট্রান্সফরমার কয়েল এর তার গুলো কি মানের হতে হবে?
উত্তরঃ একটি ট্রান্সফরমারের প্রাইমারী এমং সেকেন্ডারী কয়েল অনেক ভাল মানের অরিজিনাল কপার তার দিতে তৈরি করতে হবে।তাছাড়া এটার মধ্যে দিয়ে অতিরিক্ত রেজিস্ট্যান্স তৈরি হয়,ফলে ভোল্টেজ ড্রপ বেশি হয়,লসের পরিমাণ বেড়ে যায়।
প্রশ্নঃ অন লোড আর নো লোড কি?
উত্তরঃ ট্রান্সফরমারের আউটপুটে যখন কোন লোড লাগানো থাকে না তখন তাকে বলে “নো লোড কন্ডিশন”। আর যদি আউটপুটে লোড বিদ্যমান থাকে তাহলে তাকে বলা হয় “লোডেড কন্ডিশন”।
প্রশ্নঃ টরোয়েড বা টরয়েড ট্রান্সফরমার কি?
উত্তরঃ এখন আমরা আলোচনা করবো নতুন দের বিশেস সেনসেশন টরোয়েড ট্রান্সফরমার নিয়ে। এই টরোয়েড বা টরয়েড ট্রান্সফরমার (Toroid Transformer) মূলত একই নীতিতে কাজ করে থাকে। এর প্রকৃত নাম টরোয়ডাল বা টরওয়ডাল ট্রান্সফরমার। এর গোল বা রিং আকৃতির জন্য এই নাম দেয়া হয়েছে। ইংরেজি টরাস (Torus) শব্দের অর্থ গোলাকার রিং বিশেষ। আর এই টরাস শব্দটি থকেই টরোয়েড শব্দটি এসেছে।
নিচে দেখতে পাচ্ছি টরোয়ডাল/টরোয়েড ট্রান্সফরমার এর ভেতরের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ-
টরোয়েড/টরোয়ডাল ট্রান্সফরমার এর ভেতরের বিভিন্ন পার্টস
প্রশ্নঃ টরোয়েড ট্রান্সফরমার ব্যবহারের সুবিধা কি কি?
বিশেষ কিছু সুবিধার জন্য টরোয়ডাল ট্রান্সফরমার ব্যবহার করা হয়, যথাঃ
একই আকৃতির সাধারন ট্রান্সফরমারের তুলনায় টরোয়েড ট্রান্সফরমার অনেক বেশি আউটপুট পাওয়ার দিতে সক্ষম
উপযুক্ত ভাবে নির্মিত টরোয়েড ট্রান্সফরমার এর এফিশিয়েন্সি বেশি হয়ে থাকে।
টরোয়েড ট্রান্সফরমার এর ইন্ডাকটেন্সমান বেশি হয় যা ক্ষেত্র বিশেষে সুবিধা জনক।
টরোয়েড কোরট্রান্সফরমার এর ম্যাগনেটিক ফ্লাক্স লিকেজনাইবললেই হয়।
অফ লোড লস অনেক কম।
এর দ্বারা উৎপন্ন নয়েজ অনেক কম যা বিশেষ ভাবে সূক্ষ্ণ যন্ত্রপাতির জন্য অতীব জরুরী।
ম্যাকানিক্যাল হাম বা নয়েজ ও অনেক কম। যা সাধারন EI কোরট্রান্সফরমার এ অনেক বিরক্তির কারণ।
এর গোলাকার আকৃতির জন্য একে সহজে যে কোন কিছুর সাথে সংযুক্ত করা যায়।
একই ক্ষমতার সাধারণ ট্রান্সফরমার এর তুলনায় এর আয়তন প্রায় অর্ধেক হতে পারে।
এত সুবিধা থাকা সত্বেও টরোয়েড কোরট্রান্সফরমার প্যাঁচানো ও এর নির্মান শৈলী জটিল হবার কারনে সাধারণ ব্যবহারের জন্য আমাদের দেশে তেমন জনপ্রিয় হয়নি।
আজকের মত এটুকুই। এখন একটি সিক্রেট কথা জানাই, বিশেষ ভাবে জানতে পেরেছি সামনে আমাদের ইলেকট্রনিক্সে টরোয়েড ট্রান্সফরমার নির্মাণের সূত্র সহ লেখা পাবেন। তাই সাথেই থাকুন আর বেশি বেশি লাইক কমেন্ট ও শেয়ার দিয়ে আমাদের কে উৎসাহ দিন। টাটা…
একটি অসাধারণ অনলাইন ইলেকট্রনিক্স টুলঃ অটোডেস্ক 123D সার্কিটস (পর্ব-১)
এই ইলেকট্রনিক কাজের গুরুত্বপূর্ণ টুল টির নাম আগে ছিল Circuits.io ২০১২ সালে এর যাত্রা শুরু হয়। ২০১৪ সালের দিকে Circuits.io অটোডেস্কের 123D Apps এ যুক্তহয়। ফলে নাম বদলে Autodesk 123D Circuits হয়ে যায়। অটোডেস্ক সার্কিটস হচ্ছে একটি অনলাইন ভিত্তিক টুল। তাই সার্কিটস এ কাজ করার জন্য মোটামুটি উচ্চ গতির ইন্টারনেট দরকার। এর ওয়েবসাইট এড্রেস হচ্ছে https://circuits.io । ওয়েবসাইটটি ওপেন করলে এরকম একটি স্ক্রিন আসবে –
সার্কিটস এর লগিন পেইজ
উপরে ডানদিকে সাইন ইন ও সাইন আপ এর অপশন আছে। আপনার যদি আগে থেকে একাউন্ট থাকে তাহলে সাইন ইন এ ক্লিক করে লগ ইন করবেন, একাউন্ট না থাকলে সাইন আপ এ গিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে নতুন একটি একাউন্ট খুলে নিবেন।
একাউন্ট খোলার পর লগ ইন করলে নিচের মত একটি স্ক্রিন আসবে –
লগিন করার পরে যা আসবে
আপনি আগে কোনও সার্কিট ডিজাইন করে থাকলে সেটা রিসেন্ট ডিজাইনসে দেখাবে। Overview এর পাশে Create এ ক্লিক করলে নিচের মত ৩টি অপশন আসবে –
অপশন গুলো যেমন আসবে
এ টুল গুলোর মধ্যে ইলেক্ট্রনিক্স ল্যাব হাব টুলটি আমার ফেভারিট। এই টুলটি দিয়ে ব্রেডবোর্ডে সার্কিট বানিয়ে সিমুলেট করা যায়, সার্কিটডায়াগ্রাম বানানো যায়, পিসিবি বানানো যায় এমনকি ভারচুয়াল আরডুইনোতে কোড আপলোড করে সিমুলেটও করা যায়! তাই আরডুইনো বোর্ড না কিনেও এ টুলের সাহায্যে আরডুইনো শেখা যায়।
PCB Design + Manufacturing টুলটি দিয়ে পিসিবি ডিজাইন করা যায়, অথবা Eagle সফটওয়ারে করা ডিজাইন ইম্পোরট করে সেটা নিয়েও কাজ করা যায়। পিসিবি অর্ডারও করা যায়, তবে বাংলাদেশ থেকে সেটা সম্ভব না।
Circuit Scribe হচ্ছে কন্ডাকটিভ পেন দিয়ে আঁকা সার্কিট ডিজাইন করার একটা টুল, যেহেতু এই টুল বেশিরভাগেরই কোনও কাজে আসবেনা তাই এই টুল নিয়ে আলোচনা করা হবে না।
এই পর্বে আমরা শিখব কিভাবে ইলেকট্রনিক্স ল্যাব টুল টি ব্যবহার করে ব্রেডবোর্ডের কোনও সার্কিট ডিজাইন ও সিমুলেট করা যায় এবং আরডুইনো সিমুলেট করা যায়।
ওপেন ইলেক্ট্রনিক্স ল্যাব এ ক্লিক করলে এরকম স্ক্রিন আসবে –
নিউ ইলেকট্রনিক্স ল্যাব এ ক্লিক করলে নতুন একটি ব্ল্যাংক সার্কিট ডিজাইন ওপেন হবে।
ইন্টারফেস পরিচিতি
আমরা প্রথম সার্কিট হিসেবে আরডুইনো দিয়ে এলইডি ব্লিঙ্ক করা দেখবো। এজন্য প্রথমে কম্পোনেন্ট এ ক্লিক করে এলইডি এবং আরডুইনো উনো অ্যাড করে নেই –
কম্পোনেন্ট কিভাবে এড করতে হয়কম্পোনেন্টের উপরে ক্লিক করলে এড হয়েযাবে
আরডুইনো ও এলইডি টেনে সরানো যাবে। এলইডি ব্রেডবোর্ডের ছিদ্রের কাছাকাছি আনলে নিজে থেকেই জায়গামত বসে যাবে।
নিচের এই ভিডিওতে দেখানো হয়েছে কিভাবে এই অটোডেস্ক ১২৩ সার্কিটস টুল টি দিয়ে আরডুইনো ও অন্যান্য কম্পোনেন্ট কে ইচ্ছেমত বসানো যায়-
এলইডির পায়ের উপর কারসর আনলে এনোড না ক্যাথোড সেটা ভেসে উঠবে। ব্রেডবোর্ডের ছিদ্রে ক্লিক করলে সেই পয়েন্ট থেকে একটা জাম্পার ওয়্যার শুরু হবে, মাউস দিয়ে দ্বিতীয়বার যেখানে ক্লিক করা হবে সেই জায়গায় জাম্পার ওয়্যারটি যুক্ত হবে। এখানে আরডুইনো এর ১৩ নং পিনের সাথে এলইডির ক্যাথোড আর গ্রাউন্ডের সাথে এনোড লাগানো হল। নিচের এই টুল দিয়ে তৈরী ভিডিও টিউটোরিয়াল টিতে বিস্তারিত দেখুন-
এবার আরডুইনোতে কোড আপলোডের পালা। এজন্য প্রথমে নিচের কোডটি কপি করে নেই –
int led =13;
void setup(){
pinMode (led,OUTPUT);
}
void loop(){
digitalWrite (led,HIGH);
delay (1000);
digitalWrite (led,LOW);
delay (1000);
}
এরপর কোড এডিটর খুলে কোডটি পেস্ট করে আরডুইনোতে কোড আপলোড করি।
আপলোড ও রান এ ক্লিক করলে সিমুলেশন নিজে থেকেই চালু হবে। এলইডি কোনও
রেজিস্টর ছাড়া আরডুইনোর সাথে কানেক্ট করায় কিছুটা বেশি কারেন্ট যাচ্ছে, যার জন্য এলইডি বেশিক্ষন চললে পুড়ে যেতে পারে, তাই প্রত্যেকবার এলইডি জ্বলার সময় আগুনের মত ওয়ার্নিং সাইন আসছে। এলইডির উপর কারসর নিলে ওয়ার্নিং এর কারণ ভেসে উঠবে। স্টপ সিমুলেশন এ ক্লিক করলে সিমুলেশন থেমে যাবে।
যদিও আমরা খুব সহজ সার্কিট এই অনলাইন টুলটি দিয়ে সিমুলেট করলাম, তবে অনেক জটিল সার্কিটও ইলেকট্রনিক্স ল্যাবে সিমুলেট করা যেতে পারে। টুলটি নিয়ে একটু ঘাঁটাঘাঁটি করে আরও অনেক ফিচার সম্পর্কে জানা যাবে। যেমন, আপনি ইচ্ছা করলে ভার্চুয়াল অসিলোস্কোপ ব্যবহার করে আপনার সার্কিটটেস্ট করতে পারবেন।
বিজ্ঞান প্রজেক্টঃ তৈরি করি 3D হলোগ্রাফিক প্রজেক্টর
বিজ্ঞান এর অভিনব আবিষ্কার এর মধ্যে একটি হল হলোগ্রাফি। আলোর প্রতিসারণ কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন আলোক বিন্দুকে একটি একটি নির্দিষ্ট বিন্দুতে কেন্দ্রীভূত করে কোন দ্বিমাত্রিক আলোক উৎসকে ত্রিমাত্রিক রূপ দেওয়া যায়। এটিই থ্রিডি হলোগ্রাফি। আসুন এখন শিখি কিভাবে একটি সরল হলোগ্রাফি প্রজেক্টর বানাতে হয়।
৩. স্কচ টেপ বা কোন প্রকার আঠা (আমি গ্লু গান ব্যবহার করছি)
আমার ব্যবহৃত সরঞ্জাম-
হলোগ্রাফিক প্রজেক্টর বানাতে আমার ব্যবহৃত সরঞ্জাম
ধাপ ২: একটু হিসাব করি চলুন
এখন আমরা সিডি কেস টি কাটব। কিন্তু প্রথমে আমাদেরকে একটি মাপ নিতে হবে যেই মাপ অনুসারে আমরা এটি কাটব। মাপটি একটি গ্রাফ পেপারে আঁকলে ভালহয়।
হলোগ্রাফ প্রজেক্টরের জন্য হিসাব নিকাশ গ্রাফপেপারে
ছবিটি বাঁকা হওয়ার জন্য দুঃখিত। এখানে ট্রাপিজিয়াম টির ভুমি ৬ সেন্টিমিটার আর পাশের বাহু দুটি ৩.২ সেন্টিমিটার। উপরের ছোট বাহুটি ১ সেন্টিমিটার। এই হিসাবে কাটতে হবে
ধাপ ৩: আলাদা করা
এখন ডিভিডি কেস টি নিন এবং পাশের প্লাস্টিকের অংশ গুলো সাবধানে ভেঙে আলাদা করে ফেলুন। ঠিক যেমন এই ছবিতে আলাদা করা হয়েছে। এতে কাটাকাটি করার সময় কোন বাঁধা আসবে না।
ডিভিডি কেসের পাশের অংশ গুলো আলাদা করা হচ্ছে
ধাপ ৪: হিসাব মত কাটাকাটি
এখন আমরা গ্রাফ পেপারের মাপ অনুযায়ী কাটব। এটিহল সবচেয়ে কঠিন ধাপ। প্রথমে গ্রাফ পেপারটি একটি টেবিলে রাখুন। তারপর পেপারটির উপর সিডি কেস টি বসান। এখন নিজের হাত না কেটে গ্রাফ এর বাহু গুলোর সমান করে কাটার দিয়ে বাহু বরাবর কয়েকবার কাটুন যেন আস্তে আস্তে প্লাস্টিকের স্তরে গভির করে কাটতে পারেন। যখন কাটার এর ব্লেড সিডি কেস এ একটি গভির ক্ষত বানাবে তখন কাটা বন্ধ করুন। এভাবে তিন টি বাহুই কাটুন। স্কেল বসিয়ে কাটলে ভাল হয়।
গ্রাফপেপারের উপরে সিডি কেসটি বসিয়া দাগ দেয়া হচ্ছেকাটার দিয়ে এভাবে খুব সাবধানে কাটতে হবে
খুব সাবধানতার সাথে কাটাকাটি করবেন। ছোটরা অবশ্যই বড় কারো সাহায্য নিয়ে এই কাজটি করবে।
সাবধানে আলাদা করতে হবে
এভাবে কাটবেন। কিন্তু ছবিটির মত হাত ফসকে ভুল করবেন না। যত সম্ভব নিখুত করে কাটবেন। উপরে শুধু একটি বাহুকে কাটার পদ্ধতি দেখালাম। আপনি ৩টি বাহুই কাটবেন। আপনাকে এভাবে মোট ৪টি টুকরা কাটতে হবে।
ধাপ ৫: বাহুগুলো কে আলাদা করি
এখন বাহুগুলো কাটার পরে এগুলো আলাদা করার পালা। নিচের ছবিগুলি লক্ষ করুন-
ছবি গুলোর মত কাটা ট্রাপিজিয়াম টি প্লাস্টিক কেস থেকে আলাদা করুন। একটু বাঁকিয়ে আবার সোজা করে আলাদা করুন। কাটার সময় একদম সাইড থেকে কাটা ভাল তাহলে আলাদা করতে সুবিধে হবে।
কাটা অংশটি আলাদা করা হচ্ছেকাটা অংশটি আলাদা করা হচ্ছে-২কাটা অংশটি আলাদা করা হচ্ছে-৩সবগুলো কে আলাদা করবার পর
ধাপ ৬: চলুন জোড়া দেই
যে ৪টি টুকরা আপনি কেটে আলাদা করেছেন সেগুলো এখন জোড়া দিতে হবে।
আপনি টেপ দিয়ে জোড়া দিতে পারেন অথবা গ্লু দিয়ে লাগাতে পারেন। জোড়া দিয়ে একটি পিরামিড আকৃতি দিতে হবে।
এভাবে লাগাতে হবে-
সবগুলো অংশ এভাবে জোড়া দিতে হবেহটগ্লু দিয়ে জোড়া লাগবার পরে এমন পিরামিড আকৃতি হবে
শেষ ধাপ: উপভোগ করুন হলোগ্রাফি প্রজেক্টর
তৈরি হয়েগেল থ্রিডি হলোগ্রাফি প্রজেক্টর। ইন্টারনেট এ কতগুলো হলোগ্রাফিক ভিডিও পাওয়া যায়। ওগুলো এই প্রজেক্টরের সাহায্যে দেখুন এবং মজা নিন। তবে আপনাদের মধ্যে যারা আমার মতো বিড়াল পোষেন তাদের জানিয়ে দিলাম, বিড়াল কিন্তু প্রজেক্টরের ভিতরের প্রজাপতি টি কে ধরার জন্য লাফ দিতে পারে! কিন্তু আপনি দিয়েন না 😉
থ্রিডি হলোগ্রাফ ইমেজথ্রিডি হলোগ্রাফ ইমেজ
উপরের ছবি গুলোতে ৩ডি হলোগ্রাফি ছবির কিছু নমুনা দেওয়া হল। নিচে আমার তৈরি করা হলোগ্রাফিক প্রজেক্টর-
আজকে আমরা একটি মিনি এমপ্লিফায়ার সিস্টেম বানাবো। যে সাউন্ড সিস্টেমটার সাইজ এতটাই ছোট যে আপনি যেকোন জায়গায় চলাফেরা করার সময় পোর্টেবল বুম বক্স হিসেবেও এটিকে ব্যবহার করতে পারবেন। এমনকি এটির আউটপুটে আমরা স্টেরিও চ্যানেল এর সাউন্ড পেতে পারি। বেশ কয়েকদিন ধরে আমরা বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ বা পেজে এই ধরনের প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছি যে-
“আমার ল্যাপটপের সাউন্ড খুবই কম, এটার সাউন্ড বাড়ানোর জন্য কি কোন এমপ্লিফায়ার ব্যবহার করতে পারি?”
“আচ্ছা মোবাইল থেকে কি কোন উপায়ে আলাদা ছোট বক্স আকৃতির এমপ্লিফায়ার বানাতে পারি যাতে সব জায়গায় ব্যবহার করতে পারি?”
টিডিএ ২৮২২ এর সাপ্লাই ভোল্টেজ সর্বোচ্চ ১৫ ভোল্ট। তবে এখানে ৫-৯ ভোল্ট ব্যবহার করলেও ভালই ফল পাওয়া যায়। এমনকি এটি ল্যাপটপের ইউএসবি পোর্ট থেকে পাওয়ার নিয়েও চলতে পারে। কাজেই মিনি এম্পলিফায়ার টি এই সাপ্লাই ভোল্টজের মধ্যেই চলবে। আর, আমরা একটি কথা হয়ত সবাই জানি ব্যাটারির কারেন্ট(এম্পিয়ার) যতবেশি থাকবে তার ব্যাকআপ টাইমও ততো বেশি পাওয়া যাবে। আরেকটি বিষয় এর দিকে খেয়াল রাখতে হবে, ইনপুট সাপ্লাই ভোল্টেজ যেন কোন মতেই ১৫ ভোল্টের বেশি নাহয়। তাহলে উল্লিখিত আইসি টি পুড়ে কিংবা নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
এই আইসি টির একটি বিশেষ দিক হলো এটাতে কোন প্রকার হিটসিঙ্ক লাগাতে হয়না। আর এটি চালাতে আমরা ইলেকট্রিক ট্রান্সফরমার দিয়ে পাওয়ার সাপ্লাই কে ডিসি তে ফিল্টার করে অথবা ডিরেক্ট ব্যাটারি ব্যবহার করতে পারি। অবশ্যই ট্রান্সফরমার দিয়ে পাওয়ার সাপ্লাই তৈরি করলে বড় ও ভালো মানের ক্যাপাসিটর ব্যবহার করবেন। নয়ত স্পিকারে প্রচুর নয়েজ বা হাম আসবে।
মিনি এম্পলিফায়ার সিস্টেমের আউটপুট লোডঃ
এখন আসি অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি কথায়। স্বাভাবিক ভাবে আমরা হয়ত একটি কথা অনেকেই জানি আবার জানিনা যে, যেকোন এমপ্লিফায়ার এর আউটপুটে যদি ভাল ফলাফল পেতে চাই অথবা অপেক্ষাকৃত বেশি এফিসিয়েন্সি পেতে চাই তাহলে কিছু নিয়ম মেনে তারপর সেখানে উক্ত পার্টস লাগাতে হবে। এমপ্লিফায়ার এর এফিসিয়েন্সি অধিকতর ভাল পেতে হলে এর আউটপুট ক্ষমতার তুলনায় ৩ গুন বেশি ক্ষমতার লোড (এক্ষেত্রে স্পিকার) লাগাতে হয়। উদাহরনঃ আমার এমপ্লিফায়ার ১০০ ওয়াট এর। তারমানে আমাকে এখানে আউটপুট হিসেবে প্রায় মোটামুটি ৩০০ ওয়াটের স্পিকার(লোড) লাগাতে হবে। তা নাহলে ভাল ফলাফল আশা করা যায় না। ক্ষেত্রবিশেষে স্পিকার কেটেও যেতে পারে।
আচ্ছা তাহলে কি দাড়াচ্ছে? সেটাহল যেহেতু টিডিএ ২৮২২ এমপ্লিফায়ার এর স্বাভাবিক আউটপুট ১ ওয়াট তাহলে আমার আউটপুটে ৩-৪ ওয়াটের স্পিকার লাগাতে হবে।
বিশেষ সতর্কতা আর কিছু ট্রিক্সঃ
এমপ্লিফায়ার বানানোর ক্ষেত্রে কিছু গোপন ট্রিক্স আছে। যেগুলো হয়তবা আমরা অনেকেই জানি না। আজকে আপনাদের সামনে সব কিছু ফ্ল্যাশ করে দিব। বিনিময়ে কিছু দিতে হবে না আমাকে, শুধু ধৈর্য্য ধরে সাথে থাকুন। তো বিষয়টা হলো, এমপ্লিফায়ার খুব এফেক্টিভ একটি জিনিস। এটাতে অনেকগুলো বিষয় মাথায় রাখতে হয়। যেমন আপনি কোন কোয়ালিটির তার/ওয়্যার ব্যবহার করছেন কানেকশন দেওয়ার ক্ষেত্রে। এমপ্লিফায়ার এ ভাল মানের তার ব্যবহার করা আবশ্যক। না হলে আউটপুট এ সাউন্ড ডিস্টরশন দেখা দিবে। আবার আসি পাওয়ার সাপ্লাই এর কথায়। এমপ্লিফায়ার এর মধ্যে আমরা যে ক্যাপাসিটর/ইন্ডাক্টর ব্যবহার করি তারা তাদের ভিতর এমনকি বাইরেও একটি ম্যাগনেটিক ফিল্ড তৈরি করে। তাদের আশেপাশে ধরুন ১-২ ইঞ্চির মধ্যে যদি পাওয়ার সাপ্লাই এর ইলেকট্রিক কোন তার এসে পড়ে তাহলে আউটপুটের সাইন ওয়েভ ঐ সাপ্লাই এর ম্যাগনেটিক ফিল্ডের দ্বারা ডিস্টরটেড হয়ে থাকে। তাই এই দুইটি বিষয়ের দিকে আমাদের অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।
এখন আমরা যদি এটা থেকে বেশি ওয়াট পেতে চাই তাহলে আমরা ক্যাসকেড/ব্রিজ পদ্ধতি (BTL) অনুসরন করতে পারি। তাতে সাউন্ড আউটপুট পাওয়ার আরো বাড়বে। নিচের সার্কিট ডায়াগ্রামটিতে ব্রিজ পদ্ধতিতে এম্পলিফায়ার দেখানো হয়েছে-
এই পুরো মিনি এমপ্লিফায়ার টিকে আমরা যদি একটি কাঠের তৈরি বা প্লাস্টিকের কোন বক্সের মধ্যে স্থানদেই তাহলে এটিকে আরও অনেক সুন্দর দেখাবে। সাউন্ড বক্স আকারে বানিয়ে নিলে তো কথাই নেই। তাছাড়াও এরসাথে আমরা আরও একটি সুন্দর লাইট ইফেক্ট সংযোজন করতে পারি। যা কিনা মিউজিক এর তালেতালে নাচতে সক্ষম। এটির সম্পর্কে জানতে হলে আমার লেখা আরেকটি কলামে ঢুঁ মেরে আসতে পারেন। অথবা মিউজিক পালসের এই লিঙ্কে ঢুকে পড়ুন। এছাড়াও আমাদের অডিও সেকশনে অনেক টিউটোরিয়াল আছে এম্পলিফায়ার নিয়ে।
নিচের ছবিটিতে একজন বিদেশী হবিস্ট বন্ধুর তৈরিকরা মিনি সাউন্ড সিস্টেম। যাকিনা উনি সিগার বক্স (Cigar box) -এ স্থাপন করেছেন। একই রকম ভাবে আমরাও ছোটকোন বক্সে সম্পূর্ণ অডিও সিস্টেমটিকে স্থাপন করতে পারি। ছবিটি দখুন, দেখলে কিছু আইডিয়া পাবেন আশাকরি-
সিগার বক্সে তৈরি মিনি এম্পলিফায়ার সিস্টেম -(ইন্টারনেট থেকে গৃহীত)একটি মিনি এম্পলিফায়ার সিস্টেম বক্স এর ভেতরের দৃশ্য
সমাপ্তিঃ
আশাকরি লেখাটা পড়ে এতক্ষনে অনেকেই মিনি এম্পলিফায়ার বানানো শুরুকরে দিয়েছেন। আর যারা করেন নি তারা দ্রুত শুরুকরে দিন। কারণ এরচেয়ে এতকম খরচে এত ভালো মানের এমপ্লিফায়ার পাওয়া সত্যই অনেক বড়কিছু। যাইহোক আজ আর নয়, যেতে হবে এইবার। তবে এ যাওয়াই শেষ যাওয়া নয়। আবার আসব সামনে আরও মজার বিষয় নিয়ে। তবে আপনাদের কে সেই সাথে রেস্পন্স দিতে হবে। আপনারা সাড়া না দিলে আমাদের আসা টা কঠিন ব্যাপার হয়ে। কোন প্রশ্ন থাকলে এখানে কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন অথবা আমাদের ফেসবুক পেজে আমাদের তা জানাতে পারেন। আমাদের স্পেশালিস্টরা সব সময় আপনাদের সাহায্য করার জন্য সদা প্রস্তুত। আসসালামু আলাইকুম ।
সেরা লেখকএর নাম ঘোষণা ও সার্টিফিকেট প্রদানের সময় সমাগত। অনেক গুলো সুন্দর লেখার মাঝে সেরা লেখা নির্বাচন অত্যন্ত দুরূহ কাজ। আমাদের বিচারক মণ্ডলী সে দুরূহ কাজটিই করেছেন শতব্যস্ততা মাঝে। তারজন্য আমাদের আন্তরিক ধন্যবাদ পাওনা এই সুন্দর ও সুচারু হাতের (ডিজিটাল হাতের) কাজের জন্য।
বলতে বাঁধা নেই, লেখকদের লেখনির মান এতই ভালো ছিল যে আমাদের সম্পাদনা পরিষদ ও বিচারক মন্ডলীদের জন্য সেরা লেখক নির্বাচন কঠিন হয়ে গিয়েছিল। যাইহোক সবাইকে আর অপেক্ষায় না রেখে আমরা সামনে এগোই।
সেরা লেখক নির্বাচন প্রতিযোগীতার ফলাফল ক্রমানুসারে-
এই প্রতিযোগীতায় মোট ১৪টি লেখা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে৷ মোট লেখক ছিলেন ৮ জন। ধারাবাহিক লেখাগুলির একের অধিক পর্বকে ১টি লেখা হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে, এবং পূর্ণাঙ্গ লেখাগুলোকে ১টি লেখা হিসেবে ধরা হয়েছে৷ সঠিক ও নির্ভুল মূল্যায়ন এবং বিচার কাজকে সহজ করার স্বার্থে প্রতিটি লেখাকে ৫টি অংশে ভাগ করে নাম্বার প্রদান করে, চূড়ান্ত নির্বাচিত করা হয়েছে। ৫টি ভাগ নিম্নরূপ-
(১) লেখার প্রাথমিক মান
(২) ভাষা সরলী/সহজীকরন
(৩) প্রজেক্ট/ডিভাইসের গুরুত্ব
(৪) সামঞ্জস্যপূর্ণ চিত্রের ব্যবহার
(৫) পূর্বে ও বর্তমানে প্রকাশিত লেখার মোট সংখ্যা
লেখকদের উদ্দেশ্যে এই নিয়মাবলী পোস্ট আকারে প্রকাশ করা হলো, যাতে পরবর্তি লেখাগুলোতে লেখকগণ তাদের লেখনির ব্যাপারে আরো যত্নবান ও সচেতন হন।
সেরা লেখক এর সন্ধানের ১ম পর্বে যে লেখাগুলো তালিকাভুক্ত ছিলঃ-
এখানে উল্লেখ্য যে, নিরপেক্ষতার স্বার্থে আমাদের ইলেকট্রনিক্স কমিটিতে সরাসরি যুক্ত কোনো লেখক ও লেখকের লেখা এই প্রতিযোগীতায় রাখা হয়নি।
পাঠকদের প্রতি অনুরোধ থাকবে, যারা সেরা হতে পারেন নি তাদের সহ বিজয়ীদের কে কমেন্ট ও শেয়ার করে উৎসাহ প্রদান করতে। আর এ পর্বই শেষনয়, সামনে এই লেখকগণ যে স্বীয় লেখনির মহিমায় উদ্ভাসিত হবেন এ দৃঢ়বিশ্বাস সর্বান্তকরণে পোষণ করি।
অশেষ শুভকামনা সবার প্রতি।
বিশেষ কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ লুতফুর রহমান বাবুল ভাই৷ উনার আন্তরিক সহযোগীতায় এই কাজটি অনেক সহজ হয়েছে৷